বিষাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৯ নং লাইন: | ৯ নং লাইন: | ||
''আরও দেখুন'' [[আবর্জনা ব্যবস্থাপনা|আবর্জনা ব্যবস্থাপনা]]। | ''আরও দেখুন'' [[আবর্জনা ব্যবস্থাপনা|আবর্জনা ব্যবস্থাপনা]]। | ||
[[en:Toxic and Hazardous Waste]] |
০৪:২২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বিষাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ যা ভৌত পরিবেশের ক্ষতিসাধন এবং জীব ও জড়ের আন্তঃক্রিয়ার ভারসাম্য বিনষ্ট করে। মানুষের কর্মকান্ডের ফলে প্রায়শই অনেক বিষাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্যের প্রকৃতি ও পরিমাণ দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিল্পকারখানার স্তর, জনসাধারণের সাংসৃকতিক ও নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। এগুলির উৎসও বিভিন্ন বাসসৃহ, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা, পরিবহণ, কৃষি প্রভৃতি। গৃহস্থালিজাত বিষাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্যের মধ্যে থাকে প্রধানত ভাঙা-কাঁচ, ধারালো ধাতব বস্ত্ত, রং, পেট্রোলিয়াম জাতীয় জৈবপদার্থ ইত্যাদি। বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যথা হোটেল, রেস্তোরাঁ, গ্যাসোলিন-স্টেশন, শিল্পকারখানা, হাসপাতাল, ক্লিনিক ইত্যাদি থেকেও সাধারণত একই ধরনের বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্যের একটা বড় অংশ শিল্পকারখানা এবং অপেক্ষাকৃত পরিমাণে কৃষিখাত থেকে আসে। কৃৃষিতে ব্যবহূত প্রচুর পরিমাণ বালাইনাশক মাটি ও পানিতে অধিক মাত্রায় সঞ্চিত হয় যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশে গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক উৎস থেকে উৎপন্ন বিষাক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, তবে পরিমাণে খুব বেশি নয়। কারণ দেশের বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক অবস্থায় জনসাধারণ প্রচুর পরিমাণ জৈব দ্রাবক ও গৃহস্থালির কীটনাশক প্রভৃতি ব্যবহারে সমর্থ নয়, আর কাঁচের বোতল ও ধাতব বস্ত্তর মতো বর্জ্যগুলি সাধারণত পুনর্বর্্যবহূত হয়। তবে মোটরযান মেরামত কারখানাগুলি থেকে প্রচুর ইঞ্জিনের লুব্রিকেটিং তেল (স্থানীয়ভাবে মবিল) ফেলে দেয়া হয়। এ বর্জ্য তেলের কিছুটা আবার শোধন করে জিনিসপত্র পরিষ্কার করার কাজে লাগানো যায়। এভাবে এসব পদার্থ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আবারও বিভিন্ন বিষাক্ত বর্জ্য উৎপন্ন হতে পারে। অবশ্য মোটরযানের পরিত্যক্ত বর্জ্য এদেশে এখনও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি হয়ে ওঠে নি।
শিল্পকারখানার প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে উৎপন্ন ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পবর্জ্য নানা ধরনের হয়ে থাকে। সাধারণভাবে খাদ্যশিল্প থেকে উৎপন্ন বিষাক্ত বর্জ্যের পরিমাণ কম। ঔষধশিল্প থেকে উৎপন্ন বিষাক্ত বর্জ্যের পরিমাণও বেশি নয়, কারণ এসব শিল্প প্রধানত বিদেশ থেকে আমদানিকৃত ঔষধের প্যাকেজিং করে থাকে। ফলে এতে খুব বেশি পরিমাণ বর্জ্য সৃষ্টির সুযোগ নেই। শিল্প উৎপাদন কয়েকটি খাতে সীমাবদ্ধ। যেমন বস্ত্র, চামড়া, সার, সিমেন্ট ইত্যাদি। আর এসব শিল্পকারখানার অধিকাংশই তাদের বর্জ্য নদনদীতে ফেলে। শিল্পবর্জ্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলির চাপে তারা এসব বর্জ্য কিছুটা শোধন করলেও সংশ্লিষ্ট আইন-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলে না। ঢাকা শহরের হাজারীবাগ এলাকার প্রায় ২৫০টি চামড়া শিল্পকারখানায় কোটি কোটি টুকরা পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এগুলিতে ব্যবহূত বিষাক্ত রাসায়নিক বহুলাংশে অশোধিত অবস্থায় নদীতে পড়ছে।
একটি প্রধান ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়া কেবল তেজস্ক্রিয়তা প্রশমনের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই লাঘব হতে পারে। তেজস্ক্রিয়তা প্রশমনের এ প্রক্রিয়া ত্বরাম্বিত করার প্রযুক্তি মানুষ এখনও উদ্ভাবন করতে পারে নি। তাই তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নিষ্কাশনের সাধারণ পদ্ধতি হলো তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা নিরাপদ পর্যায়ে নেমে না-আসা পর্যন্ত এসব বর্জ্য নিরাপদ স্থানে মজুত রাখা। বাংলাদেশে তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত বৈজ্ঞানিক গবেষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানত 32p ব্যবহার করে যাবে। বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন পরিচালিত বিভিন্ন শহরে অবস্থিত ৯টি নিউক্লিয়ার মেডিসিন কেন্দ্র থাইরয়েড গ্রন্থির অতিক্রিয়া (hyperthyroidism) চিকিৎসায় 131I ব্যবহার করছে। তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহারের লাইসেন্স প্রদান, নিরাপদ ব্যবহার এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের অপসারণ, পূর্ব মজুত ইত্যাদি কর্মকান্ড তদারক করা বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের দায়িত্ব। [জিয়া উদ্দিন আহমেদ]
আরও দেখুন আবর্জনা ব্যবস্থাপনা।