রহমান, লে.কর্নেল এ.এস.এম মুস্তাফিজুর: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''রহমান, লে''''''. ''''''কর্নেল এ.এস.এম মুস্তাফিজুর '''(১৯৩৪-১৯৯৬)'''  '''সামরিক কর্মকর্তা,''' '''রাজনীতিক।''' '''পুরো নাম আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১৯৩৪ সালের ৮ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলার রণবিজয়পুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খান বাহাদুর বজলুর রহমান ছিলেন আবগারি শুল্ক কমিশনার। মুস্তাফিজুর রহমানের ছাত্রজীবন শুরু হয় কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। এরপর ভর্তি হন ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে। ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ঢাকা কলেজে আই.এসসি ক্লাশে ভর্তি হন।
'''রহমান, লে. কর্নেল এ.এস.এম মুস্তাফিজুর''' (১৯৩৪-১৯৯৬) সামরিক কর্মকর্তা, রাজনীতিক। পুরো নাম আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১৯৩৪ সালের ৮ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলার রণবিজয়পুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খান বাহাদুর বজলুর রহমান ছিলেন আবগারি শুল্ক কমিশনার। মুস্তাফিজুর রহমানের ছাত্রজীবন শুরু হয় কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। এরপর ভর্তি হন ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে। ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ঢাকা কলেজে আই.এসসি ক্লাশে ভর্তি হন।


১৯৫২ সালে তিনি ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৫৫ সালের ১৩ মার্চ কমিশন লাভ করেন। পাকিস্তান সামরিক একাডেমীতে থাকাকালে মুস্তাফিজুর রহমান পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। কমিশন প্রাপ্তির পর তিনি ৫ম বেলুচ রেজিমেন্টে যোগ দেন। কারিগরি নৈপুণ্যের কারণে ১৯৫৬ সালে আর্টিলারি অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি আন্তঃবিভাগীয় গোয়েন্দা দপ্তরে জেনারেল স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কোয়েটার কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে পিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৫২ সালে তিনি ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৫৫ সালের ১৩ মার্চ কমিশন লাভ করেন। পাকিস্তান সামরিক একাডেমীতে থাকাকালে মুস্তাফিজুর রহমান পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। কমিশন প্রাপ্তির পর তিনি ৫ম বেলুচ রেজিমেন্টে যোগ দেন। কারিগরি নৈপুণ্যের কারণে ১৯৫৬ সালে আর্টিলারি অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি আন্তঃবিভাগীয় গোয়েন্দা দপ্তরে জেনারেল স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কোয়েটার কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে পিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
৮ নং লাইন: ৮ নং লাইন:
রাজনীতির পাশাপাশি মুস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গুলশান রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির দায়িত্ব ছাড়াও ন্যাশনাল স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ডের চেয়ারম্যান, ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৩ সালে কূটনৈতিক কর্মকান্ডে অবদানের জন্য তিনি কোরিয়া সরকারের Gawanghwa Medal অর্জন করেন।
রাজনীতির পাশাপাশি মুস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গুলশান রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির দায়িত্ব ছাড়াও ন্যাশনাল স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ডের চেয়ারম্যান, ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৩ সালে কূটনৈতিক কর্মকান্ডে অবদানের জন্য তিনি কোরিয়া সরকারের Gawanghwa Medal অর্জন করেন।


১৯৯৬ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯৯৬ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]
 
[আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]


[[en:Rahman, Lt. Colonel ASM Mustafizur]]
[[en:Rahman, Lt. Colonel ASM Mustafizur]]

০৮:৫৭, ৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

রহমান, লে. কর্নেল এ.এস.এম মুস্তাফিজুর (১৯৩৪-১৯৯৬) সামরিক কর্মকর্তা, রাজনীতিক। পুরো নাম আবু সালেহ মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি ১৯৩৪ সালের ৮ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলার রণবিজয়পুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা খান বাহাদুর বজলুর রহমান ছিলেন আবগারি শুল্ক কমিশনার। মুস্তাফিজুর রহমানের ছাত্রজীবন শুরু হয় কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। এরপর ভর্তি হন ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে। ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ঢাকা কলেজে আই.এসসি ক্লাশে ভর্তি হন।

১৯৫২ সালে তিনি ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৫৫ সালের ১৩ মার্চ কমিশন লাভ করেন। পাকিস্তান সামরিক একাডেমীতে থাকাকালে মুস্তাফিজুর রহমান পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন। কমিশন প্রাপ্তির পর তিনি ৫ম বেলুচ রেজিমেন্টে যোগ দেন। কারিগরি নৈপুণ্যের কারণে ১৯৫৬ সালে আর্টিলারি অফিসার হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি আন্তঃবিভাগীয় গোয়েন্দা দপ্তরে জেনারেল স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তানের কোয়েটার কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে পিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে মুস্তাফিজুর রহমান রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে জিয়াউর রহমানের উপ-উপদেষ্টা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরের বছর জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৭৯ সালের ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন। প্রেসিডেন্ট আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি বাণিজ্য মন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি বিএনপি’র স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৮৫-১৯৮৬ সালে তিনি দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। মুস্তাফিজুর রহমান ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছর ১৯ মার্চ তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

রাজনীতির পাশাপাশি মুস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গুলশান রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির দায়িত্ব ছাড়াও ন্যাশনাল স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ডের চেয়ারম্যান, ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৩ সালে কূটনৈতিক কর্মকান্ডে অবদানের জন্য তিনি কোরিয়া সরকারের Gawanghwa Medal অর্জন করেন।

১৯৯৬ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। [আবু মো. দেলোয়ার হোসেন]