ভোলা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
(হালনাগাদ) |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''ভোলা জেলা''' ([[বরিশাল বিভাগ|বরিশাল বিভাগ]]) আয়তন: | '''ভোলা জেলা''' ([[বরিশাল বিভাগ|বরিশাল বিভাগ]]) আয়তন: ৩৪০৩.৪৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা, মেঘনা নদী এবং শাহবাজপুর চ্যানেল, পশ্চিমে পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলা এবং তেঁতুলিয়া নদী। | ||
''জনসংখ্যা'' | ''জনসংখ্যা'' ১৭৭৬৭৯৫; পুরুষ ৮৮৪০৬৯, মহিলা ৮৯২৭২৬ (আদমশুমারি ২০১১)। মুসলিম ১৬৩০৪৬০, হিন্দু ৭২২৭৫, বৌদ্ধ ৯৯, খ্রিস্টান ৬৮ এবং অন্যান্য ২১৫ (আদমশুমারি ২০০১)। | ||
''জলাশয়'' মেঘনা, শাহবাজপুর চ্যানেল, তেঁতুলিয়া ও গণেশপুরা নদী এবং দারোগার খাল উল্লেখযোগ্য। | ''জলাশয়'' মেঘনা, শাহবাজপুর চ্যানেল, তেঁতুলিয়া ও গণেশপুরা নদী এবং দারোগার খাল উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রশাসন'' নোয়াখালী জেলার অধীনে ১৮৪৫ সালে ভোলা মহকুমা গঠিত হয়। দৌলতখানের আমানিয়া ছিল তখন এর প্রশাসনিক কেন্দ্র। ১৮৬৯ সালে মহকুমাটি বরিশালের সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন হাট নামক দুটি থানা এবং তালতলি, গাজীপুর ও তজমুদ্দিন নামক তিনটি আউটপোস্ট নিয়ে এই মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে দৌলতখান থেকে ভোলায় মহকুমা সদর স্থানান্তরিত হয়। ভোলা পৌরসভা গঠিত হয় ১৯২০ সালে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এটিকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে চর ফ্যাশন উপজেলা সর্ববৃহৎ ( | ''প্রশাসন'' নোয়াখালী জেলার অধীনে ১৮৪৫ সালে ভোলা মহকুমা গঠিত হয়। দৌলতখানের আমানিয়া ছিল তখন এর প্রশাসনিক কেন্দ্র। ১৮৬৯ সালে মহকুমাটি বরিশালের সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন হাট নামক দুটি থানা এবং তালতলি, গাজীপুর ও তজমুদ্দিন নামক তিনটি আউটপোস্ট নিয়ে এই মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে দৌলতখান থেকে ভোলায় মহকুমা সদর স্থানান্তরিত হয়। ভোলা পৌরসভা গঠিত হয় ১৯২০ সালে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এটিকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে চর ফ্যাশন উপজেলা সর্ববৃহৎ (১১০৬.৩১ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বোরহানউদ্দিন (২৮৪.৬৬ বর্গ কিমি)। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
১৬ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| | | ৩৪০৩.৪৮ || ৭ || ৫ || ৬৮ || ৩৮২ || ৪৩৯ || ২৪৩৩১৭ || ১৫৩৩৪৭৮ || ৫২২ || ৪৩.২ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
২৪ নং লাইন: | ২৪ নং লাইন: | ||
| উপজেলা নাম || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | উপজেলা নাম || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| | | চর ফ্যাশন || ১১০৬.৩১ || ১ || ১৯ || ৬৮ || ৭৭ || ৪৫৬৪৩৭ || ১০৬৯ || ৪৩.৫ | ||
|- | |- | ||
| তজুমদ্দিন | | তজুমদ্দিন || ৫১২.৯১ || - || ৫ || ৩৬ || ৭৫ || ১২৬৯৪০ || ২৪৭ || ৪২.৯ | ||
|- | |- | ||
| দৌলতখান | | দৌলতখান || ৩১৬.৯৯ || ১ || ৯ || ২৫ || ২৫ || ১৬৮৫৬৭ || ৫৩২ || ৪১.৬ | ||
|- | |- | ||
| বোরহানউদ্দিন | | বোরহানউদ্দিন || ২৮৪.৬৬ || ১ || ৯ || ৫৭ || ৪৬ || ২৩৩৮৬০ || ৮২২ || ৪৭.৯ | ||
|- | |- | ||
| ভোলা সদর | | ভোলা সদর || ৪১৩.১৬ || ১ || ১৩ || ৯২ || ১০৮ || ৪৩০৫২০ || ১০৪২ || ৪৫.২ | ||
|- | |- | ||
| মনপুরা | | মনপুরা || ৩৭৩.১৮ || - || ৪ || ১৮ || ৩০ || ৭৬৫৮২ || ২০৫ || ৩২.১ | ||
|- | |- | ||
| লালমোহন | | লালমোহন || ৩৯৬.২৪ || ১ || ৯ || ৫৩ || ৭৮ || ২৮৩৮৮৯ || ৭১৬ || ৪০.০ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১ , বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:BholaDistrict.jpg|thumb|right|400px]] | [[Image:BholaDistrict.jpg|thumb|right|400px]] | ||
''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে ভোলা সদর উপজেলার ঘুইংগার হাটে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১২১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৭ অক্টোবর ভোলা থেকে ১০ কিমি দূরে টনির হাট নামক স্থানে আনছার এডজুট্যান্ট আলী আকবর একদল মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে পাকবাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য অবস্থান নেয়। পাকবাহিনী এসে অতর্কিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ৮০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেক গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা ভোলা থেকে ৭ কিমি দূরে ঘুইংগার হাটে পাকসেনাদের উপর আক্রমন চালিয়ে ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা টনির হাটের নাম রাখেন বাংলাবাজার। ২২ অক্টোবর বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৫০ জন পাকসেনা ও তাদের সহযোগীরা নিহত হয়। পাকবাহিনী দৌলতখান উপজেলার তৎকালীন সার্কেল অফিসার আবদুল হামিদ ও তাঁর স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। চর ফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ও সুনামগঞ্জ ইউনিয়নের মাঝামাঝি স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও তজুমদ্দিন উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। | ''মুক্তিযুদ্ধ'' ১৯৭১ সালে ভোলা সদর উপজেলার ঘুইংগার হাটে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১২১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৭ অক্টোবর ভোলা থেকে ১০ কিমি দূরে টনির হাট নামক স্থানে আনছার এডজুট্যান্ট আলী আকবর একদল মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে পাকবাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য অবস্থান নেয়। পাকবাহিনী এসে অতর্কিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ৮০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেক গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা ভোলা থেকে ৭ কিমি দূরে ঘুইংগার হাটে পাকসেনাদের উপর আক্রমন চালিয়ে ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা টনির হাটের নাম রাখেন বাংলাবাজার। ২২ অক্টোবর বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৫০ জন পাকসেনা ও তাদের সহযোগীরা নিহত হয়। পাকবাহিনী দৌলতখান উপজেলার তৎকালীন সার্কেল অফিসার আবদুল হামিদ ও তাঁর স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। চর ফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ও সুনামগঞ্জ ইউনিয়নের মাঝামাঝি স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও তজুমদ্দিন উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলায় ১টি গণকবর রয়েছে; ২টি স্থানে স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৪৩.২%; পুরুষ ৪৩.৬%, মহিলা ৪২.৯%। কলেজ ২১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬৪, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৭২, কিন্ডার গার্টেন ১২, মাদ্রসা ২৫৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভোলা সরকারি কলেজ (১৯৬২), তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৯), বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), মনপুরা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৬), লালমোহন সরকারি শাহবাজপুর কলেজ, দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল (১৯১৭), ভোলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), চাঁদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), দৌলতখান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), ফজিলাতুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭২), লর্ড হার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চর ফ্যাশন চেয়ারম্যান হায়দার মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), চাঁদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৪৩), ভোলা দারুল হাদিস আলিয়া মাদ্রাসা, ইলিশা ফাতেমিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, কন্দ্রকপুর ইমলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, বোরহানউদ্দিন কামিল মাদ্রাসা, চাঁচড়া দাখিল মাদ্রসা। | |||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার | |||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৩.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৯৫%, শিল্প ০.৫০%, ব্যবসা ১২.৬৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪৭%, নির্মাণ ১.৫৫%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, চাকরি ৫.৭৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৪% এবং অন্যান্য ৭.৬৯%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৬৩.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৯৫%, শিল্প ০.৫০%, ব্যবসা ১২.৬৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪৭%, নির্মাণ ১.৫৫%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, চাকরি ৫.৭৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৪% এবং অন্যান্য ৭.৬৯%। | ||
৫৭ নং লাইন: | ৫৫ নং লাইন: | ||
''আরো দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরো দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভোলা জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; ভোলা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভোলা জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; ভোলা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Bhola District]] | [[en:Bhola District]] |
১৫:১১, ২৮ মে ২০২৩ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ভোলা জেলা (বরিশাল বিভাগ) আয়তন: ৩৪০৩.৪৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৫৪´ থেকে ২২°৫২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৩৪´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লক্ষ্মীপুর ও বরিশাল জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলা, মেঘনা নদী এবং শাহবাজপুর চ্যানেল, পশ্চিমে পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলা এবং তেঁতুলিয়া নদী।
জনসংখ্যা ১৭৭৬৭৯৫; পুরুষ ৮৮৪০৬৯, মহিলা ৮৯২৭২৬ (আদমশুমারি ২০১১)। মুসলিম ১৬৩০৪৬০, হিন্দু ৭২২৭৫, বৌদ্ধ ৯৯, খ্রিস্টান ৬৮ এবং অন্যান্য ২১৫ (আদমশুমারি ২০০১)।
জলাশয় মেঘনা, শাহবাজপুর চ্যানেল, তেঁতুলিয়া ও গণেশপুরা নদী এবং দারোগার খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন নোয়াখালী জেলার অধীনে ১৮৪৫ সালে ভোলা মহকুমা গঠিত হয়। দৌলতখানের আমানিয়া ছিল তখন এর প্রশাসনিক কেন্দ্র। ১৮৬৯ সালে মহকুমাটি বরিশালের সঙ্গে যুক্ত হয়। তখন দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন হাট নামক দুটি থানা এবং তালতলি, গাজীপুর ও তজমুদ্দিন নামক তিনটি আউটপোস্ট নিয়ে এই মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৭৬ সালে দৌলতখান থেকে ভোলায় মহকুমা সদর স্থানান্তরিত হয়। ভোলা পৌরসভা গঠিত হয় ১৯২০ সালে। ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এটিকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে চর ফ্যাশন উপজেলা সর্ববৃহৎ (১১০৬.৩১ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা বোরহানউদ্দিন (২৮৪.৬৬ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন(বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
৩৪০৩.৪৮ | ৭ | ৫ | ৬৮ | ৩৮২ | ৪৩৯ | ২৪৩৩১৭ | ১৫৩৩৪৭৮ | ৫২২ | ৪৩.২ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | |||||||||
উপজেলা নাম | আয়তন (বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
চর ফ্যাশন | ১১০৬.৩১ | ১ | ১৯ | ৬৮ | ৭৭ | ৪৫৬৪৩৭ | ১০৬৯ | ৪৩.৫ | |
তজুমদ্দিন | ৫১২.৯১ | - | ৫ | ৩৬ | ৭৫ | ১২৬৯৪০ | ২৪৭ | ৪২.৯ | |
দৌলতখান | ৩১৬.৯৯ | ১ | ৯ | ২৫ | ২৫ | ১৬৮৫৬৭ | ৫৩২ | ৪১.৬ | |
বোরহানউদ্দিন | ২৮৪.৬৬ | ১ | ৯ | ৫৭ | ৪৬ | ২৩৩৮৬০ | ৮২২ | ৪৭.৯ | |
ভোলা সদর | ৪১৩.১৬ | ১ | ১৩ | ৯২ | ১০৮ | ৪৩০৫২০ | ১০৪২ | ৪৫.২ | |
মনপুরা | ৩৭৩.১৮ | - | ৪ | ১৮ | ৩০ | ৭৬৫৮২ | ২০৫ | ৩২.১ | |
লালমোহন | ৩৯৬.২৪ | ১ | ৯ | ৫৩ | ৭৮ | ২৮৩৮৮৯ | ৭১৬ | ৪০.০ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১ , বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে ভোলা সদর উপজেলার ঘুইংগার হাটে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১২১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৭ অক্টোবর ভোলা থেকে ১০ কিমি দূরে টনির হাট নামক স্থানে আনছার এডজুট্যান্ট আলী আকবর একদল মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে পাকবাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য অবস্থান নেয়। পাকবাহিনী এসে অতর্কিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর আক্রমণ চালিয়ে ৮০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেক গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এসময় মুক্তিযোদ্ধারা ভোলা থেকে ৭ কিমি দূরে ঘুইংগার হাটে পাকসেনাদের উপর আক্রমন চালিয়ে ৫ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা টনির হাটের নাম রাখেন বাংলাবাজার। ২২ অক্টোবর বোরহানউদ্দিন উপজেলার দেউলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৫০ জন পাকসেনা ও তাদের সহযোগীরা নিহত হয়। পাকবাহিনী দৌলতখান উপজেলার তৎকালীন সার্কেল অফিসার আবদুল হামিদ ও তাঁর স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। চর ফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ ও সুনামগঞ্জ ইউনিয়নের মাঝামাঝি স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও তজুমদ্দিন উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জেলায় ১টি গণকবর রয়েছে; ২টি স্থানে স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়েছে।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৩.২%; পুরুষ ৪৩.৬%, মহিলা ৪২.৯%। কলেজ ২১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৬৪, প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯৭২, কিন্ডার গার্টেন ১২, মাদ্রসা ২৫৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ভোলা সরকারি কলেজ (১৯৬২), তজুমদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৯), বোরহানউদ্দিন মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৫), মনপুরা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৬), লালমোহন সরকারি শাহবাজপুর কলেজ, দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), বোরহানউদ্দিন হাইস্কুল (১৯১৭), ভোলা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), চাঁদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫২), দৌলতখান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৮), ফজিলাতুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭২), লর্ড হার্ডিঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চর ফ্যাশন চেয়ারম্যান হায়দার মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩২), চাঁদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৪৩), ভোলা দারুল হাদিস আলিয়া মাদ্রাসা, ইলিশা ফাতেমিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা, কন্দ্রকপুর ইমলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, বোরহানউদ্দিন কামিল মাদ্রাসা, চাঁচড়া দাখিল মাদ্রসা।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৩.৬৪%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৯৫%, শিল্প ০.৫০%, ব্যবসা ১২.৬৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৪৭%, নির্মাণ ১.৫৫%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, চাকরি ৫.৭৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৪% এবং অন্যান্য ৭.৬৯%।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: আজকের ভোলাবাণী, বাংলার কণ্ঠ, আজকের ভোলা; সাপ্তাহিক: ফ্যাশন বার্তা, উপকূল বার্তা, প্রথম আকাশ, দ্বীপবাণী; সাময়িকী: আহবান; অবলুপ্ত: লালসূর্য, মনপুরা বাণী, শ্যামলী, আজকের ভোলাবাসী, দৈনিক বাংলার কণ্ঠ, মাসিক পল্লী চিত্র, সময়ের শিখা, শ্রাবনী, দ্বীপশিখা ।
লোকসংস্কৃতি পল্লিগীতি, লালনগীতি, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, পালাগান, কবিগান, শিবের গাজন, মারফতি, হালখাতা, দুর্গাপূজা, চড়কপূজা উল্লেখযোগ্য।
দর্শনীয় স্থান চর কুকরী-মুকরী, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্মৃতি জাদুঘর (আলীনগর ইউনিয়ন, ভোলা সদর), মনপুরা দ্বীপ। [মো. শাখাওয়াত হোসেন]
আরো দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভোলা জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; ভোলা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।