দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, অতীশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''অতীশ''' '''দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান '''(৯৮০-১০৫৩)'''  '''বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক। দশম-একাদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি পন্ডিত দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কল্যাণশ্রী এবং মাতা প্রভাবতী দেবী। তাঁর বাল্যনাম ছিল চন্দ্রগর্ভ। মায়ের নিকট এবং স্থানীয় বজ্রাসন বিহারে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি বিখ্যাত বৌদ্ধ গুরু জেতারির নিকট  [[১০৪২৩৬|বৌদ্ধধর্ম]] ও শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। এ সময় তিনি সংসারের প্রতি বিরাগবশত গার্হস্থ্যজীবন ত্যাগ করে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের সঙ্কল্প করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণগিরি বিহারে গিয়ে রাহুল গুপ্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং বৌদ্ধশাস্ত্রের আধ্যাত্মিক গুহ্যবিদ্যায় শিক্ষালাভ করে ‘গুহ্যজ্ঞানবজ্র’ উপাধিতে ভূষিত হন। মগধের ওদন্তপুরী বিহারে মহাসাংঘিক আচার্য শীলরক্ষিতের নিকট দীক্ষা গ্রহণের পর তাঁর নতুন নামকরণ হয় ‘দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান’। একত্রিশ বছর বয়সে তিনি আচার্য ধর্মরক্ষিত কর্তৃক সর্বশ্রেষ্ঠ ভিক্ষুদের শ্রেণিভুক্ত হন। পরে দীপঙ্কর মগধের তৎকালীন শ্রেষ্ঠ আচার্যদের নিকট কিছুকাল শিক্ষালাভ করে শূন্য থেকে জগতের উৎপত্তি এ তত্ত্ব (শূন্যবাদ) প্রচার করেন।  
[[Image:DipamkaraSrijnanaAtisa.jpg|thumb|400px|right|অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান]]
'''অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান''' (৯৮০-১০৫৩) বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক। দশম-একাদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি পন্ডিত দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কল্যাণশ্রী এবং মাতা প্রভাবতী দেবী। তাঁর বাল্যনাম ছিল চন্দ্রগর্ভ। মায়ের নিকট এবং স্থানীয় বজ্রাসন বিহারে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি বিখ্যাত বৌদ্ধ গুরু জেতারির নিকট  [[বৌদ্ধধর্ম|বৌদ্ধধর্ম]] ও শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। এ সময় তিনি সংসারের প্রতি বিরাগবশত গার্হস্থ্যজীবন ত্যাগ করে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের সঙ্কল্প করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণগিরি বিহারে গিয়ে রাহুল গুপ্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং বৌদ্ধশাস্ত্রের আধ্যাত্মিক গুহ্যবিদ্যায় শিক্ষালাভ করে ‘গুহ্যজ্ঞানবজ্র’ উপাধিতে ভূষিত হন। মগধের ওদন্তপুরী বিহারে মহাসাংঘিক আচার্য শীলরক্ষিতের নিকট দীক্ষা গ্রহণের পর তাঁর নতুন নামকরণ হয় ‘দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান’। একত্রিশ বছর বয়সে তিনি আচার্য ধর্মরক্ষিত কর্তৃক সর্বশ্রেষ্ঠ ভিক্ষুদের শ্রেণিভুক্ত হন। পরে দীপঙ্কর মগধের তৎকালীন শ্রেষ্ঠ আচার্যদের নিকট কিছুকাল শিক্ষালাভ করে শূন্য থেকে জগতের উৎপত্তি এ তত্ত্ব (শূন্যবাদ) প্রচার করেন।  


১০১১ খ্রিস্টাব্দে শতাধিক শিষ্যসহ দীপঙ্কর মালয়দেশের সুবর্ণদ্বীপে গিয়ে আচার্য চন্দ্রকীর্তির নিকট ১২ বছর বৌদ্ধশাস্ত্রের যাবতীয় বিষয় অধ্যয়ন করেন এবং ৪৩ বছর বয়সে মগধে ফিরে আসেন। মগধের তখনকার প্রধান প্রধান পন্ডিতদের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় ও বিতর্ক হয়। বিতর্কে তাঁর বাগ্মিতা, যুক্তি ও পান্ডিত্যের কাছে তাঁরা পরাজিত হন। এভাবে ক্রমশ তিনি একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী পন্ডিতের স্বীকৃতি লাভ করেন। এ সময় পালরাজ প্রথম মহীপাল সসম্মানে তাঁকে বিক্রমশিলা (ভাগলপুর, বিহার) মহাবিহারের আচার্যপদে নিযুক্ত করেন। বিক্রমশিলাসহ ওদন্তপুরী ও সোমপুর বিহারে দীপঙ্কর ১৫ বছর অধ্যাপক ও আচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। সোমপুর বিহারে অবস্থানকালেই তিনি মধ্যমকরত্নপ্রদীপ গ্রন্থের অনুবাদ করেন বলে কথিত হয়।এ সময় মহীপালের পুত্র নয়পালের সঙ্গে কলচুরীরাজ লক্ষমীকর্ণের যে যুদ্ধ হয়, দীপঙ্করের মধ্যস্থতায় তার অবসান ঘটে এবং দুই রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হয়।  
১০১১ খ্রিস্টাব্দে শতাধিক শিষ্যসহ দীপঙ্কর মালয়দেশের সুবর্ণদ্বীপে গিয়ে আচার্য চন্দ্রকীর্তির নিকট ১২ বছর বৌদ্ধশাস্ত্রের যাবতীয় বিষয় অধ্যয়ন করেন এবং ৪৩ বছর বয়সে মগধে ফিরে আসেন। মগধের তখনকার প্রধান প্রধান পন্ডিতদের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় ও বিতর্ক হয়। বিতর্কে তাঁর বাগ্মিতা, যুক্তি ও পান্ডিত্যের কাছে তাঁরা পরাজিত হন। এভাবে ক্রমশ তিনি একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী পন্ডিতের স্বীকৃতি লাভ করেন। এ সময় পালরাজ প্রথম মহীপাল সসম্মানে তাঁকে বিক্রমশিলা (ভাগলপুর, বিহার) মহাবিহারের আচার্যপদে নিযুক্ত করেন। বিক্রমশিলাসহ ওদন্তপুরী ও সোমপুর বিহারে দীপঙ্কর ১৫ বছর অধ্যাপক ও আচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। সোমপুর বিহারে অবস্থানকালেই তিনি মধ্যমকরত্নপ্রদীপ গ্রন্থের অনুবাদ করেন বলে কথিত হয়।এ সময় মহীপালের পুত্র নয়পালের সঙ্গে কলচুরীরাজ লক্ষমীকর্ণের যে যুদ্ধ হয়, দীপঙ্করের মধ্যস্থতায় তার অবসান ঘটে এবং দুই রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হয়।  
<nowiki>#</nowiki>[[Image:দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, অতীশ_html_88407781.png]]
[[Image:DipamkaraSrijnanaAtisa.jpg]]
#অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান


এ সময় তিববতের বৌদ্ধ রাজা লাঃ লামা ইয়োসি হোড্ (লাহ্লামা-যে-শেস্) তিববতে বৌদ্ধধর্মের উন্নতি কামনায় দীপঙ্করকে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বর্ণোপহার ও পত্রসহ বিক্রমশীলায় দূত প্রেরণ করেন। দূত জানান যে, দীপঙ্কর তিববতে গেলে তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানো হবে। কিন্তু নির্লোভ নিরহঙ্কার দীপঙ্কর এ আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।  
এ সময় তিববতের বৌদ্ধ রাজা লাঃ লামা ইয়োসি হোড্ (লাহ্লামা-যে-শেস্) তিববতে বৌদ্ধধর্মের উন্নতি কামনায় দীপঙ্করকে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বর্ণোপহার ও পত্রসহ বিক্রমশীলায় দূত প্রেরণ করেন। দূত জানান যে, দীপঙ্কর তিববতে গেলে তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানো হবে। কিন্তু নির্লোভ নিরহঙ্কার দীপঙ্কর এ আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।  
১৪ নং লাইন: ৯ নং লাইন:
রাজা লাঃ লামার মৃত্যুর পর তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র চ্যাং চুব (চ্যান-চাব) জ্ঞানপ্রভ তিববতের রাজা হন এবং তাঁর একান্ত অনুরোধে ১০৪০ খ্রিস্টাব্দে কয়েকজন বিশিষ্ট পন্ডিতসহ দীপঙ্কর মিত্র বিহারের পথে তিববত যাত্রা করেন। মিত্র বিহারের অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকগণ এ দলকে অভ্যর্থনা জানান; পথেও বহু স্থানে তাঁরা অভ্যর্থিত হন। নেপালের রাজা অনন্তকীর্তি দীপঙ্করকে বিশেষভাবে সংবর্ধিত করেন। তিনি সেখানে ‘খান-বিহার’ নামে একটি বিহার স্থাপন করেন এবং নেপালের রাজপুত্র পদ্মপ্রভকে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করেন।
রাজা লাঃ লামার মৃত্যুর পর তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র চ্যাং চুব (চ্যান-চাব) জ্ঞানপ্রভ তিববতের রাজা হন এবং তাঁর একান্ত অনুরোধে ১০৪০ খ্রিস্টাব্দে কয়েকজন বিশিষ্ট পন্ডিতসহ দীপঙ্কর মিত্র বিহারের পথে তিববত যাত্রা করেন। মিত্র বিহারের অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকগণ এ দলকে অভ্যর্থনা জানান; পথেও বহু স্থানে তাঁরা অভ্যর্থিত হন। নেপালের রাজা অনন্তকীর্তি দীপঙ্করকে বিশেষভাবে সংবর্ধিত করেন। তিনি সেখানে ‘খান-বিহার’ নামে একটি বিহার স্থাপন করেন এবং নেপালের রাজপুত্র পদ্মপ্রভকে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করেন।


তিববতরাজ চ্যাং চুব দীপঙ্করের শুভাগমন উপলক্ষে এক রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করেন, যার দৃশ্য সেখানকার একটি মঠের প্রাচীরে আজও অাঁকা আছে। সংবর্ধনা উপলক্ষে শুধু দীপঙ্করের উদ্দেশেই ‘রাগদুন’ নামক এক বিশেষ ধরনের  [[১০৩৮৯৯|বাদ্যযন্ত্র]] নির্মিত হয়েছিল। এ সময় রাজা চ্যাং চুব প্রজাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন যে, দীপঙ্করকে তিববতের মহাচার্য ও ধর্মগুরু হিসেবে মান্য করা হবে; বাস্তবে দীপঙ্কর এ সম্মান পেয়েছেনও।
তিববতরাজ চ্যাং চুব দীপঙ্করের শুভাগমন উপলক্ষে এক রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করেন, যার দৃশ্য সেখানকার একটি মঠের প্রাচীরে আজও অাঁকা আছে। সংবর্ধনা উপলক্ষে শুধু দীপঙ্করের উদ্দেশেই ‘রাগদুন’ নামক এক বিশেষ ধরনের  [[বাদ্যযন্ত্র|বাদ্যযন্ত্র]] নির্মিত হয়েছিল। এ সময় রাজা চ্যাং চুব প্রজাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন যে, দীপঙ্করকে তিববতের মহাচার্য ও ধর্মগুরু হিসেবে মান্য করা হবে; বাস্তবে দীপঙ্কর এ সম্মান পেয়েছেনও।


তিববতে থো-লিং বিহার ছিল দীপঙ্করের মূল কর্মকেন্দ্র। এ বিহারে তিনি দেবতার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। এখান থেকেই তিনি তিববতের সর্বত্র ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তিববতে বৌদ্ধধর্মের ব্যভিচার দূর হয় এবং বিশুদ্ধ বৌদ্ধধর্মাচার প্রতিষ্ঠিত হয়। তিববতে তিনি মহাযানীয় প্রথায় বৌদ্ধধর্মের সংস্কার সাধন করেন এবং বৌদ্ধ ক-দম্ (গে-লুক) সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। তিববতবাসীরা তাঁকে বুদ্ধের পরেই শ্রেষ্ঠ গুরু হিসেবে সম্মান ও পূজা করে এবং মহাপ্রভু (জোবো ছেনপো) হিসেবে মান্য করে। তিববতের রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় ক্ষমতার অধিকারী লামারা নিজেদের দীপঙ্করের শিষ্য এবং উত্তরাধিকারী বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিববতের ধর্ম ও সংস্কৃতিতে দীপঙ্করের প্রভাব অদ্যাপি বিদ্যমান। তিববতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি তিববতের একটি নদীতে বাঁধ দিয়ে বন্যা প্রতিরোধের মাধ্যমে জনহিতকর কাজেও অংশগ্রহণ করেন।
তিববতে থো-লিং বিহার ছিল দীপঙ্করের মূল কর্মকেন্দ্র। এ বিহারে তিনি দেবতার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। এখান থেকেই তিনি তিববতের সর্বত্র ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তিববতে বৌদ্ধধর্মের ব্যভিচার দূর হয় এবং বিশুদ্ধ বৌদ্ধধর্মাচার প্রতিষ্ঠিত হয়। তিববতে তিনি মহাযানীয় প্রথায় বৌদ্ধধর্মের সংস্কার সাধন করেন এবং বৌদ্ধ ক-দম্ (গে-লুক) সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। তিববতবাসীরা তাঁকে বুদ্ধের পরেই শ্রেষ্ঠ গুরু হিসেবে সম্মান ও পূজা করে এবং মহাপ্রভু (জোবো ছেনপো) হিসেবে মান্য করে। তিববতের রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় ক্ষমতার অধিকারী লামারা নিজেদের দীপঙ্করের শিষ্য এবং উত্তরাধিকারী বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিববতের ধর্ম ও সংস্কৃতিতে দীপঙ্করের প্রভাব অদ্যাপি বিদ্যমান। তিববতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি তিববতের একটি নদীতে বাঁধ দিয়ে বন্যা প্রতিরোধের মাধ্যমে জনহিতকর কাজেও অংশগ্রহণ করেন।


দীপঙ্কর তিববতের ধর্ম, রাজনীতি, জীবনীগ্রন্থ, স্তোত্রনামাসহ ত্যঞ্জুর নামে এক বিশাল শাস্ত্রগ্রন্থ সঙ্কলন করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন। তাই অতীত তিববতের যেকোনো বিষয়ের আলোচনা দীপঙ্করকে ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন। এসব গ্রন্থ তিববতে ধর্ম প্রচারে সহায়ক হয়েছিল। তিববতে তিনি অনেক সংস্কৃত  [[১০৩২২৮|পুথি]] আবিষ্কার করেন এবং নিজহাতে সেগুলির প্রতিলিপি তৈরি করে বঙ্গদেশে পাঠান। অনেক সংস্কৃত গ্রন্থ তিনি ভোট (তিববতি) ভাষায় অনুবাদও করেন। তিববতি ভাষায় তিনি বৌদ্ধশাস্ত্র, চিকিৎসাবিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা সম্পর্কে অনেক গ্রন্থ রচনা করেন বলে তিববতিরা তাঁকে ‘অতীশ’ উপাধিতে ভূষিত করে। তাঁর মূল সংস্কৃত ও বাংলা রচনার প্রায় সবগুলিই কালক্রমে বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তিববতি ভাষায় সেগুলির অনুবাদ সংরক্ষিত আছে। তিববতি মহাগ্রন্থ ত্যঞ্জুরে তাঁর ৭৯টি গ্রন্থের তিববতি অনুবাদ সংরক্ষিত আছে। তাঁর রচিত প্রধান কয়েকটি গ্রন্থ হলো: বোধিপথপ্রদীপ,'' ''চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ,'' ''সত্যদ্বয়াবতার,'' ''বোধিসত্ত্বমান্যাবলি,'' ''মধ্যমকরত্নপ্রদীপ, মহাযানপথসাধনসংগ্রহ,'' ''শিক্ষাসমুচ্চয় অভিসাম্য,'' ''প্রজ্ঞাপারমিতাপিন্ডার্থপ্রদীপ,'' ''একবীরসাধন,'' ''বিমলরত্নলেখ প্রভৃতি। বিমলরত্নলেখ মূলত মগধরাজ নয়পালের উদ্দেশে লেখা দীপঙ্করের একটি সংস্কৃত চিঠি। চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ নামক গ্রন্থে দীপঙ্কর রচিত অনেকগুলি সংকীর্তনের পদ পাওয়া যায়।
দীপঙ্কর তিববতের ধর্ম, রাজনীতি, জীবনীগ্রন্থ, স্তোত্রনামাসহ ত্যঞ্জুর নামে এক বিশাল শাস্ত্রগ্রন্থ সঙ্কলন করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন। তাই অতীত তিববতের যেকোনো বিষয়ের আলোচনা দীপঙ্করকে ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন। এসব গ্রন্থ তিববতে ধর্ম প্রচারে সহায়ক হয়েছিল। তিববতে তিনি অনেক সংস্কৃত  [[পুথি|পুথি]] আবিষ্কার করেন এবং নিজহাতে সেগুলির প্রতিলিপি তৈরি করে বঙ্গদেশে পাঠান। অনেক সংস্কৃত গ্রন্থ তিনি ভোট (তিববতি) ভাষায় অনুবাদও করেন। তিববতি ভাষায় তিনি বৌদ্ধশাস্ত্র, চিকিৎসাবিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা সম্পর্কে অনেক গ্রন্থ রচনা করেন বলে তিববতিরা তাঁকে ‘অতীশ’ উপাধিতে ভূষিত করে। তাঁর মূল সংস্কৃত ও বাংলা রচনার প্রায় সবগুলিই কালক্রমে বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তিববতি ভাষায় সেগুলির অনুবাদ সংরক্ষিত আছে। তিববতি মহাগ্রন্থ ত্যঞ্জুরে তাঁর ৭৯টি গ্রন্থের তিববতি অনুবাদ সংরক্ষিত আছে। তাঁর রচিত প্রধান কয়েকটি গ্রন্থ হলো: বোধিপথপ্রদীপ, চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ, সত্যদ্বয়াবতার, বোধিসত্ত্বমান্যাবলি, মধ্যমকরত্নপ্রদীপ, মহাযানপথসাধনসংগ্রহ, শিক্ষাসমুচ্চয় অভিসাম্য, প্রজ্ঞাপারমিতাপিন্ডার্থপ্রদীপ, একবীরসাধন, বিমলরত্নলেখ প্রভৃতি। বিমলরত্নলেখ মূলত মগধরাজ নয়পালের উদ্দেশে লেখা দীপঙ্করের একটি সংস্কৃত চিঠি। চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ নামক গ্রন্থে দীপঙ্কর রচিত অনেকগুলি সংকীর্তনের পদ পাওয়া যায়।


সুদীর্ঘ ১৩ বছর তিববতে অবস্থানের পর দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৭৩ বছর বয়সে তিববতের লাসা নগরের নিকটস্থ লেথান পল্লীতে ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে দেহত্যাগ করেন। তাঁর সমাধিস্থল লেথান তিববতিদের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৮ সালের ২৮ জুন দীপঙ্করের পবিত্র চিতাভস্ম চীন থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকায় আনা হয় এবং তা বর্তমানে ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত আছে।  [কানাইলাল রায়]
সুদীর্ঘ ১৩ বছর তিববতে অবস্থানের পর দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৭৩ বছর বয়সে তিববতের লাসা নগরের নিকটস্থ লেথান পল্লীতে ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে দেহত্যাগ করেন। তাঁর সমাধিস্থল লেথান তিববতিদের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৮ সালের ২৮ জুন দীপঙ্করের পবিত্র চিতাভস্ম চীন থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকায় আনা হয় এবং তা বর্তমানে ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত আছে।  [কানাইলাল রায়]
<!-- imported from file: দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, অতীশ.html-->
[[en:Dipankar Srijnan, Atish]]


[[en:Dipankar Srijnan, Atish]]
[[en:Dipankar Srijnan, Atish]]

০৯:৪৮, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান

অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান (৯৮০-১০৫৩) বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুরু ও দার্শনিক। দশম-একাদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি পন্ডিত দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কল্যাণশ্রী এবং মাতা প্রভাবতী দেবী। তাঁর বাল্যনাম ছিল চন্দ্রগর্ভ। মায়ের নিকট এবং স্থানীয় বজ্রাসন বিহারে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি বিখ্যাত বৌদ্ধ গুরু জেতারির নিকট  বৌদ্ধধর্ম ও শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। এ সময় তিনি সংসারের প্রতি বিরাগবশত গার্হস্থ্যজীবন ত্যাগ করে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের সঙ্কল্প করেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণগিরি বিহারে গিয়ে রাহুল গুপ্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং বৌদ্ধশাস্ত্রের আধ্যাত্মিক গুহ্যবিদ্যায় শিক্ষালাভ করে ‘গুহ্যজ্ঞানবজ্র’ উপাধিতে ভূষিত হন। মগধের ওদন্তপুরী বিহারে মহাসাংঘিক আচার্য শীলরক্ষিতের নিকট দীক্ষা গ্রহণের পর তাঁর নতুন নামকরণ হয় ‘দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান’। একত্রিশ বছর বয়সে তিনি আচার্য ধর্মরক্ষিত কর্তৃক সর্বশ্রেষ্ঠ ভিক্ষুদের শ্রেণিভুক্ত হন। পরে দীপঙ্কর মগধের তৎকালীন শ্রেষ্ঠ আচার্যদের নিকট কিছুকাল শিক্ষালাভ করে শূন্য থেকে জগতের উৎপত্তি এ তত্ত্ব (শূন্যবাদ) প্রচার করেন।

১০১১ খ্রিস্টাব্দে শতাধিক শিষ্যসহ দীপঙ্কর মালয়দেশের সুবর্ণদ্বীপে গিয়ে আচার্য চন্দ্রকীর্তির নিকট ১২ বছর বৌদ্ধশাস্ত্রের যাবতীয় বিষয় অধ্যয়ন করেন এবং ৪৩ বছর বয়সে মগধে ফিরে আসেন। মগধের তখনকার প্রধান প্রধান পন্ডিতদের সঙ্গে তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় ও বিতর্ক হয়। বিতর্কে তাঁর বাগ্মিতা, যুক্তি ও পান্ডিত্যের কাছে তাঁরা পরাজিত হন। এভাবে ক্রমশ তিনি একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী পন্ডিতের স্বীকৃতি লাভ করেন। এ সময় পালরাজ প্রথম মহীপাল সসম্মানে তাঁকে বিক্রমশিলা (ভাগলপুর, বিহার) মহাবিহারের আচার্যপদে নিযুক্ত করেন। বিক্রমশিলাসহ ওদন্তপুরী ও সোমপুর বিহারে দীপঙ্কর ১৫ বছর অধ্যাপক ও আচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। সোমপুর বিহারে অবস্থানকালেই তিনি মধ্যমকরত্নপ্রদীপ গ্রন্থের অনুবাদ করেন বলে কথিত হয়।এ সময় মহীপালের পুত্র নয়পালের সঙ্গে কলচুরীরাজ লক্ষমীকর্ণের যে যুদ্ধ হয়, দীপঙ্করের মধ্যস্থতায় তার অবসান ঘটে এবং দুই রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হয়।

এ সময় তিববতের বৌদ্ধ রাজা লাঃ লামা ইয়োসি হোড্ (লাহ্লামা-যে-শেস্) তিববতে বৌদ্ধধর্মের উন্নতি কামনায় দীপঙ্করকে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বর্ণোপহার ও পত্রসহ বিক্রমশীলায় দূত প্রেরণ করেন। দূত জানান যে, দীপঙ্কর তিববতে গেলে তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানো হবে। কিন্তু নির্লোভ নিরহঙ্কার দীপঙ্কর এ আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।

রাজা লাঃ লামার মৃত্যুর পর তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র চ্যাং চুব (চ্যান-চাব) জ্ঞানপ্রভ তিববতের রাজা হন এবং তাঁর একান্ত অনুরোধে ১০৪০ খ্রিস্টাব্দে কয়েকজন বিশিষ্ট পন্ডিতসহ দীপঙ্কর মিত্র বিহারের পথে তিববত যাত্রা করেন। মিত্র বিহারের অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকগণ এ দলকে অভ্যর্থনা জানান; পথেও বহু স্থানে তাঁরা অভ্যর্থিত হন। নেপালের রাজা অনন্তকীর্তি দীপঙ্করকে বিশেষভাবে সংবর্ধিত করেন। তিনি সেখানে ‘খান-বিহার’ নামে একটি বিহার স্থাপন করেন এবং নেপালের রাজপুত্র পদ্মপ্রভকে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত করেন।

তিববতরাজ চ্যাং চুব দীপঙ্করের শুভাগমন উপলক্ষে এক রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করেন, যার দৃশ্য সেখানকার একটি মঠের প্রাচীরে আজও অাঁকা আছে। সংবর্ধনা উপলক্ষে শুধু দীপঙ্করের উদ্দেশেই ‘রাগদুন’ নামক এক বিশেষ ধরনের  বাদ্যযন্ত্র নির্মিত হয়েছিল। এ সময় রাজা চ্যাং চুব প্রজাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন যে, দীপঙ্করকে তিববতের মহাচার্য ও ধর্মগুরু হিসেবে মান্য করা হবে; বাস্তবে দীপঙ্কর এ সম্মান পেয়েছেনও।

তিববতে থো-লিং বিহার ছিল দীপঙ্করের মূল কর্মকেন্দ্র। এ বিহারে তিনি দেবতার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। এখান থেকেই তিনি তিববতের সর্বত্র ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেন। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তিববতে বৌদ্ধধর্মের ব্যভিচার দূর হয় এবং বিশুদ্ধ বৌদ্ধধর্মাচার প্রতিষ্ঠিত হয়। তিববতে তিনি মহাযানীয় প্রথায় বৌদ্ধধর্মের সংস্কার সাধন করেন এবং বৌদ্ধ ক-দম্ (গে-লুক) সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। তিববতবাসীরা তাঁকে বুদ্ধের পরেই শ্রেষ্ঠ গুরু হিসেবে সম্মান ও পূজা করে এবং মহাপ্রভু (জোবো ছেনপো) হিসেবে মান্য করে। তিববতের রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় ক্ষমতার অধিকারী লামারা নিজেদের দীপঙ্করের শিষ্য এবং উত্তরাধিকারী বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিববতের ধর্ম ও সংস্কৃতিতে দীপঙ্করের প্রভাব অদ্যাপি বিদ্যমান। তিববতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি তিববতের একটি নদীতে বাঁধ দিয়ে বন্যা প্রতিরোধের মাধ্যমে জনহিতকর কাজেও অংশগ্রহণ করেন।

দীপঙ্কর তিববতের ধর্ম, রাজনীতি, জীবনীগ্রন্থ, স্তোত্রনামাসহ ত্যঞ্জুর নামে এক বিশাল শাস্ত্রগ্রন্থ সঙ্কলন করে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেন। তাই অতীত তিববতের যেকোনো বিষয়ের আলোচনা দীপঙ্করকে ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন। এসব গ্রন্থ তিববতে ধর্ম প্রচারে সহায়ক হয়েছিল। তিববতে তিনি অনেক সংস্কৃত  পুথি আবিষ্কার করেন এবং নিজহাতে সেগুলির প্রতিলিপি তৈরি করে বঙ্গদেশে পাঠান। অনেক সংস্কৃত গ্রন্থ তিনি ভোট (তিববতি) ভাষায় অনুবাদও করেন। তিববতি ভাষায় তিনি বৌদ্ধশাস্ত্র, চিকিৎসাবিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা সম্পর্কে অনেক গ্রন্থ রচনা করেন বলে তিববতিরা তাঁকে ‘অতীশ’ উপাধিতে ভূষিত করে। তাঁর মূল সংস্কৃত ও বাংলা রচনার প্রায় সবগুলিই কালক্রমে বিলুপ্ত হয়েছে, কিন্তু তিববতি ভাষায় সেগুলির অনুবাদ সংরক্ষিত আছে। তিববতি মহাগ্রন্থ ত্যঞ্জুরে তাঁর ৭৯টি গ্রন্থের তিববতি অনুবাদ সংরক্ষিত আছে। তাঁর রচিত প্রধান কয়েকটি গ্রন্থ হলো: বোধিপথপ্রদীপ, চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ, সত্যদ্বয়াবতার, বোধিসত্ত্বমান্যাবলি, মধ্যমকরত্নপ্রদীপ, মহাযানপথসাধনসংগ্রহ, শিক্ষাসমুচ্চয় অভিসাম্য, প্রজ্ঞাপারমিতাপিন্ডার্থপ্রদীপ, একবীরসাধন, বিমলরত্নলেখ প্রভৃতি। বিমলরত্নলেখ মূলত মগধরাজ নয়পালের উদ্দেশে লেখা দীপঙ্করের একটি সংস্কৃত চিঠি। চর্যাসংগ্রহপ্রদীপ নামক গ্রন্থে দীপঙ্কর রচিত অনেকগুলি সংকীর্তনের পদ পাওয়া যায়।

সুদীর্ঘ ১৩ বছর তিববতে অবস্থানের পর দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ৭৩ বছর বয়সে তিববতের লাসা নগরের নিকটস্থ লেথান পল্লীতে ১০৫৩ খ্রিস্টাব্দে দেহত্যাগ করেন। তাঁর সমাধিস্থল লেথান তিববতিদের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৮ সালের ২৮ জুন দীপঙ্করের পবিত্র চিতাভস্ম চীন থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকায় আনা হয় এবং তা বর্তমানে ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত আছে।  [কানাইলাল রায়]