নেত্রকোনা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
(হালনাগাদ) |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''নেত্রকোনা জেলা''' ( | '''নেত্রকোনা জেলা''' (ময়মনসিংহ বিভাগ) আয়তন: ২৭৯৪.২৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৪´ থেকে ২৫°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯১°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ জেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ২২২৯৬৪২; পুরুষ ১১১১৩০৬, মহিলা ১১১৮৩৩৬। মুসলিম ২০০১৭৩২, হিন্দু ২০৭৪৩০, বৌদ্ধ ৫৪, খ্রিস্টান ১৮২০০ এবং অন্যান্য ২২২৬। এ জেলায় গারো, হাজং, হদি, বানাই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। | ||
''জলাশয়'' ধনু নদী, ধলাই নদী, গুনাই নদী, ঘোড়াউতরা নদী, পিয়াইন নদী, সোমেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' ধনু নদী, ধলাই নদী, গুনাই নদী, ঘোড়াউতরা নদী, পিয়াইন নদী, সোমেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রশাসন'' নেত্রকোনা মহকুমা গঠিত হয় ১৮৮২ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলা সর্ববৃহৎ ( | ''প্রশাসন'' নেত্রকোনা মহকুমা গঠিত হয় ১৮৮২ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলা সর্ববৃহৎ (৩৭৬.২২ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা আটপাড়া (১৯২.৫০ বর্গ কিমি)। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
১৬ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| | | ২৭৯৪.২৮ || ১০ || ৫ || ৮৬ || ১৫৭১ || ২২৮২ || ২৪৭১৮৩ || ১৯৮২৪৫৯ || ৭৯৮ || ৩৯.৪ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
| উপজেলা নাম || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | উপজেলা নাম || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| আটপাড়া | | আটপাড়া || ১৯২.৫০ || - || ৭ || ১৪২ || ১৭৭ || ১৪৪৬২৪ || ৭৫১ || ৩৮.৭ | ||
|- | |- | ||
| কলমাকান্দা | | কলমাকান্দা || ৩৭৬.২২ || - || ৮ || ১৭৯ || ৩৪৭ || ২৭১৯১২ || ৭২৩ || ৩৬.৬ | ||
|- | |- | ||
| কেন্দুয়া | | কেন্দুয়া || ৩০৩.৫৯ || ১ || ১৩ || ২১৭ || ২৮৯ || ৩০৪৭২৯ || ১০০৪ || ৩৭.৬ | ||
|- | |- | ||
| খালিয়াজুরী | | খালিয়াজুরী || ২৯৭.৬৩ || - || ৬ || ৬৮ || ৭৫ || ৯৭৪৫০ || ৩২৭ || ৩০.৪ | ||
|- | |- | ||
| দুর্গাপুর | | দুর্গাপুর || ২৭৯.২৮ || ১ || ৭ || ১২৯ || ২১০ || ২২৪৮৭৩ || ৮০৫ || ৩৯.৫ | ||
|- | |- | ||
| নেত্রকোনা সদর | | নেত্রকোনা সদর || ৩৪১.৭১ || ১ || ১২ || ২৫৫ || ৩৩২ || ৩৭২৭৮৫ || ১০৯১ || ৪৬.০ | ||
|- | |- | ||
| পূর্বধলা | | পূর্বধলা || ৩০৮.০৩ || - || ১১ || ২২৬ || ৩৩৬ || ৩১০৮৩৪ || ১০০৯ || ৪২.৮ | ||
|- | |- | ||
| বারহাট্টা | | বারহাট্টা || ২২০.০০ || - || ৭ || ১৪৭ || ২৩৯ || ১৮০৪৪৯ || ৮২০ || ৩৭.৬ | ||
|- | |- | ||
| মদন | | মদন || ২৩৩.৩০ || ১ || ৮ || ৯৩ || ১২২ || ১৫৪৪৭৯ || ৬৬২ || ৩০.৪ | ||
|- | |- | ||
| মোহনগঞ্জ | | মোহনগঞ্জ || ২৪১.৯৮ || ১ || ৭ || ১১৫ || ১৬৩ || ১৬৭৫০৭ || ৫৯১ || ৪২.১ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:NetrokonaDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | [[Image:NetrokonaDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে পাকবাহিনীর গতিরোধ করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা বারহাট্টা উপজেলার পশ্চিম সীমান্তের ঠাকুরকোণা রেলওয়ে ব্রিজটি মাইন বিষ্ফোরণে বিধ্বস্ত করে। ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী পূর্বধলার ৪ জন লোককে ধরে নিয়ে ত্রিমোহনী ব্রীজে গুলি করে হত্যা করে। ১ মে পাকবাহিনী এ উপজেলার ৩ জন নিরীহ লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ২৬ জুলাই কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের তিন রাস্তার মিলনস্থলে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা আটপাড়া থানা আক্রমণ করলে থানার ওসিসহ কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়। আগস্ট মাসে দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া গ্রামবাসি ২ জন পাকসেনা ও ১ জন রাজাকারকে হত্যা করে। উক্ত ঘটনার জের ধরে পাকসেনারা গ্রামের প্রায় শতাধিক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ অক্টোবর আটপাড়া সদরে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন রাজাকার নিহত হয়। ১৩ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কেন্দুয়ার বোসের বাজার থেকে ১২ টি রাইফেল হস্তগত করে এবং ৮ জন রাজাকারকে গ্রেফতার করে। ২০ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কেন্দুয়ার পাতকুড়া নদীর ব্রিজের ওপর অবস্থিত পাকসেনা-ক্যাম্প আক্রমণ করলে বহুসংখ্যক রাজাকার নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ১৯ জন রাজাকারকে মোহনগঞ্জের পাথরঘাটায় হত্যা করে। ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া এ উপজেলার কৃষিফার্মে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলার ৪টি স্থানে বধ্যভূমি এবং ১টি স্থানে গণকবর আছে, ২টি স্মৃতিসৌধ এবং ৩টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৯.৪%; পুরুষ ৪০.৯%, মহিলা ৩৮.০%। কলেজ ২৮, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৩৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৮৩, মাদ্রাসা ১৬০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কেন্দুয়া জয়হরি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), বিরিশিরি পিসিনল উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯২), বিরিশিরি মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), নেত্রকোনা চন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), বড়ওয়ারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), সান্দিকোনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বারহাট্টা সিকেপি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), আশুজিয়া জে.এন.সি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (১৯১৬), পূর্বধলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), এস.কে.পি.এস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ঘাগড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), বেখৈর হাটি এন.কে. উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২২), ধর্মরায় রামধন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), গোপালাশ্রম ভৈরবচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট হাইস্কুল (১৯৩১), বাউসী অর্ধচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), বানিয়াজান সিটি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), কলমাকান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪২), গুজিরকোনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), জাহাঙ্গীরপুর তহুরা আমিন হাই স্কুল (১৯৪৬), শালদিঘা জি.জি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৪), কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪), খালিয়াজুরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), দুর্গাপুর এন্ট্রেন্স স্কুল (১৮৭৯), তেলিগাতি বি এন এইচ কে একাডেমি (১৯০৫), উপেন্দ্র বিদ্যাপীঠ (১৯১৩-১৪), মঙ্গলসিদ্ধ এম এস জুনিয়র স্কুল (১৯২৫)। | ||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭২.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪০%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ১০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১১%, নির্মাণ ০.৯১%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, চাকরি ৩.৯২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৩% এবং অন্যান্য ৬.২১%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭২.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪০%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ১০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১১%, নির্মাণ ০.৯১%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, চাকরি ৩.৯২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৩% এবং অন্যান্য ৬.২১%। | ||
৬৪ নং লাইন: | ৬৩ নং লাইন: | ||
''আরো দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরো দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেত্রকোণা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নেত্রকোণা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেত্রকোণা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নেত্রকোণা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Netrokona District]] | [[en:Netrokona District]] |
০১:৫৩, ৩০ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
নেত্রকোনা জেলা (ময়মনসিংহ বিভাগ) আয়তন: ২৭৯৪.২৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°৩৪´ থেকে ২৫°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯১°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ জেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা।
জনসংখ্যা ২২২৯৬৪২; পুরুষ ১১১১৩০৬, মহিলা ১১১৮৩৩৬। মুসলিম ২০০১৭৩২, হিন্দু ২০৭৪৩০, বৌদ্ধ ৫৪, খ্রিস্টান ১৮২০০ এবং অন্যান্য ২২২৬। এ জেলায় গারো, হাজং, হদি, বানাই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় ধনু নদী, ধলাই নদী, গুনাই নদী, ঘোড়াউতরা নদী, পিয়াইন নদী, সোমেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন নেত্রকোনা মহকুমা গঠিত হয় ১৮৮২ সালে এবং মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে। জেলার দশটি উপজেলার মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলা সর্ববৃহৎ (৩৭৬.২২ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা আটপাড়া (১৯২.৫০ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
২৭৯৪.২৮ | ১০ | ৫ | ৮৬ | ১৫৭১ | ২২৮২ | ২৪৭১৮৩ | ১৯৮২৪৫৯ | ৭৯৮ | ৩৯.৪ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | |||||||||
উপজেলা নাম | আয়তন (বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
আটপাড়া | ১৯২.৫০ | - | ৭ | ১৪২ | ১৭৭ | ১৪৪৬২৪ | ৭৫১ | ৩৮.৭ | |
কলমাকান্দা | ৩৭৬.২২ | - | ৮ | ১৭৯ | ৩৪৭ | ২৭১৯১২ | ৭২৩ | ৩৬.৬ | |
কেন্দুয়া | ৩০৩.৫৯ | ১ | ১৩ | ২১৭ | ২৮৯ | ৩০৪৭২৯ | ১০০৪ | ৩৭.৬ | |
খালিয়াজুরী | ২৯৭.৬৩ | - | ৬ | ৬৮ | ৭৫ | ৯৭৪৫০ | ৩২৭ | ৩০.৪ | |
দুর্গাপুর | ২৭৯.২৮ | ১ | ৭ | ১২৯ | ২১০ | ২২৪৮৭৩ | ৮০৫ | ৩৯.৫ | |
নেত্রকোনা সদর | ৩৪১.৭১ | ১ | ১২ | ২৫৫ | ৩৩২ | ৩৭২৭৮৫ | ১০৯১ | ৪৬.০ | |
পূর্বধলা | ৩০৮.০৩ | - | ১১ | ২২৬ | ৩৩৬ | ৩১০৮৩৪ | ১০০৯ | ৪২.৮ | |
বারহাট্টা | ২২০.০০ | - | ৭ | ১৪৭ | ২৩৯ | ১৮০৪৪৯ | ৮২০ | ৩৭.৬ | |
মদন | ২৩৩.৩০ | ১ | ৮ | ৯৩ | ১২২ | ১৫৪৪৭৯ | ৬৬২ | ৩০.৪ | |
মোহনগঞ্জ | ২৪১.৯৮ | ১ | ৭ | ১১৫ | ১৬৩ | ১৬৭৫০৭ | ৫৯১ | ৪২.১ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে পাকবাহিনীর গতিরোধ করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা বারহাট্টা উপজেলার পশ্চিম সীমান্তের ঠাকুরকোণা রেলওয়ে ব্রিজটি মাইন বিষ্ফোরণে বিধ্বস্ত করে। ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী পূর্বধলার ৪ জন লোককে ধরে নিয়ে ত্রিমোহনী ব্রীজে গুলি করে হত্যা করে। ১ মে পাকবাহিনী এ উপজেলার ৩ জন নিরীহ লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ২৬ জুলাই কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের তিন রাস্তার মিলনস্থলে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা আটপাড়া থানা আক্রমণ করলে থানার ওসিসহ কয়েকজন রাজাকার নিহত হয়। আগস্ট মাসে দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া গ্রামবাসি ২ জন পাকসেনা ও ১ জন রাজাকারকে হত্যা করে। উক্ত ঘটনার জের ধরে পাকসেনারা গ্রামের প্রায় শতাধিক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ৭ অক্টোবর আটপাড়া সদরে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন রাজাকার নিহত হয়। ১৩ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কেন্দুয়ার বোসের বাজার থেকে ১২ টি রাইফেল হস্তগত করে এবং ৮ জন রাজাকারকে গ্রেফতার করে। ২০ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কেন্দুয়ার পাতকুড়া নদীর ব্রিজের ওপর অবস্থিত পাকসেনা-ক্যাম্প আক্রমণ করলে বহুসংখ্যক রাজাকার নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা ১৯ জন রাজাকারকে মোহনগঞ্জের পাথরঘাটায় হত্যা করে। ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া এ উপজেলার কৃষিফার্মে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলার ৪টি স্থানে বধ্যভূমি এবং ১টি স্থানে গণকবর আছে, ২টি স্মৃতিসৌধ এবং ৩টি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৯.৪%; পুরুষ ৪০.৯%, মহিলা ৩৮.০%। কলেজ ২৮, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৩৬, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৮৩, মাদ্রাসা ১৬০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কেন্দুয়া জয়হরি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৩২), নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), বিরিশিরি পিসিনল উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯২), বিরিশিরি মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৯), নেত্রকোনা চন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), বড়ওয়ারী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), সান্দিকোনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), বারহাট্টা সিকেপি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪), আশুজিয়া জে.এন.সি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (১৯১৬), পূর্বধলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), এস.কে.পি.এস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ঘাগড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), বেখৈর হাটি এন.কে. উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২২), ধর্মরায় রামধন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), গোপালাশ্রম ভৈরবচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০), মোহনগঞ্জ সরকারি পাইলট হাইস্কুল (১৯৩১), বাউসী অর্ধচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৯), বানিয়াজান সিটি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০), কলমাকান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪২), গুজিরকোনা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), জাহাঙ্গীরপুর তহুরা আমিন হাই স্কুল (১৯৪৬), শালদিঘা জি.জি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৪), কুতুবপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৪), খালিয়াজুরী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭), দুর্গাপুর এন্ট্রেন্স স্কুল (১৮৭৯), তেলিগাতি বি এন এইচ কে একাডেমি (১৯০৫), উপেন্দ্র বিদ্যাপীঠ (১৯১৩-১৪), মঙ্গলসিদ্ধ এম এস জুনিয়র স্কুল (১৯২৫)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭২.৪৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৪০%, শিল্প ০.৫৩%, ব্যবসা ১০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১১%, নির্মাণ ০.৯১%, ধর্মীয় সেবা ০.২৬%, চাকরি ৩.৯২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৩% এবং অন্যান্য ৬.২১%।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: জননেত্র, বাংলার দর্পণ, দেশকণ্ঠস্বর, দেশের ডাক, দৈনিক নেত্র (বিলুপ্ত); সাপ্তাহিক: মুক্তির প্রতীক; মাসিক: মাকড়সা; অবলুপ্ত মাসিকপত্র: আর্য্য প্রদীপ, কৌমুদী, মহৎ উদ্দেশ্য, প্রান্তবাসী, জুলফিকার আর্যপ্রভা; ত্রৈমাসিক পত্র: একুশ শতকের স্রোত, সোমেশ্বরী, জলসিড়ি, মাটির সুবাস; অবলুপ্ত সাহিত্যপত্র: স্মৃতি কানন, সুসং বার্তা, ধনু, উত্তর আকাশ, নবনূর; গবেষণা পত্রিকা: জানিরা; সাময়িকী: অক্ষর, চেতনা, স্পন্দন, স্মৃতি-৭১, বিজয়, সৃজনী, মাটির সুবাস।
লোকসংস্কৃতি ময়মনসিংহ গীতিকা, বাউল সঙ্গীত, পালাগীত, গারো সম্প্রদায়ের প্রবাদ, ছড়া এবং হাজং সম্প্রদায়ের শ্লোক (হিলুক), ধাঁধাঁ (থাচিকথা), গান (গাহেন)।
দর্শনীয় স্থান বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী, বিজয়পুর সাদা মাটির খনি, দুর্গাপুর শহীদ স্মৃতিসৌধ, রাশিমনি স্মৃতিসৌধ, রাণীখং ক্যাথলিক চার্চ, গারো ব্যাপ্টিস্ট কনভেনশন ক্যাম্পাস (দুর্গাপুর), ৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মাযার (কলমাকান্দা), মদনপুর শাহ সুলতান কমরুদ্দিনের মাযার। [সঞ্জয় সরকার]
আরো দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেত্রকোণা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নেত্রকোণা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।