চাঁদপুর জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(হালনাগাদ)
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''চাঁদপুর জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]])  আয়তন: ১৭০৪.০৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০০´ থেকে ২৩°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩২´ থেকে ৯১°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল জেলা, পূর্বে কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা।
'''চাঁদপুর জেলা''' ([[চট্টগ্রাম বিভাগ|চট্টগ্রাম বিভাগ]])  আয়তন: ১৬৪৫.৩২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০০´ থেকে ২৩°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩২´ থেকে ৯১°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল জেলা, পূর্বে কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা।


''জনসংখ্যা'' ২২৭১২২৯; পুরুষ ১১২৪৮৮২, মহিলা ১১৪৬৩৪৭। মুসলিম ২১২৪৩৯৭, হিন্দু ১৪৫০০৩, বৌদ্ধ ৫৩৯, খ্রিস্টান ১০৬ এবং অন্যান্য ১১৮৪।
''জনসংখ্যা'' ২৪১৬০১৮; পুরুষ ১১৪৫৮৩১, মহিলা ১২৭০১৮৭। মুসলিম ২২৬৯২৪৬, হিন্দু ১৪৫৫৫১, বৌদ্ধ ১১০, খ্রিস্টান ৪২৩, অন্যান্য ৬৮৮।


''জলাশয়'' প্রধান নদী: মেঘনা, ডাকাতিয়া, গোমতী, ধনগোদা। ঘোড়গাঁর জলা উল্লেখযোগ্য।
''জলাশয়'' প্রধান নদী: মেঘনা, ডাকাতিয়া, গোমতী, ধনগোদা। ঘোড়গাঁর জলা উল্লেখযোগ্য।
১৬ নং লাইন: ১৬ নং লাইন:
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-  
|-  
| ১৭০৪.০৬  || ৮ || ৬  || ৮৭ || ১০৬২  || ১২৩৭  || ৩১৪১০২  || ১৯৫৭১২৭  || ১৩৩৩  || ৫০.
| ১৬৪৫.৩২ || ৮ || || ৮৭ || ৯৭১ || ১,২৩০ || ৪৩৫৭২৪ || ১৯৮০২৯৪ || ১৪৬৮ || ৫৬.
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
২৪ নং লাইন: ২৪ নং লাইন:
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলা নাম  || আয়তন (বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| কচুয়া ৫৮ || ২৩৫.৮২  || ১ || ১২ || ১৭৩  || ২৩২ || ৩৩১৩৬০  || ১৪০৫  || ৪৪.৮
| কচুয়া ৫৮ || ২৩৫.৮১ || ১ || ১২ || ১৫৯ || ২৩২ || ৩৮২১৩৯ || ১৬২১ || ৫৩.৮
|-  
|-
| চাঁদপুর সদর ২২ || ৩০৮.৭৯  || ১ || ১৪ || ১৪৬  || ১১০  || ৪৩৬৬৮০  || ১৪১৪  || ৫৭.১২
| চাঁদপুর সদর ২২ || ৩০৮.৭৭ || ১ || ১৪ || ১৩৬ || ১১২ || ৪৬৫৯১৯ || ১৫০৯ || ৫৬.
|-  
|-
| ফরিদগঞ্জ ৪৫ || ২৩১.৫৪  || ১ || ১৬  || ১৭৮  || ১৭৫  || ৩৭৪৭৬০  || ১৬১৯  || ৫৩.
| ফরিদগঞ্জ ৪৫ || ২৩২.২২ || ১ || ১৫ || ১৬১ || ১৬১ || ৩৯৬৬৮৩ || ১৭০৮ || ৫৮.
|-  
|-
| মতলব (উত্তর) ৭৯ || ২৭৭.৫৩  || ১ || ১৩  || ১৪৭  || ২৪৮  || ২৯৯৯৩৫  || ১০৮১  || ৪৭.
| মতলব (উত্তর) ৭৯ || ২৬০.২৯ || ১ || ১৪ || ১৩৫ || ২৫১ || ২৯২০৫৭ || ১১২২ || ৫৪.
|-  
|-
| মতলব (দক্ষিণ) ৭৬ || ১৩১.৬৯  || ১ || ৬ || ৯৭  || ৯৯  || ২০৭৬১১  || ১৫৭৬  || ৪২.
| মতলব (দক্ষিণ) ৭৬ || ১২৯.৩২ || ১ || ৬ || ৭৭ || ৯৭ || ২১০০৫০ || ১৬২৪ || ৫৬.
|-  
|-
| শাহরাস্তি ৯৫ || ১৫৪.৩১  || ১ || ৯ || ১৬২  || ১৬৩ || ২০৩৯৫২  || ১৩২২  || ৫৭.৩০
| শাহরাস্তি ৯৫ || ১৫৪.৮১ || ১ || ৯ || ১৫২ || ১৬৩ || ২২৯১১৮ || ১৪৮০ || ৬২.
|-  
|-
| হাইমচর ৪৭ || ১৭৪.৪৯  || - || ৬ || ২৮ || ৫৯  || ১২৫১০৮  || ৭১৭  || ৪০.২৯
| হাইমচর ৪৭ || ১৩৪.১৬ || - || ৬ || ২৮ || ৬৫ || ১০৯৫৭৫ || ৮১৭ || ৪৮.
|-  
|-
| হাজীগঞ্জ ৪৯ || ১৮৯.৯০ || ১ || ১১ || ১৩১  || ১৫১  || ২৯১৮২৩  || ১৫৩৭  || ৪৯.১২
| হাজীগঞ্জ ৪৯ || ১৮৯.৯০ || ১ || ১১ || ১২২ || ১৪৯ || ৩৩০৪৭৭ || ১৭৪০ || ৬০.
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:ChandpurDistrict.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:ChandpurDistrict.jpg|thumb|400px|right]]
''মুক্তিযুদ্ধ''  ১৯৭১ সালের ১২ মে পাকবাহিনী হাজীগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ৫০ জন লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এ গণহত্যার পর মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালালে পাকবাহিনীর ১৭ জন সৈন্য নিহত এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শাহরাস্তি উপজেলার নাওড়া, সূচীপাড়া এবং উনকিলার পূর্বাংশে বেলপুরের কাছে মিত্র বাহিনীর সাথে পাকবাহিনীর সংঘর্ষে মিত্র বাহিনীর ১৩ জন সৈন্য এবং পাকবাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতলব উত্তর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
''মুক্তিযুদ্ধ''  মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস সময়ের পুরোটা জুড়েই চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার সূচিপাড়া থেকে ফরিদগঞ্জ থানার নিম্নাঞ্চল জুড়ে প্রায় ১২০০ বর্গ মাইল এলাকা মুক্তাঞ্চল হিসেবে গণ্য ছিল। এলাকাটি সেসময় প্রতিরোধ যোদ্ধাদেরই দখলে ছিল। চাঁদপুরে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি স্থানে যুদ্ধ হয়। চাঁদপুর সদরের বাইরে অন্যান্য উপজেলাতে অনেকগুলো খণ্ড যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুরে যেসব ভাস্কর্য ও স্মৃতিফলক রয়েছে সেগুলির মধ্যে ‘অঙ্গীকার’ (ভাস্কর্য), ফরিদগঞ্জ উপজেলার শহীদদের নাম ও ঠিকানা উৎকীর্ণ স্মৃতিফলক ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’, মতলবের ‘দীপ্ত বাংলাদেশ’, চান্দ্রাকান্দি স্মৃতিসৌধ (সাদুল্লাহপুর, মতলব) উল্লেখযোগ্য। জেলার হাজীগঞ্জের রঘুনাথপুর বাজার, হামিদিয়া জুট মিলস্ প্রাঙ্গণ এবং রায় শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ এলাকায় বধ্যভূমি এবং হাজীগঞ্জের নাসিরকোটে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।
 
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন''  মুক্তিযুদ্ধের স্মারক: ‘অঙ্গীকার’ (ভাস্কর্য), ফরিদগঞ্জ উপজেলার শহীদদের নাম ও ঠিকানা উৎকীর্ণ স্মৃতিফলক ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’, মতলবের ‘দীপ্ত বাংলাদেশ’, চান্দ্রাকান্দি স্মৃতিসৌধ (সাদুল্লাহপুর, মতলব)। বধ্যভূমি: রঘুনাথপুর বাজার (হাজীগঞ্জ), হামিদিয়া জুট মিলস্ প্রাঙ্গন, রায় শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ; গণকবর: নাসিরকোট (হাজীগঞ্জ)।


''শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৫০.%; পুরুষ ৫১.%, মহিলা ৪৮.%। কলেজ ৪৭, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৭০, কিন্ডার গার্টেন ১১, গণশিক্ষা স্কুল ৭৬, ব্র্যাক স্কুল ২৮, কমিউনিটি স্কুল ৯৩, স্যাটেলাইট স্কুল ৩৭, মাদ্রাসা ১১৬৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: জিলানী চিশতি কলেজ, ফরিদগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, হাইমচর ডিগ্রি কলেজ, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ, হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ, মতলব কলেজ, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, পুরান বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, নাওভাঙ্গা জয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেহপুর আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণপুর জুনিয়র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সাচার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শাহরাস্তি মডেল স্কুল, আমানউল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, পাইকদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব জাফরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
''শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৫৬.%; পুরুষ ৫৬.%, মহিলা ৫৭.%। কলেজ ৪৭, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৭০, কিন্ডার গার্টেন ১১, গণশিক্ষা স্কুল ৭৬, ব্র্যাক স্কুল ২৮, কমিউনিটি স্কুল ৯৩, স্যাটেলাইট স্কুল ৩৭, মাদ্রাসা ১১৬৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: জিলানী চিশতি কলেজ, ফরিদগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, হাইমচর ডিগ্রি কলেজ, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ, হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ, মতলব কলেজ, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, পুরান বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, নাওভাঙ্গা জয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেহপুর আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণপুর জুনিয়র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সাচার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শাহরাস্তি মডেল স্কুল, আমানউল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, পাইকদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব জাফরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস''  কৃষি ৪৪.৪২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১২%, শিল্প ০.৯১%, ব্যবসা ১৬.১৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০৫%, নির্মাণ ২.২৭%, ধর্মীয় সেবা ০.৪০%, চাকরি ১৩.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৩৫% এবং অন্যান্য ১২.০৭%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস''  কৃষি ৪৪.৪২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১২%, শিল্প ০.৯১%, ব্যবসা ১৬.১৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০৫%, নির্মাণ ২.২৭%, ধর্মীয় সেবা ০.৪০%, চাকরি ১৩.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৩৫% এবং অন্যান্য ১২.০৭%।
৫৯ নং লাইন: ৫৭ নং লাইন:
''আরও দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
''আরও দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চাঁদপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চাঁদপুর জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চাঁদপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চাঁদপুর জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।


[[en:Chandpur District]]
[[en:Chandpur District]]

১৬:৩২, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

চাঁদপুর জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ)  আয়তন: ১৬৪৫.৩২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০০´ থেকে ২৩°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩২´ থেকে ৯১°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লা জেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল জেলা, পূর্বে কুমিল্লা জেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, শরিয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা।

জনসংখ্যা ২৪১৬০১৮; পুরুষ ১১৪৫৮৩১, মহিলা ১২৭০১৮৭। মুসলিম ২২৬৯২৪৬, হিন্দু ১৪৫৫৫১, বৌদ্ধ ১১০, খ্রিস্টান ৪২৩, অন্যান্য ৬৮৮।

জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা, ডাকাতিয়া, গোমতী, ধনগোদা। ঘোড়গাঁর জলা উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ১৮৭৮ সালে ত্রিপুরা জেলার অধীনে চাঁদপুর মহকুমা গঠন করা হয়। ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর জেলায় উন্নীত হয়।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১৬৪৫.৩২ ৮৭ ৯৭১ ১,২৩০ ৪৩৫৭২৪ ১৯৮০২৯৪ ১৪৬৮ ৫৬.৮
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলা নাম আয়তন (বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
কচুয়া ৫৮ ২৩৫.৮১ ১২ ১৫৯ ২৩২ ৩৮২১৩৯ ১৬২১ ৫৩.৮
চাঁদপুর সদর ২২ ৩০৮.৭৭ ১৪ ১৩৬ ১১২ ৪৬৫৯১৯ ১৫০৯ ৫৬.১
ফরিদগঞ্জ ৪৫ ২৩২.২২ ১৫ ১৬১ ১৬১ ৩৯৬৬৮৩ ১৭০৮ ৫৮.১
মতলব (উত্তর) ৭৯ ২৬০.২৯ ১৪ ১৩৫ ২৫১ ২৯২০৫৭ ১১২২ ৫৪.৪
মতলব (দক্ষিণ) ৭৬ ১২৯.৩২ ৭৭ ৯৭ ২১০০৫০ ১৬২৪ ৫৬.৭
শাহরাস্তি ৯৫ ১৫৪.৮১ ১৫২ ১৬৩ ২২৯১১৮ ১৪৮০ ৬২.৭
হাইমচর ৪৭ ১৩৪.১৬ - ২৮ ৬৫ ১০৯৫৭৫ ৮১৭ ৪৮.১
হাজীগঞ্জ ৪৯ ১৮৯.৯০ ১১ ১২২ ১৪৯ ৩৩০৪৭৭ ১৭৪০ ৬০.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস সময়ের পুরোটা জুড়েই চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার সূচিপাড়া থেকে ফরিদগঞ্জ থানার নিম্নাঞ্চল জুড়ে প্রায় ১২০০ বর্গ মাইল এলাকা মুক্তাঞ্চল হিসেবে গণ্য ছিল। এলাকাটি সেসময় প্রতিরোধ যোদ্ধাদেরই দখলে ছিল। চাঁদপুরে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি স্থানে যুদ্ধ হয়। চাঁদপুর সদরের বাইরে অন্যান্য উপজেলাতে অনেকগুলো খণ্ড যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। চাঁদপুরে যেসব ভাস্কর্য ও স্মৃতিফলক রয়েছে সেগুলির মধ্যে ‘অঙ্গীকার’ (ভাস্কর্য), ফরিদগঞ্জ উপজেলার শহীদদের নাম ও ঠিকানা উৎকীর্ণ স্মৃতিফলক ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’, মতলবের ‘দীপ্ত বাংলাদেশ’, চান্দ্রাকান্দি স্মৃতিসৌধ (সাদুল্লাহপুর, মতলব) উল্লেখযোগ্য। জেলার হাজীগঞ্জের রঘুনাথপুর বাজার, হামিদিয়া জুট মিলস্ প্রাঙ্গণ এবং রায় শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ এলাকায় বধ্যভূমি এবং হাজীগঞ্জের নাসিরকোটে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে।

শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৫৬.৮%; পুরুষ ৫৬.১%, মহিলা ৫৭.৩%। কলেজ ৪৭, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৭০, কিন্ডার গার্টেন ১১, গণশিক্ষা স্কুল ৭৬, ব্র্যাক স্কুল ২৮, কমিউনিটি স্কুল ৯৩, স্যাটেলাইট স্কুল ৩৭, মাদ্রাসা ১১৬৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: জিলানী চিশতি কলেজ, ফরিদগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, হাইমচর ডিগ্রি কলেজ, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজ, হাজীগঞ্জ মডেল কলেজ, মতলব কলেজ, হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, পুরান বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চরকালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, নাওভাঙ্গা জয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়, ফতেহপুর আবুল হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণপুর জুনিয়র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হাজীগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সাচার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, শাহরাস্তি মডেল স্কুল, আমানউল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, পাইকদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব জাফরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৪.৪২%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১২%, শিল্প ০.৯১%, ব্যবসা ১৬.১৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০৫%, নির্মাণ ২.২৭%, ধর্মীয় সেবা ০.৪০%, চাকরি ১৩.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৩৫% এবং অন্যান্য ১২.০৭%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক পত্রিকা: চাঁদপুর কণ্ঠ, চাঁদপুর দর্পণ, চাঁদপুর প্রবাহ, আলোকিত চাঁদপুর, ইলশেপাড়; সাপ্তাহিক পত্রিকা: চাঁদপুর, চাঁদপুর সংবাদ, রূপসী, দিবাচিত্র, হাজীগঞ্জ, রূপালী চাঁদপুর, দিবা কণ্ঠ, মতলব কণ্ঠ। পাক্ষিক পত্রিকা: কচুয়া কণ্ঠ, কচুয়া বার্তা; মাসিক: ফরিদগঞ্জ বার্তা, হেরার পয়গাম। অবলুপ্ত পত্র-পত্রিকা: নববঙ্গ (১৯৪৭), আলো (১৯৪৭), সাপ্তাহিক অন্যগ্রাম (১৯৬০), ভারত হিতৈষী, রক্ত পলাশ, রক্তিম সূর্য, মোহনা।

লোকসংস্কৃতি চাঁদপুরের লোকসাহিত্য মূলত বৃহত্তর কুমিল্লার লোক সাহিত্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর মধ্যে আছে লৌকিক পুরাকাহিনী, গাথা-গীতিকা, কিস্সা-কাহিনী, কিংবদন্তি, জনশ্রুতি, উপকথা-রূপকথা প্রভৃতি। এছাড়া আছে শুল্লুক, প্রবাদ-প্রবচন, দেহতত্ত্ব, পাঁইচালী, গাজির বট, যাত্রা, কবির গান ইত্যাদি। চাঁদপুরের উল্লেলখযোগ্য লোকগীতির মধ্যে কোন্দা, সরঙ্গা, পাতাম, পম, সুট, অথার লখাই, সারফোশ, কোলা ডিঙ্গি প্রভৃতি নৌকার উল্লেখ আছে। লোকক্রীড়ার মধ্যে হা-ডুডু, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্ললাছুট, ডাংগুলি, খুঁটিদাড়া, লাইখেলা, বউচি খেলা, কানামাছি, কমলাচুরি, বাঘবন্দী, পাঁচঘুঁটি, ষোলঘুঁটি, মার্বেল খেলা, কড়ি খেলা, কাঠি খেলা, কুমারী খেলা, সীম বীচি খেলা, লাটিম খেলা, কুৎকুৎ খেলা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এসব খেলার অনেকগুলোই বিলুপ্তির পথে। এছাড়াও বিভিন্ন নাট্যগোষ্ঠীর নাট্যচর্চাও এখানে পরিলক্ষিত হয়।

দর্শনীয়স্থান  জেলা ইলিশ চত্বর, সাহারপারের দিঘি, সাহেবগঞ্জ নীলকুঠি, রূপসা জমিদার বাড়ি, শ্রীশ্রী জগন্নাথ মন্দির। [আবুল খায়ের খান]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; চাঁদপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; চাঁদপুর জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।