হার্টগ, স্যার ফিলিপ জোসেফ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''হার্টগ, স্যার ফিলিপ জোসেফ''' (১৮৬৪-১৯৪৭)  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। ব্রিটিশ নাগরিক ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ১৮৬৪ সালের ২ মার্চ লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আলফন্সে হার্টগ ছিলেন ইহুদি বংশোদ্ভূত। এ পরিবারটি তাঁদের আদি বাসস্থান হল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে চলে যায় এবং প্যারিসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। আলফন্সে হার্টগ লন্ডনে ফরাসি ভাষার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন।
'''হার্টগ, স্যার ফিলিপ জোসেফ''' (১৮৬৪-১৯৪৭)  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। ব্রিটিশ নাগরিক ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ১৮৬৪ সালের ২ মার্চ লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আলফন্সে হার্টগ ছিলেন ইহুদি বংশোদ্ভূত। এ পরিবারটি তাঁদের আদি বাসস্থান হল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে চলে যায় এবং প্যারিসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। আলফন্সে হার্টগ লন্ডনে ফরাসি ভাষার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন।


[[Image:HartogSirPhilipJoseph.jpg|thumb|400px|স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ]]
জোসেফ হার্টগ লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ স্কুল এবং মানচেস্টারে ওয়েন্স কলেজে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮০ সালে বি.এসসি ডিগ্রি এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮৫ সালে রসায়নশাস্ত্রে বি.এসসি (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। বেশ কয়েক বছর হার্টগ ফ্রান্স ও জার্মানিতে রাসায়নিক গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।
জোসেফ হার্টগ লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ স্কুল এবং মানচেস্টারে ওয়েন্স কলেজে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮০ সালে বি.এসসি ডিগ্রি এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮৫ সালে রসায়নশাস্ত্রে বি.এসসি (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। বেশ কয়েক বছর হার্টগ ফ্রান্স ও জার্মানিতে রাসায়নিক গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।


হার্টগ ১৮৯১ সালে ম্যানচেস্টারে ওয়েন্স কলেজে রসায়নের সহকারি প্রভাষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। কিছুকালের জন্য তিনি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ প্রকল্পে খন্ডকালীন সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ প্রকল্পের চেয়ারম্যান ছিলেন টাউট। ১৯০৩ সাল থেকে দীর্ঘ সতের বছর তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার পদে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৬ সালে তাঁকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডিতে রাজার প্রতিনিধি-সদস্য হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সদস্য ছিলেন (১৯১৭)। এ কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন মাইকেল স্যাডলার। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার থাকাকালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জোসেফ হার্টগকে ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ বছরের জন্য নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দান করেন। তিনি ১৯২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের গভর্নর জেনারেল তাঁকে সি.আই.ই খেতাবে ভূষিত করেন। জোসেফ হার্টগ ১৯২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২৫ সালে হার্টগকে সম্মানসূচক এলএল.ডি ডিগ্রি প্রদান করে।
হার্টগ ১৮৯১ সালে ম্যানচেস্টারে ওয়েন্স কলেজে রসায়নের সহকারি প্রভাষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। কিছুকালের জন্য তিনি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ প্রকল্পে খন্ডকালীন সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ প্রকল্পের চেয়ারম্যান ছিলেন টাউট। ১৯০৩ সাল থেকে দীর্ঘ সতের বছর তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার পদে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৬ সালে তাঁকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডিতে রাজার প্রতিনিধি-সদস্য হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সদস্য ছিলেন (১৯১৭)। এ কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন মাইকেল স্যাডলার। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার থাকাকালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জোসেফ হার্টগকে ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ বছরের জন্য নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দান করেন। তিনি ১৯২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের গভর্নর জেনারেল তাঁকে সি.আই.ই খেতাবে ভূষিত করেন। জোসেফ হার্টগ ১৯২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২৫ সালে হার্টগকে সম্মানসূচক এলএল.ডি ডিগ্রি প্রদান করে।
[[Image:HartogSirPhilipJoseph.jpg|thumb|400px|স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ]]


ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ইন্ডিয়ান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য, ভারতীয় শিক্ষা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান (১৯২৮-২৯) এবং পরীক্ষাসমূহের নির্ভরযোগ্যতা অনুসন্ধানের জন্য গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ইংলিশ কমিটির ডিরেক্টর ছিলেন। ইন্ডিয়ান সট্যাটুটরি কমিশন কর্তৃক ভারতে শাসনতান্ত্রিক অগ্রগতি সম্পর্কিত তদন্তকার্যের অংশবিশেষ পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছিল। লন্ডনে বসবাসরত উদারপন্থী ইহুদীদের ধর্মমন্দির (সিন্যাগগ) পরিচালনা পর্ষদের তিনি একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৩০ সালে তাঁকে কে.বি.ই নিয়োগ করা হয়।
ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ইন্ডিয়ান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য, ভারতীয় শিক্ষা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান (১৯২৮-২৯) এবং পরীক্ষাসমূহের নির্ভরযোগ্যতা অনুসন্ধানের জন্য গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ইংলিশ কমিটির ডিরেক্টর ছিলেন। ইন্ডিয়ান সট্যাটুটরি কমিশন কর্তৃক ভারতে শাসনতান্ত্রিক অগ্রগতি সম্পর্কিত তদন্তকার্যের অংশবিশেষ পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছিল। লন্ডনে বসবাসরত উদারপন্থী ইহুদীদের ধর্মমন্দির (সিন্যাগগ) পরিচালনা পর্ষদের তিনি একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৩০ সালে তাঁকে কে.বি.ই নিয়োগ করা হয়।
১২ নং লাইন: ১১ নং লাইন:
হার্টগ ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, হিন্দি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে An Examination of Examinations (1935), The Marks of Examination (1936), Culture : Its History and Meaning.
হার্টগ ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, হিন্দি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে An Examination of Examinations (1935), The Marks of Examination (1936), Culture : Its History and Meaning.


১৯৪৭ সালের ২৭ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৪৭ সালের ২৭ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]
 
[মুয়ায্যম হুসায়ন খান]


[[en:Hartog, Sir Philip Joseph]]
[[en:Hartog, Sir Philip Joseph]]

০৬:৫৪, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

হার্টগ, স্যার ফিলিপ জোসেফ (১৮৬৪-১৯৪৭)  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। ব্রিটিশ নাগরিক ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ১৮৬৪ সালের ২ মার্চ লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আলফন্সে হার্টগ ছিলেন ইহুদি বংশোদ্ভূত। এ পরিবারটি তাঁদের আদি বাসস্থান হল্যান্ড থেকে ফ্রান্সে চলে যায় এবং প্যারিসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। আলফন্সে হার্টগ লন্ডনে ফরাসি ভাষার শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন।

স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ

জোসেফ হার্টগ লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ স্কুল এবং মানচেস্টারে ওয়েন্স কলেজে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮০ সালে বি.এসসি ডিগ্রি এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৮৫ সালে রসায়নশাস্ত্রে বি.এসসি (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন। বেশ কয়েক বছর হার্টগ ফ্রান্স ও জার্মানিতে রাসায়নিক গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন।

হার্টগ ১৮৯১ সালে ম্যানচেস্টারে ওয়েন্স কলেজে রসায়নের সহকারি প্রভাষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। কিছুকালের জন্য তিনি ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ প্রকল্পে খন্ডকালীন সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ প্রকল্পের চেয়ারম্যান ছিলেন টাউট। ১৯০৩ সাল থেকে দীর্ঘ সতের বছর তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার পদে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯১৬ সালে তাঁকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডিতে রাজার প্রতিনিধি-সদস্য হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সদস্য ছিলেন (১৯১৭)। এ কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন মাইকেল স্যাডলার। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্ট্রার থাকাকালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জোসেফ হার্টগকে ১৯২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ বছরের জন্য নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দান করেন। তিনি ১৯২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের গভর্নর জেনারেল তাঁকে সি.আই.ই খেতাবে ভূষিত করেন। জোসেফ হার্টগ ১৯২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯২৫ সালে হার্টগকে সম্মানসূচক এলএল.ডি ডিগ্রি প্রদান করে।

ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ইন্ডিয়ান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য, ভারতীয় শিক্ষা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান (১৯২৮-২৯) এবং পরীক্ষাসমূহের নির্ভরযোগ্যতা অনুসন্ধানের জন্য গঠিত একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার ইংলিশ কমিটির ডিরেক্টর ছিলেন। ইন্ডিয়ান সট্যাটুটরি কমিশন কর্তৃক ভারতে শাসনতান্ত্রিক অগ্রগতি সম্পর্কিত তদন্তকার্যের অংশবিশেষ পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছিল। লন্ডনে বসবাসরত উদারপন্থী ইহুদীদের ধর্মমন্দির (সিন্যাগগ) পরিচালনা পর্ষদের তিনি একজন সদস্য ছিলেন। ১৯৩০ সালে তাঁকে কে.বি.ই নিয়োগ করা হয়।

হার্টগ ইংরেজি, জার্মান, ফরাসি, হিন্দি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে An Examination of Examinations (1935), The Marks of Examination (1936), Culture : Its History and Meaning.

১৯৪৭ সালের ২৭ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [মুয়ায্যম হুসায়ন খান]