নিয়াজী, লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''নিয়াজী | [[Image:NiaziGeneralAmeerAbdullahKhan.jpg|thumb|400px|right|লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী]] | ||
'''নিয়াজী, লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান''' (১৯১৫-২০০৪) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক। তিনি ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কম্যান্ডের নিকট পরাজয় স্বীকার করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন। | |||
আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী ১৯১৫ সালে পাঞ্জাবের নুয়াবওয়ালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে রাজপুর রেজিমেন্টে স্বল্পমেয়াদী কোর্সে নিয়োগ লাভ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিক খেতাবপ্রাপ্ত সৈনিকদের অন্যতম। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকালে ৫ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও শিয়ালকোট অভিযানে ১৪ প্যারা ব্রিগেডে অধিনায়ক পদে এবং প্রথমে করাচী ও পরে লাহোরে সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কোয়েটায় অবস্থিত স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিক্স-এর কম্যান্ড্যান্ট ছিলেন এবং কোয়েটার কম্যান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। | আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী ১৯১৫ সালে পাঞ্জাবের নুয়াবওয়ালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে রাজপুর রেজিমেন্টে স্বল্পমেয়াদী কোর্সে নিয়োগ লাভ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিক খেতাবপ্রাপ্ত সৈনিকদের অন্যতম। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকালে ৫ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও শিয়ালকোট অভিযানে ১৪ প্যারা ব্রিগেডে অধিনায়ক পদে এবং প্রথমে করাচী ও পরে লাহোরে সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কোয়েটায় অবস্থিত স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিক্স-এর কম্যান্ড্যান্ট ছিলেন এবং কোয়েটার কম্যান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। | ||
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে লাহোরে ১০ম ডিভিশনের অধিনায়ক থাকাকালে তাঁকে পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করা হয়। তিনি জেনারেল টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হন। পাকিস্তান সরকার তাকে টিক্কা খানের ব্যর্থতা শোধরানোর নির্দেশ দেয়। [[খান, জেনারেল টিক্কা|টিক্কা খান]] মুক্তিযোদ্ধাদের দমনে ব্যর্থ হন। নিয়াজীর স্মৃতিকথায় (১৯৯৮) তাঁর নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা ইতোমধ্যেই গ্রামাঞ্চলে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রতিদিন সেসব এলাকায় একদিকে যেমন পাকিস্তানি সৈন্যদের দখলদারিত্ব হ্রাস পাচ্ছিল, অন্যদিকে তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তিনি বলেন, যত্রতত্র নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে জনসাধারণকে ভীতসস্ত্রস্ত করার ক্ষেত্রে টিক্কা খানের কৌশল তিনি পরিবর্তন করে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আত্মরক্ষামূলক কৌশলের ভিত্তিতে সৈন্য মোতায়েন করেন। কিন্তু সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কৌশলগত প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও তিনি মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেন নি। | ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে লাহোরে ১০ম ডিভিশনের অধিনায়ক থাকাকালে তাঁকে পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করা হয়। তিনি জেনারেল টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হন। পাকিস্তান সরকার তাকে টিক্কা খানের ব্যর্থতা শোধরানোর নির্দেশ দেয়। [[খান, জেনারেল টিক্কা|টিক্কা খান]] মুক্তিযোদ্ধাদের দমনে ব্যর্থ হন। নিয়াজীর স্মৃতিকথায় (১৯৯৮) তাঁর নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা ইতোমধ্যেই গ্রামাঞ্চলে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রতিদিন সেসব এলাকায় একদিকে যেমন পাকিস্তানি সৈন্যদের দখলদারিত্ব হ্রাস পাচ্ছিল, অন্যদিকে তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তিনি বলেন, যত্রতত্র নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে জনসাধারণকে ভীতসস্ত্রস্ত করার ক্ষেত্রে টিক্কা খানের কৌশল তিনি পরিবর্তন করে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আত্মরক্ষামূলক কৌশলের ভিত্তিতে সৈন্য মোতায়েন করেন। কিন্তু সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কৌশলগত প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও তিনি মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেন নি। | ||
তারা দিনে দিনে শক্তি বৃদ্ধি করে চলছিল। মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযুদ্ধ ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্মুখযুদ্ধে পরিণত হয় এবং পাকবাহিনীর প্রতিরোধ প্রচেষ্টা নিষ্ফল হয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বিমান আক্রমণের মুখে নিয়াজীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কয়েক দিনের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। ১০ ডিসেম্বর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন সেনা-ইউনিটগুলি নিরাপত্তার জন্য পশ্চাদপসরণ শুরু করে এবং ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় সকল শক্তি নিয়াজী হারিয়ে ফেলেন। এমতাবস্থায় গোটা পাকবাহিনীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য তিনি ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ কম্যান্ডের নিকট আত্মসমর্পণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। আত্মসমর্পণের শর্তানুযায়ী পাকিস্তানি সৈন্যদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে নিরাপদে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। | তারা দিনে দিনে শক্তি বৃদ্ধি করে চলছিল। মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযুদ্ধ ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্মুখযুদ্ধে পরিণত হয় এবং পাকবাহিনীর প্রতিরোধ প্রচেষ্টা নিষ্ফল হয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বিমান আক্রমণের মুখে নিয়াজীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কয়েক দিনের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। ১০ ডিসেম্বর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন সেনা-ইউনিটগুলি নিরাপত্তার জন্য পশ্চাদপসরণ শুরু করে এবং ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় সকল শক্তি নিয়াজী হারিয়ে ফেলেন। এমতাবস্থায় গোটা পাকবাহিনীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য তিনি ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ কম্যান্ডের নিকট আত্মসমর্পণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। আত্মসমর্পণের শর্তানুযায়ী পাকিস্তানি সৈন্যদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে নিরাপদে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। | ||
১৪ নং লাইন: | ১১ নং লাইন: | ||
১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জেনারেল নিয়াজী ও অপরাপর সেনাসদস্য ভারতীয় বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে। রাওয়ালপিন্ডিতে তার প্রহসনমূলক বিচার অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি বেকসুর খালাস পান। নিয়াজী পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং বরাবর জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিরোধিতা করেন; কারণ তিনি ভুট্টোকে পাকিস্তান বিভক্তির জন্য দায়ী মনে করতেন। ভুট্টোর শাসনামলে নিয়াজী দু’বার কারাভোগ করেন। | ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জেনারেল নিয়াজী ও অপরাপর সেনাসদস্য ভারতীয় বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে। রাওয়ালপিন্ডিতে তার প্রহসনমূলক বিচার অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি বেকসুর খালাস পান। নিয়াজী পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং বরাবর জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিরোধিতা করেন; কারণ তিনি ভুট্টোকে পাকিস্তান বিভক্তির জন্য দায়ী মনে করতেন। ভুট্টোর শাসনামলে নিয়াজী দু’বার কারাভোগ করেন। | ||
তিনি ২০০৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। | তিনি ২০০৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। [সিরাজুল ইসলাম] | ||
[সিরাজুল ইসলাম | |||
[[en:Niazi, Lt General Ameer Abdullah Khan]] | [[en:Niazi, Lt General Ameer Abdullah Khan]] |
০৪:৪৬, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
নিয়াজী, লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান (১৯১৫-২০০৪) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক। তিনি ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ কম্যান্ডের নিকট পরাজয় স্বীকার করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করেন।
আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী ১৯১৫ সালে পাঞ্জাবের নুয়াবওয়ালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে রাজপুর রেজিমেন্টে স্বল্পমেয়াদী কোর্সে নিয়োগ লাভ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বাধিক খেতাবপ্রাপ্ত সৈনিকদের অন্যতম। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকালে ৫ম পাঞ্জাব রেজিমেন্টে, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও শিয়ালকোট অভিযানে ১৪ প্যারা ব্রিগেডে অধিনায়ক পদে এবং প্রথমে করাচী ও পরে লাহোরে সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কোয়েটায় অবস্থিত স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিক্স-এর কম্যান্ড্যান্ট ছিলেন এবং কোয়েটার কম্যান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে লাহোরে ১০ম ডিভিশনের অধিনায়ক থাকাকালে তাঁকে পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের অধিনায়ক হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করা হয়। তিনি জেনারেল টিক্কা খানের স্থলাভিষিক্ত হন। পাকিস্তান সরকার তাকে টিক্কা খানের ব্যর্থতা শোধরানোর নির্দেশ দেয়। টিক্কা খান মুক্তিযোদ্ধাদের দমনে ব্যর্থ হন। নিয়াজীর স্মৃতিকথায় (১৯৯৮) তাঁর নিজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা ইতোমধ্যেই গ্রামাঞ্চলে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। প্রতিদিন সেসব এলাকায় একদিকে যেমন পাকিস্তানি সৈন্যদের দখলদারিত্ব হ্রাস পাচ্ছিল, অন্যদিকে তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছিল। তিনি বলেন, যত্রতত্র নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে জনসাধারণকে ভীতসস্ত্রস্ত করার ক্ষেত্রে টিক্কা খানের কৌশল তিনি পরিবর্তন করে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আত্মরক্ষামূলক কৌশলের ভিত্তিতে সৈন্য মোতায়েন করেন। কিন্তু সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কৌশলগত প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও তিনি মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে পারেন নি।
তারা দিনে দিনে শক্তি বৃদ্ধি করে চলছিল। মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযুদ্ধ ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্মুখযুদ্ধে পরিণত হয় এবং পাকবাহিনীর প্রতিরোধ প্রচেষ্টা নিষ্ফল হয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বিমান আক্রমণের মুখে নিয়াজীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কয়েক দিনের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। ১০ ডিসেম্বর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন সেনা-ইউনিটগুলি নিরাপত্তার জন্য পশ্চাদপসরণ শুরু করে এবং ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় সকল শক্তি নিয়াজী হারিয়ে ফেলেন। এমতাবস্থায় গোটা পাকবাহিনীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য তিনি ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ কম্যান্ডের নিকট আত্মসমর্পণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রমনা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। আত্মসমর্পণের শর্তানুযায়ী পাকিস্তানি সৈন্যদের যুদ্ধবন্দি হিসেবে নিরাপদে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জেনারেল নিয়াজী ও অপরাপর সেনাসদস্য ভারতীয় বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে। রাওয়ালপিন্ডিতে তার প্রহসনমূলক বিচার অনুষ্ঠিত হয় এবং তিনি বেকসুর খালাস পান। নিয়াজী পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং বরাবর জুলফিকার আলী ভুট্টোর বিরোধিতা করেন; কারণ তিনি ভুট্টোকে পাকিস্তান বিভক্তির জন্য দায়ী মনে করতেন। ভুট্টোর শাসনামলে নিয়াজী দু’বার কারাভোগ করেন।
তিনি ২০০৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। [সিরাজুল ইসলাম]