দেবহাটা উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: image tag)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৭ নং লাইন: ৭ নং লাইন:


''প্রশাসন'' দেবহাটা থানা গঠিত হয় ১৯১৯ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।
''প্রশাসন'' দেবহাটা থানা গঠিত হয় ১৯১৯ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| colspan="9" | উপজেলা
| colspan="9" | উপজেলা
|-
|-
! rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan="2" | পৌরসভা  || rowspan="2" | ইউনিয়ন  || rowspan="2" | মৌজা  || rowspan="2" | গ্রাম  || colspan="2" | জনসংখ্যা || rowspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || colspan="2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
| শহর  || গ্রাম || শহর  || গ্রাম
|-  
|-  
| - || ৫  || ৫৯  || ১২২  || ২৭০৮  || ১১৬২৩৬  || ৬৭৫  || ৫৯.০৭  || ৪৯.৭২  
| - || ৫  || ৫৯  || ১২২  || ২৭০৮  || ১১৬২৩৬  || ৬৭৫  || ৫৯.০৭  || ৪৯.৭২  
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
| উপজেলা শহর
| colspan="9" | উপজেলা শহর
|-
|-
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| আয়তন (বর্গ কিমি)  || মৌজা  || লোকসংখ্যা  || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| ৩.৪৮  || ১  || ২৭০৮  || ১০৯২  || ৫৯.০৭  
| ৩.৪৮  || ১  || ২৭০৮  || ১০৯২  || ৫৯.০৭  
 
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
|-  
|-  
| ইউনিয়ন  
| colspan="9" |  ইউনিয়ন  
 
|-  
|-  
| ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || আয়তন(একর)  || লোকসংখ্যা  || শিক্ষার হার(%)  
| ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড  || আয়তন(একর)  || লোকসংখ্যা  || শিক্ষার হার(%)  
|-  
|-  
</nowiki>পুরুষ  || মহিলা  ||  
|  পুরুষ  || মহিলা  ||  
 
|-  
|-  
| কুলিয়া ৩১  || ১৩৪৬৩  || ১৪৬১২  || ১৩৪০৮  || ৫০.৯৫  
| কুলিয়া ৩১  || ১৩৪৬৩  || ১৪৬১২  || ১৩৪০৮  || ৫০.৯৫  
|-  
|-  
| দেবহাটা ১৫  || ৫২৪৯  || ৮৫০৩  || ৮১৬৬  || ৫২.৪৩  
| দেবহাটা ১৫  || ৫২৪৯  || ৮৫০৩  || ৮১৬৬  || ৫২.৪৩  
|-  
|-  
| নওয়াপাড়া ৪৭  || ৮৯৭২  || ১৩৬৬৭  || ১২৪৩৫  || ৪৭.৫২  
| নওয়াপাড়া ৪৭  || ৮৯৭২  || ১৩৬৬৭  || ১২৪৩৫  || ৪৭.৫২  
|-  
|-  
| পারুলিয়া ৬৩  || ১০৮২৮  || ১৪৬৩৬  || ১৪১৯০  || ৪৮.৭৪  
| পারুলিয়া ৬৩  || ১০৮২৮  || ১৪৬৩৬  || ১৪১৯০  || ৪৮.৭৪  
|-  
|-  
| সখিপুর ৭৯  || ৪২৩৫  || ৯৮৯৭  || ৯৪৩০  || ৫১.৩৪  
| সখিপুর ৭৯  || ৪২৩৫  || ৯৮৯৭  || ৯৪৩০  || ৫১.৩৪  
|}
|}
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।


[[Image:DebhataUpazila.jpg|thumb|400px|right]]
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  শ্রী শ্রী গোকুলানন্দ জিউ মন্দির, দেবহাটা মিউনিসিপ্যাল অফিস, দেবহাটা থানা ভবন (১৮৯৪)।  
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ''  শ্রী শ্রী গোকুলানন্দ জিউ মন্দির, দেবহাটা মিউনিসিপ্যাল অফিস, দেবহাটা থানা ভবন (১৮৯৪)।  


''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরার বড়দল, ব্যাংদহ, আশাশুনি প্রভৃতি অঞ্চল থেকে আগত ভারতগামী শরনার্থীদের ওপর পাকসেনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দেবহাটার পারুলিয়া সাপমারা খালে তিন শতাধিক শরনার্থীকে হত্যা করে। ২২ এপ্রিল পাকসেনারা পারুলিয়াতে একজন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৭ জুন উপজেলার টাউন শ্রীপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াই হয়। এতে নাজমুল আরেফিন খোকন ও শামসুজ্জামান খান কাজলসহ ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৫ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাপমারা খালের উপর নির্মিত কাঠের পুল ধ্বংস করে দেয়। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার শাঁখারা-কোমরপুরের পাকবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে কুলিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন শহীদ হন এবং কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। যুদ্ধটি ‘ভাতশালা যুদ্ধ’ নামে খ্যাত। ২১ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার কুলিয়া ব্রিজ সংলগ্ন পাকবাহিনীর ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। এতে ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়।''' '''
''ঐতিহাসিক ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরার বড়দল, ব্যাংদহ, আশাশুনি প্রভৃতি অঞ্চল থেকে আগত ভারতগামী শরনার্থীদের ওপর পাকসেনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দেবহাটার পারুলিয়া সাপমারা খালে তিন শতাধিক শরনার্থীকে হত্যা করে। ২২ এপ্রিল পাকসেনারা পারুলিয়াতে একজন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৭ জুন উপজেলার টাউন শ্রীপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াই হয়। এতে নাজমুল আরেফিন খোকন ও শামসুজ্জামান খান কাজলসহ ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৫ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাপমারা খালের উপর নির্মিত কাঠের পুল ধ্বংস করে দেয়। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার শাঁখারা-কোমরপুরের পাকবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে কুলিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন শহীদ হন এবং কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। যুদ্ধটি ‘ভাতশালা যুদ্ধ’ নামে খ্যাত। ২১ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার কুলিয়া ব্রিজ সংলগ্ন পাকবাহিনীর ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। এতে ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
 
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১, সরণি ২ (শহীদ কাজল সরণি ও শহীদ নাজমুল সরণি)।


''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৫০, মন্দির ৮৮। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হোসায়নি ইমামবাড়ি মসজিদ (১৯৮৬)।
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' গণকবর ১, সরণি ২ (শহীদ কাজল সরণি ও শহীদ নাজমুল সরণি)।


শিক্ষার হার'','' শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪৯.৯৪%; পুরুষ ৫৫.৬৪%, মহিলা ৪৩.৮৭%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৫, রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, কমিউনিটি স্কুল ২, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ কলেজ (সখিপুর, ১৯৮৫), হাজী কেয়ামউদ্দীন মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ (১৯৯৬), দেবহাটা কলেজ (২০০০), ইছামতি টেকনিক্যাল কলেজ (পারুলিয়া, ২০০৪), টাউন শ্রীপুর শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), পারুলিয়া এমএস হাইস্কুল (১৯৭৬), দেবহাটা বিবিএমপি ইনস্টিটিউশন (পাইলট হাইস্কুল, ১৯১৯), বহেরা এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৭)।  
''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ১৫০, মন্দির ৮৮। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হোসায়নি ইমামবাড়ি মসজিদ (১৯৮৬)।


[[Image:DebhataUpazila.jpg|thumb|400px]]
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান''  গড় হার ৪৯.৯৪%; পুরুষ ৫৫.৬৪%, মহিলা ৪৩.৮৭%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৫, রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, কমিউনিটি স্কুল ২, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ কলেজ (সখিপুর, ১৯৮৫), হাজী কেয়ামউদ্দীন মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ (১৯৯৬), দেবহাটা কলেজ (২০০০), ইছামতি টেকনিক্যাল কলেজ (পারুলিয়া, ২০০৪), টাউন শ্রীপুর শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), পারুলিয়া এমএস হাইস্কুল (১৯৭৬), দেবহাটা বিবিএমপি ইনস্টিটিউশন (পাইলট হাইস্কুল, ১৯১৯), বহেরা এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৭)।


পত্র''-''পত্রিকা ও সাময়িকী  সৈকত (সাহিত্য সাময়িকী, ১৯৯৭-৯৮), সোনার বার্তা (১৯৯৪-৯৬), দেবহাটা বার্তা (১৯৯৭), চেতনা (১৯৯০), পারাবত (১৯৯৪), ছন্দ হিল্লেলাল (১৯৯০)।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী''  সৈকত (সাহিত্য সাময়িকী, ১৯৯৭-৯৮), সোনার বার্তা (১৯৯৪-৯৬), দেবহাটা বার্তা (১৯৯৭), চেতনা (১৯৯০), পারাবত (১৯৯৪), ছন্দ হিল্লেলাল (১৯৯০)।


''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ২৩, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ২।
''সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান'' ক্লাব ২৩, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ২।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৩.৭২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১৮%, শিল্প ১.০৮%, ব্যবসা ২৪.৪০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬৬%, চাকরি ৪.৮৩%, নির্মাণ ১.১৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩১% এবং অন্যান্য ৫.৩১%।
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৩.৭২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১৮%, শিল্প ১.০৮%, ব্যবসা ২৪.৪০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬৬%, চাকরি ৪.৮৩%, নির্মাণ ১.১৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩১% এবং অন্যান্য ৫.৩১%।


''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৪৬.৪৯%, ভূমিহীন ৫৩.৫১%। শহরে ৩৯.৫৬% এবং গ্রামে ৪৬.৬৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
''কৃষিভূমির মালিকানা'' ভূমিমালিক ৪৬.৪৯%, ভূমিহীন ৫৩.৫১%। শহরে ৩৯.৫৬% এবং গ্রামে ৪৬.৬৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।


''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, সরিষা, আলু, শাকসবজি।
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, সরিষা, আলু, শাকসবজি।


''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তামাক, তিল, ছোলা, খেসারি, মসিনা।
''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' তামাক, তিল, ছোলা, খেসারি, মসিনা।


প্রধান ফল''-''ফলাদি  আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁয়ারা, বাতাবিলেবু, নারিকেল, কলা, লিচু।
''প্রধান ফল-ফলাদি''  আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁয়ারা, বাতাবিলেবু, নারিকেল, কলা, লিচু।


''মৎস্য'', ''গবাদিপশু ও হাঁস''-''মুরগির খামার'' চিংড়ি ঘের ৫০০, হাঁস-মুরগি ৫০।
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' চিংড়ি ঘের ৫০০, হাঁস-মুরগি ৫০।


''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৬২.৮০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭১ কিমি; নৌপথ ১৯ নটিক্যাল মাইল।
''যোগাযোগ বিশেষত্ব'' পাকারাস্তা ৬২.৮০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭১ কিমি; নৌপথ ১৯ নটিক্যাল মাইল।
৯৪ নং লাইন: ৮২ নং লাইন:
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১০, মেলা ৬। পারুলিয়া গোহাট, পারুলিয়া বাজার, কুলিয়া বাজার, সখিপুর বাজার, দেবহাটা বাজার ও পারুলিয়া শ্মশান ঘাট মেলা (কালী পূজা উপলক্ষে)।  
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ১০, মেলা ৬। পারুলিয়া গোহাট, পারুলিয়া বাজার, কুলিয়া বাজার, সখিপুর বাজার, দেবহাটা বাজার ও পারুলিয়া শ্মশান ঘাট মেলা (কালী পূজা উপলক্ষে)।  


''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য''   চিংড়ি, চামড়া, শাকসবজি।
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' চিংড়ি, চামড়া, শাকসবজি।


''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.১৫% পরিবারে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.১৫% পরিবারে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।


''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৬২%, ট্যাপ ২.৪৭%, পুকুর ১.৩৩% এবং অন্যান্য ০.৫৮%।
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৯৫.৬২%, ট্যাপ ২.৪৭%, পুকুর ১.৩৩% এবং অন্যান্য ০.৫৮%।


স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫১.৫২% (গ্রামে ৫০.৯৫% ও শহরে ৭৪.৯৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৬.৪৮% (গ্রামে ৩৬.৮৬% ও শহরে ২০.৬৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা''  এ উপজেলার ৫১.৫২% (গ্রামে ৫০.৯৫% ও শহরে ৭৪.৯৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৬.৪৮% (গ্রামে ৩৬.৮৬% ও শহরে ২০.৬৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।


''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ১৫, প্যাথলজি কেন্দ্র ২।  
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ১৫, প্যাথলজি কেন্দ্র ২।  


''এনজিও'' ব্র্যাক, ঢাকা আহছানিয়া মিশন।  [অমরেন্দ্র নাথ মৃধা]
''এনজিও'' ব্র্যাক, ঢাকা আহছানিয়া মিশন।  [অমরেন্দ্র নাথ মৃধা]


'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দেবহাটা  উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
'''তথ্যসূত্র'''   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দেবহাটা  উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।
<!-- imported from file: দেবহাটা উপজেলা.html-->
[[en:Debhata Upazila]]


[[en:Debhata Upazila]]
[[en:Debhata Upazila]]

০৭:০৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

দেবহাটা উপজেলা (সাতক্ষীরা জেলা)  আয়তন: ১৭৬.৩৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৩১´ থেকে ২২°৪০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৫´ থেকে ৮৯°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, দক্ষিণে কালীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে আশাশুনি ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।

জনসংখ্যা ১১৮৯৪৪; পুরুষ ৬১৩১৫, মহিলা ৫৭৬২৯। মুসলিম ৯২৩২৮, হিন্দু ২৬৫৪৯, বৌদ্ধ ৪৮, খ্রিস্টান ১৩ এবং অন্যান্য ৬।

জলাশয় প্রধান নদী: ইছামতি, খোলপেটুয়া, সাপমারা খাল ও লাবণ্যবতী খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন দেবহাটা থানা গঠিত হয় ১৯১৯ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৫৯ ১২২ ২৭০৮ ১১৬২৩৬ ৬৭৫ ৫৯.০৭ ৪৯.৭২
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৩.৪৮ ২৭০৮ ১০৯২ ৫৯.০৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন(একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার(%)
পুরুষ মহিলা
কুলিয়া ৩১ ১৩৪৬৩ ১৪৬১২ ১৩৪০৮ ৫০.৯৫
দেবহাটা ১৫ ৫২৪৯ ৮৫০৩ ৮১৬৬ ৫২.৪৩
নওয়াপাড়া ৪৭ ৮৯৭২ ১৩৬৬৭ ১২৪৩৫ ৪৭.৫২
পারুলিয়া ৬৩ ১০৮২৮ ১৪৬৩৬ ১৪১৯০ ৪৮.৭৪
সখিপুর ৭৯ ৪২৩৫ ৯৮৯৭ ৯৪৩০ ৫১.৩৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ শ্রী শ্রী গোকুলানন্দ জিউ মন্দির, দেবহাটা মিউনিসিপ্যাল অফিস, দেবহাটা থানা ভবন (১৮৯৪)।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরার বড়দল, ব্যাংদহ, আশাশুনি প্রভৃতি অঞ্চল থেকে আগত ভারতগামী শরনার্থীদের ওপর পাকসেনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দেবহাটার পারুলিয়া সাপমারা খালে তিন শতাধিক শরনার্থীকে হত্যা করে। ২২ এপ্রিল পাকসেনারা পারুলিয়াতে একজন গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৭ জুন উপজেলার টাউন শ্রীপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াই হয়। এতে নাজমুল আরেফিন খোকন ও শামসুজ্জামান খান কাজলসহ ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৫ আগস্ট মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর যাতায়াতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাপমারা খালের উপর নির্মিত কাঠের পুল ধ্বংস করে দেয়। অক্টোবর মাসে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার শাঁখারা-কোমরপুরের পাকবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এতে কুলিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন শহীদ হন এবং কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয়। যুদ্ধটি ‘ভাতশালা যুদ্ধ’ নামে খ্যাত। ২১ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলার কুলিয়া ব্রিজ সংলগ্ন পাকবাহিনীর ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। এতে ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গণকবর ১, সরণি ২ (শহীদ কাজল সরণি ও শহীদ নাজমুল সরণি)।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৫০, মন্দির ৮৮। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হোসায়নি ইমামবাড়ি মসজিদ (১৯৮৬)।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  গড় হার ৪৯.৯৪%; পুরুষ ৫৫.৬৪%, মহিলা ৪৩.৮৭%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৫, রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, কমিউনিটি স্কুল ২, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ কলেজ (সখিপুর, ১৯৮৫), হাজী কেয়ামউদ্দীন মেমোরিয়াল মহিলা কলেজ (১৯৯৬), দেবহাটা কলেজ (২০০০), ইছামতি টেকনিক্যাল কলেজ (পারুলিয়া, ২০০৪), টাউন শ্রীপুর শরৎচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), পারুলিয়া এমএস হাইস্কুল (১৯৭৬), দেবহাটা বিবিএমপি ইনস্টিটিউশন (পাইলট হাইস্কুল, ১৯১৯), বহেরা এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৭)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী  সৈকত (সাহিত্য সাময়িকী, ১৯৯৭-৯৮), সোনার বার্তা (১৯৯৪-৯৬), দেবহাটা বার্তা (১৯৯৭), চেতনা (১৯৯০), পারাবত (১৯৯৪), ছন্দ হিল্লেলাল (১৯৯০)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২৩, লাইব্রেরি ১, সিনেমা হল ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৩.৭২%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১৮%, শিল্প ১.০৮%, ব্যবসা ২৪.৪০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.৬৬%, চাকরি ৪.৮৩%, নির্মাণ ১.১৯%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৩১% এবং অন্যান্য ৫.৩১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৬.৪৯%, ভূমিহীন ৫৩.৫১%। শহরে ৩৯.৫৬% এবং গ্রামে ৪৬.৬৫% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, সরিষা, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তামাক, তিল, ছোলা, খেসারি, মসিনা।

প্রধান ফল-ফলাদি  আম, জাম, কাঁঠাল, পেঁয়ারা, বাতাবিলেবু, নারিকেল, কলা, লিচু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার চিংড়ি ঘের ৫০০, হাঁস-মুরগি ৫০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬২.৮০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৩৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭১ কিমি; নৌপথ ১৯ নটিক্যাল মাইল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১০, মেলা ৬। পারুলিয়া গোহাট, পারুলিয়া বাজার, কুলিয়া বাজার, সখিপুর বাজার, দেবহাটা বাজার ও পারুলিয়া শ্মশান ঘাট মেলা (কালী পূজা উপলক্ষে)।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য চিংড়ি, চামড়া, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২১.১৫% পরিবারে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৫.৬২%, ট্যাপ ২.৪৭%, পুকুর ১.৩৩% এবং অন্যান্য ০.৫৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫১.৫২% (গ্রামে ৫০.৯৫% ও শহরে ৭৪.৯৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৩৬.৪৮% (গ্রামে ৩৬.৮৬% ও শহরে ২০.৬৯%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, ক্লিনিক ১৫, প্যাথলজি কেন্দ্র ২।

এনজিও ব্র্যাক, ঢাকা আহছানিয়া মিশন।  [অমরেন্দ্র নাথ মৃধা]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; দেবহাটা  উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।