দুবলহাটি জমিদারি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''দুবলহাটি জমিদারি'''  নওগাঁ জেলার সদর থানার অন্তর্গত দুবলহাটি গ্রামের বৃহত্তর রাজশাহী জেলার জমিদার পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। জনৈক জগৎরাম রায় ছিলেন এ জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় লবণ ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে তিনি দুবলহাটির প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার উত্তরে জঙ্গলাকীর্ণ নিম্নাঞ্চল কসবা নামক গ্রামে সর্বপ্রথম বসতি স্থাপন করেন। মুগল শাসনামলে বাদশাহী সনদমূলে এ জমিদারি প্রতিষ্ঠিত হয়। বারবকপুর পরগণা নিয়ে গড়ে ওঠে এই জমিদারি। এই জমিদার বংশের ৪৬তম উত্তরসুরি মুক্তারাম রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্র কৃষ্ণরাম রায় চৌধুরী ও রঘুরাম রায় চৌধুরীর মধ্যে এ জমিদারি দুটি অংশে বিভক্ত হয়। জমিদারির নয় আনা অংশ পান কৃষ্ণরাম এবং সাত আনা অংশ পান রঘুরাম। জমিদারি ভাগ হওয়ার পর কসবা গ্রাম ত্যাগ করে কৃষ্ণরাম বসতি স্থাপন করেন বলিহারের নিকট মৈনম নামক স্থানে এবং রঘুরাম বসতি স্থাপন করেন দুবলহাটি গ্রামে। নয় আনি অংশের জমিদার কৃষ্ণরাম রায় চৌধুরী নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে তাঁর বিধবা পত্নী সম্পূর্ণ জমিদারি বলিহার ও দামনাশের জমিদারের নিকট বিক্রয় করলে এ শরীকের সমাপ্তি ঘটে। পক্ষান্তরে সাত আনি শরীক রঘুরামের বংশধরগণ দুবলহাটিতে তাঁদের জমিদারি অক্ষুণ্ণ রাখেন।  
'''দুবলহাটি জমিদারি'''  নওগাঁ জেলার সদর থানার অন্তর্গত দুবলহাটি গ্রামের বৃহত্তর রাজশাহী জেলার জমিদার পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। জনৈক জগৎরাম রায় ছিলেন এ জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় লবণ ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে তিনি দুবলহাটির প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার উত্তরে জঙ্গলাকীর্ণ নিম্নাঞ্চল কসবা নামক গ্রামে সর্বপ্রথম বসতি স্থাপন করেন। মুগল শাসনামলে বাদশাহী সনদমূলে এ জমিদারি প্রতিষ্ঠিত হয়। বারবকপুর পরগণা নিয়ে গড়ে ওঠে এই জমিদারি। এই জমিদার বংশের ৪৬তম উত্তরসুরি মুক্তারাম রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্র কৃষ্ণরাম রায় চৌধুরী ও রঘুরাম রায় চৌধুরীর মধ্যে এ জমিদারি দুটি অংশে বিভক্ত হয়। জমিদারির নয় আনা অংশ পান কৃষ্ণরাম এবং সাত আনা অংশ পান রঘুরাম। জমিদারি ভাগ হওয়ার পর কসবা গ্রাম ত্যাগ করে কৃষ্ণরাম বসতি স্থাপন করেন বলিহারের নিকট মৈনম নামক স্থানে এবং রঘুরাম বসতি স্থাপন করেন দুবলহাটি গ্রামে। নয় আনি অংশের জমিদার কৃষ্ণরাম রায় চৌধুরী নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে তাঁর বিধবা পত্নী সম্পূর্ণ জমিদারি বলিহার ও দামনাশের জমিদারের নিকট বিক্রয় করলে এ শরীকের সমাপ্তি ঘটে। পক্ষান্তরে সাত আনি শরীক রঘুরামের বংশধরগণ দুবলহাটিতে তাঁদের জমিদারি অক্ষুণ্ণ রাখেন।  


[[Image:দুবলহাটি জমিদারি_html_88407781.png]]
[[Image:DubalhatiRajbari.jpg|thumb|400px|right|দুবলহাটি রাজপ্রাসাদ]]
 
[[Image:DubalhatiRajbari.jpg]]
 
দুবলহাটি রাজপ্রাসাদ।
 
১৭৯৩ সালে [[চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত|চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]]এর সময় শিবনাথের পুত্র কৃষ্ণনাথ দুবলহাটির [[জমিদার|জমিদার]] ছিলেন। দুবলহাটি জমিদারদের মধ্যে হরনাথ রায় চৌধুরী তাঁর বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি তাঁর জমিদারির আয়তন বৃদ্ধি করে রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, ফরিদপুর ও সিলেট জেলায়  বিস্তৃত করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও শিক্ষার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল। ফলে শিক্ষার বিস্তার ও উন্নয়নের জন্য তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছেন। তিনি ১৮৬৪ সালে দুবলহাটিতে একটি অবৈতনিক নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৮৭৩ সালে তদানীন্তন রাজশাহী জেলা স্কুলকে [[রাজশাহী কলেজ|রাজশাহী কলেজে]] উন্নীত করার জন্য বার্ষিক ৫০০০ টাকা আয়ের সম্পত্তি দান করেন। উক্ত সম্পত্তির মূল্য তখন ছিল প্রায় এক লক্ষ টাকা। তিনি দুবলহাটিতে একটি অতিথিশালা খুলেছিলেন। ১৮৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে তাঁর জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৮৭৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘রাজা’ এবং ১৮৭৭ সালে ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৮৮৪ সালে হাসাইগাড়ির মৌলবি আস্তান মোল্লার নেতৃত্বে প্রজারা তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও খাজনা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিদ্রোহ করে এবং খাজনা প্রদান বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সাত বছর ধরে চলে মামলা মোকদ্দমা। অবশেষে তাঁর দইু পত্নী রাণী শ্যাম সুন্দরী ও উমা সুন্দরীর উদ্যোগে সেটেলমেন্ট অফিসারের মাধ্যমে প্রজাদের সঙ্গে আপোষ মীমাংসা হয়। ১৮৯১ সালে রাজা হরনাথ রায় চৌধুরীর মৃত্যু হয়। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের সময় এই বংশের শেষ জমিদার ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী।  
১৭৯৩ সালে [[চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত|চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত]]এর সময় শিবনাথের পুত্র কৃষ্ণনাথ দুবলহাটির [[জমিদার|জমিদার]] ছিলেন। দুবলহাটি জমিদারদের মধ্যে হরনাথ রায় চৌধুরী তাঁর বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি তাঁর জমিদারির আয়তন বৃদ্ধি করে রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, ফরিদপুর ও সিলেট জেলায়  বিস্তৃত করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও শিক্ষার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল। ফলে শিক্ষার বিস্তার ও উন্নয়নের জন্য তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছেন। তিনি ১৮৬৪ সালে দুবলহাটিতে একটি অবৈতনিক নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৮৭৩ সালে তদানীন্তন রাজশাহী জেলা স্কুলকে [[রাজশাহী কলেজ|রাজশাহী কলেজে]] উন্নীত করার জন্য বার্ষিক ৫০০০ টাকা আয়ের সম্পত্তি দান করেন। উক্ত সম্পত্তির মূল্য তখন ছিল প্রায় এক লক্ষ টাকা। তিনি দুবলহাটিতে একটি অতিথিশালা খুলেছিলেন। ১৮৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে তাঁর জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৮৭৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘রাজা’ এবং ১৮৭৭ সালে ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৮৮৪ সালে হাসাইগাড়ির মৌলবি আস্তান মোল্লার নেতৃত্বে প্রজারা তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও খাজনা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিদ্রোহ করে এবং খাজনা প্রদান বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সাত বছর ধরে চলে মামলা মোকদ্দমা। অবশেষে তাঁর দইু পত্নী রাণী শ্যাম সুন্দরী ও উমা সুন্দরীর উদ্যোগে সেটেলমেন্ট অফিসারের মাধ্যমে প্রজাদের সঙ্গে আপোষ মীমাংসা হয়। ১৮৯১ সালে রাজা হরনাথ রায় চৌধুরীর মৃত্যু হয়। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের সময় এই বংশের শেষ জমিদার ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী।  


দুবলহাটির জমিদাররা দুবলহাটিতে ২.৪৫ একর ভূমির উপর নির্মাণ করেন দ্বিতল এক সুদৃশ্য ও বিশাল রাজপ্রাসাদ। ঊনিশ শতকের শেষের দিকে প্রাসাদটি নির্মিত বলে অনুমিত হয়। প্রাসাদের চারদিকে রয়েছে চারটি বৃহৎ পুকুর। প্রাসাদটি চারটি অঙ্গনে বিভক্ত, যথা নাটমহল বা রঙমহল, [[কাচারি|কাচারি]], অন্দরমহল ও রন্ধনশালা। প্রাসাদের নীচতলা ও দ্বিতলে শ’খানেক কক্ষ রয়েছে। উত্তরমুখী এই প্রাসাদ ইন্দো-ইউরোপীয় বা উপনিবেশীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এক সময়ের অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও সুরম্য অট্টালিকাটি বর্তমানে ভগ্নাবস্থায় বিদ্যমান। [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান]
দুবলহাটির জমিদাররা দুবলহাটিতে ২.৪৫ একর ভূমির উপর নির্মাণ করেন দ্বিতল এক সুদৃশ্য ও বিশাল রাজপ্রাসাদ। ঊনিশ শতকের শেষের দিকে প্রাসাদটি নির্মিত বলে অনুমিত হয়। প্রাসাদের চারদিকে রয়েছে চারটি বৃহৎ পুকুর। প্রাসাদটি চারটি অঙ্গনে বিভক্ত, যথা নাটমহল বা রঙমহল, [[কাচারি|কাচারি]], অন্দরমহল ও রন্ধনশালা। প্রাসাদের নীচতলা ও দ্বিতলে শ’খানেক কক্ষ রয়েছে। উত্তরমুখী এই প্রাসাদ ইন্দো-ইউরোপীয় বা উপনিবেশীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এক সময়ের অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও সুরম্য অট্টালিকাটি বর্তমানে ভগ্নাবস্থায় বিদ্যমান। [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান]
<!-- imported from file: দুবলহাটি জমিদারি.html-->


[[en:Dubalhati Zamindari]]
[[en:Dubalhati Zamindari]]


[[en:Dubalhati Zamindari]]
[[en:Dubalhati Zamindari]]

০৫:৩২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

দুবলহাটি জমিদারি  নওগাঁ জেলার সদর থানার অন্তর্গত দুবলহাটি গ্রামের বৃহত্তর রাজশাহী জেলার জমিদার পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। জনৈক জগৎরাম রায় ছিলেন এ জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার যজ্ঞেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় লবণ ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে তিনি দুবলহাটির প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার উত্তরে জঙ্গলাকীর্ণ নিম্নাঞ্চল কসবা নামক গ্রামে সর্বপ্রথম বসতি স্থাপন করেন। মুগল শাসনামলে বাদশাহী সনদমূলে এ জমিদারি প্রতিষ্ঠিত হয়। বারবকপুর পরগণা নিয়ে গড়ে ওঠে এই জমিদারি। এই জমিদার বংশের ৪৬তম উত্তরসুরি মুক্তারাম রায় চৌধুরীর মৃত্যুর পর তাঁর দুই পুত্র কৃষ্ণরাম রায় চৌধুরী ও রঘুরাম রায় চৌধুরীর মধ্যে এ জমিদারি দুটি অংশে বিভক্ত হয়। জমিদারির নয় আনা অংশ পান কৃষ্ণরাম এবং সাত আনা অংশ পান রঘুরাম। জমিদারি ভাগ হওয়ার পর কসবা গ্রাম ত্যাগ করে কৃষ্ণরাম বসতি স্থাপন করেন বলিহারের নিকট মৈনম নামক স্থানে এবং রঘুরাম বসতি স্থাপন করেন দুবলহাটি গ্রামে। নয় আনি অংশের জমিদার কৃষ্ণরাম রায় চৌধুরী নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে তাঁর বিধবা পত্নী সম্পূর্ণ জমিদারি বলিহার ও দামনাশের জমিদারের নিকট বিক্রয় করলে এ শরীকের সমাপ্তি ঘটে। পক্ষান্তরে সাত আনি শরীক রঘুরামের বংশধরগণ দুবলহাটিতে তাঁদের জমিদারি অক্ষুণ্ণ রাখেন।

দুবলহাটি রাজপ্রাসাদ

১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তএর সময় শিবনাথের পুত্র কৃষ্ণনাথ দুবলহাটির জমিদার ছিলেন। দুবলহাটি জমিদারদের মধ্যে হরনাথ রায় চৌধুরী তাঁর বিভিন্ন জনহিতকর কাজের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি তাঁর জমিদারির আয়তন বৃদ্ধি করে রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, ফরিদপুর ও সিলেট জেলায়  বিস্তৃত করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হলেও শিক্ষার প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল। ফলে শিক্ষার বিস্তার ও উন্নয়নের জন্য তিনি প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছেন। তিনি ১৮৬৪ সালে দুবলহাটিতে একটি অবৈতনিক নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৮৭৩ সালে তদানীন্তন রাজশাহী জেলা স্কুলকে রাজশাহী কলেজে উন্নীত করার জন্য বার্ষিক ৫০০০ টাকা আয়ের সম্পত্তি দান করেন। উক্ত সম্পত্তির মূল্য তখন ছিল প্রায় এক লক্ষ টাকা। তিনি দুবলহাটিতে একটি অতিথিশালা খুলেছিলেন। ১৮৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে তাঁর জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৮৭৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ‘রাজা’ এবং ১৮৭৭ সালে ‘রাজা বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৮৮৪ সালে হাসাইগাড়ির মৌলবি আস্তান মোল্লার নেতৃত্বে প্রজারা তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও খাজনা বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিদ্রোহ করে এবং খাজনা প্রদান বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে সাত বছর ধরে চলে মামলা মোকদ্দমা। অবশেষে তাঁর দইু পত্নী রাণী শ্যাম সুন্দরী ও উমা সুন্দরীর উদ্যোগে সেটেলমেন্ট অফিসারের মাধ্যমে প্রজাদের সঙ্গে আপোষ মীমাংসা হয়। ১৮৯১ সালে রাজা হরনাথ রায় চৌধুরীর মৃত্যু হয়। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের সময় এই বংশের শেষ জমিদার ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী।

দুবলহাটির জমিদাররা দুবলহাটিতে ২.৪৫ একর ভূমির উপর নির্মাণ করেন দ্বিতল এক সুদৃশ্য ও বিশাল রাজপ্রাসাদ। ঊনিশ শতকের শেষের দিকে প্রাসাদটি নির্মিত বলে অনুমিত হয়। প্রাসাদের চারদিকে রয়েছে চারটি বৃহৎ পুকুর। প্রাসাদটি চারটি অঙ্গনে বিভক্ত, যথা নাটমহল বা রঙমহল, কাচারি, অন্দরমহল ও রন্ধনশালা। প্রাসাদের নীচতলা ও দ্বিতলে শ’খানেক কক্ষ রয়েছে। উত্তরমুখী এই প্রাসাদ ইন্দো-ইউরোপীয় বা উপনিবেশীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। এক সময়ের অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও সুরম্য অট্টালিকাটি বর্তমানে ভগ্নাবস্থায় বিদ্যমান। [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান]