হোসেন, এ.এফ আতোয়ার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''হোসেন, এ.এফ আতোয়ার''' (১৯১৮-১৯৮৭) অর্থনীতিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক। ১৯১৮ সালের ২১ আগস্ট নোয়াখালী শহরে জন্মগ্রহণ করেন, সেখানে তাঁর পিতা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পিতা ছিলেন বগুড়া শহরের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য। আতোয়ার হোসেন [[নোয়াখালী জিলা স্কুল|নোয়াখালী জিলা স্কুল]] এবং [[ঢাকা কলেজ|ঢাকা কলেজ]] থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৩৮ সালে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্য গমন করেন এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস-এ ভর্তি হন। সেখানে তিনি ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থনীতি বিষয়ে বি.এসসি এবং এম.এসসি ডিগ্রি অর্জনের জন্য অধ্যয়ন করেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অতিরিক্ত প্রভাষক ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে একজন রিডার হিসেবে যোগদান করেন। | '''হোসেন, এ.এফ আতোয়ার''' (১৯১৮-১৯৮৭) অর্থনীতিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক। ১৯১৮ সালের ২১ আগস্ট নোয়াখালী শহরে জন্মগ্রহণ করেন, সেখানে তাঁর পিতা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পিতা ছিলেন বগুড়া শহরের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য। আতোয়ার হোসেন [[নোয়াখালী জিলা স্কুল|নোয়াখালী জিলা স্কুল]] এবং [[ঢাকা কলেজ|ঢাকা কলেজ]] থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৩৮ সালে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়|ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] থেকে অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্য গমন করেন এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস-এ ভর্তি হন। সেখানে তিনি ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থনীতি বিষয়ে বি.এসসি এবং এম.এসসি ডিগ্রি অর্জনের জন্য অধ্যয়ন করেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অতিরিক্ত প্রভাষক ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে একজন রিডার হিসেবে যোগদান করেন। | ||
[[Image:HusainAbulFazalAtwar.jpg|thumb|right|400px|এ.এফ আতোয়ার হোসেন]] | |||
১৯৫৩ সালে এ.এফ.এ হোসেনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রফেসর নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি বাণিজ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হন। প্রফেসর হোসেন ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ-এর বহু গবেষণাকর্মের দলনেতা ছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, এমপয়মেন্ট অব মিডল ক্লাস মুসলিম উইমেন ইন ঢাকা (১৯৫৮); রুরাল ক্রেডিট অ্যান্ড আন-এমপয়মেন্ট ইন পাকিস্তান (১৯৫৯); মার্কেটিং অব জুট ইন ইস্ট পাকিস্তান (১৯৬২); এবং সোশ্যাল ইন্টেগ্রেশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াকার্স ইন খুলনা (১৯৬৫)। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পটভূমিমূলক গবেষণা সিরিজের মধ্যে প্রফেসর হোসেন পারিবারিক সঞ্চয় (১৯৮৫) সম্পর্কিত গবেষণার একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আর.ডি ল্যাম্বার্ট এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বি.এফ হোসলিটজ কর্তৃক সম্পাদিত এবং ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত দ্য পিপল অব সেভিং অ্যান্ড ওয়েলথ ইন সাউদার্ন এশিয়া অ্যান্ড দ্য ওয়েস্ট শীর্ষক গ্রন্থে পাকিস্তানের ওপর অধ্যায়টি রচনা করেন। | ১৯৫৩ সালে এ.এফ.এ হোসেনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রফেসর নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি বাণিজ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হন। প্রফেসর হোসেন ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ-এর বহু গবেষণাকর্মের দলনেতা ছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, এমপয়মেন্ট অব মিডল ক্লাস মুসলিম উইমেন ইন ঢাকা (১৯৫৮); রুরাল ক্রেডিট অ্যান্ড আন-এমপয়মেন্ট ইন পাকিস্তান (১৯৫৯); মার্কেটিং অব জুট ইন ইস্ট পাকিস্তান (১৯৬২); এবং সোশ্যাল ইন্টেগ্রেশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াকার্স ইন খুলনা (১৯৬৫)। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পটভূমিমূলক গবেষণা সিরিজের মধ্যে প্রফেসর হোসেন পারিবারিক সঞ্চয় (১৯৮৫) সম্পর্কিত গবেষণার একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আর.ডি ল্যাম্বার্ট এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বি.এফ হোসলিটজ কর্তৃক সম্পাদিত এবং ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত দ্য পিপল অব সেভিং অ্যান্ড ওয়েলথ ইন সাউদার্ন এশিয়া অ্যান্ড দ্য ওয়েস্ট শীর্ষক গ্রন্থে পাকিস্তানের ওপর অধ্যায়টি রচনা করেন। | ||
১৯৫৬ সালে তিনি সিয়েটো-র ইকোনমিক অফিসার পদে নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা বোর্ডে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য হন এবং ১৯৭২ সালে তাঁর চাকরির অবসান হওয়া পর্যন্ত সেখানে কাজ করেন। | ১৯৫৬ সালে তিনি সিয়েটো-র ইকোনমিক অফিসার পদে নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা বোর্ডে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য হন এবং ১৯৭২ সালে তাঁর চাকরির অবসান হওয়া পর্যন্ত সেখানে কাজ করেন। |
১২:৩৪, ২৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
হোসেন, এ.এফ আতোয়ার (১৯১৮-১৯৮৭) অর্থনীতিবিদ, জাতীয় অধ্যাপক। ১৯১৮ সালের ২১ আগস্ট নোয়াখালী শহরে জন্মগ্রহণ করেন, সেখানে তাঁর পিতা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পিতা ছিলেন বগুড়া শহরের একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য। আতোয়ার হোসেন নোয়াখালী জিলা স্কুল এবং ঢাকা কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৩৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণিতে বি.এ সম্মান ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর তিনি সরকারি বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্য গমন করেন এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস-এ ভর্তি হন। সেখানে তিনি ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থনীতি বিষয়ে বি.এসসি এবং এম.এসসি ডিগ্রি অর্জনের জন্য অধ্যয়ন করেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অতিরিক্ত প্রভাষক ছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে একজন রিডার হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৫৩ সালে এ.এফ.এ হোসেনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের প্রফেসর নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি বাণিজ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হন। প্রফেসর হোসেন ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ-এর বহু গবেষণাকর্মের দলনেতা ছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, এমপয়মেন্ট অব মিডল ক্লাস মুসলিম উইমেন ইন ঢাকা (১৯৫৮); রুরাল ক্রেডিট অ্যান্ড আন-এমপয়মেন্ট ইন পাকিস্তান (১৯৫৯); মার্কেটিং অব জুট ইন ইস্ট পাকিস্তান (১৯৬২); এবং সোশ্যাল ইন্টেগ্রেশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়াকার্স ইন খুলনা (১৯৬৫)। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য পটভূমিমূলক গবেষণা সিরিজের মধ্যে প্রফেসর হোসেন পারিবারিক সঞ্চয় (১৯৮৫) সম্পর্কিত গবেষণার একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আর.ডি ল্যাম্বার্ট এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বি.এফ হোসলিটজ কর্তৃক সম্পাদিত এবং ইউনেস্কো কর্তৃক প্রকাশিত দ্য পিপল অব সেভিং অ্যান্ড ওয়েলথ ইন সাউদার্ন এশিয়া অ্যান্ড দ্য ওয়েস্ট শীর্ষক গ্রন্থে পাকিস্তানের ওপর অধ্যায়টি রচনা করেন।
১৯৫৬ সালে তিনি সিয়েটো-র ইকোনমিক অফিসার পদে নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা বোর্ডে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের একজন সদস্য হন এবং ১৯৭২ সালে তাঁর চাকরির অবসান হওয়া পর্যন্ত সেখানে কাজ করেন।
বাংলাদেশে ফিরে এসে একজন পরামর্শক হিসেবে তিনি বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সালে লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয়ে একজন পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৭৬-৭৭ মেয়াদে বিআইডিএস-এর ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। ১৯৮০ সালে মালয়েশিয়ার সারাওয়াক-এ এফএও-ইউএনডিপি-র অর্থায়নে গ্রামীণ দারিদ্র্য বিষয়ক গবেষণাকর্মের তিনি দলনেতা ছিলেন। সবশেষে তিনি বাংলাদেশ সরকারের অর্থ, ব্যাংক এবং ঋণসম্পর্কিত কমিশন-এর চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন। তিনি বহু সরকারি কমিটি এবং কমিশনে কাজ করেন। তিনি পাকিস্তান অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। তিনি ইকোনমিক এপ্রেইজাল কমিটিরও একজন সদস্য ছিলেন।
১৯৮৭ সালে প্রফেসর এ.এফ.এ হোসেনকে জাতীয় অধ্যাপক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু এ নিয়োগের মাত্র এক সপ্তাহ পর তাঁর মৃত্যু হয়। [এম. হবিবুল্লাহ্]