রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
(Text replacement - "\[মুয়ায্যম হুসায়ন খান\]" to "[মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]")
 
১১ নং লাইন: ১১ নং লাইন:
মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ হামিদুর রহমানকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ হামিদুর রহমানকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।


সম্প্রতি হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ আমবাসা থেকে এনে ঢাকায় সমাহিত করা হয়েছে।  [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]
সম্প্রতি হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ আমবাসা থেকে এনে ঢাকায় সমাহিত করা হয়েছে।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]


[[en:Rahman, Birsrestha Mohammad Hamidur]]
[[en:Rahman, Birsrestha Mohammad Hamidur]]

১৬:০৯, ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর রহমান

রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর (১৯৪৫-১৯৭১)  ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সিপাহি এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে ১৯৪৫ সালে তাঁর জন্ম। ভারত বিভাগের (১৯৪৭) পর তাঁদের পরিবার পূর্ববঙ্গে এসে খুলনা জেলার খালিশপুরের ঘরোদায় স্থায়িভাবে বসবাস শুরু করেন। হামিদুর রহমান খালিশপুর প্রাইমারি স্কুলে এবং পরে স্থানীয় একটি নৈশ বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন এবং রেজিমেন্টের চট্টগ্রাম সেনানিবাস কেন্দ্রে তাঁকে নিয়োগদান করা হয়। ২৫ মার্চ রাতে পাকবাহিনীর আক্রমণের মুখে তিনি সেনানিবাস ত্যাগ করে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। পরে তিনি বর্তমান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ধলই নামক স্থানে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন।

পাকসেনাদের ধলই সীমান্ত ঘাঁটির সামরিক গুরুত্বের কারণে মুক্তিযোদ্ধারা ঘাঁটিটি দখলের পরিকল্পনা করে। প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘সি’ কোম্পানিকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়। হামিদুর রহমান ছিলেন এই কোম্পানির সদস্য। ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে অবিরাম সংঘর্ষ চলে। যুদ্ধের ফলাফল তখনও ছিল অনিশ্চিত। ২৮ অক্টোবরের পূর্ব রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের তিনটি প্লাটুন অতি সন্তর্পণে পাকসেনাদের ঘাঁটি অভিমুখে অগ্রসর হয়। শত্রুর ঘাঁটির কাছাকাছি এসে মুক্তিযোদ্ধারা যখন অতর্কিত আক্রমণের উদ্যোগ নেন, তখন অকস্মাৎ একটি মাইন বিস্ফোরণের শব্দে শত্রুপক্ষ সচকিত হয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী দুপক্ষে সংঘর্ষ চলে। উত্তর-পূর্ব দিক থেকে শত্রুপক্ষের এল.এম.জির গুলবর্ষণের ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রগতি ব্যাহত হয়।

এ সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে  হামিদুর রহমান শত্রুর এল.এম.জি পোস্ট ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি তাঁর দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্রেনেড হাতে রাতের অন্ধকারে সন্তর্পণে হামাগুড়ি দিয়ে শত্রুর এল.এম.জি পোস্টের দিকে অগ্রসর হন এবং রাতের শেষ প্রহরে গ্রেনেড ছুড়ে দুই এল.এম.জি চালককে হত্যা করেন। সঙ্গে সঙ্গে শত্রুর এল.এম.জি স্তব্ধ হয়ে যায়; কিন্তু নিজে তিনি শত্রুপক্ষের গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন (২৮ অক্টোবর ১৯৭১)।

এল.এম.জির গুলিবর্ষণ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায়। তীব্র আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর ঘাঁটি দখল করে নেয়। মুক্তিযোদ্ধারা হামিদুর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার অভ্যন্তরভাগে নিয়ে আসে। ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসায় তাঁকে সমাহিত করা হয়। ধলই সীমান্তে তাঁর শাহাদাত স্থলে পরবর্তী সময়ে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ হামিদুর রহমানকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

সম্প্রতি হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ আমবাসা থেকে এনে ঢাকায় সমাহিত করা হয়েছে।  [মুয়ায্‌যম হুসায়ন খান]