সাত্তার, বিচারপতি আবদুস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''সাত্তার, বিচারপতি আবদুস '''(১৯০৬-১৯৮৫) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। আবদুস সাত্তার ১৯০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুরের দাড়কা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ এবং ১৯২৯ সালে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতা জজকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এসময় তিনি এ.কে ফজলুল হকের কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। আবদুস সাত্তার ১৯৪১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর (১৯৩৯), কলকাতা ইম্প্রুভমেণ্ট ট্রাইব্যুনালের অ্যাসেসর-মেম্বর (১৯৪০-৪২) এবং কলকাতা কর্পোরেশনের মুখ্য নির্বাহি কর্মকর্তা (১৯৪৫) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। | [[Image:SattarJusticeAbdus.jpg|thumb|400px|বিচারপতি আবদুস সাত্তার]] | ||
'''সাত্তার, বিচারপতি আবদুস''' (১৯০৬-১৯৮৫) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। আবদুস সাত্তার ১৯০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুরের দাড়কা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ এবং ১৯২৯ সালে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতা জজকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এসময় তিনি এ.কে ফজলুল হকের কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। আবদুস সাত্তার ১৯৪১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর (১৯৩৯), কলকাতা ইম্প্রুভমেণ্ট ট্রাইব্যুনালের অ্যাসেসর-মেম্বর (১৯৪০-৪২) এবং কলকাতা কর্পোরেশনের মুখ্য নির্বাহি কর্মকর্তা (১৯৪৫) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। | |||
ভারত বিভক্তির পর আবদুস সাত্তার ঢাকায় এসে (১৯৫০) ঢাকা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে কৃষক-শ্রমিক পার্টি গঠিত হলে তিনি তাতে যোগ দেন। তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আই.আই চুন্দ্রিগড়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন (১৯৫৭)। আবদুস সাত্তার ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি এবং ১৯৬৮-৬৯ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬৯-৭২ সালে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বিচারপতি সাত্তার ১৯৭৩ সালের শেষদিকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসার পর বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জীবনবীমা কর্পোরেশনের পরিচালক মন্ডলীর চেয়ারম্যান (১৯৭৩-৭৪), সংবাদপত্র বেতন বোর্ডের চেয়ারম্যান (১৯৭৪-৭৫) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এর চেয়ারম্যান ছিলেন। | ভারত বিভক্তির পর আবদুস সাত্তার ঢাকায় এসে (১৯৫০) ঢাকা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে কৃষক-শ্রমিক পার্টি গঠিত হলে তিনি তাতে যোগ দেন। তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আই.আই চুন্দ্রিগড়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন (১৯৫৭)। আবদুস সাত্তার ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি এবং ১৯৬৮-৬৯ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬৯-৭২ সালে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বিচারপতি সাত্তার ১৯৭৩ সালের শেষদিকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসার পর বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জীবনবীমা কর্পোরেশনের পরিচালক মন্ডলীর চেয়ারম্যান (১৯৭৩-৭৪), সংবাদপত্র বেতন বোর্ডের চেয়ারম্যান (১৯৭৪-৭৫) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এর চেয়ারম্যান ছিলেন। | ||
জাস্টিস আবদুস সাত্তার ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের বিশেষ উপদেষ্টা নিযুক্ত হন এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলের (জাগদল) আহবায়ক ছিলেন বিচারপতি সাত্তার। কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি এ দল বিলুপ্ত ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে নবগঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-সভাপতি পদে যোগদান করেন। | জাস্টিস আবদুস সাত্তার ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের বিশেষ উপদেষ্টা নিযুক্ত হন এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলের (জাগদল) আহবায়ক ছিলেন বিচারপতি সাত্তার। কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি এ দল বিলুপ্ত ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে নবগঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-সভাপতি পদে যোগদান করেন। |
০৯:৫৮, ১৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সাত্তার, বিচারপতি আবদুস (১৯০৬-১৯৮৫) বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। আবদুস সাত্তার ১৯০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুরের দাড়কা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এ এবং ১৯২৯ সালে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতা জজকোর্টে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এসময় তিনি এ.কে ফজলুল হকের কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগ দেন। আবদুস সাত্তার ১৯৪১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর (১৯৩৯), কলকাতা ইম্প্রুভমেণ্ট ট্রাইব্যুনালের অ্যাসেসর-মেম্বর (১৯৪০-৪২) এবং কলকাতা কর্পোরেশনের মুখ্য নির্বাহি কর্মকর্তা (১৯৪৫) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ভারত বিভক্তির পর আবদুস সাত্তার ঢাকায় এসে (১৯৫০) ঢাকা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৩ সালে কৃষক-শ্রমিক পার্টি গঠিত হলে তিনি তাতে যোগ দেন। তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আই.আই চুন্দ্রিগড়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন (১৯৫৭)। আবদুস সাত্তার ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা হাইকোর্টের বিচারপতি এবং ১৯৬৮-৬৯ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তিনি ১৯৬৯-৭২ সালে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বিচারপতি সাত্তার ১৯৭৩ সালের শেষদিকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসার পর বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ জীবনবীমা কর্পোরেশনের পরিচালক মন্ডলীর চেয়ারম্যান (১৯৭৩-৭৪), সংবাদপত্র বেতন বোর্ডের চেয়ারম্যান (১৯৭৪-৭৫) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এর চেয়ারম্যান ছিলেন।
জাস্টিস আবদুস সাত্তার ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের বিশেষ উপদেষ্টা নিযুক্ত হন এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলের (জাগদল) আহবায়ক ছিলেন বিচারপতি সাত্তার। কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি এ দল বিলুপ্ত ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে নবগঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সহ-সভাপতি পদে যোগদান করেন।
১৯৮১ সালের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হলে তিনি দেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারম্যান হন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সেনাপ্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ কর্তৃক এক সামরিক অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার ক্ষমতাচ্যুত হন। ১৯৮৫ সালের ৫ অক্টোবর তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। [মোফাখ্খার হোসাইন খান]