তর্কবাগীশ, মওলানা আবদুর রশীদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
[[Image:TarkabagishMaulanaAbdurRashid.jpg|thumb|400px|left|মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ]]
[[Image:TarkabagishMaulanaAbdurRashid.jpg|thumb|400px|right|মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ]]
'''তর্কবাগীশ, মওলানা আবদুর রশীদ''' (১৯০০-১৯৮৬)  রাজনীতিক। সিরাজগঞ্জ জেলার তরুটিয়া গ্রামে ১৯০০ সালে তাঁর জন্ম। স্থানীয় ডায়মন্ড জুবিলী হাইস্কুলে এন্ট্রান্স ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২০-২২) যোগ দেন। এ সময় তিনি সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্দোলনের সপক্ষে জনমত গড়ে তোলেন এবং সলঙ্গাহাটে কংগ্রেসের অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২২ সালে তাঁর নেতৃত্বে এক কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হলে তিনি গ্রেফতার হন এবং ছয় মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত হন। তিনি উত্তর ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেন। লাহোরের এরশাদ ইসলামিয়া কলেজে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেরা বাগ্মীর স্বীকৃতি লাভ করে তিনি ‘তর্কবাগীশ’ হিসেবে পরিচিত হন।
'''তর্কবাগীশ, মওলানা আবদুর রশীদ''' (১৯০০-১৯৮৬)  রাজনীতিক। সিরাজগঞ্জ জেলার তরুটিয়া গ্রামে ১৯০০ সালে তাঁর জন্ম। স্থানীয় ডায়মন্ড জুবিলী হাইস্কুলে এন্ট্রান্স ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২০-২২) যোগ দেন। এ সময় তিনি সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্দোলনের সপক্ষে জনমত গড়ে তোলেন এবং সলঙ্গাহাটে কংগ্রেসের অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২২ সালে তাঁর নেতৃত্বে এক কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হলে তিনি গ্রেফতার হন এবং ছয় মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত হন। তিনি উত্তর ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেন। লাহোরের এরশাদ ইসলামিয়া কলেজে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেরা বাগ্মীর স্বীকৃতি লাভ করে তিনি ‘তর্কবাগীশ’ হিসেবে পরিচিত হন।



০৫:৫৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ

তর্কবাগীশ, মওলানা আবদুর রশীদ (১৯০০-১৯৮৬)  রাজনীতিক। সিরাজগঞ্জ জেলার তরুটিয়া গ্রামে ১৯০০ সালে তাঁর জন্ম। স্থানীয় ডায়মন্ড জুবিলী হাইস্কুলে এন্ট্রান্স ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে (১৯২০-২২) যোগ দেন। এ সময় তিনি সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্দোলনের সপক্ষে জনমত গড়ে তোলেন এবং সলঙ্গাহাটে কংগ্রেসের অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২২ সালে তাঁর নেতৃত্বে এক কৃষক বিদ্রোহ সংঘটিত হলে তিনি গ্রেফতার হন এবং ছয় মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত হন। তিনি উত্তর ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় শিক্ষালাভ করেন। লাহোরের এরশাদ ইসলামিয়া কলেজে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সেরা বাগ্মীর স্বীকৃতি লাভ করে তিনি ‘তর্কবাগীশ’ হিসেবে পরিচিত হন।

মওলানা তর্কবাগীশ ১৯৩৬ সালে মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং ১৯৩৭ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে তিনি পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করেন এবং পরে মুসলিম লীগ পার্লামেন্টারি পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৫৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং ঐ বছর ১ জুন তিনি মুক্তিলাভ করেন। এরপর তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ ও ১৯৫৬ সালে যথাক্রমে মারি ও লাহোরে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলায় বক্তৃতা প্রদান করে তিনি বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। আওয়ামী লীগ তখন ছয়দফা-পন্থি ও পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)-পন্থি এ দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৬৭ সালে তিনি পিডিএম-পন্থি আওয়ামী লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনের পর তিনি ছয়দফা-পন্থি আওয়ামী লীগে প্রত্যাবর্তন করেন।

১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি পাবনা-২ আসন থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি সভাপতিত্ব করেন। ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি গণ আজাদী লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং এ দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৩ সালের ৩০ জানুয়ারি তাঁর সভাপতিত্বে ১৫টি রাজনৈতিক দলের এক যৌথসভায় ১৫ দলীয় জোট গঠিত হয়। জোটের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে তিনি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিশিষ্ট ভূমিকা রাখেন। মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন। ১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট ঢাকায় তাঁর মৃত্যু হয়। ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে।  [রোজিনা কাদের]