লরেন্স, লর্ড জন লেয়ার্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''লরেন্স, লর্ড জন লেয়ার্ড''' (১৮১১-১৮৭৯) ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় (১৮৬৪-১৮৬৯)। তিনি ছিলেন লে. কর্নেল আলেকজান্ডার লরেন্সের পুত্র। জন লেয়ার্ড ব্রিস্টলে এবং লন্ডনডেরির ফয়েল কলেজ থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি ১৮৩০ সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তাঁর ভাইদের কয়েকজন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান সার্ভিসে কাজ করতেন। এঁদের একজন স্যার হেনরী লরেন্স ১৮৪৯ সালে অধিকৃত পাঞ্জাবের ভূমিজরিপকার্যের জন্য গঠিত বোর্ড অব কমিশনার্স-এর সভাপতি ছিলেন। ছোটভাই জন লরেন্সও ছিলেন তিন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত এই বোর্ডের সদস্য। পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাবে জরিপকার্যের সর্বোত্তম পদ্ধতি নির্ধারণের প্রশ্নে দুই ভ্রাতার মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডালহৌসীর প্রশাসন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা হেনরী লরেন্সকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। অতঃপর জন লরেন্স পাঞ্জাবে জরিপকার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে একাজ সম্পন্ন করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করেন। ১৮৬৩ সালে লর্ড এলগিনের মৃত্যুর পর জন লরেন্সকে ভারতের গভর্নর জেনারেল নিয়োগ করা হয়। তিনি ১৮৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি এ পদে যোগদান করেন এবং ১৮৬৯ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। | '''লরেন্স, লর্ড জন লেয়ার্ড''' (১৮১১-১৮৭৯) ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় (১৮৬৪-১৮৬৯)। তিনি ছিলেন লে. কর্নেল আলেকজান্ডার লরেন্সের পুত্র। জন লেয়ার্ড ব্রিস্টলে এবং লন্ডনডেরির ফয়েল কলেজ থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি ১৮৩০ সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তাঁর ভাইদের কয়েকজন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান সার্ভিসে কাজ করতেন। এঁদের একজন স্যার হেনরী লরেন্স ১৮৪৯ সালে অধিকৃত পাঞ্জাবের ভূমিজরিপকার্যের জন্য গঠিত বোর্ড অব কমিশনার্স-এর সভাপতি ছিলেন। ছোটভাই জন লরেন্সও ছিলেন তিন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত এই বোর্ডের সদস্য। পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাবে জরিপকার্যের সর্বোত্তম পদ্ধতি নির্ধারণের প্রশ্নে দুই ভ্রাতার মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডালহৌসীর প্রশাসন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা হেনরী লরেন্সকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। অতঃপর জন লরেন্স পাঞ্জাবে জরিপকার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে একাজ সম্পন্ন করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করেন। ১৮৬৩ সালে লর্ড এলগিনের মৃত্যুর পর জন লরেন্সকে ভারতের গভর্নর জেনারেল নিয়োগ করা হয়। তিনি ১৮৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি এ পদে যোগদান করেন এবং ১৮৬৯ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। | ||
[[Image:JohnLord.jpg|thumb|400px|লর্ড জন লেয়ার্ড লরেন্স]] | |||
আফগান রাজনীতিতে পূর্ববর্তী শাসকদের হস্তক্ষেপের পরিবর্তে লরেন্স-প্রশাসন নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করে। তিনি দক্ষতার সঙ্গে ভুটান যুদ্ধ ও উড়িষ্যার দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। লরেন্স তাঁর পূর্ববর্তী শাসকদের মতো বৈদেশিক আগ্রাসনের পক্ষপাতী ছিলেন না। তাঁর পরিবর্তে তিনি স্বাস্থ্য ও পয়ঃব্যবস্থা, সেচকাজ, রেলপথ উন্নয়ন এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উৎকর্ষের প্রতি সবিশেষ নজর দেন। তাঁর গৃহীত প্রাথমিক পদক্ষেপের অন্যতম ছিল [[মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, ১৮৬৪|মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট]][[মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, ১৮৬৪|, ১৮৬৪]] প্রণয়ন, যার ফলে বাংলায় প্রতিনিধিত্বশীল স্থানীয় সরকার-ব্যবস্থা চালু হয়। অবসর গ্রহণের পর লরেন্সকে পাঞ্জাবের ‘ব্যারন লরেন্স’ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। তিনি লন্ডন স্কুল বোর্ডের সভাপতি (১৮৭০-৭৩) এবং ১৮৭৮-৭৯ সালের আফগান যুদ্ধনীতির বিরোধিতার জন্য গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। | আফগান রাজনীতিতে পূর্ববর্তী শাসকদের হস্তক্ষেপের পরিবর্তে লরেন্স-প্রশাসন নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করে। তিনি দক্ষতার সঙ্গে ভুটান যুদ্ধ ও উড়িষ্যার দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। লরেন্স তাঁর পূর্ববর্তী শাসকদের মতো বৈদেশিক আগ্রাসনের পক্ষপাতী ছিলেন না। তাঁর পরিবর্তে তিনি স্বাস্থ্য ও পয়ঃব্যবস্থা, সেচকাজ, রেলপথ উন্নয়ন এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উৎকর্ষের প্রতি সবিশেষ নজর দেন। তাঁর গৃহীত প্রাথমিক পদক্ষেপের অন্যতম ছিল [[মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, ১৮৬৪|মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট]][[মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, ১৮৬৪|, ১৮৬৪]] প্রণয়ন, যার ফলে বাংলায় প্রতিনিধিত্বশীল স্থানীয় সরকার-ব্যবস্থা চালু হয়। অবসর গ্রহণের পর লরেন্সকে পাঞ্জাবের ‘ব্যারন লরেন্স’ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। তিনি লন্ডন স্কুল বোর্ডের সভাপতি (১৮৭০-৭৩) এবং ১৮৭৮-৭৯ সালের আফগান যুদ্ধনীতির বিরোধিতার জন্য গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। | ||
১০:২৩, ১০ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
লরেন্স, লর্ড জন লেয়ার্ড (১৮১১-১৮৭৯) ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় (১৮৬৪-১৮৬৯)। তিনি ছিলেন লে. কর্নেল আলেকজান্ডার লরেন্সের পুত্র। জন লেয়ার্ড ব্রিস্টলে এবং লন্ডনডেরির ফয়েল কলেজ থেকে শিক্ষালাভ করেন। তিনি ১৮৩০ সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। তাঁর ভাইদের কয়েকজন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান সার্ভিসে কাজ করতেন। এঁদের একজন স্যার হেনরী লরেন্স ১৮৪৯ সালে অধিকৃত পাঞ্জাবের ভূমিজরিপকার্যের জন্য গঠিত বোর্ড অব কমিশনার্স-এর সভাপতি ছিলেন। ছোটভাই জন লরেন্সও ছিলেন তিন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত এই বোর্ডের সদস্য। পরবর্তী সময়ে পাঞ্জাবে জরিপকার্যের সর্বোত্তম পদ্ধতি নির্ধারণের প্রশ্নে দুই ভ্রাতার মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডালহৌসীর প্রশাসন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা হেনরী লরেন্সকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। অতঃপর জন লরেন্স পাঞ্জাবে জরিপকার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং কৃতিত্বের সঙ্গে একাজ সম্পন্ন করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করেন। ১৮৬৩ সালে লর্ড এলগিনের মৃত্যুর পর জন লরেন্সকে ভারতের গভর্নর জেনারেল নিয়োগ করা হয়। তিনি ১৮৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি এ পদে যোগদান করেন এবং ১৮৬৯ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
আফগান রাজনীতিতে পূর্ববর্তী শাসকদের হস্তক্ষেপের পরিবর্তে লরেন্স-প্রশাসন নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করে। তিনি দক্ষতার সঙ্গে ভুটান যুদ্ধ ও উড়িষ্যার দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা করেন। লরেন্স তাঁর পূর্ববর্তী শাসকদের মতো বৈদেশিক আগ্রাসনের পক্ষপাতী ছিলেন না। তাঁর পরিবর্তে তিনি স্বাস্থ্য ও পয়ঃব্যবস্থা, সেচকাজ, রেলপথ উন্নয়ন এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উৎকর্ষের প্রতি সবিশেষ নজর দেন। তাঁর গৃহীত প্রাথমিক পদক্ষেপের অন্যতম ছিল মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট, ১৮৬৪ প্রণয়ন, যার ফলে বাংলায় প্রতিনিধিত্বশীল স্থানীয় সরকার-ব্যবস্থা চালু হয়। অবসর গ্রহণের পর লরেন্সকে পাঞ্জাবের ‘ব্যারন লরেন্স’ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। তিনি লন্ডন স্কুল বোর্ডের সভাপতি (১৮৭০-৭৩) এবং ১৮৭৮-৭৯ সালের আফগান যুদ্ধনীতির বিরোধিতার জন্য গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন।
১৮৭৯ সালে লর্ড জন লেয়ার্ড এর মৃত্যু হয় এবং তাঁকে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে-তে সমাধিস্থ করা হয়। [সিরাজুল ইসলাম]