হুগলি মোহসীন কলেজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৩ নং লাইন: | ৩ নং লাইন: | ||
[[Image:HooglyMohsinCollege.jpg|thumb|400px|হুগলি মোহসীন কলেজ, চুঁচুড়া]] | [[Image:HooglyMohsinCollege.jpg|thumb|400px|হুগলি মোহসীন কলেজ, চুঁচুড়া]] | ||
১৮১২ সালে হাজী মুহম্মদ মোহসীনের মৃত্যুর পর অসৎ মুতাওয়াল্লীগণ তাদের নিজেদের অনুকূলে চিরস্থায়ী লিজের ব্যবস্থা করে জাল দলিল তৈরি করে। এ কারণে রাজস্ব বোর্ডকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। দীর্ঘকাল যাবৎ মামলা চলতে থাকে। ওই সময়ব্যাপী বার্ষিক আয়ের একটি বৃহৎ অংশ অব্যয়িত থাকে। ফলে পুঞ্জিত অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পেছনে ব্যয় করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন সরকারের সদর রাজস্ব বোর্ডের উপ-সচিব মি. ম্যাকনটেন। জনশিক্ষা সংক্রান্ত সাধারণ কমিটিকে এ প্রস্তাবের ওপর রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়। তদনুসারে নতুন প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হুগলিতে ১৮৩২ সালের ১৩ মার্চ একটি স্থানীয় কমিটি গঠন করা হয়। সিভিল সার্জন ড. টমাস এ. ওয়াইজকে এর সচিব করা হয়। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কমিশনার ডবিউ ব্রাডন, কালেক্টর ডাবিউ.এইচ বেলি, ম্যাজিস্ট্রেট ডি.সি স্মিথ এবং মুতাওয়াল্লী আকবর আলী খান। ১৮৩৬ সালের মার্চ মাসে সাধারণ কমিটি কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এতে ইংরেজি ও প্রাচ্যবিদ্যা এ দুটি বিভাগের কথা বলা হয়, যা সাধারণ কমিটির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং স্থানীয় কমিটি এতে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। | ১৮১২ সালে হাজী মুহম্মদ মোহসীনের মৃত্যুর পর অসৎ মুতাওয়াল্লীগণ তাদের নিজেদের অনুকূলে চিরস্থায়ী লিজের ব্যবস্থা করে জাল দলিল তৈরি করে। এ কারণে রাজস্ব বোর্ডকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। দীর্ঘকাল যাবৎ মামলা চলতে থাকে। ওই সময়ব্যাপী বার্ষিক আয়ের একটি বৃহৎ অংশ অব্যয়িত থাকে। ফলে পুঞ্জিত অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পেছনে ব্যয় করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন সরকারের সদর রাজস্ব বোর্ডের উপ-সচিব মি. ম্যাকনটেন। জনশিক্ষা সংক্রান্ত সাধারণ কমিটিকে এ প্রস্তাবের ওপর রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়। তদনুসারে নতুন প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হুগলিতে ১৮৩২ সালের ১৩ মার্চ একটি স্থানীয় কমিটি গঠন করা হয়। সিভিল সার্জন ড. টমাস এ. ওয়াইজকে এর সচিব করা হয়। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কমিশনার ডবিউ ব্রাডন, কালেক্টর ডাবিউ.এইচ বেলি, ম্যাজিস্ট্রেট ডি.সি স্মিথ এবং মুতাওয়াল্লী আকবর আলী খান। ১৮৩৬ সালের মার্চ মাসে সাধারণ কমিটি কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এতে ইংরেজি ও প্রাচ্যবিদ্যা এ দুটি বিভাগের কথা বলা হয়, যা সাধারণ কমিটির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং স্থানীয় কমিটি এতে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। | ||
২৭ নং লাইন: | ২৫ নং লাইন: | ||
১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে হুগলি কলেজে ৪০ জন ছাত্রী ছিল। ১৯৪৯ সালে ছাত্রীদের জন্য আলাদা শাখা মঞ্জুর করা হয়। | ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে হুগলি কলেজে ৪০ জন ছাত্রী ছিল। ১৯৪৯ সালে ছাত্রীদের জন্য আলাদা শাখা মঞ্জুর করা হয়। | ||
বর্তমানে (২০১১ সাল) কলেজটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত এবং কলেজ ম্যানেজমেন্ট সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে কলেজ ম্যানেজমেন্ট যে কয়টি কোর্স চালু রেখেছে, তা হলো; স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচ.ডি। কলেজে বর্তমানে দুটি ছাত্র আবাসিক হল রয়েছে যাতে মোট ৬৯ জন ছাত্রের থাকার সংকুলান হয়। হুগলী মোহসীন কলেজ সর্বদাই শিক্ষার উচ্চ মান বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করেছে এবং ইতিমধ্যে কলেজ তা অর্জন করেছে। | বর্তমানে (২০১১ সাল) কলেজটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত এবং কলেজ ম্যানেজমেন্ট সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে কলেজ ম্যানেজমেন্ট যে কয়টি কোর্স চালু রেখেছে, তা হলো; স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচ.ডি। কলেজে বর্তমানে দুটি ছাত্র আবাসিক হল রয়েছে যাতে মোট ৬৯ জন ছাত্রের থাকার সংকুলান হয়। হুগলী মোহসীন কলেজ সর্বদাই শিক্ষার উচ্চ মান বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করেছে এবং ইতিমধ্যে কলেজ তা অর্জন করেছে। [রচনা চক্রবর্তী] | ||
[রচনা চক্রবর্তী] | |||
[[en:Hughli Mohsin College]] | [[en:Hughli Mohsin College]] |
০৮:৫৮, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
হুগলি মোহসীন কলেজ হাজী মুহম্মদ মোহসীন ফান্ডের অর্থানুকুল্যে ১৮৩৬ সালের ১ আগস্ট এর যাত্রা শুরু করে। কলেজটি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় অবস্থিত। চিরকুমার মোহসীন ১৮০৬ সালের এপ্রিল মাসে ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার দলিল সম্পাদন করেন এবং তাঁর সম্পত্তি থেকে পুঞ্জিত আয়ের ব্যবস্থা করার জন্য দুজন মুতাওয়াল্লী নিয়োগ করেন। তিনি তাঁর সম্পদকে নয়টি ভাগে বিভক্ত করেন যার মধ্যে তিনভাগ ধর্মীয় কাজে উৎসর্গীকৃত হয়, চারভাগ পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক করে রাখা হয় এবং বাকি মুতাওয়াল্লীদের পারিশ্রমিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত হয়।
১৮১২ সালে হাজী মুহম্মদ মোহসীনের মৃত্যুর পর অসৎ মুতাওয়াল্লীগণ তাদের নিজেদের অনুকূলে চিরস্থায়ী লিজের ব্যবস্থা করে জাল দলিল তৈরি করে। এ কারণে রাজস্ব বোর্ডকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। দীর্ঘকাল যাবৎ মামলা চলতে থাকে। ওই সময়ব্যাপী বার্ষিক আয়ের একটি বৃহৎ অংশ অব্যয়িত থাকে। ফলে পুঞ্জিত অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পেছনে ব্যয় করার প্রস্তাব উত্থাপন করেন সরকারের সদর রাজস্ব বোর্ডের উপ-সচিব মি. ম্যাকনটেন। জনশিক্ষা সংক্রান্ত সাধারণ কমিটিকে এ প্রস্তাবের ওপর রিপোর্ট প্রদান করতে বলা হয়। তদনুসারে নতুন প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হুগলিতে ১৮৩২ সালের ১৩ মার্চ একটি স্থানীয় কমিটি গঠন করা হয়। সিভিল সার্জন ড. টমাস এ. ওয়াইজকে এর সচিব করা হয়। অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কমিশনার ডবিউ ব্রাডন, কালেক্টর ডাবিউ.এইচ বেলি, ম্যাজিস্ট্রেট ডি.সি স্মিথ এবং মুতাওয়াল্লী আকবর আলী খান। ১৮৩৬ সালের মার্চ মাসে সাধারণ কমিটি কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। এতে ইংরেজি ও প্রাচ্যবিদ্যা এ দুটি বিভাগের কথা বলা হয়, যা সাধারণ কমিটির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং স্থানীয় কমিটি এতে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
১৮৩৬ সালের ১ আগস্ট মাসিক ১৪২ টাকা ভাড়ায় দুবছরের লিজ নিয়ে চুঁচুড়ার হুগলী নদীর পশ্চিম তীরে প্যারনস্ হাউসে (Perron’s house) হুগলি কলেজ খোলা হয়। এর ফলে হুগলির ইমামবারার শিক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটে। ড. ওয়াইজ অধ্যক্ষ নিয়োজিত হন এবং কলেজটিকে সাধারণ কমিটির প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এডিনবরা রিভিউ কলেজটির প্রতিষ্ঠাকে ‘ভারতে জ্ঞানচর্চা দ্বারা উন্নতিসাধনের নব যুগের সূচনার অন্যতম প্রতীক’ হিসেবে অভিনন্দন জানায়।
শুরু থেকেই হুগলি কলেজ বিরাট সংখ্যক ছাত্রকে আকৃষ্ট করে। কলেজটির বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৫০,০০০ টাকা। কলেজটির জনপ্রিয়তার কারণসমূহ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অধ্যক্ষ তাঁর প্রথম রিপোর্টে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে উল্লেখ করেন নিকটবর্তী অঞ্চলে অসংখ্য ইংরেজি শিক্ষিত পরিবারের উপস্থিতি, কলেজ কর্তৃক প্রদত্ত শিক্ষাদানের ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতি এবং সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিনা বেতনে পড়াশোনা হত। ড. ওয়াইজ ১৮৩৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কলেজের দায়িত্বে ছিলেন এবং এরপর একে একে সাদারল্যান্ড, এসডেইল এবং আরও পরে ক্লিন্ট তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। ১৮৩৬ সালের শেষ দিকে ইংরেজি বিভাগে ১,০১৩ ও প্রাচ্যবিদ্যা বিভাগে ২২৩ জন ছাত্র ছিল। কিন্তু ১৮৩৭ সাল শেষ হওয়ার পর ইংরেজি বিভাগের ছাত্রসংখ্যা কমে ৭৫০ জনে দাঁড়ায়, অন্যদিকে প্রাচ্যবিদ্যা বিভাগে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭৪ জনে উন্নীত হয়। এর স্পষ্ট কারণ প্রতীয়মান হয় পার্শ্ববর্তী অঞ্চলসমূহে অনুরূপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্ভব। ১৮৪৪ সাল নাগাদ হুগলি কলেজের ছাত্ররা ইতঃপূর্বেই মাতৃভাষায় (বাংলা) দক্ষতা অর্জনের জন্য এতটা সুনাম অর্জন করে যে বাংলা প্রদেশের কোন কলেজ এ দিকটায় তাদের অতিক্রম করতে পারত না।
১৮৪৭ থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত সময়ে হুগলি কলেজে অনেকগুলি অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ঘটে। ১৮৪৬ সালের শেষ দিকে ইংরেজি বিভাগটি কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুল সেকশনে বিভক্ত হয়। ক্লাসসমূহও নতুন করে বিন্যস্ত করা হয়। ১৮৪৯ সালের পর কলেজের ছাত্রদের দু’এর স্থলে চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। ১৮৫৬ সালে সর্বোচ্চ শ্রেণিকে চতুর্থ শ্রেণি বলা হতো, অন্যদিকে সর্বনিম্ন শ্রেণিটি প্রথম শ্রেণি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরবর্তী বছর হুগলি কলেজকে নব প্রতিষ্ঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে, ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত বি.এ পরীক্ষায় এ কলেজ কোন পরীক্ষার্থী পাঠাতে পারে নি।
শিবপুরে প্রকৌশল কলেজ খোলা হলে ও প্রেসিডেন্সি কলেজকে অধিকতর পছন্দনীয় বিবেচনা করার ফলে মফস্বলের অন্যান্য আরও অনেক কলেজের ন্যায় এ কলেজটির নিয়তি ১৮৫৪ সাল থেকে আংশিক পড়ন্ত অবস্থায় পতিত হয়। ১৮৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৪৪২ জন ছাত্রের মধ্যে ১১ জন ছিল খ্রিস্টান ও চারজন মুসলামান। ১৮৫৭ সালের মে মাসে ৪৭৪ জনের মধ্যে মাত্র চারজন খ্রিস্টান ও আটজন মুসলমান ছাত্র ছিল। ১৮৬০ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ মুসলমান ছাত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩-এ পৌঁছায়।
১৮৬১ সালে হুগলি কলেজ এফ.এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য পরীক্ষার্থী পাঠায়। ১৮৮৬ সালে ছাত্ররা যে শুধু এফ.এ এবং বি.এ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয় তাই নয়, তারা এমনকি সম্মান ও এম.এ পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করে। আইন বিভাগও খোলা হয়।
১৮৬৪-৬৫ সাল নাগাদ হুগলি কলেজ মফস্বল কলেজগুলির মধ্যে সবচেয়ে সফল কলেজের মর্যাদা অর্জন করে। ১৮৭৬ সালে উদ্ভিদবিদ্যা ও ভৌতি বিজ্ঞানসমূহের পুস্তক কেনার জন্য কলেজটিকে ১,০০০ টাকার বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগটি খুবই খ্যাতি অর্জন করে। আইন বিভাগটি শুরুতে অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রমাণিত হলেও ১৮৭৯ সাল নাগাদ এর ছাত্রভর্তিতে নিম্নগতি পরিলক্ষিত হয়। তা সত্ত্বেও ১৮৮১ থেকে ১৮৮৬ তে কলেজের মোট ছাত্রসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়।
১৮৭২ সাল থেকে হুগলি কলেজের পুরো খরচ সরকার বহন করেছে। এ কলেজটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ভারত সরকার ৫০,০০০ টাকার একটি অতিরিক্ত অনুদান দেয়। মোহসীন ফান্ড থেকে প্রাপ্ত ৫০,০০০ টাকা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে নতুন মাদ্রাসা স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং স্কুল-কলেজে মুসলমান ছাত্রদের বৃত্তি ও বেতনের অংশবিশেষ দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। এ ফান্ড থেকে হুগলি মাদ্রাসার জন্য ৭,০০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
১৮৮৭ থেকে ১৯০৬ সাল পর্যন্ত সময় কলেজটির ইতিহাসে কালো অধ্যায় বলে বিবেচিত। এ সময়ে সংখ্যাগত ও গুণগত উভয় ভাবেই কলেজের মান নিচে নেমে যায়। ১৮৮৬ সালে অর্থ কমিটি সুপারিশ করে যে, সরকারের উচিত হুগলি কলেজ বন্ধ করে দেওয়া এবং ছাত্রদেরকে প্রেসিডেন্সি কলেজে স্থানান্তরিত করা। সৌভাগ্যক্রমে ১৮৯৭ সালে শিক্ষা বিভাগকে ঢেলে সাজানো হয় যাতে হুগলি কলেজের অধ্যক্ষ পদকে প্রাদেশিক চাকরিতে রূপান্তরিত করা হয়। এ পুনর্বিন্যাসের ফলে কলেজটি রক্ষা পায় এবং এটি টিকে থাকে।
বিশ শতকের তৃতীয় দশক নাগাদ অতিরিক্ত বিষয়ে অধিভুক্তি লাভ করে কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ইংরেজি, বাংলা, সংস্কৃত, ফারসি, উর্দু, ইতিহাস, যুক্তিবিদ্যা, গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্র পড়ানো শুরু করে। ডিগ্রি পর্যায়ে একই পাঠ্য বিষয়সমূহ ছাড়াও অর্থনীতি ও দর্শনশাস্ত্র পাঠদানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অনার্স পর্যায়ে পাঠদান করা হয় ইংরেজি, ইতিহাস, দর্শনশাস্ত্র, সংস্কৃত, গণিত ও পদার্থবিদ্যা বিষয়ে। ১৯০৭ সালে আইন বিভাগটি চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কলেজের মোট ছাত্রসংখ্যা নিয়মিতভাবে বাড়তে থাকে যা ১৯২৬ সালের ২৭৮ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৩০ সালে ৩০২-এ পৌঁছায়।
১৯৪৭ সালের ডিসেম্বর মাসে হুগলি কলেজে ৪০ জন ছাত্রী ছিল। ১৯৪৯ সালে ছাত্রীদের জন্য আলাদা শাখা মঞ্জুর করা হয়।
বর্তমানে (২০১১ সাল) কলেজটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত এবং কলেজ ম্যানেজমেন্ট সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমানে কলেজ ম্যানেজমেন্ট যে কয়টি কোর্স চালু রেখেছে, তা হলো; স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচ.ডি। কলেজে বর্তমানে দুটি ছাত্র আবাসিক হল রয়েছে যাতে মোট ৬৯ জন ছাত্রের থাকার সংকুলান হয়। হুগলী মোহসীন কলেজ সর্বদাই শিক্ষার উচ্চ মান বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করেছে এবং ইতিমধ্যে কলেজ তা অর্জন করেছে। [রচনা চক্রবর্তী]