বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন''' সরকার পরিচালিত একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। | '''বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন''' সরকার পরিচালিত একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। দেশের শহর এলাকায় গৃহায়ন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে আবাসিক বাড়ি নির্মাণ, সংস্কার এবং নির্মিত বাড়ির কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালে জারিকৃত রাষ্ট্রপতির ৭নং আদেশ বলে ১৯৫২ সালের এইচবিএফসি অ্যাক্ট ১৮ বলে প্রতিষ্ঠিত হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনকে পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত পাকিস্তান হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশন-এর অবকাঠামো এবং দায় ও সম্পদ সমন্বয় করেই বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন হিসেবে পুনর্গঠিত করা হয়। বিভিন্ন নগর, শহর এবং পৌর এলাকায় বসতবাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, মেরামত ও রি-মডেলিং এর জন্য ঋণসুবিধা প্রদানের সমন্বিত উদ্দেশ্য নিয়েই এটি গঠিত হয়। ২০০৯ সালের মার্চ পর্যন্ত কর্পোরেশনের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে ১১০০ ও ৯৭৩ মিলিয়ন টাকায় দাঁড়ায়। কর্পোরেশনের পররেশাধিত মূলধনের সবটাই বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিশোধিত। বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বীমা কর্পোরেশনের নিকট সরকার কর্তৃক গ্যারান্টিযুক্ত ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে কর্পোরেশন চলতি মূলধন সংগ্রহ করে থাকে। ৩০ জুন ২০০৮ পর্যন্ত ডিবেঞ্চার বিক্রয়লব্ধ তহবিলের মোট স্থিতির পরিমাণ ছিল ১১৬৩৭ মিলিয়ন টাকা। | ||
কর্পোরেশনের সদর দফতর ঢাকায় অবস্থিত। সদর দফতর ২টি মহাবিভাগ এবং ৫টি বিভাগ রয়েছে। কর্পোরেশনের সদর দফতর ব্যতীত ঢাকায় ৪টি এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল বিভাগীয় সদরে ১টি করে মোট ৯টি জোনাল অফিস রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, বগুড়া, রংপুর এবং দিনাজপুরে ১টি করে মোট ১৩টি রিজিওনাল অফিস আছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ এবং কক্সবাজার জেলায় ১টি করে মোট ২টি ক্যাম্প চালু আছে। | কর্পোরেশনের সদর দফতর ঢাকায় অবস্থিত। সদর দফতর ২টি মহাবিভাগ এবং ৫টি বিভাগ রয়েছে। কর্পোরেশনের সদর দফতর ব্যতীত ঢাকায় ৪টি এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল বিভাগীয় সদরে ১টি করে মোট ৯টি জোনাল অফিস রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, বগুড়া, রংপুর এবং দিনাজপুরে ১টি করে মোট ১৩টি রিজিওনাল অফিস আছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ এবং কক্সবাজার জেলায় ১টি করে মোট ২টি ক্যাম্প চালু আছে। | ||
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান | মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |||
| বিবরণ || ২০০৪ || ২০০৫ || ২০০৬ || ২০০৭ || ২০০৮ || ২০০৯ | |||
|- | |||
| অনুমোদিত মূলধন || ১১০০ || ১১০০ || ১১০০ || ১১০০ || ১১০০ || ১১০০ | |||
|- | |||
| পরিশোধিত মূলধন || ৯৭৩ || ৯৭৩ || ৯৭৩ || ৯৭৩ || ৯৭৩ || ১১০০ | |||
|- | |||
| রিজার্ভ ফান্ড || ৯৫৩৬ || ৯৯৬৩ || ১০৬৬২ || ১১৩৫৪ || ১২০৮১ || ১২৯২০ | |||
|- | |||
| আমানত || ১২৪৯ || ১৭৩১ || ২১৪০ || ২৬৬৪ || ৩৬১৫ || ২৩৩৯ | |||
|- | |||
| (ক) তলবি আমানত || - || - || - || - || - || - | |||
|- | |||
| (খ) মেয়াদি আমানত || ১২৪৯ || ১৭৩১ || ২১৪০ || ২৬৬৪ || ৩৬১৫ || ২৩৩৯ | |||
|- | |||
| ঋণ ও অগ্রিম || ২৮৯৪৫ || ২৭৮৪৬ || ২৬২৬৮ || ২৫১৬৪ || ২৪৩৯৬ || ২৪৯৯৬ | |||
|- | |||
| মোট পরিসম্পদ || ৩০৭৪৫ || ৩০৪৮৬ || ৩০৪৫০ || ৩০৫৫৬ || ৩০৭৪৪ || ৩০৭২৪ | |||
|- | |||
| মোট আয় || ১৮৬৫ || ২০০৭ || ২০৫৪ || ২১৩০ || ২২৫৬ || ২৩৬৩ | |||
|- | |||
| মোট ব্যয় || ১০০২ || ১০৩১ || ১১০২ || ৯৪১ || ৯৫২ || ১০১৫ | |||
|- | |||
| মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) || ৫২৭ || ৪৯৮ || ৪৫৩ || ৪৫২ || ৪৫৬ || ৪৬৩ | |||
|- | |||
| (ক) কর্মকর্তা || ২৮৫ || ২৬৯ || ২৪৮ || ২৭১ || ২৮৩ || ২৯০ | |||
|- | |||
| (খ) কর্মচারী || ২৪২ || ২২৯ || ২০৫ || ১৮১ || ১৭৩ || ১৭৩ | |||
|- | |||
| শাখা (সংখ্যায়) || ২৩ || ২৩ || ২৩ || ২৩ || ২৩ || ২৩ | |||
|- | |||
| (ক) জোনাল || ৯ || ৯ || ৯ || ৯ || ৯ || ৯ | |||
|- | |||
| (খ) রিজিওনাল || ১৩ || ১৩ || ১৩ || ১৩ || ১৩ || ১৩ | |||
|- | |||
| (গ) ক্যাম্প অফিস || ২ || ১ || ১ || ১ || ১ || ১ | |||
|} | |||
''উৎস'' অর্থবিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৯-১০। | |||
কর্পোরেশন পরিচালনা পর্ষদ সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন চেয়ারম্যান ও একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সর্বমোট ৬ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী এবং পদাধিকার বলে পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। কর্পোরেশনের সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন ও পরিচালনা কার্যক্রম তদারকি করে পরিচালনা পর্যদ। সরকারি নির্দেশনার আলোকে কর্পোরেশনের কার্যক্রম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব ও এখতিয়ার পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত এবং পরিচালনা পর্ষদ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সহায়তায় তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে এবং কর্পোরেশনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে সরকারের প্রদত্ত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয়। পরিচালনা পর্যদের কার্য সম্পাদনের নিমিত্তে কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে বা কর্পোরেশনের অন্য যেকোন কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং মহাব্যবস্থাপকগণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকেকে সহায়তা করেন। কর্পোরেশনে বর্তমানে ২৮৩ জন নির্বাহী কর্মকর্তা সহ মোট জনবল ৪৫৬। | কর্পোরেশন পরিচালনা পর্ষদ সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন চেয়ারম্যান ও একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সর্বমোট ৬ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী এবং পদাধিকার বলে পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। কর্পোরেশনের সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন ও পরিচালনা কার্যক্রম তদারকি করে পরিচালনা পর্যদ। সরকারি নির্দেশনার আলোকে কর্পোরেশনের কার্যক্রম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব ও এখতিয়ার পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত এবং পরিচালনা পর্ষদ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সহায়তায় তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে এবং কর্পোরেশনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে সরকারের প্রদত্ত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয়। পরিচালনা পর্যদের কার্য সম্পাদনের নিমিত্তে কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে বা কর্পোরেশনের অন্য যেকোন কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং মহাব্যবস্থাপকগণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকেকে সহায়তা করেন। কর্পোরেশনে বর্তমানে ২৮৩ জন নির্বাহী কর্মকর্তা সহ মোট জনবল ৪৫৬। | ||
৪৮ নং লাইন: | ৫০ নং লাইন: | ||
সময়ের প্রেক্ষাপটে কর্পোরেশনের ঋণ প্রদান কার্যক্রমের এখতিয়ার, পরিমাণ, শর্ত ও এলাকাগত পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। একসময় শুধু মহানগর ও শহরে মাঝারি ও বহুতল ভবন নির্মানে ঋণ দেওয়া হত, এখন তা উপজেলা পর্যন্ত পরিব্যপ্ত হয়েছে। কর্পোরেশন থেকে বর্তমান পাঁচ প্রকার দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ এবং এক প্রকার স্বল্প মেয়াদি ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এগুলি হলো: (১) সাধারণ ঋণ: একক বা স্বামী বা স্ত্রীর যৌথ নামে; (২) গ্রুপ ঋণ: একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্লটে ফ্ল্যাটভিত্তিক গ্রুপ ঋণ; (৩) ফ্ল্যাট/অ্যাপার্টমেন্ট ঋণ: নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট/অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের জন্য; (৪) বর্ধিত ঋণ: মূল ঋণে নির্মিত অংশ বাদে নকশা মোতাবেক বাড়ির অনির্মিত অংশের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য; (৫) মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বল্প আয়তনের বাড়ি নির্মাণের জন্য; (৬) বিশেষ ঋণ: প্রায় সমাপ্ত বাড়ির কাজ সমাপ্ত করার জন্য স্বল্প মেয়াদি ঋণ। [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ] | সময়ের প্রেক্ষাপটে কর্পোরেশনের ঋণ প্রদান কার্যক্রমের এখতিয়ার, পরিমাণ, শর্ত ও এলাকাগত পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। একসময় শুধু মহানগর ও শহরে মাঝারি ও বহুতল ভবন নির্মানে ঋণ দেওয়া হত, এখন তা উপজেলা পর্যন্ত পরিব্যপ্ত হয়েছে। কর্পোরেশন থেকে বর্তমান পাঁচ প্রকার দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ এবং এক প্রকার স্বল্প মেয়াদি ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এগুলি হলো: (১) সাধারণ ঋণ: একক বা স্বামী বা স্ত্রীর যৌথ নামে; (২) গ্রুপ ঋণ: একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্লটে ফ্ল্যাটভিত্তিক গ্রুপ ঋণ; (৩) ফ্ল্যাট/অ্যাপার্টমেন্ট ঋণ: নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট/অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের জন্য; (৪) বর্ধিত ঋণ: মূল ঋণে নির্মিত অংশ বাদে নকশা মোতাবেক বাড়ির অনির্মিত অংশের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য; (৫) মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বল্প আয়তনের বাড়ি নির্মাণের জন্য; (৬) বিশেষ ঋণ: প্রায় সমাপ্ত বাড়ির কাজ সমাপ্ত করার জন্য স্বল্প মেয়াদি ঋণ। [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ] | ||
[[en:Bangladesh House Building Finance Corporation]] | [[en:Bangladesh House Building Finance Corporation]] |
১০:৩৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন সরকার পরিচালিত একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। দেশের শহর এলাকায় গৃহায়ন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে আবাসিক বাড়ি নির্মাণ, সংস্কার এবং নির্মিত বাড়ির কাঠামোগত পরিবর্তনের জন্য ঋণ সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালে জারিকৃত রাষ্ট্রপতির ৭নং আদেশ বলে ১৯৫২ সালের এইচবিএফসি অ্যাক্ট ১৮ বলে প্রতিষ্ঠিত হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনকে পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত পাকিস্তান হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশন-এর অবকাঠামো এবং দায় ও সম্পদ সমন্বয় করেই বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন হিসেবে পুনর্গঠিত করা হয়। বিভিন্ন নগর, শহর এবং পৌর এলাকায় বসতবাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, মেরামত ও রি-মডেলিং এর জন্য ঋণসুবিধা প্রদানের সমন্বিত উদ্দেশ্য নিয়েই এটি গঠিত হয়। ২০০৯ সালের মার্চ পর্যন্ত কর্পোরেশনের অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে ১১০০ ও ৯৭৩ মিলিয়ন টাকায় দাঁড়ায়। কর্পোরেশনের পররেশাধিত মূলধনের সবটাই বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিশোধিত। বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং বীমা কর্পোরেশনের নিকট সরকার কর্তৃক গ্যারান্টিযুক্ত ঋণপত্র বিক্রয়ের মাধ্যমে কর্পোরেশন চলতি মূলধন সংগ্রহ করে থাকে। ৩০ জুন ২০০৮ পর্যন্ত ডিবেঞ্চার বিক্রয়লব্ধ তহবিলের মোট স্থিতির পরিমাণ ছিল ১১৬৩৭ মিলিয়ন টাকা।
কর্পোরেশনের সদর দফতর ঢাকায় অবস্থিত। সদর দফতর ২টি মহাবিভাগ এবং ৫টি বিভাগ রয়েছে। কর্পোরেশনের সদর দফতর ব্যতীত ঢাকায় ৪টি এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল বিভাগীয় সদরে ১টি করে মোট ৯টি জোনাল অফিস রয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ফরিদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, বগুড়া, রংপুর এবং দিনাজপুরে ১টি করে মোট ১৩টি রিজিওনাল অফিস আছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ এবং কক্সবাজার জেলায় ১টি করে মোট ২টি ক্যাম্প চালু আছে।
মৌল তথ্য ও পরিসংখ্যান
বিবরণ | ২০০৪ | ২০০৫ | ২০০৬ | ২০০৭ | ২০০৮ | ২০০৯ |
অনুমোদিত মূলধন | ১১০০ | ১১০০ | ১১০০ | ১১০০ | ১১০০ | ১১০০ |
পরিশোধিত মূলধন | ৯৭৩ | ৯৭৩ | ৯৭৩ | ৯৭৩ | ৯৭৩ | ১১০০ |
রিজার্ভ ফান্ড | ৯৫৩৬ | ৯৯৬৩ | ১০৬৬২ | ১১৩৫৪ | ১২০৮১ | ১২৯২০ |
আমানত | ১২৪৯ | ১৭৩১ | ২১৪০ | ২৬৬৪ | ৩৬১৫ | ২৩৩৯ |
(ক) তলবি আমানত | - | - | - | - | - | - |
(খ) মেয়াদি আমানত | ১২৪৯ | ১৭৩১ | ২১৪০ | ২৬৬৪ | ৩৬১৫ | ২৩৩৯ |
ঋণ ও অগ্রিম | ২৮৯৪৫ | ২৭৮৪৬ | ২৬২৬৮ | ২৫১৬৪ | ২৪৩৯৬ | ২৪৯৯৬ |
মোট পরিসম্পদ | ৩০৭৪৫ | ৩০৪৮৬ | ৩০৪৫০ | ৩০৫৫৬ | ৩০৭৪৪ | ৩০৭২৪ |
মোট আয় | ১৮৬৫ | ২০০৭ | ২০৫৪ | ২১৩০ | ২২৫৬ | ২৩৬৩ |
মোট ব্যয় | ১০০২ | ১০৩১ | ১১০২ | ৯৪১ | ৯৫২ | ১০১৫ |
মোট জনশক্তি (সংখ্যায়) | ৫২৭ | ৪৯৮ | ৪৫৩ | ৪৫২ | ৪৫৬ | ৪৬৩ |
(ক) কর্মকর্তা | ২৮৫ | ২৬৯ | ২৪৮ | ২৭১ | ২৮৩ | ২৯০ |
(খ) কর্মচারী | ২৪২ | ২২৯ | ২০৫ | ১৮১ | ১৭৩ | ১৭৩ |
শাখা (সংখ্যায়) | ২৩ | ২৩ | ২৩ | ২৩ | ২৩ | ২৩ |
(ক) জোনাল | ৯ | ৯ | ৯ | ৯ | ৯ | ৯ |
(খ) রিজিওনাল | ১৩ | ১৩ | ১৩ | ১৩ | ১৩ | ১৩ |
(গ) ক্যাম্প অফিস | ২ | ১ | ১ | ১ | ১ | ১ |
উৎস অর্থবিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী, ২০০৪-০৫ থেকে ২০০৯-১০।
কর্পোরেশন পরিচালনা পর্ষদ সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন চেয়ারম্যান ও একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সর্বমোট ৬ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী এবং পদাধিকার বলে পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। কর্পোরেশনের সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন ও পরিচালনা কার্যক্রম তদারকি করে পরিচালনা পর্যদ। সরকারি নির্দেশনার আলোকে কর্পোরেশনের কার্যক্রম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব ও এখতিয়ার পরিচালনা পর্ষদের উপর ন্যস্ত এবং পরিচালনা পর্ষদ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সহায়তায় তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে এবং কর্পোরেশনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে সরকারের প্রদত্ত সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয়। পরিচালনা পর্যদের কার্য সম্পাদনের নিমিত্তে কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে বা কর্পোরেশনের অন্য যেকোন কার্যালয়ে চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যবস্থাপনা পরিচালক কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং মহাব্যবস্থাপকগণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকেকে সহায়তা করেন। কর্পোরেশনে বর্তমানে ২৮৩ জন নির্বাহী কর্মকর্তা সহ মোট জনবল ৪৫৬।
সময়ের প্রেক্ষাপটে কর্পোরেশনের ঋণ প্রদান কার্যক্রমের এখতিয়ার, পরিমাণ, শর্ত ও এলাকাগত পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। একসময় শুধু মহানগর ও শহরে মাঝারি ও বহুতল ভবন নির্মানে ঋণ দেওয়া হত, এখন তা উপজেলা পর্যন্ত পরিব্যপ্ত হয়েছে। কর্পোরেশন থেকে বর্তমান পাঁচ প্রকার দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ এবং এক প্রকার স্বল্প মেয়াদি ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। এগুলি হলো: (১) সাধারণ ঋণ: একক বা স্বামী বা স্ত্রীর যৌথ নামে; (২) গ্রুপ ঋণ: একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্লটে ফ্ল্যাটভিত্তিক গ্রুপ ঋণ; (৩) ফ্ল্যাট/অ্যাপার্টমেন্ট ঋণ: নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট/অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের জন্য; (৪) বর্ধিত ঋণ: মূল ঋণে নির্মিত অংশ বাদে নকশা মোতাবেক বাড়ির অনির্মিত অংশের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য; (৫) মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের স্বল্প আয়তনের বাড়ি নির্মাণের জন্য; (৬) বিশেষ ঋণ: প্রায় সমাপ্ত বাড়ির কাজ সমাপ্ত করার জন্য স্বল্প মেয়াদি ঋণ। [মোহাম্মদ আবদুল মজিদ]