দেবী, সুমিতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (fix: image tag) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''দেবী | [[Image:SumitaDevi.jpg|thumb|400px|right|সুমিতা দেবী]] | ||
'''দেবী, সুমিতা''' (১৯৩৬-২০০৪) অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। সুমিতা দেবী ১৯৩৬ সালে মানিকগঞ্জের দক্ষিণ খল্লি গ্রামে এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক নাম হেনা ভট্টাচার্য। ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর পরিবর্তিত নাম হয় নিলুফার বেগম ওরফে সুমিতা দেবী। সুমিতা দেবী নামেই তিনি সবার নিকট পরিচিত। | |||
বিশ শতকের ষাটের দশকে সুমিতা দেবী ঢাকা চলচ্চিত্র জগতের একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আসিয়া (১৯৫৭) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। এরপর তিনি অভিনয় করেন আকাশ আর মাটি (১৯৬০) চলচ্চিত্রে। দুটি ছবিরই পরিচালক ছিলেন ফতেহ লোহানী। আসিয়া ১৯৬১ সালে শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে। প্রায় চার দশক ধরে সুমিতার অভিনয় জীবন প্রসারিত ছিল। পঞ্চাশের অধিক চলচ্চিত্রে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন এবং পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন শতাধিক চলচ্চিত্রে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে কখনো আসেনি (১৯৬১), সোনার কাজল (১৯৬২), কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩), এই তো জীবন (১৯৬৪), দুই দিগন্ত (১৯৬৪), আগুন নিয়ে খেলা (১৯৬৭) ও অভিশাপ (১৯৬৭), এ দেশ তোমার আমার, বেহুলা, ওরা ১১ জন ও আমার জন্মভূমি। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে তৈরি ধূপছায়া এবং পূর্ব পাকিস্তানে তৈরি একাধিক উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। সুমিতা দেবী বেতার, টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকেও সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে তিনি পাঁচটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। সেগুলি হচ্ছে আগুন নিয়ে খেলা, মোমের আলো, মায়ার সংসার, আদর্শ ছাপাখানা ও নতুন প্রভাত। | বিশ শতকের ষাটের দশকে সুমিতা দেবী ঢাকা চলচ্চিত্র জগতের একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আসিয়া (১৯৫৭) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। এরপর তিনি অভিনয় করেন আকাশ আর মাটি (১৯৬০) চলচ্চিত্রে। দুটি ছবিরই পরিচালক ছিলেন ফতেহ লোহানী। আসিয়া ১৯৬১ সালে শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে। প্রায় চার দশক ধরে সুমিতার অভিনয় জীবন প্রসারিত ছিল। পঞ্চাশের অধিক চলচ্চিত্রে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন এবং পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন শতাধিক চলচ্চিত্রে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে কখনো আসেনি (১৯৬১), সোনার কাজল (১৯৬২), কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩), এই তো জীবন (১৯৬৪), দুই দিগন্ত (১৯৬৪), আগুন নিয়ে খেলা (১৯৬৭) ও অভিশাপ (১৯৬৭), এ দেশ তোমার আমার, বেহুলা, ওরা ১১ জন ও আমার জন্মভূমি। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে তৈরি ধূপছায়া এবং পূর্ব পাকিস্তানে তৈরি একাধিক উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। সুমিতা দেবী বেতার, টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকেও সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে তিনি পাঁচটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। সেগুলি হচ্ছে আগুন নিয়ে খেলা, মোমের আলো, মায়ার সংসার, আদর্শ ছাপাখানা ও নতুন প্রভাত। | ||
সুমিতা দেবীর প্রথম বিবাহ দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। তাঁর দ্বিতীয় বিবাহ হয় ১৯৬২ সালে, চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হানের সঙ্গে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সুমিতা দেবী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। অভিনয় দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৬২ সালে অল পাকিস্তান ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড এবং ১৯৬৩ সালে নিগার প্রাইজ সম্মানে ভূষিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাচসাস পুরস্কার এবং টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও সুমিতা দেবী আগরতলা মুক্তিযোদ্ধা পুরস্কার (২০০২) এবং জনকণ্ঠ গুণিজন ও প্রতিভা সম্মাননা (২০০২) লাভ করেন। | সুমিতা দেবীর প্রথম বিবাহ দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। তাঁর দ্বিতীয় বিবাহ হয় ১৯৬২ সালে, চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হানের সঙ্গে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সুমিতা দেবী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। অভিনয় দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৬২ সালে অল পাকিস্তান ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড এবং ১৯৬৩ সালে নিগার প্রাইজ সম্মানে ভূষিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাচসাস পুরস্কার এবং টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও সুমিতা দেবী আগরতলা মুক্তিযোদ্ধা পুরস্কার (২০০২) এবং জনকণ্ঠ গুণিজন ও প্রতিভা সম্মাননা (২০০২) লাভ করেন। | ||
সুমিতা দেবী ২০০৪ সালের ৬ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত] | সুমিতা দেবী ২০০৪ সালের ৬ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত] | ||
[[en:Devi, Sumita]] | [[en:Devi, Sumita]] |
০৯:২৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
দেবী, সুমিতা (১৯৩৬-২০০৪) অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক। সুমিতা দেবী ১৯৩৬ সালে মানিকগঞ্জের দক্ষিণ খল্লি গ্রামে এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক নাম হেনা ভট্টাচার্য। ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর পরিবর্তিত নাম হয় নিলুফার বেগম ওরফে সুমিতা দেবী। সুমিতা দেবী নামেই তিনি সবার নিকট পরিচিত।
বিশ শতকের ষাটের দশকে সুমিতা দেবী ঢাকা চলচ্চিত্র জগতের একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আসিয়া (১৯৫৭) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। এরপর তিনি অভিনয় করেন আকাশ আর মাটি (১৯৬০) চলচ্চিত্রে। দুটি ছবিরই পরিচালক ছিলেন ফতেহ লোহানী। আসিয়া ১৯৬১ সালে শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে। প্রায় চার দশক ধরে সুমিতার অভিনয় জীবন প্রসারিত ছিল। পঞ্চাশের অধিক চলচ্চিত্রে তিনি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন এবং পার্শ্ব-অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করেন শতাধিক চলচ্চিত্রে। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে কখনো আসেনি (১৯৬১), সোনার কাজল (১৯৬২), কাঁচের দেয়াল (১৯৬৩), এই তো জীবন (১৯৬৪), দুই দিগন্ত (১৯৬৪), আগুন নিয়ে খেলা (১৯৬৭) ও অভিশাপ (১৯৬৭), এ দেশ তোমার আমার, বেহুলা, ওরা ১১ জন ও আমার জন্মভূমি। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে তৈরি ধূপছায়া এবং পূর্ব পাকিস্তানে তৈরি একাধিক উর্দু চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। সুমিতা দেবী বেতার, টেলিভিশন ও মঞ্চ নাটকেও সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে তিনি পাঁচটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। সেগুলি হচ্ছে আগুন নিয়ে খেলা, মোমের আলো, মায়ার সংসার, আদর্শ ছাপাখানা ও নতুন প্রভাত।
সুমিতা দেবীর প্রথম বিবাহ দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। তাঁর দ্বিতীয় বিবাহ হয় ১৯৬২ সালে, চলচ্চিত্র পরিচালক জহির রায়হানের সঙ্গে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সুমিতা দেবী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন নিয়মিত শিল্পী ছিলেন। অভিনয় দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৬২ সালে অল পাকিস্তান ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড এবং ১৯৬৩ সালে নিগার প্রাইজ সম্মানে ভূষিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাচসাস পুরস্কার এবং টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও সুমিতা দেবী আগরতলা মুক্তিযোদ্ধা পুরস্কার (২০০২) এবং জনকণ্ঠ গুণিজন ও প্রতিভা সম্মাননা (২০০২) লাভ করেন।
সুমিতা দেবী ২০০৪ সালের ৬ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে মীরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। [সমবারু চন্দ্র মহন্ত]