শিলা ও মণিক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৩২ নং লাইন: | ৩২ নং লাইন: | ||
Image:RocksAndMinerals8.jpg|ল্যাটেরাইট (সিলেট) | Image:RocksAndMinerals8.jpg|ল্যাটেরাইট (সিলেট) | ||
Image:RocksAndMinerals9.jpg| | Image:RocksAndMinerals9.jpg|চুনাপাথর (সীতাকুন্ড) | ||
Image:RocksAndMinerals10.jpg|চুনাপাথর ( | Image:RocksAndMinerals10.jpg|জীবাশ্মসমৃদ্ধ চুনাপাথর (সিলেট) | ||
Image:RocksAndMinerals11.jpg|পিন্ডজ শিলা (বান্দরবান) | Image:RocksAndMinerals11.jpg|পিন্ডজ শিলা (বান্দরবান) |
০৮:৫৪, ১৬ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
শিলা ও মণিক প্রাকৃতিকভাবে গঠিত এবং সুনির্দিষ্ট রাসায়নিক গঠনবিশিষ্ট অজৈব পদার্থকে মণিক বলা হয়। শিলার গঠনকারী উপাদান হচ্ছে মণিক। আরও সাধারণ অর্থে, খনি থেকে উত্তোলনযোগ্য এবং অর্থনৈতিকভাবে মূল্যবান এমন যেকোন পদার্থকেই মণিক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে, যেমন- কয়লা ও খনিজ তেল জৈব উৎস থেকে উৎপন্ন হলেও এরা মণিক। পানির কেলাসিত রূপ বরফও একটি মণিক। ভূত্বক শিলা দ্বারা গঠিত। ভূত্বকে প্রাপ্ত শিলা তিনপ্রকার, যথা- আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলা এবং রূপান্তরিত শিলা। ম্যাগমা বা গলিত শিলা ভূ-পৃষ্ঠে অথবা ভূগর্ভে ঠান্ডা হয়ে কঠিন রূপ লাভ করলে তাকে আগ্নেয় শিলা বলা হয়। গ্রানাইট, পেগমাটাইট, গ্রানোডায়োরাইট, টোনালাইট, ডায়োরাইট, ডলেরাইট, গ্যাব্রো প্রভৃতি বাংলাদেশের কয়েকটি আগ্নেয় শিলার উদাহরণ। পানি, বায়ু অথবা হিমবাহ দ্বারা সঞ্চিত পদার্থ চাপে স্তরীভূত হয়ে পাললিক শিলা গঠন করে থাকে। বাংলাদেশের পাললিক শিলাসমূহ হচ্ছে বেলেপাথর, পলিপাথর, কর্দমশিলা, চুনাপাথর প্রভৃতি। উচ্চ চাপ অথবা তাপ কিংবা রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে আগ্নেয় অথবা পাললিক শিলা পরিবর্তিত হয়ে রূপান্তরিত শিলা গঠিত হয়, যেমন- সিস্ট, নিস, অ্যাম্ফিবোলাইট প্রভৃতি বাংলাদেশের কয়েকটি রূপান্তরিত শিলা।
ইতিহাস ভারতীয় উপমহাদেশে মণিক আহরণ এবং তার সর্বোচ্চ ব্যবহারের মধ্যেই মূলত শিলা-মণিক সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল। ১৯৫৬ সালে ভারতে শিল্প আইন প্রণীত হলে তাতে মণিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালে মণিক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করা হয়, যা আরও পরে ১৯৮৮ সালে আরও সুনির্দিষ্ট নীতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। রেলপথ সম্প্রসারিত হওয়ার পর সারা ভারত জুড়ে ধাতব ও রাসায়নিক পদার্থের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ১৯৫৫ সাল থেকে বাংলাদেশে গ্যাস, খনিজ তেল, কয়লা, পিট, চীনামাটি, নুড়িপাথর, কঠিন শিলা, নির্মাণ বালি, কাঁচবালি, সৈকত বালি ভারি মণিক, ইটের মাটি প্রভৃতি মণিক আবিষ্কৃত হয়েছে। কালক্রমে উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এসকল প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশের মণিক নীতি মণিক নীতি অনুযায়ী দেশের সকল প্রকার মণিকের মালিক সরকার। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে সরকার কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মণিক নীতি প্রণয়ন করেছে। এদের মধ্যে উলেখযোগ্য হচ্ছে খনি ও মণিক (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন ১৯৯২, পরিবেশ অধ্যাদেশ ১৯৯৪, জাতীয় জ্বালানি নীতি ১৯৯৫, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৭ প্রভৃতি। তবে বর্তমানের চাহিদা মোকাবেলার লক্ষ্যে ১৯৯২ সালের খনি ও মণিক আইনটির সংশোধনের একটি প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বাংলাদেশে মুক্ত বাজার অর্থনীতি চালু করার পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং নতুন শিল্প নীতিতে (১৯৯২ সালে সংশোধিত) বিদেশী বেসরকারি বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে প্রক্রিয়াগত বাধা অপসারণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যান্য খনিজ সম্পদের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল আহরণ দেশে বিদেশী বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
শিলা ও মণিক নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ খনিজ সম্পদ খাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর- জিএসবি (Geological Survey of Bangladesh-GSB), পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন-বিপিসি ও ব্যুরো অব মিনারেল ডেভেলপমেন্ট (Bureau of Mineral Development) এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।
মণিক সঞ্চয়ন নুড়িপাথর, কাঁচবালি, নির্মাণ বালি, পিট ও খনিজ বালি নবীন (হলোসিন) পললে প্রাপ্ত মণিকসমূহ; দেশের উত্তরাংশের ক্ষুদ্র পাহাড়সারিতে বিদ্যমান নবীন পাইসটোসিন পললে পাওয়া গিয়েছে চীনামাটি। দেশের উত্তরপশ্চিমাংশে ভূগর্ভেও চীনামাটি এবং কাঁচবালির সঞ্চয়ন আবিষ্কৃত হয়েছে। চুনাপাথর, নির্মাণ বালি, নুড়িপাথর, কাঁচবালি, চীনামাটি এবং খনিজ বালি স্বল্প মাত্রায় আহরণ করা হচ্ছে। ভূগর্ভে অবস্থিত মজুত থেকে চীনামাটি ও কাঁচবালির উত্তোলন এখনও শুরু হয় নি। বর্তমানে ভূগর্ভস্থ খনি থেকে কয়লা ও কঠিন শিলার আহরণ কাজ চলছে।
ধাতব মণিক জিএসবি পরিচালিত জরিপে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে সংগৃহীত নমুনায় আপেক্ষিকভাবে অধিক পরিমাণে ধাতব মণিকসমৃদ্ধ পদার্থ চ্যালকোপাইরাইট, বোর্নাইট, চ্যালকোসাইট, কোভেলাইন, গ্যালেনা, স্ফ্যালেরাইট প্রভৃতি পাওয়া গিয়েছে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভূগর্ভে প্রাপ্ত আগ্নেয় শিলার (volcanic rock) বিশেষণে রৌপ্য (২৫ পিপিএম), দস্তা (৮৮.৮ পিপিএম), তামা (৩৭.২৫ পিপিএম) ও আর্সেনিক (৮ পিপিএম) এবং সামান্য পরিমাণে স্বর্ণের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে।
শিলা ও মণিকের নমুনা
-
বেলেপাথর কনক্রিশন (কক্সবাজার ও টেকনাফ)
-
কোকুইনা (সেন্টমার্টিনস দ্বীপ)
-
শেল (রাঙ্গামাটি)
-
প্রবাল (সেন্টমার্টিনস দ্বীপ)
-
পিট (খুলনা)
-
শিলায়িত কাঠ (লাইমাই, কুমিল্লা)
-
ল্যাটেরাইট (সিলেট)
-
ল্যাটেরাইট (সিলেট)
-
চুনাপাথর (সীতাকুন্ড)
-
জীবাশ্মসমৃদ্ধ চুনাপাথর (সিলেট)
-
পিন্ডজ শিলা (বান্দরবান)
-
পাইরাইটসহ নাইস শিলা (দিনাজপুর কঠিন শিলা)
-
অঙ্গারময় শেল (সিলেট)
-
গ্রানাইট (দিনাজপুর)
খনিজ বালি উপকূলীয় তটরেখায় এবং উপকূলবর্তী দ্বীপসমূহে খনিজ বালির মজুতের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন প্রকার সৈকত বালি ভারি মণিকসমূহ হচ্ছে জিরকন (১,৫৮,১১৭ মে টন), রুটাইল (৭০,২৭৪ মে টন), ইলমেনাইট (১০,২৫,৫৫৮ মে টন), লিউকক্সিন (৯৬,৭০৯ মে টন), কায়ানাইট (৯০,৭৪৫ মে টন), গারনেট (২,২২,৭৬১ মে টন), ম্যাগনেটাইট (৮০,৫৯৯ মে টন) এবং মোনাজাইট (১৭,৩৫২ মে টন)। একটি অস্ট্রেলীয় কোম্পানি এসকল ভারি মণিক আহরণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে সমীক্ষাকার্য পরিচালনার অনুমতির জন্য সরকারের নিকট আবেদন করেছে।
শিলা শিলা হলো আমাদের ভূ-ত্বকের গাঠনিক একক যা বিভিন্ন প্রকার মণিকের সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। গাঠনিক প্রক্রিয়া এবং ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যাবলীর পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে শিলাসমূহকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- আগ্নেয়শিলা, পাললিক শিলা ও রূপান্তরিত শিলা। ভূ-পৃষ্ঠের অভ্যন্তরের উত্তপ্ত গলিত পদার্থ যা ম্যাগমা নামে পরিচিত, শীতলীকরণের মাধ্যমে আগ্নেয় শিলা গঠিত হয়। এই শীতলীকরণ ভূ-অভ্যন্তর এবং ভূ-পৃষ্ঠ উভয় স্থানেই হথে পারে। পাললিক শিলা সাধারণত গঠিত হয় পলল সঞ্চয়ন এবং তদুপরি সেই পললের দৃঢ়করণ প্রক্রিয়ায়। পাললিক শিলা অপেক্ষাকৃত নরম হয়ে থাকে। আর এই উভয় প্রকার শিলা যখন কোন ভূ-তাত্ত্বিক কারণে তাদের উৎপত্তির সময়ের তাপমাত্রা ও চাপের চেয়ে অধিকতর তাপ ও চাপ প্রাপ্ত হয় তখন তাদের ভৌত বৈশিষ্ট্যাবলীর পরিবর্তনের মাধ্যমে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয়। রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুর জেলাসমূহে বিস্তৃত সুস্থিত প্রি-ক্যাম্ব্রিয়ান পাটফর্ম আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলাগঠিত ভিত্তিস্তরের উপরে অবস্থিত সীমিত থেকে পরিমিত গভীরতার পাললিক শিলা দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। রংপুর ও দিনাজপুর এলাকাসমূহে ভূগাঠনিক (tectonic) স্থিতিশীলতার ফলে ভূত্বকের অল্প গভীরতায় গ্রানাইট জাতীয় আগ্নেয় ও সিস্টোজ-নিসিক রূপান্তরিত শিলা (schistose-gneissic metamorphic rocks) পাওয়া গিয়েছে।
প্রি-ক্যাম্ব্রিয়ান ভিত্তিস্তরে কয়েকটি চ্যুতিবেষ্টিত গ্রস্ত অববাহিকা (graben basin) বিদ্যমান রয়েছে। এসকল অববাহিকায় পার্মিয়ান যুগের (২৮ কোটি ৬০ লক্ষ বছর পূর্ব থেকে ২৪ কোটি ৫০ লক্ষ বছর পূর্বের) কয়লাবাহী শিলাস্তর রয়েছে। এই কয়লাস্তর বাংলাদেশে প্রাপ্ত সর্বাপেক্ষা প্রাচীন পাললিক শিলাস্তর। দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ভূ-অধোভাঁজ অববাহিকা বিশাল পুরুত্বের (অববাহিকার কেন্দ্রে সর্বোচ্চ প্রায় ২০ কিমি গভীর) ভগ্নময় পাললিক শিলাস্তর দ্বারা বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। এই শিলাস্তরের বেশিরভাগ বেলেপাথর, পলিপাথর এবং কর্দমশিলা দ্বারা গঠিত, যাতে টারশিয়ারি যুগের চুনাপাথর ও কংগোমারেটের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্তর রয়েছে। বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চল, ফরিদপুর, নোয়াখালী, সিলেট, কুমিলা, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং বঙ্গোপসাগর জুড়ে এই এলাকা অবস্থিত।
বেলেপাথর বালিকণা আকৃতির (১/১৬ মিমি-এর চেয়ে বড় কিন্তু ২ মিমি-এর চেয়ে ছোট) উপাদান দ্বারা গঠিত একটি পাললিক শিলা। প্রাচুর্যের দিক থেকে কর্দমশিলার পরই বেলেপাথরের স্থান। নদী, বদ্বীপ এলাকা, অগভীর সমুদ্র, গভীর সমুদ্র, মরুভূমি অথবা অন্য যেকোন পাললিক পরিবেশে সঞ্চিত বালু থেকে বেলেপাথর গঠিত হয়। পেট্রোলিয়াম আধার হিসেবে বেলেপাথর গুরুত্বপূর্ণ শিলাসমূহের মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত পেট্রোলিয়াম আধারসমূহের অর্ধেকই বেলেপাথর সঞ্চয়নে বিদ্যমান। বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্রসমূহের সকল গ্যাস-আধার বেলেপাথর স্তর দ্বারা গঠিত। শিলার উচ্চমানের সচ্ছিদ্রতা এবং প্রবেশ্যতার কারণে এই গ্যাস-আধারসমূহ উত্তম থেকে অতি উত্তম হিসেবে বিবেচিত। গ্যাস-আধার গঠন করা ছাড়াও বেলেপাথর বাংলাদেশের ভূতত্ত্ব গঠনকারী একটি সাধারণ শিলা। নবীনতর ভূতাত্ত্বিক এককসমূহ, যেমন- ডুপি টিলা স্তরসমষ্টি এবং টিপাম স্তরসমষ্টি প্রধানত বেলেপাথর দ্বারা গঠিত যারা বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত কম উচ্চতার পাহাড়সমূহ গঠন করেছে। এদের অন্তস্থ সুরমা শিলাদল ভূতাত্ত্বিক এককটিও প্রায় সমমাপের দানাবিশিষ্ট বেলেপাথর (গ্যাস আধার) এবং কর্দমশিলার স্তরায়ন দ্বারা গঠিত। বৃহদাকৃতির নির্মাণকাজে বক হিসেবে বেলেপাথর প্রায়ই ব্যবহূত হয়।
পলিপাথর কর্দমশিলার বুনট (texture) এবং গঠনবিশিষ্ট কঠিন পলি। উপাদান মিহি বালির চেয়েও মিহি তবে কর্দমকণার চেয়ে মোটা, ব্যাসের পরিসর সাধারণত ১/১৬ মিমি থেকে ১/২৫৬ মিমি। সুরমা শিলাদল এবং সাম্প্রতিককালের (Holocene) পললে উলেখযোগ্য পরিমাণে পলিপাথর বিদ্যমান থাকে।
কর্দম (কর্দমশিলা) মিহি দানাদার (৩ মাইক্রোমিটারের চেয়ে সূক্ষ্মতর) ভগ্নময় পলল; কেলাসিত শিলার রাসায়নিক বিচূর্ণীভবনের ফলে উৎপন্ন সূক্ষ্ম ও মিহি মণিক কেলাস দ্বারা গঠিত। বাংলাদেশে রয়েছে পার্মিয়ান ও টারশিয়ারি যুগের কর্দমশিলা, যেগুলিতে প্রধান উপাদান হিসেবে রয়েছে কোয়ার্জ, ইলাইট, কেওলিনাইট, ক্লোরাইট, ইলাইট-স্মেকটাইটের মিশ্র স্তর; গৌণ উপাদান হিসেবে রয়েছে ফেল্ডস্পার এবং সামান্য পরিমাণে ক্যলসাইট, ডলোমাইট ও সাইডেরাইট। পার্মিয়ান যুগের কর্দমশিলায় ইলাইট-স্মেকটাইটের মিশ্র স্তর অনুপস্থিত থাকে। বঙ্গীয় পুরঃখাত (Bengal foredeep) ও বলিত বলয় (fold belt) এলাকাসমূহের ভূগর্ভে বিদ্যমান কর্দমশিলা স্তরে সৃষ্ট অধিচাপসমূহে হাইড্রোকার্বনের সমৃদ্ধ মজুত গড়ে উঠেছে।
খনি লীজ লাইসেন্স প্রদান সচরাচর ৩০ হেক্টর এলাকা নিয়ে একটি লীজ এলাকা গঠিত। কয়লা এবং কঠিনশিলার খনিসমূহ ভূগর্ভে বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত থাকে। ভূ-পৃষ্ঠের অন্যান্য খনিজ মজুতসমূহ থেকে স্বল্প পরিমাণে মণিক আহরণ করা হয়ে থাকে। ১৯৬৮ সালের খনি ও খনিজ সম্পদ আইনের আওতায় খনি ও কোয়ারী উন্নয়নের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ইস্যুকৃত লাইসেন্সের সংখ্যা নিম্নের সারণিতে প্রদান করা হলো:
খনির প্রকার | সংখ্যা |
কঠিনশিলা | ১ |
কয়লা | ১ |
চুনাপাথর | ১ |
চীনামাটি | ১১ |
কাঁচবালি | ২১ |
নুড়িপাথর | ৭৭ |
নির্মাণ বালি | ৩৩৭ |
[এ.কে.এম খোরশেদ আলম এবং সিফাতুল কাদের চৌধুরী]
আরও দেখুন খনিজ সম্পদ।
মানচিত্রের জন্য দেখুন খনিজ সম্পদ।