নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (fix: tag) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা''' (পিরোজপুর জেলা) আয়তন: ১৯৯.১৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৯´ থেকে ২২°৪৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°১২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বানারীপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে ঝালকাঠি সদর, কাউখালী (পিরোজপুর) ও পিরোজপুর সদর উপজেলা, পূর্বে ঝালকাঠি সদর উপজেলা, পশ্চিমে নাজিরপুর ও পিরোজপুর সদর উপজেলা। | '''নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা''' ([[পিরোজপুর জেলা|পিরোজপুর জেলা]]) আয়তন: ১৯৯.১৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৯´ থেকে ২২°৪৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°১২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বানারীপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে ঝালকাঠি সদর, কাউখালী (পিরোজপুর) ও পিরোজপুর সদর উপজেলা, পূর্বে ঝালকাঠি সদর উপজেলা, পশ্চিমে নাজিরপুর ও পিরোজপুর সদর উপজেলা। | ||
''জনসংখ্যা'' ২১২২৩২; পুরুষ ১০৭১২৭, মহিলা ১০৫১০৫। মুসলিম ১৫৯০২৯, হিন্দু ৫৩০৬৯, বৌদ্ধ ৯৬, খ্রিস্টান ৯ এবং অন্যান্য ২৯। | |||
''জলাশয়'' প্রধান নদী: স্বরূপকাঠি, কালিগঙ্গা, বাইনাকাঠি, সন্ধ্যা, বেলুয়া; গবখানা খাল উল্লেখযোগ্য। | |||
''প্রশাসন'' নেছারাবাদ থানা গঠিত হয় ১৯০৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। ১৯৮৫ সালে স্বরূপকাঠি উপজেলার নতুন নামকরণ করা হয় নেছারাবাদ। | |||
উপজেলা | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |||
| colspan="9" | উপজেলা | |||
|- | |||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | |||
|- | |||
| ১ (স্বরূপকাঠি) || ১০ || ৮২ || ১৩৩ || ৪৬৮২৬ || ১৬৫৪০৬ || ১০৬৬ || ৭৪.৩ || ৬৬.৪ | |||
|} | |||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |||
| colspan="9" | পৌরসভা | |||
|- | |||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || ওয়ার্ড || মহল্লা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |||
| ৪.৯৮ || ৯ || ৯ || ১৮০৮৩ || ৩৬৩১ || ৭৭.৭ | |||
|- | |||
| colspan="9" | উপজেলা শহর | |||
|- | |||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |||
| ৮.৫৪ || ৪ || ২৮৭৪৩ || ৩৩৬৬ || ৭২.১ | |||
|} | |||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |||
| colspan="9" | ইউনিয়ন | |||
|- | |||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |||
| পুরুষ || মহিলা | |||
|- | |||
| আটঘর কুড়িয়ানা ১৭ || ৪৯৬০ || ৯৪৫২ || ৮৯৩৯ || ৭৪.৩০ | |||
|- | |||
| গুয়ারেখা ৩৮ || ৬৩৪২ || ৭৪৬৫ || ৭৩০০ || ৬৮.৪৫ | |||
|- | |||
| জলাবাড়ী ৪৭ || ৬৫০৭ || ১০২৬৮ || ১০০৬৩ || ৬৮.৩০ | |||
|- | |||
| দৈহাড়ি ২৮ || ৩৮৩৬ || ৫৪২৭ || ৫৩৭৪ || ৬৯.১৬ | |||
|- | |||
| নেছারাবাদ ৯৫ || ২০৮০ || ৬১৪৬ || ৬৫১৬ || ৬২.০৭ | |||
|- | |||
| বলদিয়া ১৯ || ৫১২২ || ১৫৯৮৫ || ১৬০৯৮ || ৬১.৩০ | |||
|- | |||
| সমুদয়কাঠি ৫৭ || ১০৪০৯ || ৭৫৭০ || ৭৪৮১ || ৬৭.১৮ | |||
|- | |||
| সারেংকাঠি ৬৬ || ৩২৯৯ || ৬৩৮০ || ৬৪২২ || ৬২.২৯ | |||
|- | |||
| সুতিয়াকাঠি ৮৫ || ২৯২৭ || ১৪২৬৬ || ১৪০০৫ || ৬৮.৮৬ | |||
|- | |||
| সোহাগদল ৭৬ || ২৫৮৬ || ১৪৩৮৮ || ১৪৬০৪ || ৬৯.৬২ | |||
|} | |||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | |||
[[Image:NesarabadUpazila.jpg|thumb|400px|right]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' বরছাকাঠি গ্রামের গায়েবী মসজিদ ও তিন গম্বুজ মসজিদ, অলঙ্কারকাঠি গ্রামের সরকার বাড়ির পঞ্চরত্ন মঠ, আটঘর কুড়িয়ানার চক্রবর্তী বাড়ির মন্দির এবং কৌড়িখারা ও রাগবাড়িতে রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ (আঠারো শতক)। | |||
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ১১ মে নেছারাবাদ উপজেলায় পাকসেনারা সর্বপ্রথম আক্রমণ করে। মে-জুন মাসে পাকসেনারা রাজাকারদের সহযোগিতায় মিয়ারহাট ও ইন্দেরহাট বন্দরসহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর ও দোকানে ব্যাপক লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া রাজাকারদের সহযোগিতায় তারা প্রায় ১০০ জন লোককে হত্যা করে। সোহাগদল ইউনিয়নের বরছাকাঠি গ্রামে একই বাড়ির সাতজনকে হত্যা করে। ১০ নভেম্বর বরছাকাঠি কাছারির সামনে পাকসেনা ও তাদের দোসররা একই রশিতে ১৮ জন মানুষকে বেঁধে নির্যাতন করে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকসেনা ও তাদের দোসররা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক হাজার নিরীহ লোককে হত্যা করে। সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাকান্ড চালায় আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারা বাগানে। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কুড়িয়ানা কলেজের পেছনের একটি ডোবা থেকে প্রায় তিনশত মাথার খুলি উদ্ধার করা হয়। | |||
১ ( | ''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১; বধ্যভূমি ১ (বরছাকাটি)। | ||
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' বরছাকাঠি গ্রামের গায়েবী মসজিদ ও তিন গম্বুজ মসজিদ এবং আটঘর কুড়িয়ানার চক্রবর্তী বাড়ির মন্দির উল্লেখযোগ্য। | |||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৬৮.২%; পুরুষ ৬৯.৯%, মহিলা ৬৬.৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্বরূপকাঠি মহাবিদ্যালয় (১৯৬৫), শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), ফাজিলা রহমান মহিলা কলেজ (১৯৮৯), কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), আকমল মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩০), সুতিয়াকাঠি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৯), এস.জি.এস ইনস্টিটিউশন, কামারকাঠি এন.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৭), পাবলিক ইনস্টিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২২), আলকীরহাট আর.এ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), অলংকারকাঠি এম.আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৭), সুতিয়াকাঠি পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯২৭), শর্ষিনা দারুস-সুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা (১৯১৪)। | |||
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' কালান্তর, কর্ষণ। | |||
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ১৮, ক্লাব ২, থিয়েটার ১, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৫০। | |||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৩৬.১৭%, অকৃষি শ্রমিক ৮.৯৬%, শিল্প ১.৪৪%, ব্যবসা ৩০.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৬৯%, চাকরি ৭.১৯%, নির্মাণ ২.২০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ১১.৬৭%। | |||
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৫৯.৮৮%, ভূমিহীন ৪০.১২%। শহরে ৪২.৫৪% এবং গ্রামে ৬৪.৩৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে। | |||
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আখ, গম, ডাল, পান, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি। | |||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' স্থানীয় জাতের ধান, কাউন, অড়হর। | |||
''প্রধান ফল-ফলাদি'' কলা, পেঁপে, নারিকেল, আমড়া, লেবু, জাম, লিচু, পেয়ারা, সুপারি। | |||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬১৯ কিমি; নৌপথ ১৫ নটিক্যাল মাইল। | |||
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' পাল্কি। | |||
''শিল্প ও কলকারখানা'' ছোবড়া শিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা। | |||
''কুটিরশিল্প'' লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, বিড়ি শিল্প। | |||
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ২৪, মেলা ৭। শর্ষিণা পীর সাহেবের বাড়ির মাহফিল এবং করফার ঠাকুর বাড়ি ও আটঘর কুড়িয়ানার চক্রবর্তী বাড়ির শিব চতুর্দশীর মেলা উল্লেখযোগ্য। | |||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' ছোবড়াজাত দ্রব্য, পেয়ারা, কলা, নারিকেল, পান, সুপারি, আমড়া। | |||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.৫৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | |||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৬১%, পুকুর ২.৫৯%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ১.৫%। উপজেলার ৯০% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। | |||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলায় ২৮.৭১% (গ্রামে ২৬.১১% ও শহরে ৩৮.৮৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৪.৫৫% (গ্রামে ৬৬.০৪% ও শহরে ৫৮.৭৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৭৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | |||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, প্রাইভেট ক্লিনিক ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২২ ও ইপিআই কেন্দ্র ২৪১। | |||
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৭৬২ সালের ভূমিকম্পে উপজেলার ভূপ্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে এবং অনেক খাল-নালা ভরাট হয়ে যায়। এছাড়া ১৭৮৭ সালের প্লাবন, ১৮২২, ১৮২৫, ১৮৩২, ১৮৫৫ ও ১৯০৯ সালের ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এখানকার বহু লোক প্রাণ হারায় এবং সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। | |||
''এনজিও'' ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, প্রশিকা, কারিতাস, বার্ড। [মাসুদ পারভেজ] | |||
[মাসুদ পারভেজ] | |||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেছারাবাদ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেছারাবাদ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Nesarabad (Swarupkati) Upazila]] | [[en:Nesarabad (Swarupkati) Upazila]] |
০৫:৪৭, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠি) উপজেলা (পিরোজপুর জেলা) আয়তন: ১৯৯.১৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩৯´ থেকে ২২°৪৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°১২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বানারীপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে ঝালকাঠি সদর, কাউখালী (পিরোজপুর) ও পিরোজপুর সদর উপজেলা, পূর্বে ঝালকাঠি সদর উপজেলা, পশ্চিমে নাজিরপুর ও পিরোজপুর সদর উপজেলা।
জনসংখ্যা ২১২২৩২; পুরুষ ১০৭১২৭, মহিলা ১০৫১০৫। মুসলিম ১৫৯০২৯, হিন্দু ৫৩০৬৯, বৌদ্ধ ৯৬, খ্রিস্টান ৯ এবং অন্যান্য ২৯।
জলাশয় প্রধান নদী: স্বরূপকাঠি, কালিগঙ্গা, বাইনাকাঠি, সন্ধ্যা, বেলুয়া; গবখানা খাল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন নেছারাবাদ থানা গঠিত হয় ১৯০৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। ১৯৮৫ সালে স্বরূপকাঠি উপজেলার নতুন নামকরণ করা হয় নেছারাবাদ।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
১ (স্বরূপকাঠি) | ১০ | ৮২ | ১৩৩ | ৪৬৮২৬ | ১৬৫৪০৬ | ১০৬৬ | ৭৪.৩ | ৬৬.৪ |
পৌরসভা | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | ওয়ার্ড | মহল্লা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |||
৪.৯৮ | ৯ | ৯ | ১৮০৮৩ | ৩৬৩১ | ৭৭.৭ | |||
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৮.৫৪ | ৪ | ২৮৭৪৩ | ৩৩৬৬ | ৭২.১ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
আটঘর কুড়িয়ানা ১৭ | ৪৯৬০ | ৯৪৫২ | ৮৯৩৯ | ৭৪.৩০ | ||||
গুয়ারেখা ৩৮ | ৬৩৪২ | ৭৪৬৫ | ৭৩০০ | ৬৮.৪৫ | ||||
জলাবাড়ী ৪৭ | ৬৫০৭ | ১০২৬৮ | ১০০৬৩ | ৬৮.৩০ | ||||
দৈহাড়ি ২৮ | ৩৮৩৬ | ৫৪২৭ | ৫৩৭৪ | ৬৯.১৬ | ||||
নেছারাবাদ ৯৫ | ২০৮০ | ৬১৪৬ | ৬৫১৬ | ৬২.০৭ | ||||
বলদিয়া ১৯ | ৫১২২ | ১৫৯৮৫ | ১৬০৯৮ | ৬১.৩০ | ||||
সমুদয়কাঠি ৫৭ | ১০৪০৯ | ৭৫৭০ | ৭৪৮১ | ৬৭.১৮ | ||||
সারেংকাঠি ৬৬ | ৩২৯৯ | ৬৩৮০ | ৬৪২২ | ৬২.২৯ | ||||
সুতিয়াকাঠি ৮৫ | ২৯২৭ | ১৪২৬৬ | ১৪০০৫ | ৬৮.৮৬ | ||||
সোহাগদল ৭৬ | ২৫৮৬ | ১৪৩৮৮ | ১৪৬০৪ | ৬৯.৬২ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বরছাকাঠি গ্রামের গায়েবী মসজিদ ও তিন গম্বুজ মসজিদ, অলঙ্কারকাঠি গ্রামের সরকার বাড়ির পঞ্চরত্ন মঠ, আটঘর কুড়িয়ানার চক্রবর্তী বাড়ির মন্দির এবং কৌড়িখারা ও রাগবাড়িতে রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ (আঠারো শতক)।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১১ মে নেছারাবাদ উপজেলায় পাকসেনারা সর্বপ্রথম আক্রমণ করে। মে-জুন মাসে পাকসেনারা রাজাকারদের সহযোগিতায় মিয়ারহাট ও ইন্দেরহাট বন্দরসহ বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর ও দোকানে ব্যাপক লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে। এছাড়া রাজাকারদের সহযোগিতায় তারা প্রায় ১০০ জন লোককে হত্যা করে। সোহাগদল ইউনিয়নের বরছাকাঠি গ্রামে একই বাড়ির সাতজনকে হত্যা করে। ১০ নভেম্বর বরছাকাঠি কাছারির সামনে পাকসেনা ও তাদের দোসররা একই রশিতে ১৮ জন মানুষকে বেঁধে নির্যাতন করে হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকসেনা ও তাদের দোসররা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক হাজার নিরীহ লোককে হত্যা করে। সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাকান্ড চালায় আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারা বাগানে। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর কুড়িয়ানা কলেজের পেছনের একটি ডোবা থেকে প্রায় তিনশত মাথার খুলি উদ্ধার করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১; বধ্যভূমি ১ (বরছাকাটি)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বরছাকাঠি গ্রামের গায়েবী মসজিদ ও তিন গম্বুজ মসজিদ এবং আটঘর কুড়িয়ানার চক্রবর্তী বাড়ির মন্দির উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬৮.২%; পুরুষ ৬৯.৯%, মহিলা ৬৬.৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্বরূপকাঠি মহাবিদ্যালয় (১৯৬৫), শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), ফাজিলা রহমান মহিলা কলেজ (১৯৮৯), কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), আকমল মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩০), সুতিয়াকাঠি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯০৯), এস.জি.এস ইনস্টিটিউশন, কামারকাঠি এন.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৭), পাবলিক ইনস্টিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২২), আলকীরহাট আর.এ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৪), অলংকারকাঠি এম.আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৭), সুতিয়াকাঠি পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (১৯২৭), শর্ষিনা দারুস-সুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা (১৯১৪)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী কালান্তর, কর্ষণ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১৮, ক্লাব ২, থিয়েটার ১, সিনেমা হল ৩, খেলার মাঠ ৫০।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৬.১৭%, অকৃষি শ্রমিক ৮.৯৬%, শিল্প ১.৪৪%, ব্যবসা ৩০.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৬৯%, চাকরি ৭.১৯%, নির্মাণ ২.২০%, ধর্মীয় সেবা ০.২৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩৯% এবং অন্যান্য ১১.৬৭%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৮৮%, ভূমিহীন ৪০.১২%। শহরে ৪২.৫৪% এবং গ্রামে ৬৪.৩৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, গম, ডাল, পান, পিঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি স্থানীয় জাতের ধান, কাউন, অড়হর।
প্রধান ফল-ফলাদি কলা, পেঁপে, নারিকেল, আমড়া, লেবু, জাম, লিচু, পেয়ারা, সুপারি।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৩৫ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১২০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬১৯ কিমি; নৌপথ ১৫ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা ছোবড়া শিল্প, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, বিড়ি শিল্প।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৪, মেলা ৭। শর্ষিণা পীর সাহেবের বাড়ির মাহফিল এবং করফার ঠাকুর বাড়ি ও আটঘর কুড়িয়ানার চক্রবর্তী বাড়ির শিব চতুর্দশীর মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ছোবড়াজাত দ্রব্য, পেয়ারা, কলা, নারিকেল, পান, সুপারি, আমড়া।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৬.৫৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৬১%, পুকুর ২.৫৯%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য ১.৫%। উপজেলার ৯০% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ২৮.৭১% (গ্রামে ২৬.১১% ও শহরে ৩৮.৮৩%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৬৪.৫৫% (গ্রামে ৬৬.০৪% ও শহরে ৫৮.৭৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৬.৭৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১২, প্রাইভেট ক্লিনিক ২, কমিউনিটি ক্লিনিক ২২ ও ইপিআই কেন্দ্র ২৪১।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৭৬২ সালের ভূমিকম্পে উপজেলার ভূপ্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে এবং অনেক খাল-নালা ভরাট হয়ে যায়। এছাড়া ১৭৮৭ সালের প্লাবন, ১৮২২, ১৮২৫, ১৮৩২, ১৮৫৫ ও ১৯০৯ সালের ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এখানকার বহু লোক প্রাণ হারায় এবং সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, প্রশিকা, কারিতাস, বার্ড। [মাসুদ পারভেজ]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নেছারাবাদ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।