চাঁদনীবাজার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''চাঁদনীবাজার'''  প্রাক-ব্রিটিশ যুগের এক বিশেষ ধরনের বাজার। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থায়ী এ চাঁদনীবাজার বড় বড় শহর ও প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহে অভিজাতশ্রেণির ক্রেতাদের জন্য বিশেষভাবে গড়ে তোলা হতো। পণ্যদ্রব্য ও উদ্দেশ্যের বিবেচনায় চাঁদনীবাজারকে আধুনিক শপিং মল বা প্লাজার সঙ্গে তুলনা করা যায়। রাজনৈতিক এবং আভিজাত্যের কারণে মধ্যযুগে শাসকশ্রেণী সাধারণ জনগণের কাছ থেকে সকল ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখতেন। এমনকি কেনাকাটা ও ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের ক্ষেত্রেও এ দূরত্ব বজায় রাখা হতো। চাঁদনীবাজার বা চাঁদনী চক সমাজের অভিজাত ও বিত্তবানদেরই চাহিদা পূরণ করত।
'''চাঁদনীবাজার'''  প্রাক-ব্রিটিশ যুগের এক বিশেষ ধরনের বাজার। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থায়ী এ চাঁদনীবাজার বড় বড় শহর ও প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহে অভিজাতশ্রেণির ক্রেতাদের জন্য বিশেষভাবে গড়ে তোলা হতো। পণ্যদ্রব্য ও উদ্দেশ্যের বিবেচনায় চাঁদনীবাজারকে আধুনিক শপিং মল বা প্লাজার সঙ্গে তুলনা করা যায়। রাজনৈতিক এবং আভিজাত্যের কারণে মধ্যযুগে শাসকশ্রেণী সাধারণ জনগণের কাছ থেকে সকল ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখতেন। এমনকি কেনাকাটা ও ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের ক্ষেত্রেও এ দূরত্ব বজায় রাখা হতো। চাঁদনীবাজার বা চাঁদনী চক সমাজের অভিজাত ও বিত্তবানদেরই চাহিদা পূরণ করত।


মুগল প্রশাসনে ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল বিবরণে চাঁদনী শব্দটি একটি অভিজাত বাজার অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। এ বাজার থেকে সরকার সাধারণ বাজারের তুলনায় উচ্চ হারে রাজস্ব আদায় করত। চাঁদনীবাজারের রাজস্বকে বলা হতো চান্দিনা। চান্দিনা ছিল নিয়মিত রাজস্ব প্রদেয় একটি বন্দোবস্ত। নজরানা  প্রদানের মাধ্যমে চান্দিনা বন্দোবস্ত লাভ করা যেত। চান্দিনা ছিল সরকারের আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। রাজস্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে চাঁদনীবাজারের দোকান এবং সংলগ্ন আবাসিক এলাকাসমূহকে পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হতো। দোকান এবং বাড়িগুলি একই চত্বরে থাকা সত্ত্বেও দোকানের ভাড়া ছিল বাড়ির তুলনায় বেশি। উনিশ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত [[ঢাকা|ঢাকা]], [[মুর্শিদাবাদ|মুশিট্টদাবাদ]], ঢাকা ও [[হুগলি নগরী|হৃগলি]] প্রভৃতি শহরে অনেকগুলি চাঁদনীবাজার ছিল। এসব শহরের কোতোয়াল চাঁদনীবাজারের নিরাপত্তা বিধান করতেন।  [সিরাজুল ইসলাম]
মুগল প্রশাসনে ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল বিবরণে চাঁদনী শব্দটি একটি অভিজাত বাজার অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। এ বাজার থেকে সরকার সাধারণ বাজারের তুলনায় উচ্চ হারে রাজস্ব আদায় করত। চাঁদনীবাজারের রাজস্বকে বলা হতো চান্দিনা। চান্দিনা ছিল নিয়মিত রাজস্ব প্রদেয় একটি বন্দোবস্ত। নজরানা  প্রদানের মাধ্যমে চান্দিনা বন্দোবস্ত লাভ করা যেত। চান্দিনা ছিল সরকারের আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। রাজস্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে চাঁদনীবাজারের দোকান এবং সংলগ্ন আবাসিক এলাকাসমূহকে পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হতো। দোকান এবং বাড়িগুলি একই চত্বরে থাকা সত্ত্বেও দোকানের ভাড়া ছিল বাড়ির তুলনায় বেশি। উনিশ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত [[ঢাকা|ঢাকা]], [[মুর্শিদাবাদ|মুর্শিদাবাদ]], ঢাকা ও [[হুগলি নগরী|হুগলি]] প্রভৃতি শহরে অনেকগুলি চাঁদনীবাজার ছিল। এসব শহরের কোতোয়াল চাঁদনীবাজারের নিরাপত্তা বিধান করতেন।  [সিরাজুল ইসলাম]


[[en:Chandni Bazar]]
[[en:Chandni Bazar]]

০৯:১০, ২১ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

চাঁদনীবাজার  প্রাক-ব্রিটিশ যুগের এক বিশেষ ধরনের বাজার। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থায়ী এ চাঁদনীবাজার বড় বড় শহর ও প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহে অভিজাতশ্রেণির ক্রেতাদের জন্য বিশেষভাবে গড়ে তোলা হতো। পণ্যদ্রব্য ও উদ্দেশ্যের বিবেচনায় চাঁদনীবাজারকে আধুনিক শপিং মল বা প্লাজার সঙ্গে তুলনা করা যায়। রাজনৈতিক এবং আভিজাত্যের কারণে মধ্যযুগে শাসকশ্রেণী সাধারণ জনগণের কাছ থেকে সকল ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখতেন। এমনকি কেনাকাটা ও ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের ক্ষেত্রেও এ দূরত্ব বজায় রাখা হতো। চাঁদনীবাজার বা চাঁদনী চক সমাজের অভিজাত ও বিত্তবানদেরই চাহিদা পূরণ করত।

মুগল প্রশাসনে ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সকল বিবরণে চাঁদনী শব্দটি একটি অভিজাত বাজার অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। এ বাজার থেকে সরকার সাধারণ বাজারের তুলনায় উচ্চ হারে রাজস্ব আদায় করত। চাঁদনীবাজারের রাজস্বকে বলা হতো চান্দিনা। চান্দিনা ছিল নিয়মিত রাজস্ব প্রদেয় একটি বন্দোবস্ত। নজরানা  প্রদানের মাধ্যমে চান্দিনা বন্দোবস্ত লাভ করা যেত। চান্দিনা ছিল সরকারের আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। রাজস্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে চাঁদনীবাজারের দোকান এবং সংলগ্ন আবাসিক এলাকাসমূহকে পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হতো। দোকান এবং বাড়িগুলি একই চত্বরে থাকা সত্ত্বেও দোকানের ভাড়া ছিল বাড়ির তুলনায় বেশি। উনিশ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, ঢাকা ও হুগলি প্রভৃতি শহরে অনেকগুলি চাঁদনীবাজার ছিল। এসব শহরের কোতোয়াল চাঁদনীবাজারের নিরাপত্তা বিধান করতেন।  [সিরাজুল ইসলাম]