বগাকাইন হ্রদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''বগাকাইন হ্রদ''' (Bagakain Lake) বান্দরবান পার্বত্য জেলার একমাত্র প্রাকৃতিক হ্রদ, সাধারণভাবে বগা লেক নামে পরিচিত। হ্রদটি রুমা থানার পূর্বদিকে শঙ্খ নদীর তীর থেকে ২৯ কিমি অভ্যন্তরে নাইতং মৌজায় পলিতাই পর্বতশ্রেণীর একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। এর তীরগুলি পরস্পর সমান্তরাল বলে এটিকে মানুষের খনন করা দিঘি বলে মনে হয়। | '''বগাকাইন হ্রদ''' (Bagakain Lake) বান্দরবান পার্বত্য জেলার একমাত্র প্রাকৃতিক হ্রদ, সাধারণভাবে বগা লেক নামে পরিচিত। হ্রদটি রুমা থানার পূর্বদিকে শঙ্খ নদীর তীর থেকে ২৯ কিমি অভ্যন্তরে নাইতং মৌজায় পলিতাই পর্বতশ্রেণীর একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। এর তীরগুলি পরস্পর সমান্তরাল বলে এটিকে মানুষের খনন করা দিঘি বলে মনে হয়। | ||
[[Image:BagakainLake.jpg|thumb|400px|right|বগাকাইন হ্রদ , বান্দরবান]] | |||
এটি তিনদিক থেকে ৪৬ মিটার পর্যন্ত উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। হ্রদটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ও ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যবর্তী অবস্থানে একটি মালভূমিতে অবস্থিত। এর গভীরতা ৩৮ মিটার। হ্রদটি রীতিমত আবদ্ধ, এর আশেপাশে পানির কোন উৎসস্থল নেই এবং এখান থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ারও কোন পথ নেই। হ্রদের অবস্থান থেকে ১৫৩ মিটার নিচে বগাছড়া নামে একটি ছোট ঝর্ণার উৎসস্থল আছে। হ্রদের পানি কখনও ঘোলাটে, কখনও পরিষ্কার থাকে। অনেকে মনে করেন, এই হ্রদের তলদেশে উষ্ণ প্রস্রবণ আছে এবং সেখান থেকে পানি বের হওয়ার সময় পানির রঙ বদল হয়। | এটি তিনদিক থেকে ৪৬ মিটার পর্যন্ত উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। হ্রদটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ও ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যবর্তী অবস্থানে একটি মালভূমিতে অবস্থিত। এর গভীরতা ৩৮ মিটার। হ্রদটি রীতিমত আবদ্ধ, এর আশেপাশে পানির কোন উৎসস্থল নেই এবং এখান থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ারও কোন পথ নেই। হ্রদের অবস্থান থেকে ১৫৩ মিটার নিচে বগাছড়া নামে একটি ছোট ঝর্ণার উৎসস্থল আছে। হ্রদের পানি কখনও ঘোলাটে, কখনও পরিষ্কার থাকে। অনেকে মনে করেন, এই হ্রদের তলদেশে উষ্ণ প্রস্রবণ আছে এবং সেখান থেকে পানি বের হওয়ার সময় পানির রঙ বদল হয়। | ||
হ্রদটি ভুবন স্তরসমষ্টির (Bhuban Formation) নরম শিলা দ্বারা গঠিত। ভূতত্ত্ববিদগণ মনে করেন, বগাকাইন হ্রদ হয় মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিন্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। অনেক ভূতত্ত্ববিদ অবশ্য ভূমিধ্বসকেও এর উৎপত্তির কারণ বলে মনে করেন। হ্রদটির পানি অত্যন্ত অম্লধর্মী। ফলে এই হ্রদে কোন শ্যাওলা বা জলজ উদ্ভিদ নেই এবং এর পানিতে কোন জলজ প্রাণীও বাঁচতে পারে না। দৃষ্টিনন্দন বলে হ্রদটি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বর্তমানে হ্রদটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিগনত হচ্ছে। দূর্গম পথ অতিক্রম করে প্রতিবছর বেশকিছু পর্যটক হ্রদটি পরিদর্শন করে। শুষ্ক মৌসুমে হ্রদ পর্যন্ত তাদের গাড়ী পৌছাতে পারে। হ্রদের পাশে স্থানীয় উদ্যোগে আবাসিক ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান গড়ে উঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারলে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থানে পরিণত হতে পারে। স্থানীয় আদিবাসীদের ধারণা, এই হ্রদে বা তার আশেপাশে দেবতারা বাস করেন এবং এ বিশ্বাস থেকে মূলত জুম চাষে সাফল্যের কামনায় তারা এখানে পূজা দিয়ে থাকে। [এস.এম মাহফুজুর রহমান এবং সিফাতুল কাদের চৌধুরী] | |||
হ্রদটি ভুবন স্তরসমষ্টির (Bhuban Formation) নরম শিলা দ্বারা গঠিত। ভূতত্ত্ববিদগণ মনে করেন, বগাকাইন হ্রদ হয় মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিন্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। অনেক ভূতত্ত্ববিদ অবশ্য ভূমিধ্বসকেও এর উৎপত্তির কারণ বলে মনে করেন। হ্রদটির পানি অত্যন্ত অম্লধর্মী। ফলে এই হ্রদে কোন শ্যাওলা বা জলজ উদ্ভিদ নেই এবং এর পানিতে কোন জলজ প্রাণীও বাঁচতে পারে না। দৃষ্টিনন্দন বলে হ্রদটি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বর্তমানে হ্রদটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিগনত হচ্ছে। দূর্গম পথ অতিক্রম করে প্রতিবছর বেশকিছু পর্যটক হ্রদটি পরিদর্শন করে। শুষ্ক মৌসুমে হ্রদ পর্যন্ত তাদের গাড়ী পৌছাতে পারে। হ্রদের পাশে স্থানীয় উদ্যোগে আবাসিক ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান গড়ে উঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারলে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থানে পরিণত হতে পারে। স্থানীয় আদিবাসীদের ধারণা, এই হ্রদে বা তার আশেপাশে দেবতারা বাস করেন এবং এ বিশ্বাস থেকে মূলত জুম চাষে সাফল্যের কামনায় তারা এখানে পূজা দিয়ে থাকে। | |||
[এস.এম মাহফুজুর রহমান এবং সিফাতুল কাদের চৌধুরী | |||
[[en:Bagakain Lake]] | [[en:Bagakain Lake]] |
০৯:৩৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বগাকাইন হ্রদ (Bagakain Lake) বান্দরবান পার্বত্য জেলার একমাত্র প্রাকৃতিক হ্রদ, সাধারণভাবে বগা লেক নামে পরিচিত। হ্রদটি রুমা থানার পূর্বদিকে শঙ্খ নদীর তীর থেকে ২৯ কিমি অভ্যন্তরে নাইতং মৌজায় পলিতাই পর্বতশ্রেণীর একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। এর তীরগুলি পরস্পর সমান্তরাল বলে এটিকে মানুষের খনন করা দিঘি বলে মনে হয়।
এটি তিনদিক থেকে ৪৬ মিটার পর্যন্ত উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত পর্বতশৃঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত। হ্রদটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫৭ মিটার ও ৬১০ মিটার উচ্চতার মধ্যবর্তী অবস্থানে একটি মালভূমিতে অবস্থিত। এর গভীরতা ৩৮ মিটার। হ্রদটি রীতিমত আবদ্ধ, এর আশেপাশে পানির কোন উৎসস্থল নেই এবং এখান থেকে পানি বের হয়ে যাওয়ারও কোন পথ নেই। হ্রদের অবস্থান থেকে ১৫৩ মিটার নিচে বগাছড়া নামে একটি ছোট ঝর্ণার উৎসস্থল আছে। হ্রদের পানি কখনও ঘোলাটে, কখনও পরিষ্কার থাকে। অনেকে মনে করেন, এই হ্রদের তলদেশে উষ্ণ প্রস্রবণ আছে এবং সেখান থেকে পানি বের হওয়ার সময় পানির রঙ বদল হয়।
হ্রদটি ভুবন স্তরসমষ্টির (Bhuban Formation) নরম শিলা দ্বারা গঠিত। ভূতত্ত্ববিদগণ মনে করেন, বগাকাইন হ্রদ হয় মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিন্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল। অনেক ভূতত্ত্ববিদ অবশ্য ভূমিধ্বসকেও এর উৎপত্তির কারণ বলে মনে করেন। হ্রদটির পানি অত্যন্ত অম্লধর্মী। ফলে এই হ্রদে কোন শ্যাওলা বা জলজ উদ্ভিদ নেই এবং এর পানিতে কোন জলজ প্রাণীও বাঁচতে পারে না। দৃষ্টিনন্দন বলে হ্রদটি পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বর্তমানে হ্রদটি একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিগনত হচ্ছে। দূর্গম পথ অতিক্রম করে প্রতিবছর বেশকিছু পর্যটক হ্রদটি পরিদর্শন করে। শুষ্ক মৌসুমে হ্রদ পর্যন্ত তাদের গাড়ী পৌছাতে পারে। হ্রদের পাশে স্থানীয় উদ্যোগে আবাসিক ব্যবস্থা ও খাবারের দোকান গড়ে উঠেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে পারলে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্থানে পরিণত হতে পারে। স্থানীয় আদিবাসীদের ধারণা, এই হ্রদে বা তার আশেপাশে দেবতারা বাস করেন এবং এ বিশ্বাস থেকে মূলত জুম চাষে সাফল্যের কামনায় তারা এখানে পূজা দিয়ে থাকে। [এস.এম মাহফুজুর রহমান এবং সিফাতুল কাদের চৌধুরী]