সখের হাঁড়ি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''সখের হাঁড়ি''' মৃৎশিল্পের একটি শাখা। বিশেষ শৈল্পিক উদ্দেশে মাটির হাঁড়িতে চিত্রিত লোকশিল্প। সখের হাঁড়ি বাংলার প্রাচীনতম লোকশিল্পের অন্যতম। ১৪০৬ খ্রিস্টাব্দে চীনা পর্যটক মা-হুয়ানের ভ্রমণবৃত্তান্তে এরূপ চিত্রিত হাঁড়ির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। | '''সখের হাঁড়ি''' মৃৎশিল্পের একটি শাখা। বিশেষ শৈল্পিক উদ্দেশে মাটির হাঁড়িতে চিত্রিত লোকশিল্প। সখের হাঁড়ি বাংলার প্রাচীনতম লোকশিল্পের অন্যতম। ১৪০৬ খ্রিস্টাব্দে চীনা পর্যটক মা-হুয়ানের ভ্রমণবৃত্তান্তে এরূপ চিত্রিত হাঁড়ির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। | ||
[[Image:SakherHandi.jpg|thumb|right|400px|সখের হাঁড়ি]] | |||
ধর্ম-সম্পৃক্ত বিবিধ হাঁড়িচিত্র আছে; তন্মধ্যে সখের হাঁড়ি লোকচিত্রের বর্ণাঢ্য নমুনা বহন করে। ধর্ম-সম্পৃক্ততা না থাকলেও সখের হাঁড়ি একেবারেই আচার-বর্জিত নয়। চাঁপাই নবাবগঞ্জে মেয়ে বিদায়ের (প্রথম সন্তান প্রসবের পর পিত্রালয় ত্যাগের) সময় সখের হাঁড়ি তার সঙ্গে দেওয়া হয়। এর অপর দুটি নাম হলো ‘সখের চুকাই’ ও ‘ঝাঁপি’। এর সঙ্গে সাদা-মাটা আরও দুটি মাটির পাত্র দেওয়া হয় যা ‘সিকার হাঁড়ি’ ও ‘বাটা’ নামে পরিচিত। | ধর্ম-সম্পৃক্ত বিবিধ হাঁড়িচিত্র আছে; তন্মধ্যে সখের হাঁড়ি লোকচিত্রের বর্ণাঢ্য নমুনা বহন করে। ধর্ম-সম্পৃক্ততা না থাকলেও সখের হাঁড়ি একেবারেই আচার-বর্জিত নয়। চাঁপাই নবাবগঞ্জে মেয়ে বিদায়ের (প্রথম সন্তান প্রসবের পর পিত্রালয় ত্যাগের) সময় সখের হাঁড়ি তার সঙ্গে দেওয়া হয়। এর অপর দুটি নাম হলো ‘সখের চুকাই’ ও ‘ঝাঁপি’। এর সঙ্গে সাদা-মাটা আরও দুটি মাটির পাত্র দেওয়া হয় যা ‘সিকার হাঁড়ি’ ও ‘বাটা’ নামে পরিচিত। | ||
সখের হাঁড়ির দুটি ধারা আছে– একটি রাজশাহীর বাঁয়া, বসন্তপুর ও নবাবগঞ্জের বারোঘরিয়া এবং অপরটি নওগাঁর বাঙ্গাল পাড়া। প্রথম ধারায় হাঁড়ির হলদে জমিনের ওপর লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের মাছ, পাখি ও অর্ধস্ফুট পদ্ম এবং দলদাম (জলজ গো-খাদ্য) অঙ্কিত হয়। নওগাঁ জেলার নলডাঙ্গা হাটের অদূরবর্তী বাঙ্গাল পাড়ায় ৪০-৫০ ঘর কুমারের মধ্যে ৮-৯ ঘর বৈষ্ণব বাস করে। তারা ভিন্ন রীতিতে সখের হাঁড়ি তৈরি করে। লাল জমিনের ওপর তারা সাদা-কালো ও সরষে ফুলের রঙে মাছ, চিরুনি, পাখি ও পদ্মের মোটিফ অাঁকে। উভয় স্থানের ছবিই রীতিনিষ্ঠ এবং অনন্য। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। [তোফায়েল আহমদ] | সখের হাঁড়ির দুটি ধারা আছে– একটি রাজশাহীর বাঁয়া, বসন্তপুর ও নবাবগঞ্জের বারোঘরিয়া এবং অপরটি নওগাঁর বাঙ্গাল পাড়া। প্রথম ধারায় হাঁড়ির হলদে জমিনের ওপর লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের মাছ, পাখি ও অর্ধস্ফুট পদ্ম এবং দলদাম (জলজ গো-খাদ্য) অঙ্কিত হয়। নওগাঁ জেলার নলডাঙ্গা হাটের অদূরবর্তী বাঙ্গাল পাড়ায় ৪০-৫০ ঘর কুমারের মধ্যে ৮-৯ ঘর বৈষ্ণব বাস করে। তারা ভিন্ন রীতিতে সখের হাঁড়ি তৈরি করে। লাল জমিনের ওপর তারা সাদা-কালো ও সরষে ফুলের রঙে মাছ, চিরুনি, পাখি ও পদ্মের মোটিফ অাঁকে। উভয় স্থানের ছবিই রীতিনিষ্ঠ এবং অনন্য। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। [তোফায়েল আহমদ] |
১০:৩০, ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সখের হাঁড়ি মৃৎশিল্পের একটি শাখা। বিশেষ শৈল্পিক উদ্দেশে মাটির হাঁড়িতে চিত্রিত লোকশিল্প। সখের হাঁড়ি বাংলার প্রাচীনতম লোকশিল্পের অন্যতম। ১৪০৬ খ্রিস্টাব্দে চীনা পর্যটক মা-হুয়ানের ভ্রমণবৃত্তান্তে এরূপ চিত্রিত হাঁড়ির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়।
ধর্ম-সম্পৃক্ত বিবিধ হাঁড়িচিত্র আছে; তন্মধ্যে সখের হাঁড়ি লোকচিত্রের বর্ণাঢ্য নমুনা বহন করে। ধর্ম-সম্পৃক্ততা না থাকলেও সখের হাঁড়ি একেবারেই আচার-বর্জিত নয়। চাঁপাই নবাবগঞ্জে মেয়ে বিদায়ের (প্রথম সন্তান প্রসবের পর পিত্রালয় ত্যাগের) সময় সখের হাঁড়ি তার সঙ্গে দেওয়া হয়। এর অপর দুটি নাম হলো ‘সখের চুকাই’ ও ‘ঝাঁপি’। এর সঙ্গে সাদা-মাটা আরও দুটি মাটির পাত্র দেওয়া হয় যা ‘সিকার হাঁড়ি’ ও ‘বাটা’ নামে পরিচিত।
সখের হাঁড়ির দুটি ধারা আছে– একটি রাজশাহীর বাঁয়া, বসন্তপুর ও নবাবগঞ্জের বারোঘরিয়া এবং অপরটি নওগাঁর বাঙ্গাল পাড়া। প্রথম ধারায় হাঁড়ির হলদে জমিনের ওপর লাল, নীল, সবুজ ও কালো রঙের মাছ, পাখি ও অর্ধস্ফুট পদ্ম এবং দলদাম (জলজ গো-খাদ্য) অঙ্কিত হয়। নওগাঁ জেলার নলডাঙ্গা হাটের অদূরবর্তী বাঙ্গাল পাড়ায় ৪০-৫০ ঘর কুমারের মধ্যে ৮-৯ ঘর বৈষ্ণব বাস করে। তারা ভিন্ন রীতিতে সখের হাঁড়ি তৈরি করে। লাল জমিনের ওপর তারা সাদা-কালো ও সরষে ফুলের রঙে মাছ, চিরুনি, পাখি ও পদ্মের মোটিফ অাঁকে। উভয় স্থানের ছবিই রীতিনিষ্ঠ এবং অনন্য। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। [তোফায়েল আহমদ]