গোপালগঞ্জ জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
(হালনাগাদ) |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''গোপালগঞ্জ জেলা''' ([[ঢাকা বিভাগ|ঢাকা বিভাগ]]) আয়তন: | '''গোপালগঞ্জ জেলা''' ([[ঢাকা বিভাগ|ঢাকা বিভাগ]]) আয়তন: ১৪৬৮.৭৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪০´ থেকে ৯০°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফরিদপুর জেলা, দক্ষিণে পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা, পূর্বে মাদারীপুর ও বরিশাল জেলা, পশ্চিমে নড়াইল জেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ১১৭২৪১৫; পুরুষ ৫৭৭৮৬৮, মহিলা ৫৯৪৫৪৭। মুসলিম ৮০৫১১৫, হিন্দু ৩৫৩৭৯৪, বৌদ্ধ ৮০, খ্রিস্টান ১২৯৫১ এবং অন্যান্য ৪৭৫। | ||
''জলাশয়'' মধুমতি, ঘাঘর, কুমার নদী এবং ওয়াপদা খাল উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' মধুমতি, ঘাঘর, কুমার নদী এবং ওয়াপদা খাল উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রশাসন'' জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। এটি পূর্বে ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা ছিল। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সর্ববৃহৎ ( | ''প্রশাসন'' জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। এটি পূর্বে ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা ছিল। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সর্ববৃহৎ (৩৮৯.৬১ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৬.২৭% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা টুঙ্গীপাড়া (১২৮.৫৩ বর্গ কিমি)। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
১৬ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| | | ১৪৬৮.৭৪ || ৫ || ৪ || ৬৮ || ৬০৭ || ৮৮৯ || ১২৮৭০৫ || ১০৪৩৭১০ || ৭৯৮ || ৫৮.১ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
| উপজেলার নাম || আয়তন(বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | উপজেলার নাম || আয়তন(বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| কাশিয়ানী | | কাশিয়ানী || ২৮৬.৩১ || - || ১৪ || ১৪৯ || ১৬২ || ২০৭৬১৫ || ৭২৫ || ৫৯.২ | ||
|- | |- | ||
| কোটালিপাড়া | | কোটালিপাড়া || ৩৫৫.৯০ || ১ || ১২ || ১০১ || ২০৮ || ২৩০৪৯৩ || ৬৪৮ || ৫৯.২ | ||
|- | |- | ||
| গোপালগঞ্জ সদর | | গোপালগঞ্জ সদর || ৩৮৯.৬১ || ১ || ২১ || ১২৫ || ১৯৭ || ৩৪৪০০৮ || ৮৮৩ || ৬১.৮ | ||
|- | |- | ||
| টুঙ্গিপাড়া | | টুঙ্গিপাড়া || ১২৮.৫৩ || ১ || ৫ || ৩৩ || ৬৭ || ১০০৮৯৩ || ৭৮৫ || ৫৬.৬ | ||
|- | |- | ||
| মুকসুদপুর | | মুকসুদপুর || ৩০৮.৩৬ || ১ || ১৬ || ১৯৫ || ২৫৫ || ২৮৯৪০৬ || ৯৩৯ || ৫২.৫ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:GopalganjDistrict.jpg|thumb|right|400px]] | [[Image:GopalganjDistrict.jpg|thumb|right|400px]] | ||
'' | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল গোপালগঞ্জ সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উরফি ইউনিয়নের শসাবাড়িয়া গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় এবং তাতে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ মে পাকবাহিনী কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক নিরীহ লোককে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১৯ মে পাকবাহিনীর একটি দল টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কয়েকজনকে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। মে মাসের শেষের দিকে পাকবাহিনী গোপালগঞ্জ সদরের পাইককান্দি গ্রামের ১৩ জন নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করে। ৯ আগষ্ট মুকসুদপুর উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনগণের আক্রমণে পুলিশ ও রাজাকারসহ ৮৪ জন নিহত হয়। ৫ অক্টোবর কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া অয়ারলেস স্টেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১২ অক্টোবর মুকসুদপুর উপজেলার বামনডাঙ্গা বাজারে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২২ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। একই দিনে পাকবাহিনী কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়াও অক্টোবরের শেষের দিকে কাশিয়ানী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াইয়ে ৩০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে কাশিয়ানী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। গোপালগঞ্জ জেলায় ১টি বধ্যভূমি ২টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৮.১%; পুরুষ ৬০.৩%, মহিলা ৫৬.০%। কলেজ ২৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৮৬, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৪, কেজি স্কুল ৩৮, মাদ্রাসা ৬২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি এস. কে. কলেজ (১৯৪২), এ. আর. আলী খান কলেজ (১৯৪২), মুকসুদপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), উলপুর পি,সি, উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০২), কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৭), ওড়াকান্দি হাইস্কুল (১৯০৯), গোপীনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১১), নিলফা বয়রা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), বাটিকামারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), পূর্বকোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), সাবের মিঞা জসিমুদ্দিন মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), সাজাইল গোপী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), কুমারিয়া লক্ষ্মীপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৪), বাটিকামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৯), বনগ্রাম ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৯২৫), ওয়েস্ট কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন (১৯২৩)। | ||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬১.৭৫%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৩%, শিল্প ০.৫৮%, ব্যবসা ১৩.৯২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৩০%, চাকরি ১১.১৪%, নির্মাণ ১.৬০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭০% এবং অন্যান্য ৫.৪৯%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬১.৭৫%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৩%, শিল্প ০.৫৮%, ব্যবসা ১৩.৯২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৩০%, চাকরি ১১.১৪%, নির্মাণ ১.৬০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭০% এবং অন্যান্য ৫.৪৯%। | ||
৫৪ নং লাইন: | ৫২ নং লাইন: | ||
''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোপালগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; গোপালগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোপালগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; গোপালগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Gopalganj District]] | [[en:Gopalganj District]] |
১৮:৫৬, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
গোপালগঞ্জ জেলা (ঢাকা বিভাগ) আয়তন: ১৪৬৮.৭৪ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫০´ থেকে ২৩°০১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৪০´ থেকে ৯০°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ফরিদপুর জেলা, দক্ষিণে পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা, পূর্বে মাদারীপুর ও বরিশাল জেলা, পশ্চিমে নড়াইল জেলা।
জনসংখ্যা ১১৭২৪১৫; পুরুষ ৫৭৭৮৬৮, মহিলা ৫৯৪৫৪৭। মুসলিম ৮০৫১১৫, হিন্দু ৩৫৩৭৯৪, বৌদ্ধ ৮০, খ্রিস্টান ১২৯৫১ এবং অন্যান্য ৪৭৫।
জলাশয় মধুমতি, ঘাঘর, কুমার নদী এবং ওয়াপদা খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। এটি পূর্বে ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা ছিল। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সর্ববৃহৎ (৩৮৯.৬১ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৬.২৭% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা টুঙ্গীপাড়া (১২৮.৫৩ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
১৪৬৮.৭৪ | ৫ | ৪ | ৬৮ | ৬০৭ | ৮৮৯ | ১২৮৭০৫ | ১০৪৩৭১০ | ৭৯৮ | ৫৮.১ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | ||||||||
উপজেলার নাম | আয়তন(বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
কাশিয়ানী | ২৮৬.৩১ | - | ১৪ | ১৪৯ | ১৬২ | ২০৭৬১৫ | ৭২৫ | ৫৯.২ |
কোটালিপাড়া | ৩৫৫.৯০ | ১ | ১২ | ১০১ | ২০৮ | ২৩০৪৯৩ | ৬৪৮ | ৫৯.২ |
গোপালগঞ্জ সদর | ৩৮৯.৬১ | ১ | ২১ | ১২৫ | ১৯৭ | ৩৪৪০০৮ | ৮৮৩ | ৬১.৮ |
টুঙ্গিপাড়া | ১২৮.৫৩ | ১ | ৫ | ৩৩ | ৬৭ | ১০০৮৯৩ | ৭৮৫ | ৫৬.৬ |
মুকসুদপুর | ৩০৮.৩৬ | ১ | ১৬ | ১৯৫ | ২৫৫ | ২৮৯৪০৬ | ৯৩৯ | ৫২.৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল গোপালগঞ্জ সদরে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। উরফি ইউনিয়নের শসাবাড়িয়া গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় এবং তাতে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ মে পাকবাহিনী কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি এলাকার প্রায় দেড় শতাধিক নিরীহ লোককে হত্যাসহ ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ১৯ মে পাকবাহিনীর একটি দল টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কয়েকজনকে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। মে মাসের শেষের দিকে পাকবাহিনী গোপালগঞ্জ সদরের পাইককান্দি গ্রামের ১৩ জন নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করে। ৯ আগষ্ট মুকসুদপুর উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনগণের আক্রমণে পুলিশ ও রাজাকারসহ ৮৪ জন নিহত হয়। ৫ অক্টোবর কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া অয়ারলেস স্টেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। ১২ অক্টোবর মুকসুদপুর উপজেলার বামনডাঙ্গা বাজারে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২২ জন পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয়। একই দিনে পাকবাহিনী কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এছাড়াও অক্টোবরের শেষের দিকে কাশিয়ানী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক লড়াইয়ে ৩০ জন পাকসেনা নিহত হয়। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে কাশিয়ানী উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়। গোপালগঞ্জ জেলায় ১টি বধ্যভূমি ২টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৮.১%; পুরুষ ৬০.৩%, মহিলা ৫৬.০%। কলেজ ২৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৮৬, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৪, কেজি স্কুল ৩৮, মাদ্রাসা ৬২। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সরকারি এস. কে. কলেজ (১৯৪২), এ. আর. আলী খান কলেজ (১৯৪২), মুকসুদপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), শেখ মুজিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), উলপুর পি,সি, উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০০), মদনমোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০২), কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৭), ওড়াকান্দি হাইস্কুল (১৯০৯), গোপীনাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১১), নিলফা বয়রা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), বাটিকামারী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২১), পূর্বকোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫), বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), সাবের মিঞা জসিমুদ্দিন মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), সাজাইল গোপী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), কুমারিয়া লক্ষ্মীপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৪), বাটিকামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৯), বনগ্রাম ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা (১৯২৫), ওয়েস্ট কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন (১৯২৩)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬১.৭৫%, অকৃষি শ্রমিক ২.২৩%, শিল্প ০.৫৮%, ব্যবসা ১৩.৯২%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৩০%, চাকরি ১১.১৪%, নির্মাণ ১.৬০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭০% এবং অন্যান্য ৫.৪৯%।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: যুগকথা, ভোরের বাণী, সূর্যাশা, বাংলার সংকেত, শিরীন, বিশ্বদর্পণ; সাপ্তাহিক: জনপদের কথা; মাসিক: মতুয়া দর্পণ (ওড়াকান্দি)। অবলুপ্ত: দীপ্তি (১৯৮৩), নবদীপ্তি (১৯৮৩), ফুল্কি (১৯৬১), মধুমতি (১৯৭৩), মধুচক্র (১৯৮৩), শ্রীহরিদর্শন, ওড়াকান্দি (১৯৭৯), রূপালি ফিতে (১৯৮৭), আলোর দিশারী (১৯৭৭), রবিররশ্নি (১৯৮৫), গোপালগঞ্জ সাহিত্যপত্র (১৯৮৬)।
লোকসংস্কৃতি ছড়া, ছন্দ, প্রবাদ, ধাঁধাঁ, সারিগান, মুর্শিদি গান, হুলুই গান, ব্রতগীতি, গাম্ভীরা গান উল্লেখযোগ্য।
দর্শনীয় স্থান বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স (টুঙ্গিপাড়া); আকরামুজ্জামান পার্ক (আড়পাড়া)। [রবীন্দ্রনাথ অধিকারী]
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোপালগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; গোপালগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।