নূরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.এন.এম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | |||
[[Image:NuruzzamanBrigedierANM.jpg|thumb|400px|ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.এন.এম নূরুজ্জামান]] | |||
'''নূরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এন. এম''' (১৯৩৮-১৯৯৩) সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার। জন্ম ১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার সায়দাবাদ গ্রামে। তাঁর পিতা আবু আহাম্মদ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মাতা লুৎফুন্নেছা। এ.এন.এম নূরুজ্জামান সুনামগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং সিলেট মুরারী চাঁদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। নূরুজ্জামান ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতকোত্তর অধ্যয়নের সময় তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে গ্রাজুয়েশন কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬০ সালের অক্টোবর মাসে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। | |||
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকুরিরত অবস্থায় এ.এন.এম নূরুজ্জামান যশোর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। এ সময়ে তিনি ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তাঁকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অন্তরীণ রাখা হয়। ৩৫ জন আসামীর মধ্যে নূরুজ্জামান ছিলেন ২৮নং অভিযুক্ত ব্যক্তি। ১৯৬৯ সালে প্রবল গণআন্দোলনের চাপে সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করলে নূরুজ্জামান নিঃশর্ত মুক্তি লাভ করেন এবং চাকরিতে পুনর্বহাল হন। | |||
[ | ১৯৭১ সালে এ.এন.এম নূরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে ৩নং সেক্টর কমান্ডার মেজর কে এম শফিউল্লাহর নেতৃত্বে এস ফোর্স গঠিত হলে সেপ্টেম্বরে মুজিবনগর সরকার মেজর নূরুজ্জামানকে সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করে। যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। | ||
স্বাধীনতার পরে নূরুজ্জামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত হন এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হন। ১৯৭৫ সালের পর তাঁর চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত হয়। এ সময় তিনি অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, সেনেগাল, কানাডা ও সুইডেনে দায়িত্ব পালন করেন। সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৯৩ সালের ১৬ মার্চ স্টকহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। | |||
খেলাধূলায় এ.এন.এম নূরুজ্জামান কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। এ সময়ে তিনি ঢাকার প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে ইস্পাহানী স্পোর্টিং ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। এ ছাড়া টেনিস খেলায়ও তিনি সুনাম অর্জন করেন। | |||
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার সেক্টর কমান্ডার এ.এন.এম নূরুজ্জামানকে ‘বীরউত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন তাঁর নামে ঢাকার একটি সড়কের নামকরণ করেছে বীরউত্তম এ.এন.এম নূরুজ্জামান সড়ক। [এ.টি.এম যায়েদ হোসেন] | |||
[[en:Nuruzzaman, Brigadier General ANM]] | [[en:Nuruzzaman, Brigadier General ANM]] |
১০:৩৮, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
নূরুজ্জামান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ. এন. এম (১৯৩৮-১৯৯৩) সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার। জন্ম ১৯৩৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার সায়দাবাদ গ্রামে। তাঁর পিতা আবু আহাম্মদ ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মাতা লুৎফুন্নেছা। এ.এন.এম নূরুজ্জামান সুনামগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং সিলেট মুরারী চাঁদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। নূরুজ্জামান ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। স্নাতকোত্তর অধ্যয়নের সময় তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে গ্রাজুয়েশন কোর্সে যোগ দেন। ১৯৬০ সালের অক্টোবর মাসে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে চাকুরিরত অবস্থায় এ.এন.এম নূরুজ্জামান যশোর, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। এ সময়ে তিনি ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তাঁকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অন্তরীণ রাখা হয়। ৩৫ জন আসামীর মধ্যে নূরুজ্জামান ছিলেন ২৮নং অভিযুক্ত ব্যক্তি। ১৯৬৯ সালে প্রবল গণআন্দোলনের চাপে সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করলে নূরুজ্জামান নিঃশর্ত মুক্তি লাভ করেন এবং চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
১৯৭১ সালে এ.এন.এম নূরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে ৩নং সেক্টর কমান্ডার মেজর কে এম শফিউল্লাহর নেতৃত্বে এস ফোর্স গঠিত হলে সেপ্টেম্বরে মুজিবনগর সরকার মেজর নূরুজ্জামানকে সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত করে। যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পরে নূরুজ্জামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত হন এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নীত হন। ১৯৭৫ সালের পর তাঁর চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত হয়। এ সময় তিনি অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, সেনেগাল, কানাডা ও সুইডেনে দায়িত্ব পালন করেন। সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৯৩ সালের ১৬ মার্চ স্টকহোমে তাঁর মৃত্যু হয়।
খেলাধূলায় এ.এন.এম নূরুজ্জামান কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। এ সময়ে তিনি ঢাকার প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে ইস্পাহানী স্পোর্টিং ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। এ ছাড়া টেনিস খেলায়ও তিনি সুনাম অর্জন করেন।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার সেক্টর কমান্ডার এ.এন.এম নূরুজ্জামানকে ‘বীরউত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন তাঁর নামে ঢাকার একটি সড়কের নামকরণ করেছে বীরউত্তম এ.এন.এম নূরুজ্জামান সড়ক। [এ.টি.এম যায়েদ হোসেন]