ভাঙ্গুরা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র'''))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
[[Category:বাংলাপিডিয়া]]
'''ভাঙ্গুরা উপজেলা''' (পাবনা জেলা)  আয়তন: ১৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৯´ থেকে ২৪°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২০´ থেকে ৮৯°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তাড়াস, চাটমোহর ও উল্লাপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর উপজেলা (পাবনা), পূর্বে উল্লাপাড়া ও ফরিদপুর উপজেলা (পাবনা), পশ্চিমে চাটমোহর উপজেলা।
'''ভাঙ্গুরা উপজেলা''' ([[পাবনা জেলা|পাবনা জেলা]])  আয়তন: ১৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৯´ থেকে ২৪°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২০´ থেকে ৮৯°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তাড়াস, চাটমোহর ও উল্লাপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর উপজেলা (পাবনা), পূর্বে উল্লাপাড়া ও ফরিদপুর উপজেলা (পাবনা), পশ্চিমে চাটমোহর উপজেলা।


''জনসংখ্যা'' ৯৯৪৭৪; পুরুষ ৫০৪৮৬, মহিলা ৪৮৯৮৮। মুসলিম ৯৪৯২১, হিন্দু ৪৫২৭ এবং অন্যান্য ২৬।
''জনসংখ্যা'' ৯৯৪৭৪; পুরুষ ৫০৪৮৬, মহিলা ৪৮৯৮৮। মুসলিম ৯৪৯২১, হিন্দু ৪৫২৭ এবং অন্যান্য ২৬।
১৫ নং লাইন: ১৫ নং লাইন:
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-
|-
| ১  || ৬  || ৬৭  || ১১০  || ২৩৪৪১  || ৭৬০৩৩  || ৭৩১  || ৪৫.৬  || ৩৬.০
| ১  || ৬  || ৬৭  || ১১০  || ২৩৪৪১  || ৭৬০৩৩  || ৭৩১  || ৪৫.৬  || ৩৬.০
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
|পৌরসভা
| colspan="9" | পৌরসভা
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || ওয়ার্ড  || মহল্লা || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ৫.১৩  || ৯  || ৩২  || ১৫০৪৪  || ২৯৩৩  || ৫২.৪
| ৫.১৩  || ৯  || ৩২  || ১৫০৪৪  || ২৯৩৩  || ৫২.৪
 
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
| colspan="9" |  পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
 
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| ১৩.৪৬  || ৩  || ৮৩৯৭  || ৬২৪  || ৩৩.৩
| ১৩.৪৬  || ৩  || ৮৩৯৭  || ৬২৪  || ৩৩.৩
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| ইউনিয়ন
| colspan="9" |  ইউনিয়ন
|-  
|-  
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || rowspan="2" | আয়তন (একর)  || colspan="2" | লোকসংখ্যা  || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%)
৭০ নং লাইন: ৬১ নং লাইন:
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:BhanguraUpazila.jpg|thumb|right|400px]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' তিন গম্বুজবিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ (কাজীপাড়া, চন্ডীপুর)।
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' তিন গম্বুজবিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ (কাজীপাড়া, চন্ডীপুর)।


''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে বড়ালব্রিজের কাছে পাকসেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং বহু সংখ্যক রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। ১৫ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালে বড়ালব্রিজের কাছে পাকসেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং বহু সংখ্যক রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। ১৫ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ১৬২, মন্দির ২৯। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ভাঙ্গুরা জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, অষ্টমনিষা কালীমন্দির।
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান''  মসজিদ ১৬২, মন্দির ২৯। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ভাঙ্গুরা জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, অষ্টমনিষা কালীমন্দির।
[[Image:BhanguraUpazila.jpg|thumb|right|ভাঙ্গুরা উপজেলা]]


''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৮.৩%; পুরুষ ৪২.৭%, মহিলা ৩৩.৮%। কলেজ ২, কলেজিয়েট স্কুল ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯১, স্যাটেলাইট স্কুল ১৩, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাজী জামালউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), ভাঙ্গুরা মহিলা কলেজ (১৯৯৮), খানমরিচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০২), বি বি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৮৫), ভাঙ্গুরা জরিনা-রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), হাসিনা-মোমিন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭২), ভাঙ্গুরা ইউনিয়ন পাইলট বহুমুখী বিদ্যালয়, শরৎনগর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৭), হাজী গয়েজ উদ্দিন মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৮৫)।
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৮.৩%; পুরুষ ৪২.৭%, মহিলা ৩৩.৮%। কলেজ ২, কলেজিয়েট স্কুল ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯১, স্যাটেলাইট স্কুল ১৩, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাজী জামালউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), ভাঙ্গুরা মহিলা কলেজ (১৯৯৮), খানমরিচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০২), বি বি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৮৫), ভাঙ্গুরা জরিনা-রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), হাসিনা-মোমিন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭২), ভাঙ্গুরা ইউনিয়ন পাইলট বহুমুখী বিদ্যালয়, শরৎনগর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৭), হাজী গয়েজ উদ্দিন মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৮৫)।


''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' তাওহীদ, সচেতন, বেদুঈন, মঞ্জিল, ঝর্ণা, উন্মোচন, চেতনা, পল্লী সাহিত্য, স্মৃতি লেখা, নেপথ্যের সংলাপ, নিশীথ প্রদীপ। অবলুপ্ত: জমিদার, বিজলী, সোমবারের চিঠি, পতিতার মুক্তি, বুলি, তাছবীর, অভ্যুদয়, আখেরী তকরীর।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' তাওহীদ, সচেতন, বেদুঈন, মঞ্জিল, ঝর্ণা, উন্মোচন, চেতনা, পল্লী সাহিত্য, স্মৃতি লেখা, নেপথ্যের সংলাপ, নিশীথ প্রদীপ। অবলুপ্ত: জমিদার, বিজলী, সোমবারের চিঠি, পতিতার মুক্তি, বুলি, তাছবীর, অভ্যুদয়, আখেরী তকরীর।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৮২, সিনেমা হল ২, নাট্যদল ১, মহিলা সংগঠন ৬।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৮২, সিনেমা হল ২, নাট্যদল ১, মহিলা সংগঠন ৬।
৯১ নং লাইন: ৮২ নং লাইন:
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' কাউন, চীনা, ছোলা, ভুরা, যব।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' কাউন, চীনা, ছোলা, ভুরা, যব।


''প্রধান ফল-ফলাদিব'' আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে, কলা, লিচু।
''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে, কলা, লিচু।


''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫০, গবাদিপশু ৬৩৭, হাঁস-মুরগি ১৩০।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ৫০, গবাদিপশু ৬৩৭, হাঁস-মুরগি ১৩০।
১০৫ নং লাইন: ৯৬ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২০, মেলা ৩। অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুরা বাজার, শরৎনগর বাজার, ভেড়ামারা বাজার ও বড়ালব্রিজ বাজার উল্লেখযোগ্য।
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২০, মেলা ৩। অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুরা বাজার, শরৎনগর বাজার, ভেড়ামারা বাজার ও বড়ালব্রিজ বাজার উল্লেখযোগ্য।


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   ধান, গম, পাট, মাছ, দুধ, পিঁয়াজ, রসুন, হাঁস-মুরগি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''  ধান, গম, পাট, মাছ, দুধ, পিঁয়াজ, রসুন, হাঁস-মুরগি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৪.১০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৪.১০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
১১৩ নং লাইন: ১০৪ নং লাইন:
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২১.০৪% (গ্রামে ১৪.৭১% ও শহরে ৪২.১১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৫.৬৩% (গ্রামে ৮১.৭৫% ও শহরে ৫৫.২৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৩৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ২১.০৪% (গ্রামে ১৪.৭১% ও শহরে ৪২.১১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৫.৬৩% (গ্রামে ৮১.৭৫% ও শহরে ৫৫.২৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৩৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১।
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১।


''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬) সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। এছাড়া ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার প্রায় সব মানুষ পানিবন্দী হয় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬) সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। এছাড়া ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার প্রায় সব মানুষ পানিবন্দী হয় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।


''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, টিটিএমএসএস, প্রশিকা।
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, টিটিএমএসএস, প্রশিকা। [মুহাম্মদ নুরুজ্জামান মুসাফির]
 
[মুহাম্মদ নুরুজ্জামান মুসাফির]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভাঙ্গুরা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভাঙ্গুরা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।

০৪:০৭, ১ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ভাঙ্গুরা উপজেলা (পাবনা জেলা)  আয়তন: ১৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৯´ থেকে ২৪°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২০´ থেকে ৮৯°২৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে তাড়াস, চাটমোহর ও উল্লাপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে ফরিদপুর উপজেলা (পাবনা), পূর্বে উল্লাপাড়া ও ফরিদপুর উপজেলা (পাবনা), পশ্চিমে চাটমোহর উপজেলা।

জনসংখ্যা ৯৯৪৭৪; পুরুষ ৫০৪৮৬, মহিলা ৪৮৯৮৮। মুসলিম ৯৪৯২১, হিন্দু ৪৫২৭ এবং অন্যান্য ২৬।

জলাশয় প্রধান নদী: আত্রাই ও বড়াল।

প্রশাসন ভাঙ্গুরা থানা গঠিত হয় ১৯৮০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮১ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৬৭ ১১০ ২৩৪৪১ ৭৬০৩৩ ৭৩১ ৪৫.৬ ৩৬.০
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.১৩ ৩২ ১৫০৪৪ ২৯৩৩ ৫২.৪
পৌরসভার বাইরে উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৩.৪৬ ৮৩৯৭ ৬২৪ ৩৩.৩
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
অষ্টমনিষা ১৫ ৪২৩৬ ৭২৭৯ ৬৮৮৮ ৩৮.৫২
খানমরিচ ৬৩ ৭৪৯৫ ১০৫৫৬ ১০৮০৯ ৩০.০৮
দিলপাশার ৪৭ ৫১২৭ ৮৩৪১ ৭৯৭৩ ৩৫.০৬
পার-ভাঙ্গুরা ৭৯ ৬৪৮৫ ৬৬৭৩ ৬৪৪১ ৩৮.৫৫
ভাঙ্গুরা ৩১ ৬৪১৩ ৬৬২৩ ৬৪১৮ ৩৬.৫৩
মনোতোষ ১৯ ২৮৫০ ৩৩০৮ ৩১২১ ৪২.৫৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ তিন গম্বুজবিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ (কাজীপাড়া, চন্ডীপুর)।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে বড়ালব্রিজের কাছে পাকসেনা ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে পাকসেনারা পরাজিত হয় এবং বহু সংখ্যক রাজাকার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। ১৫ ডিসেম্বর এ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ১৬২, মন্দির ২৯। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: ভাঙ্গুরা জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, অষ্টমনিষা কালীমন্দির।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৮.৩%; পুরুষ ৪২.৭%, মহিলা ৩৩.৮%। কলেজ ২, কলেজিয়েট স্কুল ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৯১, স্যাটেলাইট স্কুল ১৩, কমিউনিটি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৩। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাজী জামালউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ (১৯৭০), ভাঙ্গুরা মহিলা কলেজ (১৯৯৮), খানমরিচ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ (২০০২), বি বি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৮৫), ভাঙ্গুরা জরিনা-রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯), হাসিনা-মোমিন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭২), ভাঙ্গুরা ইউনিয়ন পাইলট বহুমুখী বিদ্যালয়, শরৎনগর ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২৭), হাজী গয়েজ উদ্দিন মহিলা ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৮৫)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী তাওহীদ, সচেতন, বেদুঈন, মঞ্জিল, ঝর্ণা, উন্মোচন, চেতনা, পল্লী সাহিত্য, স্মৃতি লেখা, নেপথ্যের সংলাপ, নিশীথ প্রদীপ। অবলুপ্ত: জমিদার, বিজলী, সোমবারের চিঠি, পতিতার মুক্তি, বুলি, তাছবীর, অভ্যুদয়, আখেরী তকরীর।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৮২, সিনেমা হল ২, নাট্যদল ১, মহিলা সংগঠন ৬।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭০.৪৯%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬১%, শিল্প ২.২১%, ব্যবসা ১১.৫১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮৪%, চাকরি ৫.৭০%, নির্মাণ ০.৯৮%, ধর্মীয় সেবা ০.২০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৯% এবং অন্যান্য ৬.৫৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬১.৫৮%, ভূমিহীন ৩৮.৪২%। শহরে ৪৫.৮৫% এবং গ্রামে ৬৬.৩০% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, খেসারি, মসুর, শাকসবজি, পিঁয়াজ, রসুন।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, চীনা, ছোলা, ভুরা, যব।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, জাম, পেঁপে, কলা, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫০, গবাদিপশু ৬৩৭, হাঁস-মুরগি ১৩০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১৮.০৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬.৪৭ কিমি, কাঁচারাস্তা ২১০ কিমি; নৌপথ ১০.৮০ নটিক্যাল মাইল; রেলপথ ১১ কিমি। রেলস্টেশন ৪।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ডুলি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ফ্লাওয়ার মিল, অয়েল মিল, স’মিল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, বুননশিল্প, দারুশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২০, মেলা ৩। অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুরা বাজার, শরৎনগর বাজার, ভেড়ামারা বাজার ও বড়ালব্রিজ বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  ধান, গম, পাট, মাছ, দুধ, পিঁয়াজ, রসুন, হাঁস-মুরগি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৪.১০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৭০%, পুকুর ০.৩৫%, ট্যাপ ০.২৭% এবং অন্যান্য ৫.৬৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২১.০৪% (গ্রামে ১৪.৭১% ও শহরে ৪২.১১%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৭৫.৬৩% (গ্রামে ৮১.৭৫% ও শহরে ৫৫.২৮%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.৩৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬) সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার বহু লোক প্রাণ হারায়। এছাড়া ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় এ উপজেলার প্রায় সব মানুষ পানিবন্দী হয় এবং ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, টিটিএমএসএস, প্রশিকা। [মুহাম্মদ নুরুজ্জামান মুসাফির]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ভাঙ্গুরা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।