ধোবাউড়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''ধোবাউড়া উপজেলা''' (ময়মনসিংহ জেলা) আয়তন: ২৫১.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°০৫´ থেকে ২৫°২০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৪´ থেকে ৯০°৩৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে ফুলপুর ও পূর্বধলা উপজেলা, পূর্বে দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) উপজেলা, পশ্চিমে হালুয়াঘাট উপজেলা। উপজেলার উত্তর সীমান্তে অনেক টিলা রয়েছে। | '''ধোবাউড়া উপজেলা''' ([[ময়মনসিংহ জেলা|ময়মনসিংহ জেলা]]) আয়তন: ২৫১.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°০৫´ থেকে ২৫°২০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৪´ থেকে ৯০°৩৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে ফুলপুর ও পূর্বধলা উপজেলা, পূর্বে দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) উপজেলা, পশ্চিমে হালুয়াঘাট উপজেলা। উপজেলার উত্তর সীমান্তে অনেক টিলা রয়েছে। | ||
''জনসংখ্যা'' ১৭২১৫২; পুরুষ ৮৬৬৭২, মহিলা ৮৫৪৮০। মুসলিম ১৫৫৬১০, হিন্দু ৬৩৩২, বৌদ্ধ ১০১৬৭, খ্রিস্টান ৩ এবং অন্যান্য ৪০। এ উপজেলায় গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। | ''জনসংখ্যা'' ১৭২১৫২; পুরুষ ৮৬৬৭২, মহিলা ৮৫৪৮০। মুসলিম ১৫৫৬১০, হিন্দু ৬৩৩২, বৌদ্ধ ১০১৬৭, খ্রিস্টান ৩ এবং অন্যান্য ৪০। এ উপজেলায় গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। | ||
৭ নং লাইন: | ৭ নং লাইন: | ||
''প্রশাসন'' ধোবাউড়া থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। | ''প্রশাসন'' ধোবাউড়া থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| colspan="9" | উপজেলা | | colspan="9" | উপজেলা | ||
|- | |- | ||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| - || ৭ || ৯৬ || ১৬২ || ৫০৭৭ || ১৬৭০৭৫ || ৬৮৬ || ৪৬.২ || ২৭.৩ | | - || ৭ || ৯৬ || ১৬২ || ৫০৭৭ || ১৬৭০৭৫ || ৬৮৬ || ৪৬.২ || ২৭.৩ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| উপজেলা শহর | | colspan="9" | উপজেলা শহর | ||
|- | |- | ||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| ৫.৫৯ || ২ || ৫০৭৭ || ৯০৮ || ৪৬.২ | | ৫.৫৯ || ২ || ৫০৭৭ || ৯০৮ || ৪৬.২ | ||
|} | |||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |- | ||
| ইউনিয়ন | | colspan="9" | ইউনিয়ন | ||
|- | |- | ||
| ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || আয়তন(একর) || লোকসংখ্যা || শিক্ষার হার(%) | | rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |- | ||
| গামারীতলা ৪২ || ৮১৫৩ || ১১০৮১ || ১০৯২৮ || ২৬.৯৭ | | গামারীতলা ৪২ || ৮১৫৩ || ১১০৮১ || ১০৯২৮ || ২৬.৯৭ | ||
|- | |- | ||
| গোয়াতলা ৪৭ || ৭৫৮৩ || ১১০৬৬ || ১০৮২৭ || ২৯.৪১ | | গোয়াতলা ৪৭ || ৭৫৮৩ || ১১০৬৬ || ১০৮২৭ || ২৯.৪১ | ||
|- | |- | ||
| ঘোষগাঁও ৫২ || ৬৬৩৫ || ৮৭৩৩ || ৯০৪৪ || ৩৩.৭২ | | ঘোষগাঁও ৫২ || ৬৬৩৫ || ৮৭৩৩ || ৯০৪৪ || ৩৩.৭২ | ||
|- | |- | ||
| দক্ষিণ মাইজপাড়া ৩১ || ১১০২৪ || ১৪২৪৯ || ১৪৪৮২ || ২৪.৭০ | | দক্ষিণ মাইজপাড়া ৩১ || ১১০২৪ || ১৪২৪৯ || ১৪৪৮২ || ২৪.৭০ | ||
|- | |- | ||
| ধোবাউড়া ৩৬ || ৯৯৪০ || ১৪৫০৮ || ১৩৯৫২ || ৩১.৬৯ | | ধোবাউড়া ৩৬ || ৯৯৪০ || ১৪৫০৮ || ১৩৯৫২ || ৩১.৬৯ | ||
|- | |- | ||
| পোড়াকান্দুলিয়া ৭৩ || ৮১১১ || ১২৬৩৪ || ১২০৭০ || ২২.৬৪ | | পোড়াকান্দুলিয়া ৭৩ || ৮১১১ || ১২৬৩৪ || ১২০৭০ || ২২.৬৪ | ||
|- | |- | ||
| বাঘবেড় ১০ || ১০৫৯২ || ১৪৪০১ || ১৪১৭৭ || ২৭.৮০ | | বাঘবেড় ১০ || ১০৫৯২ || ১৪৪০১ || ১৪১৭৭ || ২৭.৮০ | ||
৬২ নং লাইন: | ৪৯ নং লাইন: | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:DhobauraUpazila.jpg|thumb|400px|right]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' দর্শা গ্রামে পাকা মসজিদ (মোগল আমল) ও পাথর কাটার দীঘি, ঘোষগাঁও গ্রামে কামাক্ষ্যা মন্দির,'' ''৪০ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি (বর্তমানে জাদুঘরে সংরক্ষিত), লাঙ্গল জোড়া গ্রামে ধরম শাহ্ দীঘি। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' দর্শা গ্রামে পাকা মসজিদ (মোগল আমল) ও পাথর কাটার দীঘি, ঘোষগাঁও গ্রামে কামাক্ষ্যা মন্দির,'' ''৪০ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি (বর্তমানে জাদুঘরে সংরক্ষিত), লাঙ্গল জোড়া গ্রামে ধরম শাহ্ দীঘি। | ||
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘জান দেব তবু ধান দেবো না’ এই শ্লোগান নিয়ে টংক-আন্দোলন সংগঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই জিগাতলা গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের দিনব্যাপী যুদ্ধে দুজন মুক্তিযোদ্ধাসহ এগারো জন শহীদ হন। ৩ অক্টোবর পাকবাহিনী গোয়াতলা বাজারে মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে গভীর রাতে অতর্কিত হামলা চালালে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরদিন পাকবাহিনী গোয়াতলা বাজার ও তারাইকান্দি ফেরিঘাটে গণহত্যা চালায়। এতে প্রায় ১২০ জন শহীদ হন। | ''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘জান দেব তবু ধান দেবো না’ এই শ্লোগান নিয়ে টংক-আন্দোলন সংগঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই জিগাতলা গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের দিনব্যাপী যুদ্ধে দুজন মুক্তিযোদ্ধাসহ এগারো জন শহীদ হন। ৩ অক্টোবর পাকবাহিনী গোয়াতলা বাজারে মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে গভীর রাতে অতর্কিত হামলা চালালে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরদিন পাকবাহিনী গোয়াতলা বাজার ও তারাইকান্দি ফেরিঘাটে গণহত্যা চালায়। এতে প্রায় ১২০ জন শহীদ হন। | ||
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৭ (গোয়াতলা বাজার, তারাইকান্দি ফেরিঘাট, ডেফুলিয়া পাড়া, মিলাগড়া, দিগলবাগ, গোবরচেনা ও জিগাতলা)। | ''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ৭ (গোয়াতলা বাজার, তারাইকান্দি ফেরিঘাট, ডেফুলিয়া পাড়া, মিলাগড়া, দিগলবাগ, গোবরচেনা ও জিগাতলা)। | ||
৭২ নং লাইন: | ৬০ নং লাইন: | ||
শিক্ষার হার'','' শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৭.৯%; পুরুষ ৩১.৬%, মহিলা ২৪.৩%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮১, স্যাটেলাইট স্কুল ২৪। | শিক্ষার হার'','' শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৭.৯%; পুরুষ ৩১.৬%, মহিলা ২৪.৩%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮১, স্যাটেলাইট স্কুল ২৪। | ||
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' ধোবাউড়া বার্তা ও উজ্জীবন (অনিয়মিত)। | |||
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' লাইব্রেরি ২, ক্লাব ২২, সিনেমা হল ১। | |||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৭৭.৮৮%, অকৃষি শ্রমিক ৪.০২%, শিল্প ০.১৯%, ব্যবসা ৭.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৪৬%, চাকরি ২.২৬%, নির্মাণ ০.৩৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৫% এবং অন্যান্য ৭.২৭%। | |||
'' | ''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৫৯.০৫%, ভূমিহীন ৪০.৯৫%। শহরে ৪২.৭৫% এবং গ্রামে ৫৯.৫১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে। | ||
'' | ''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, শাকসবজি। | ||
'' | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' পাট, সরিষা, ইক্ষু, তামাক, তিল, আউশ ধান, আশ্বিনা ধান। | ||
''প্রধান | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে। | ||
'' | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' মৎস্য ১০, গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ২৯। | ||
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৪৯.৫০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৪৬ কিমি; নৌপথ ২২ নটিক্যাল মাইল। | |||
'' | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন'' গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, সোয়ারি, পাল্কি। | ||
''শিল্প ও কলকারখানা'' স’মিল, ধানকল, ওয়েল্ডিং কারখানা। | |||
''শিল্প ও কলকারখানা'' স’মিল, ধানকল, ওয়েল্ডিং কারখানা। | |||
''কুটিরশিল্প'' লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প,'' ''বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, রেশম গুটি চাষ। | ''কুটিরশিল্প'' লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প,'' ''বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, রেশম গুটি চাষ। | ||
১০৪ নং লাইন: | ৮৮ নং লাইন: | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২.০৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২.০৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
প্রাকৃতিক সম্পদ চীনামাটি, বালি ও কাঠ উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের ভেদিকুড়া গ্রামে চীনামাটির খনি রয়েছে। | ''প্রাকৃতিক সম্পদ'' চীনামাটি, বালি ও কাঠ উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের ভেদিকুড়া গ্রামে চীনামাটির খনি রয়েছে। | ||
'' | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৮২.৬৬%, ট্যাপ ০.২২%, পুকুর ৩.৮২% এবং অন্যান্য ১৩.৩০%। এ উপজেলার ৪৭% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে। | ||
'' | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ৭.৭২% (গ্রামে ৭.৫২% ও শহরে ১৪.৭৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৯.৪০% (গ্রামে ৫৯.১৪% ও শহরে ৬৮.৪০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩২.৮৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''' | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, পশু হাসপাতাল ১। | ||
''এনজিও'' ওয়ার্ল্ডভিশন, কারিতাস, ব্র্যাক, প্রশিকা, ডিপিডিএস। [আবদুল মোতালেব তালুকদার] | |||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ধোবাউড়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | |||
[[en:Dhobaura Upazila]] | [[en:Dhobaura Upazila]] |
১০:২০, ২০ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
ধোবাউড়া উপজেলা (ময়মনসিংহ জেলা) আয়তন: ২৫১.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°০৫´ থেকে ২৫°২০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৪´ থেকে ৯০°৩৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে ফুলপুর ও পূর্বধলা উপজেলা, পূর্বে দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) উপজেলা, পশ্চিমে হালুয়াঘাট উপজেলা। উপজেলার উত্তর সীমান্তে অনেক টিলা রয়েছে।
জনসংখ্যা ১৭২১৫২; পুরুষ ৮৬৬৭২, মহিলা ৮৫৪৮০। মুসলিম ১৫৫৬১০, হিন্দু ৬৩৩২, বৌদ্ধ ১০১৬৭, খ্রিস্টান ৩ এবং অন্যান্য ৪০। এ উপজেলায় গারো, হাজং প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী: কংস ও নিতাই।
প্রশাসন ধোবাউড়া থানা গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ৭ | ৯৬ | ১৬২ | ৫০৭৭ | ১৬৭০৭৫ | ৬৮৬ | ৪৬.২ | ২৭.৩ |
উপজেলা শহর | ||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | মৌজা | লোকসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||||
৫.৫৯ | ২ | ৫০৭৭ | ৯০৮ | ৪৬.২ |
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
গামারীতলা ৪২ | ৮১৫৩ | ১১০৮১ | ১০৯২৮ | ২৬.৯৭ | ||||
গোয়াতলা ৪৭ | ৭৫৮৩ | ১১০৬৬ | ১০৮২৭ | ২৯.৪১ | ||||
ঘোষগাঁও ৫২ | ৬৬৩৫ | ৮৭৩৩ | ৯০৪৪ | ৩৩.৭২ | ||||
দক্ষিণ মাইজপাড়া ৩১ | ১১০২৪ | ১৪২৪৯ | ১৪৪৮২ | ২৪.৭০ | ||||
ধোবাউড়া ৩৬ | ৯৯৪০ | ১৪৫০৮ | ১৩৯৫২ | ৩১.৬৯ | ||||
পোড়াকান্দুলিয়া ৭৩ | ৮১১১ | ১২৬৩৪ | ১২০৭০ | ২২.৬৪ | ||||
বাঘবেড় ১০ | ১০৫৯২ | ১৪৪০১ | ১৪১৭৭ | ২৭.৮০ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ দর্শা গ্রামে পাকা মসজিদ (মোগল আমল) ও পাথর কাটার দীঘি, ঘোষগাঁও গ্রামে কামাক্ষ্যা মন্দির, ৪০ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি (বর্তমানে জাদুঘরে সংরক্ষিত), লাঙ্গল জোড়া গ্রামে ধরম শাহ্ দীঘি।
ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ‘জান দেব তবু ধান দেবো না’ এই শ্লোগান নিয়ে টংক-আন্দোলন সংগঠিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই জিগাতলা গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের দিনব্যাপী যুদ্ধে দুজন মুক্তিযোদ্ধাসহ এগারো জন শহীদ হন। ৩ অক্টোবর পাকবাহিনী গোয়াতলা বাজারে মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে গভীর রাতে অতর্কিত হামলা চালালে চারজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরদিন পাকবাহিনী গোয়াতলা বাজার ও তারাইকান্দি ফেরিঘাটে গণহত্যা চালায়। এতে প্রায় ১২০ জন শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ৭ (গোয়াতলা বাজার, তারাইকান্দি ফেরিঘাট, ডেফুলিয়া পাড়া, মিলাগড়া, দিগলবাগ, গোবরচেনা ও জিগাতলা)।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৩০, মন্দির ২৩, গির্জা ১৩, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: দর্শা গ্রাম পাকা মসজিদ, ঘোষগাঁও কামাক্ষ্যা মন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৭.৯%; পুরুষ ৩১.৬%, মহিলা ২৪.৩%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮১, স্যাটেলাইট স্কুল ২৪।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী ধোবাউড়া বার্তা ও উজ্জীবন (অনিয়মিত)।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ২২, সিনেমা হল ১।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৭.৮৮%, অকৃষি শ্রমিক ৪.০২%, শিল্প ০.১৯%, ব্যবসা ৭.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ০.৪৬%, চাকরি ২.২৬%, নির্মাণ ০.৩৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৫% এবং অন্যান্য ৭.২৭%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.০৫%, ভূমিহীন ৪০.৯৫%। শহরে ৪২.৭৫% এবং গ্রামে ৫৯.৫১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, শাকসবজি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি পাট, সরিষা, ইক্ষু, তামাক, তিল, আউশ ধান, আশ্বিনা ধান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১০, গবাদিপশু ৫, হাঁস-মুরগি ২৯।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৯.৫০ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৪৬ কিমি; নৌপথ ২২ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন গরু ও ঘোড়ার গাড়ি, সোয়ারি, পাল্কি।
শিল্প ও কলকারখানা স’মিল, ধানকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বুননশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ, রেশম গুটি চাষ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৩, মেলা ৪। ধোবাউড়া হাট, গোয়াতলা হাট, কলসিন্দুর হাট, মুন্সির হাট, ঘোষগাঁও হাট, পোড়াকান্দুলিয়া হাট এবং ঘোষগাঁও দোলপূর্ণিমা মেলা, ধোবাউড়া অষ্টমীর মেলা, পোড়াকান্দুলিয়ার নয়াগঙ্গা অষ্টমী স্নান মেলা উল্লেখযোগ্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২.০৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ চীনামাটি, বালি ও কাঠ উল্লেখযোগ্য। দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের ভেদিকুড়া গ্রামে চীনামাটির খনি রয়েছে।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮২.৬৬%, ট্যাপ ০.২২%, পুকুর ৩.৮২% এবং অন্যান্য ১৩.৩০%। এ উপজেলার ৪৭% অগভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭.৭২% (গ্রামে ৭.৫২% ও শহরে ১৪.৭৯%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৫৯.৪০% (গ্রামে ৫৯.১৪% ও শহরে ৬৮.৪০%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩২.৮৮% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৭, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১, পশু হাসপাতাল ১।
এনজিও ওয়ার্ল্ডভিশন, কারিতাস, ব্র্যাক, প্রশিকা, ডিপিডিএস। [আবদুল মোতালেব তালুকদার]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; ধোবাউড়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।