জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৩ নং লাইন: | ৩ নং লাইন: | ||
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ আমীরগণ-এর তালিকা: | জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ আমীরগণ-এর তালিকা: | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
মওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী | |- | ||
| মওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী || ১৯৪৭-১৯৭২ | |||
উফায়েল মুহাম্মদ | |- | ||
| উফায়েল মুহাম্মদ || ১৯৭২ | |||
কাজী হুসাইন আহমেদ | |- | ||
| কাজী হুসাইন আহমেদ || ১৯৭২ | |||
মওলানা জাকারিয়া | |- | ||
| মওলানা জাকারিয়া || ১৯৭২- জুলাই ১৯৭৩ | |||
মোঃ শফীকুল্লাহ | |- | ||
| মোঃ শফীকুল্লাহ || জুলাই ১৯৭৩- সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ | |||
মওলানা আবদুল খালেক | |- | ||
| মওলানা আবদুল খালেক || সেপ্টেম্বর ১৯৭৪- মার্চ ১৯৭৫ | |||
সৈয়দ মোহাম্মদ আলী | |- | ||
| সৈয়দ মোহাম্মদ আলী || মার্চ ১৯৭৫- সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ | |||
মওলানা আবদুর রহীম | |- | ||
| মওলানা আবদুর রহীম || সেপ্টেম্বর ১৯৭৫- ১৯৭৮ | |||
মওলানা আববাস আলী খান (ভারপ্রাপ্ত) | |- | ||
| মওলানা আববাস আলী খান (ভারপ্রাপ্ত) || ১৯৭৯ | |||
অধ্যাপক গোলাম আযম | |- | ||
| অধ্যাপক গোলাম আযম || ১৯৭৯-২০০০ | |||
মওলানা মতিউর রহমান নিজামী | |- | ||
| মওলানা মতিউর রহমান নিজামী || ২০০০- | |||
|} | |||
যুদ্ধাবস্থার কারণে প্রায় চার বছর জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় নি। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ১৯৪৫ সালের ১৯-২১ এপ্রিল পাঞ্জাবের পাঠানকোটে দলের প্রথম নিখিল ভারত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর জামায়াতে ইসলামী দ’ুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জামায়াতে ইসলামী হিন্দ দিল্লিতে এবং জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান লাহোরে দলের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে। নিখিল পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হন দলের প্রতিষ্ঠাতা আমীর মওলানা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী। | যুদ্ধাবস্থার কারণে প্রায় চার বছর জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় নি। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ১৯৪৫ সালের ১৯-২১ এপ্রিল পাঞ্জাবের পাঠানকোটে দলের প্রথম নিখিল ভারত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর জামায়াতে ইসলামী দ’ুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জামায়াতে ইসলামী হিন্দ দিল্লিতে এবং জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান লাহোরে দলের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে। নিখিল পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হন দলের প্রতিষ্ঠাতা আমীর মওলানা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী। | ||
৪১ নং লাইন: | ৪৩ নং লাইন: | ||
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোটের শরীক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ৩৯ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ২ টি আসনে জয়লাভ করে। [এফ.এম মোস্তাফিজুর রহমান] | ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোটের শরীক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ৩৯ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ২ টি আসনে জয়লাভ করে। [এফ.এম মোস্তাফিজুর রহমান] | ||
[[en:Jamaat-e-Islami Bangladesh]] | [[en:Jamaat-e-Islami Bangladesh]] |
০৭:৫২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ইসলামী আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করার নীতিতে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। বিশ শতকের ত্রিশের দশকের গোড়া থেকেই অবিভক্ত ভারতে ইসলামী আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে মওলানা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদীর নেতৃত্বে একটি পৃথক রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। মাসিক পত্রিকা তারজুমান আল-কোরআন-এর মাধ্যমে ১৯৩২ সাল থেকেই এ লক্ষ্যে প্রচারকার্য শুরু হয়। ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার পথ’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় মওলানা মওদুদী মুসলিম লীগের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্যের কথা প্রকাশ করেন। ১৯৪১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠানের কথা ঘোষণা করা হয়। তদনুসারে ওই বছর ২৫ আগস্ট লাহোরে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর আত্মপ্রকাশ ঘটে। মওলানা মওদুদী এ দলের আমীর নির্বাচিত হন।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ আমীরগণ-এর তালিকা:
মওলানা সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী | ১৯৪৭-১৯৭২ |
উফায়েল মুহাম্মদ | ১৯৭২ |
কাজী হুসাইন আহমেদ | ১৯৭২ |
মওলানা জাকারিয়া | ১৯৭২- জুলাই ১৯৭৩ |
মোঃ শফীকুল্লাহ | জুলাই ১৯৭৩- সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ |
মওলানা আবদুল খালেক | সেপ্টেম্বর ১৯৭৪- মার্চ ১৯৭৫ |
সৈয়দ মোহাম্মদ আলী | মার্চ ১৯৭৫- সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ |
মওলানা আবদুর রহীম | সেপ্টেম্বর ১৯৭৫- ১৯৭৮ |
মওলানা আববাস আলী খান (ভারপ্রাপ্ত) | ১৯৭৯ |
অধ্যাপক গোলাম আযম | ১৯৭৯-২০০০ |
মওলানা মতিউর রহমান নিজামী | ২০০০- |
যুদ্ধাবস্থার কারণে প্রায় চার বছর জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয় নি। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ১৯৪৫ সালের ১৯-২১ এপ্রিল পাঞ্জাবের পাঠানকোটে দলের প্রথম নিখিল ভারত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর জামায়াতে ইসলামী দ’ুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জামায়াতে ইসলামী হিন্দ দিল্লিতে এবং জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান লাহোরে দলের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে। নিখিল পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে অধিষ্ঠিত হন দলের প্রতিষ্ঠাতা আমীর মওলানা সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা গৃহীত হলে জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দল বিধির আওতায় মওলানা আবদুর রহীমের নেতৃত্বে ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ (আই.ডি.এল) রাজনৈতিক দল হিসেবে কর্মকান্ড পরিচালনার অনুমতি লাভ করে এবং জামায়াতের সদস্যরা এ দলের ব্যানারে প্রকাশ্য রাজনীতিতে সক্রিয় হয়। ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জামায়াতের কতিপয় নেতা ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ৬ জন প্রার্থী জয়ী হন। ১৯৭৯ সালে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে এ দলটি পুনরায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটে আর্বিভূত হয় এবং মওলানা আববাস আলী খানকে দলের ভারপ্রাপ্ত আমীর নির্বাচন করা হয়। এ দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানব জাতির কল্যাণের লক্ষ্যে কুরআন ও হাদীসে বিধৃত ইসলামী জীবনবিধান কায়েমের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন সাফল্য অর্জনই জামায়াতের উদ্দেশ্য।
১৯৭৯ সাল থেকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে তাঁর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসনে জয়লাভ করে। জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কৌশল হিসেবে জামায়াতের ১০ জন সংসদ সদস্য ১৯৮৭ সালের ৩ ডিসেম্বর সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দলীয় জোট, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোট এবং ৫ দলীয় জোট ও জামায়াতে ইসলামী পৃথকভাবে অংশ নেয়। এসময় জোট ও দলের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত লিয়াজোঁ কমিটির মাধ্যমে আন্দোলনের অভিন্ন পন্থা ও কৌশল নিরূপিত হতো। বিভিন্ন জোট ও জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের তীব্র আন্দোলন ১৯৯০ সালের শেষদিকে গণ-অভ্যুত্থানের রূপ পরিগ্রহ করে। এ পরিস্থিতিতে জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগ করে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন।
১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থীরা ৩৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১৮টি আসনে বিজয়ী হয় এবং সরকার গঠনের জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে সমর্থন দেয়। মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩০টি আসনের মধ্যে জামায়াত ২টি আসন লাভ করে। ১৯৯১ সালে উচ্চ আদালত কর্তৃক অধ্যাপক গোলাম আযমের নাগিরকত্ব বৈধ ঘোষিত হবার পর তাঁকে জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচন করা হয়। তিনি ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এ পদে বহাল ছিলেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ শরীক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর জোর সমর্থন পায়। এ আন্দোলন জোরদার করার লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বর মাসে জামায়াত দলীয় সদস্যগণ সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী মাত্র ৩টি আসনে জয়ী হয়। ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসে মওলানা মতিউর রহমান নিজামী জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর পদে অধ্যাপক গোলাম আযমের স্থলাভিষিক্ত হন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতৃত্বে গঠিত ৪ দলীয় জোট জাতীয় সংসদে দুই-তৃতীয়াংশেরও অধিক আসনে জয়লাভ করে এবং শরীক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ পায় ১৭টি আসন। জোটের শরীক হিসেবে জামায়াত সরকারে অংশ নেয় এবং মন্ত্রিসভায় এ দলের দুজন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোটের শরীক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ৩৯ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ২ টি আসনে জয়লাভ করে। [এফ.এম মোস্তাফিজুর রহমান]