চৌগ্রাম জমিদারী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''চৌগ্রাম জমিদারি''' নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার চৌগ্রামে অবস্থিত। নাটোর রাজের প্রথম জমিদার রামজীবন চৌগ্রামের রসিক রায়ের পুত্র রামকান্তকে দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি রসিক রায়কে চৌগ্রাম ও রংপুরের ইসলামাবাদ পরগনাদ্বয় দান করলে চৌগ্রাম জমিদারির উদ্ভব ঘটে। রসিক রায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র কৃষ্ণকান্ত রায় চৌগ্রামে রাজবাড়ি নির্মাণ করে জমিদারি পরিচালনা করেন। পরে জমিদার হন রুদ্রকান্ত। রুদ্রকান্তের দত্তকপুত্র রাজা রোহিনীকান্ত রায়। | '''চৌগ্রাম জমিদারি''' নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার চৌগ্রামে অবস্থিত। নাটোর রাজের প্রথম জমিদার রামজীবন চৌগ্রামের রসিক রায়ের পুত্র রামকান্তকে দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি রসিক রায়কে চৌগ্রাম ও রংপুরের ইসলামাবাদ পরগনাদ্বয় দান করলে চৌগ্রাম জমিদারির উদ্ভব ঘটে। রসিক রায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র কৃষ্ণকান্ত রায় চৌগ্রামে রাজবাড়ি নির্মাণ করে জমিদারি পরিচালনা করেন। পরে জমিদার হন রুদ্রকান্ত। রুদ্রকান্তের দত্তকপুত্র রাজা রোহিনীকান্ত রায়। | ||
রোহিনীকান্ত রায়ের দত্তকপুত্র রমণীকান্ত রায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর সঙ্গে একত্রে ‘রায় এন্ড রায় চৌধুরী’ নামে একটি ইমারত নির্মাণ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নদীয়া জেলার খালিশপুর এবং বরিশালের দক্ষিণ শাহজাদপুরে দুটি নতুন জমিদারি ক্রয় করেন। এভাবে তিনি জমিদারির আয়তন বৃদ্ধি করেন। তাঁর সময় চৌগ্রাম জমিদারির আয়তন ছিল ২৯,৪৮৭ একর বা ৪৬.০৭ বর্গমাইল। তিনি কলকাতায় একটি বাড়ি নির্মাণ এবং শহরতলীতে একটি ফার্ম ক্রয় করেন। তিনি দার্জিলিংয়েও একটি বাড়ি ক্রয় করেন। তিনি হিন্দুস্থান জীবন বীমা কোম্পানির প্রথম চেয়ারম্যান এবং হিন্দুস্থান ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। ছেলেমেয়েদের বিয়ের মাধ্যমে তিনি উত্তরবঙ্গের অনেক জমিদার পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করেন। | রোহিনীকান্ত রায়ের দত্তকপুত্র রমণীকান্ত রায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর সঙ্গে একত্রে ‘রায় এন্ড রায় চৌধুরী’ নামে একটি ইমারত নির্মাণ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নদীয়া জেলার খালিশপুর এবং বরিশালের দক্ষিণ শাহজাদপুরে দুটি নতুন জমিদারি ক্রয় করেন। এভাবে তিনি জমিদারির আয়তন বৃদ্ধি করেন। তাঁর সময় চৌগ্রাম জমিদারির আয়তন ছিল ২৯,৪৮৭ একর বা ৪৬.০৭ বর্গমাইল। তিনি কলকাতায় একটি বাড়ি নির্মাণ এবং শহরতলীতে একটি ফার্ম ক্রয় করেন। তিনি দার্জিলিংয়েও একটি বাড়ি ক্রয় করেন। তিনি হিন্দুস্থান জীবন বীমা কোম্পানির প্রথম চেয়ারম্যান এবং হিন্দুস্থান ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। ছেলেমেয়েদের বিয়ের মাধ্যমে তিনি উত্তরবঙ্গের অনেক জমিদার পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করেন। | ||
৬ নং লাইন: | ৬ নং লাইন: | ||
১৯৪৫ সালে ৮০ বছর বয়সে রমণীকান্ত রায়ের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র রাজেশকান্ত রায় ও রমেন্দ্রকান্ত রায় ছিলেন চৌগ্রামের শেষ জমিদার। রাজবাড়িটি বর্তমানে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। চৌগ্রাম রাজবাড়ির পাশে রয়েছে একটি ক্ষুদ্র দোচালা ইমারত যা হিন্দুমুসলিম উভয়েই ভক্তি প্রদর্শন করে। [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান] | ১৯৪৫ সালে ৮০ বছর বয়সে রমণীকান্ত রায়ের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র রাজেশকান্ত রায় ও রমেন্দ্রকান্ত রায় ছিলেন চৌগ্রামের শেষ জমিদার। রাজবাড়িটি বর্তমানে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। চৌগ্রাম রাজবাড়ির পাশে রয়েছে একটি ক্ষুদ্র দোচালা ইমারত যা হিন্দুমুসলিম উভয়েই ভক্তি প্রদর্শন করে। [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান] | ||
গ্রন্থপঞ্জি Kalinath Chaudhuri, Rajshahi Zelar Sangkhipta Itihas, Calcutta: School Book Press, 1901; Rahman, Kazi Md. Mostafizur, Rajshahi Zelar Prasad Sthapattya: Zmindari Amol (1793-1950). Unpublished PhD. Thesis, Rajshahi University, 2005; Rahman, Mahbubar | ''গ্রন্থপঞ্জি'' Kalinath Chaudhuri, Rajshahi Zelar Sangkhipta Itihas, Calcutta: School Book Press, 1901; Rahman, Kazi Md. Mostafizur, Rajshahi Zelar Prasad Sthapattya: Zmindari Amol (1793-1950). Unpublished PhD. Thesis, Rajshahi University, 2005; Rahman, Mahbubar, “Brendrer Raja o Zamidar”, Rahman, Mamtazur and Others (ed). Barendra Anchaler Itihas (Rajshahi Bivag: Itihas o Aitijhya), Rajshahi: Office of the Divisional Commissioner, 1998. | ||
[[en:Chaugram Zamindari]] | [[en:Chaugram Zamindari]] |
০৬:৪২, ১৮ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
চৌগ্রাম জমিদারি নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার চৌগ্রামে অবস্থিত। নাটোর রাজের প্রথম জমিদার রামজীবন চৌগ্রামের রসিক রায়ের পুত্র রামকান্তকে দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি রসিক রায়কে চৌগ্রাম ও রংপুরের ইসলামাবাদ পরগনাদ্বয় দান করলে চৌগ্রাম জমিদারির উদ্ভব ঘটে। রসিক রায়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র কৃষ্ণকান্ত রায় চৌগ্রামে রাজবাড়ি নির্মাণ করে জমিদারি পরিচালনা করেন। পরে জমিদার হন রুদ্রকান্ত। রুদ্রকান্তের দত্তকপুত্র রাজা রোহিনীকান্ত রায়।
রোহিনীকান্ত রায়ের দত্তকপুত্র রমণীকান্ত রায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর সঙ্গে একত্রে ‘রায় এন্ড রায় চৌধুরী’ নামে একটি ইমারত নির্মাণ কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নদীয়া জেলার খালিশপুর এবং বরিশালের দক্ষিণ শাহজাদপুরে দুটি নতুন জমিদারি ক্রয় করেন। এভাবে তিনি জমিদারির আয়তন বৃদ্ধি করেন। তাঁর সময় চৌগ্রাম জমিদারির আয়তন ছিল ২৯,৪৮৭ একর বা ৪৬.০৭ বর্গমাইল। তিনি কলকাতায় একটি বাড়ি নির্মাণ এবং শহরতলীতে একটি ফার্ম ক্রয় করেন। তিনি দার্জিলিংয়েও একটি বাড়ি ক্রয় করেন। তিনি হিন্দুস্থান জীবন বীমা কোম্পানির প্রথম চেয়ারম্যান এবং হিন্দুস্থান ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন। ছেলেমেয়েদের বিয়ের মাধ্যমে তিনি উত্তরবঙ্গের অনেক জমিদার পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করেন।
১৯৪৫ সালে ৮০ বছর বয়সে রমণীকান্ত রায়ের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র রাজেশকান্ত রায় ও রমেন্দ্রকান্ত রায় ছিলেন চৌগ্রামের শেষ জমিদার। রাজবাড়িটি বর্তমানে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। চৌগ্রাম রাজবাড়ির পাশে রয়েছে একটি ক্ষুদ্র দোচালা ইমারত যা হিন্দুমুসলিম উভয়েই ভক্তি প্রদর্শন করে। [কাজী মোস্তাফিজুর রহমান]
গ্রন্থপঞ্জি Kalinath Chaudhuri, Rajshahi Zelar Sangkhipta Itihas, Calcutta: School Book Press, 1901; Rahman, Kazi Md. Mostafizur, Rajshahi Zelar Prasad Sthapattya: Zmindari Amol (1793-1950). Unpublished PhD. Thesis, Rajshahi University, 2005; Rahman, Mahbubar, “Brendrer Raja o Zamidar”, Rahman, Mamtazur and Others (ed). Barendra Anchaler Itihas (Rajshahi Bivag: Itihas o Aitijhya), Rajshahi: Office of the Divisional Commissioner, 1998.