বাজিতপুর উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-\|\s''জনসংখ্যা''\s\|\| +| জনসংখ্যা ||)) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''বাজিতপুর উপজেলা '''(কিশোরগঞ্জ জেলা) আয়তন: ১৭২.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৯´ থেকে ২৪°১৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫০´ থেকে ৯১°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কটিয়াদি, নিকলী ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে কুলিয়ারচর, ভৈরব ও সরাইল উপজেলা, পূর্বে অষ্টগ্রাম ও নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি উপজেলা। | '''বাজিতপুর উপজেলা''' ([[কিশোরগঞ্জ জেলা|কিশোরগঞ্জ জেলা]]) আয়তন: ১৭২.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৯´ থেকে ২৪°১৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫০´ থেকে ৯১°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কটিয়াদি, নিকলী ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে কুলিয়ারচর, ভৈরব ও সরাইল উপজেলা, পূর্বে অষ্টগ্রাম ও নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি উপজেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' ২১০৩৭৫; পুরুষ ১০৫৯৮৮, মহিলা ১০৪৩৮৭। মুসলিম ১৮৮৩১৮, হিন্দু ২১৯৮১, বৌদ্ধ ১৩ এবং অন্যান্য ৬৩। | ''জনসংখ্যা'' ২১০৩৭৫; পুরুষ ১০৫৯৮৮, মহিলা ১০৪৩৮৭। মুসলিম ১৮৮৩১৮, হিন্দু ২১৯৮১, বৌদ্ধ ১৩ এবং অন্যান্য ৬৩। | ||
১২ নং লাইন: | ১২ নং লাইন: | ||
| colspan="9" | উপজেলা | | colspan="9" | উপজেলা | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১ || ১১ || ৮৪ || ১৮৮ || ২৬৯২৫ || ১৮৩৪৫০ || ১০৯৬ || ৫৫.১ || ৩১.৫ | | ১ || ১১ || ৮৪ || ১৮৮ || ২৬৯২৫ || ১৮৩৪৫০ || ১০৯৬ || ৫৫.১ || ৩১.৫ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
|পৌরসভা | | colspan="9" | পৌরসভা | ||
|- | |- | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| ৯.৮৪ || ৯ || ২৮ || ২৬৯২৫ || ২৭৬৩ || ৫৫.১ | | ৯.৮৪ || ৯ || ২৮ || ২৬৯২৫ || ২৭৬৩ || ৫৫.১ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| ইউনিয়ন | | colspan="9" | ইউনিয়ন | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
৪৩ নং লাইন: | ৩৫ নং লাইন: | ||
|- | |- | ||
| কৈলাগ ৭২ || ২৯৫৫ || ৭৩১০ || ৭০১৩ || ২২.৫৪ | | কৈলাগ ৭২ || ২৯৫৫ || ৭৩১০ || ৭০১৩ || ২২.৫৪ | ||
|- | |- | ||
| গাজীরচর ৪৩ || ১৬১৯ || ৪৬১২ || ৪৪৩৭ || ৩৩.৮৭ | | গাজীরচর ৪৩ || ১৬১৯ || ৪৬১২ || ৪৪৩৭ || ৩৩.৮৭ | ||
|- | |- | ||
| দিঘিরপাড় ২৫ || ৩৬১০ || ৮৯৩৯ || ৮৯৮২ || ২৩.১৫ | | দিঘিরপাড় ২৫ || ৩৬১০ || ৮৯৩৯ || ৮৯৮২ || ২৩.১৫ | ||
|- | |- | ||
| দিলালপুর ৩৪ || ২৬০৬ || ৮০৮০ || ৭৯২৬ || ৩২.৪৮ | | দিলালপুর ৩৪ || ২৬০৬ || ৮০৮০ || ৭৯২৬ || ৩২.৪৮ | ||
|- | |- | ||
| পিরিজপুর ৮৬ || ৫৭৩০ || ১৪১৪১ || ১৩৭৭৪ || ৩৩.৪১ | | পিরিজপুর ৮৬ || ৫৭৩০ || ১৪১৪১ || ১৩৭৭৪ || ৩৩.৪১ | ||
|- | |- | ||
| বালিয়ার্দি ১৭ || ২০৯০ || ৬৯৬৫ || ৭১৯৪ || ২৮.২০ | | বালিয়ার্দি ১৭ || ২০৯০ || ৬৯৬৫ || ৭১৯৪ || ২৮.২০ | ||
|- | |- | ||
| মাইজচর ৭৭ || ৫৪৮৩ || ৬৮৫৬ || ৬৯৮৮ || ১৯.৫০ | | মাইজচর ৭৭ || ৫৪৮৩ || ৬৮৫৬ || ৬৯৮৮ || ১৯.৫০ | ||
|- | |- | ||
| সরারচর ৯৪ || ৩০৫৫ || ১১৫৮৭ || ১১২১০ || ৪১.৬৫ | | সরারচর ৯৪ || ৩০৫৫ || ১১৫৮৭ || ১১২১০ || ৪১.৬৫ | ||
|- | |- | ||
| হিলাচিয়া ৬০ || ৬০৩০ || ১১৮৬৯ || ১১৭৩৫ || ৩৪.৪৬ | | হিলাচিয়া ৬০ || ৬০৩০ || ১১৮৬৯ || ১১৭৩৫ || ৩৪.৪৬ | ||
|- | |- | ||
| হালিমপুর ৫১ || ২৫৬৭ || ৬৯০৬ || ৭২৭১ || ৪১.১৯ | | হালিমপুর ৫১ || ২৫৬৭ || ৬৯০৬ || ৭২৭১ || ৪১.১৯ | ||
|- | |- | ||
| হুমাইপুর ৬৯ || ৭৩০১ || ৫০২৭ || ৪৬২৮ || ২৪.৫৯ | | হুমাইপুর ৬৯ || ৭৩০১ || ৫০২৭ || ৪৬২৮ || ২৪.৫৯ | ||
৭৬ নং লাইন: | ৫৮ নং লাইন: | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:BazitpurUpazila.jpg|thumb|400px|right|বাজিতপুর উপজেলা]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ভাগলপুরের দেওয়ানবাড়ি জামে মসজিদ, ঘাগটিয়ার পাগলা শংকরের মাযার, বসন্তপুরের পীর মতিউরের মাযার, দিলালপুরের মোগল শাহের মাযার। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' ভাগলপুরের দেওয়ানবাড়ি জামে মসজিদ, ঘাগটিয়ার পাগলা শংকরের মাযার, বসন্তপুরের পীর মতিউরের মাযার, দিলালপুরের মোগল শাহের মাযার। | ||
ঐতিহাসিক | ''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ব্রিটিশ আমলে এ উপজেলার দিলালপুর নৌঘাট প্রসিদ্ধি লাভ করে। এর অদূরে গুপিনাথপুর ও ঘোড়াঘাটে নীলকর কেন্দ্র ছিল। এখান থেকে সমগ্র ভাটি এলাকার মুক্তার চালান হতো। সূক্ষ্ম মসলিন বিশেষত তনজব বাজিতপুরে তৈরি হতো। বাজিতপুরে ফকির ও সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছিল। ১৯৭১ সালে পাকসেনাদের নির্বিচার গণহত্যার শিকার হয়েছিল চারশতাধিক নিরীহ লোক, সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন ৬০ জন নারী। ৪ মে শ্মশানখালের বাঁশ মহলে গণহত্যা সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে বাজিতপুরের ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৬ অক্টোবর বাজিতপুর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। | ||
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ১ (সরারচর রেল গেইট), স্মৃতিস্তম্ভ ১ (পিরিজপুর)। | ''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ১ (সরারচর রেল গেইট), স্মৃতিস্তম্ভ ১ (পিরিজপুর)। | ||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৮৫, মন্দির ১৩, মাযার ৩৮, আখড়া ১০। | ''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৮৫, মন্দির ১৩, মাযার ৩৮, আখড়া ১০। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৪.৬%; পুরুষ ৩৮.৭%, মহিলা ৩০.৫%। মেডিকেল কলেজ ১, কলেজ ২, নার্সিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নার্সিং ইনস্টিটিউট (১৯৮৯), বাজিতপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), আফতাব উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৯০), বাজিতপুর এইচ ই স্কুল (১৮৯০), বাজিতপুর হাফেজ আঃ রাজ্জাক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯০), সরারচর শিবনাথ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), রাজ্জাকুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), ভাগলপুর বেগম রহিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৪.৬%; পুরুষ ৩৮.৭%, মহিলা ৩০.৫%। মেডিকেল কলেজ ১, কলেজ ২, নার্সিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নার্সিং ইনস্টিটিউট (১৯৮৯), বাজিতপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), আফতাব উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৯০), বাজিতপুর এইচ ই স্কুল (১৮৯০), বাজিতপুর হাফেজ আঃ রাজ্জাক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯০), সরারচর শিবনাথ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), রাজ্জাকুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), ভাগলপুর বেগম রহিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। | ||
১০১ নং লাইন: | ৮১ নং লাইন: | ||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিল, তিসি, চিনা, কাউন, তামাক, ডাল, পান। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তিল, তিসি, চিনা, কাউন, তামাক, ডাল, পান। | ||
''প্রধান ফল- | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, লটকন, বেল, বাতাবি লেবু। | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার ও হ্যাচারি রয়েছে। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার ও হ্যাচারি রয়েছে। | ||
১২৭ নং লাইন: | ১০৭ নং লাইন: | ||
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া ১৯৯৭ সালের ঘূর্ণির্ঝড়ে এ উপজেলার মাইজচর ইউনিয়ন বিরাণভূমিতে পরিণত হয়। | ''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া ১৯৯৭ সালের ঘূর্ণির্ঝড়ে এ উপজেলার মাইজচর ইউনিয়ন বিরাণভূমিতে পরিণত হয়। | ||
''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, পল্লীবিকাশ কেন্দ্র। | ''এনজিও'' ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, পল্লীবিকাশ কেন্দ্র। [এ.কে.এম মেজবাহউদ্দিন কামাল] | ||
[এ.কে.এম মেজবাহউদ্দিন কামাল] | |||
'''তথ্যসূত্র ''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাজিতপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাজিতপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Bajitpur Upazila]] | [[en:Bajitpur Upazila]] |
০৬:৫০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
বাজিতপুর উপজেলা (কিশোরগঞ্জ জেলা) আয়তন: ১৭২.১৮ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°০৯´ থেকে ২৪°১৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫০´ থেকে ৯১°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কটিয়াদি, নিকলী ও অষ্টগ্রাম উপজেলা, দক্ষিণে কুলিয়ারচর, ভৈরব ও সরাইল উপজেলা, পূর্বে অষ্টগ্রাম ও নাসিরনগর উপজেলা, পশ্চিমে কটিয়াদি উপজেলা।
জনসংখ্যা ২১০৩৭৫; পুরুষ ১০৫৯৮৮, মহিলা ১০৪৩৮৭। মুসলিম ১৮৮৩১৮, হিন্দু ২১৯৮১, বৌদ্ধ ১৩ এবং অন্যান্য ৬৩।
জলাশয় প্রধান নদ-নদী: মেঘনা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধলেশ্বরী, ঘোড়াউতরা।
প্রশাসন বাজিতপুর থানা গঠিত হয় ১৮৩৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ | ১১ | ৮৪ | ১৮৮ | ২৬৯২৫ | ১৮৩৪৫০ | ১০৯৬ | ৫৫.১ | ৩১.৫ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৯.৮৪ | ৯ | ২৮ | ২৬৯২৫ | ২৭৬৩ | ৫৫.১ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
কৈলাগ ৭২ | ২৯৫৫ | ৭৩১০ | ৭০১৩ | ২২.৫৪ | ||||
গাজীরচর ৪৩ | ১৬১৯ | ৪৬১২ | ৪৪৩৭ | ৩৩.৮৭ | ||||
দিঘিরপাড় ২৫ | ৩৬১০ | ৮৯৩৯ | ৮৯৮২ | ২৩.১৫ | ||||
দিলালপুর ৩৪ | ২৬০৬ | ৮০৮০ | ৭৯২৬ | ৩২.৪৮ | ||||
পিরিজপুর ৮৬ | ৫৭৩০ | ১৪১৪১ | ১৩৭৭৪ | ৩৩.৪১ | ||||
বালিয়ার্দি ১৭ | ২০৯০ | ৬৯৬৫ | ৭১৯৪ | ২৮.২০ | ||||
মাইজচর ৭৭ | ৫৪৮৩ | ৬৮৫৬ | ৬৯৮৮ | ১৯.৫০ | ||||
সরারচর ৯৪ | ৩০৫৫ | ১১৫৮৭ | ১১২১০ | ৪১.৬৫ | ||||
হিলাচিয়া ৬০ | ৬০৩০ | ১১৮৬৯ | ১১৭৩৫ | ৩৪.৪৬ | ||||
হালিমপুর ৫১ | ২৫৬৭ | ৬৯০৬ | ৭২৭১ | ৪১.১৯ | ||||
হুমাইপুর ৬৯ | ৭৩০১ | ৫০২৭ | ৪৬২৮ | ২৪.৫৯ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ভাগলপুরের দেওয়ানবাড়ি জামে মসজিদ, ঘাগটিয়ার পাগলা শংকরের মাযার, বসন্তপুরের পীর মতিউরের মাযার, দিলালপুরের মোগল শাহের মাযার।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ব্রিটিশ আমলে এ উপজেলার দিলালপুর নৌঘাট প্রসিদ্ধি লাভ করে। এর অদূরে গুপিনাথপুর ও ঘোড়াঘাটে নীলকর কেন্দ্র ছিল। এখান থেকে সমগ্র ভাটি এলাকার মুক্তার চালান হতো। সূক্ষ্ম মসলিন বিশেষত তনজব বাজিতপুরে তৈরি হতো। বাজিতপুরে ফকির ও সন্ন্যাসী বিদ্রোহ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছিল। ১৯৭১ সালে পাকসেনাদের নির্বিচার গণহত্যার শিকার হয়েছিল চারশতাধিক নিরীহ লোক, সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন ৬০ জন নারী। ৪ মে শ্মশানখালের বাঁশ মহলে গণহত্যা সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধে বাজিতপুরের ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৬ অক্টোবর বাজিতপুর উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বধ্যভূমি ১ (সরারচর রেল গেইট), স্মৃতিস্তম্ভ ১ (পিরিজপুর)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৮৫, মন্দির ১৩, মাযার ৩৮, আখড়া ১০।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৪.৬%; পুরুষ ৩৮.৭%, মহিলা ৩০.৫%। মেডিকেল কলেজ ১, কলেজ ২, নার্সিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১১৫, মাদ্রাসা ১০। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নার্সিং ইনস্টিটিউট (১৯৮৯), বাজিতপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪), আফতাব উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ (১৯৯০), বাজিতপুর এইচ ই স্কুল (১৮৯০), বাজিতপুর হাফেজ আঃ রাজ্জাক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯০), সরারচর শিবনাথ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), রাজ্জাকুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৫), ভাগলপুর বেগম রহিমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: মজলুমের ডাক; মাসিক: বাজিতপুর সমাচার; ত্রৈমাসিক: দূত।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৩, ক্লাব ৫৫, প্রেসক্লাব ১, থিয়েটার ক্লাব ১, লেখক শিবির ১, মহিলা সমিতি ১, খেলার মাঠ ১০, সিনেমা হল ২।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.৭৬%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৭১%, শিল্প ০.৭৫%, ব্যবসা ১৬.৭৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.৫৮%, চাকরি ৫.৯১%, নির্মাণ ১.৪১%, ধর্মীয় সেবা ০.২২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৪% এবং অন্যান্য ১১.১৯%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.৮২%, ভূমিহীন ৪৯.১৮%। শহরে ৩৬.৪৯% এবং গ্রামে ৫২.৯৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, সরিষা, মরিচ, আলু, বাদাম, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, চিনা, কাউন, তামাক, ডাল, পান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, লটকন, বেল, বাতাবি লেবু।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার ও হ্যাচারি রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬০ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৮৫ কিমি; নৌপথ ২২ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও মহিষের গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, করাতকল, বরফকল, লেদার কারখানা, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, শুঁটকিশিল্প, দারুশিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৯, মেলা ১০। সরারচর হাট, ফতেহপুর বাজার, শ্রীধরগঞ্জ বাজার এবং কামালপুর মেলা, কামিয়ার বাড়ি মেলা ও দেওয়ান বাড়ি মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য মাছ, ডিম, দুধ, মুরগি, চাল, কলা।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিলবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২২.৫৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৪.৯২%, পুকুর ০.২৮%, ট্যাপ ০.৬৩% এবং অন্যান্য ৪.১৭%। এ উপজেলার ৯০% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ২৭.১১% (গ্রামে ২৩.৩৮% ও শহরে ৫৪.১৪%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৭.৯৩% (গ্রামে ৬১.২৬% ও শহরে ৩৩.৮১%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৪.৯৬% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ১, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৯, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪৩ ও ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে এ উপজেলার অনেক লোক প্রাণ হারায়। ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালের বন্যায় ঘরবাড়ি, ফসল, গবাদিপশু ও অন্যান্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া ১৯৯৭ সালের ঘূর্ণির্ঝড়ে এ উপজেলার মাইজচর ইউনিয়ন বিরাণভূমিতে পরিণত হয়।
এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, পল্লীবিকাশ কেন্দ্র। [এ.কে.এম মেজবাহউদ্দিন কামাল]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাজিতপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।