গাজীপুর জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১০ নং লাইন: | ১০ নং লাইন: | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| colspan= "10" | জেলা | |||
|- | |- | ||
| rowspan= "2" | আয়তন(বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | উপজেলা || rowspan= "2" | পৌরসভা || rowspan= "2" | ইউনিয়ন || rowspan= "2" | মৌজা || rowspan= "2" | গ্রাম || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan= "2" | আয়তন (বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | উপজেলা || rowspan= "2" | পৌরসভা || rowspan= "2" | ইউনিয়ন || rowspan= "2" | মৌজা || rowspan= "2" | গ্রাম || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১৭৪১.৫৩ || ৫ || ৪ || ৪৫ || ৭৬৮ || ১১৬২ || ৯২৯৭৭০ || ১১০২১২১ || ১২৩১ || ৫৬.৪ | | ১৭৪১.৫৩ || ৫ || ৪ || ৪৫ || ৭৬৮ || ১১৬২ || ৯২৯৭৭০ || ১১০২১২১ || ১২৩১ || ৫৬.৪ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| জেলার অন্যান্য তথ্য | | colspan= "10" | জেলার অন্যান্য তথ্য | ||
|- | |- | ||
| উপজেলা নাম || আয়তন(বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | উপজেলা নাম || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| কাপাসিয়া || ৩৫৬.৯৮ || - || ১১ || ১৬৬ || ২৩০ || ৩২১৪৫৪ || ৯০০ || ৫৬.৪ | | কাপাসিয়া || ৩৫৬.৯৮ || - || ১১ || ১৬৬ || ২৩০ || ৩২১৪৫৪ || ৯০০ || ৫৬.৪ | ||
|- | |- | ||
| কালিয়াকৈর || ৩১৪.১৪ || ১ || ৯ || ১৮১ || ২৮৭ || ২৬৭০০৩ || ৮৫০ || ৪৮.৪ | | কালিয়াকৈর || ৩১৪.১৪ || ১ || ৯ || ১৮১ || ২৮৭ || ২৬৭০০৩ || ৮৫০ || ৪৮.৪ | ||
|- | |- | ||
| কালীগঞ্জ || ১৫৮.৭৯ || ১ || ৮ || ১৫১ || ১৯৮ || ২৩৯৫২৭ || ১৫০৮ || ৫৪.৯ | | কালীগঞ্জ || ১৫৮.৭৯ || ১ || ৮ || ১৫১ || ১৯৮ || ২৩৯৫২৭ || ১৫০৮ || ৫৪.৯ | ||
|- | |- | ||
| গাজীপুর সদর || ৪৪৬.৩৮ || ২ || ৮ || ১৮৩ || ২৬১ || ৮৬৬৫৪০ || ১৯৪১ || ৬২.৬ | | গাজীপুর সদর || ৪৪৬.৩৮ || ২ || ৮ || ১৮৩ || ২৬১ || ৮৬৬৫৪০ || ১৯৪১ || ৬২.৬ | ||
|- | |- | ||
| শ্রীপুর || ৪৬৫.২৪ || - || ৯ || ৮১ || ১৮৬ || ৩৩৭৩৬৭ || ৭২৫ || ৪৭.৭ | | শ্রীপুর || ৪৬৫.২৪ || - || ৯ || ৮১ || ১৮৬ || ৩৩৭৩৬৭ || ৭২৫ || ৪৭.৭ | ||
৪৪ নং লাইন: | ৩৬ নং লাইন: | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:GazipurDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | |||
''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' পাল রাজাদের রাজধানী ঢোলসমুদ্র, টোক দুর্গ (ষষ্ঠ শতাব্দী), কর্ণপুর দুর্গ ও জোড়া দীঘি (১০৪৫), চৌরা দীঘি ও মাযার, মীর জুমলার টঙ্গী পুল, ভাওয়াল রাজবাড়ী, বক্তারপুর ঈশা খাঁর সমাধি, শ্রীপুরে রাজা শিশুপালের ও চিনাশখানিয়ায় চন্ডাল রাজাদের রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ, কাপাসিয়ার একডালা দূর্গ (আনুমানিক ৬০০ খ্রিঃ), দরদরিয়া দূর্গ (১২০০ খ্রিঃ), রাণীগঞ্জ ও বর্মী নীলকুঠি। | ''প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ'' পাল রাজাদের রাজধানী ঢোলসমুদ্র, টোক দুর্গ (ষষ্ঠ শতাব্দী), কর্ণপুর দুর্গ ও জোড়া দীঘি (১০৪৫), চৌরা দীঘি ও মাযার, মীর জুমলার টঙ্গী পুল, ভাওয়াল রাজবাড়ী, বক্তারপুর ঈশা খাঁর সমাধি, শ্রীপুরে রাজা শিশুপালের ও চিনাশখানিয়ায় চন্ডাল রাজাদের রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ, কাপাসিয়ার একডালা দূর্গ (আনুমানিক ৬০০ খ্রিঃ), দরদরিয়া দূর্গ (১২০০ খ্রিঃ), রাণীগঞ্জ ও বর্মী নীলকুঠি। | ||
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকসেনারা টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায়, ৭ এপ্রিল জয়দেবপুরে, ১৭ এপ্রিল আরিচাপুরে এবং ১৪ মে বাড়িয়া, ইছরকান্দি, টঙ্গী শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, ১ ডিসেম্বর খলাপাড়া ন্যাশনাল জুট মিলে, সাতখামাইরে, ১৭ জুন শ্রীপুর কলেজ ক্যাম্পাসে গণহত্যা চালায় এবং কাপাসিয়া বাজারে অগ্নিসংযোগ করে। ৪ মার্চ উপজেলা সদরের টংগীতে প্রতিরোধ সংগ্রামে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ মার্চ জয়দেবপুর ও চান্দনা চৌরাস্তায় পাকবাহিনীর গুলিতে ৪ জন শহীদ হন। ১৮ নভেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার সোমবাজার খালের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা ওয়াপদা পাওয়ার হাউজ আর্মি ক্যাম্প, থানা ও আড়িখোলা রেলস্টেশন ক্যাম্প দখল করে। ১৪ ডিসেম্বর পূবাইলে ও নলছাটায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা এবং মিত্র বাহিনীর আনুমানিক ২ জন সদস্য নিহত হয়। ৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা কালিয়াকৈর পাকসেনাদের ঘাঁটি আক্রমণ করে ৩৪ জন রাজাকার ও ১২ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৮ অক্টোবর উপজেলার কাচিঘাটা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধে প্রায় ৫২ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৩০ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ফুলবাড়িয়া এলাকায় ৭জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনা বহনকারী ৩ টি ট্রাক ধ্বংস করে এবং ২৭ জনকে হত্যা করে। কালিয়াকৈর লতিফপুর সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সংঘটিত যুদ্ধের পরে পাকবাহিনী শ্রীফলতলী গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। ১৩ ডিসেম্বর বংশী সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের সংঘটিত যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। | ''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকসেনারা টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায়, ৭ এপ্রিল জয়দেবপুরে, ১৭ এপ্রিল আরিচাপুরে এবং ১৪ মে বাড়িয়া, ইছরকান্দি, টঙ্গী শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, ১ ডিসেম্বর খলাপাড়া ন্যাশনাল জুট মিলে, সাতখামাইরে, ১৭ জুন শ্রীপুর কলেজ ক্যাম্পাসে গণহত্যা চালায় এবং কাপাসিয়া বাজারে অগ্নিসংযোগ করে। ৪ মার্চ উপজেলা সদরের টংগীতে প্রতিরোধ সংগ্রামে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ মার্চ জয়দেবপুর ও চান্দনা চৌরাস্তায় পাকবাহিনীর গুলিতে ৪ জন শহীদ হন। ১৮ নভেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার সোমবাজার খালের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা ওয়াপদা পাওয়ার হাউজ আর্মি ক্যাম্প, থানা ও আড়িখোলা রেলস্টেশন ক্যাম্প দখল করে। ১৪ ডিসেম্বর পূবাইলে ও নলছাটায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা এবং মিত্র বাহিনীর আনুমানিক ২ জন সদস্য নিহত হয়। ৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা কালিয়াকৈর পাকসেনাদের ঘাঁটি আক্রমণ করে ৩৪ জন রাজাকার ও ১২ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৮ অক্টোবর উপজেলার কাচিঘাটা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধে প্রায় ৫২ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৩০ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ফুলবাড়িয়া এলাকায় ৭জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনা বহনকারী ৩ টি ট্রাক ধ্বংস করে এবং ২৭ জনকে হত্যা করে। কালিয়াকৈর লতিফপুর সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সংঘটিত যুদ্ধের পরে পাকবাহিনী শ্রীফলতলী গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। ১৩ ডিসেম্বর বংশী সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের সংঘটিত যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। | ||
৫২ নং লাইন: | ৪৩ নং লাইন: | ||
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' জয়দেবপুর রাজবাড়ীর পূর্ব পাশের পুকুর, সাতখামাইর, টংগী শহীদ স্মৃতি স্কুল প্রাঙ্গণ, গাছার বধ্যভূমি, জয়দেবপুর চৌরাস্তার মোড়ে স্থাপিত ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’। রাজবাড়ীতে জয়দেবপুর মুক্তিযুদ্ধ স্মারক ভাস্কর্য, তরগাঁয় শহীদ সাজ্জাদের কবর। | ''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' জয়দেবপুর রাজবাড়ীর পূর্ব পাশের পুকুর, সাতখামাইর, টংগী শহীদ স্মৃতি স্কুল প্রাঙ্গণ, গাছার বধ্যভূমি, জয়দেবপুর চৌরাস্তার মোড়ে স্থাপিত ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’। রাজবাড়ীতে জয়দেবপুর মুক্তিযুদ্ধ স্মারক ভাস্কর্য, তরগাঁয় শহীদ সাজ্জাদের কবর। | ||
শিক্ষার হার ও শিক্ষা | ''শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৫৬.৪%; পুরুষ ৬০.৫%, মহিলা ৫১.৯%। বিশ্ববিদ্যালয় ৫, কলেজ ৪৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭৬, কমিউনিটি স্কুল ৫২, এনজিও স্কুল ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩৩, মাদ্রাসা ১৮১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), রাণী বিলাসমণি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৫), তারাগঞ্জ এইচ.এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), সেন্ট নিকোলাস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), কাওরাইদ কালী নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), ভৃঙ্গরাজ তালিবাবাদ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৬৫), শ্রীপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (১৯৬৮), ইসলামী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৯), ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮০), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯২), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩), বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩)। | ||
'' | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৭.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৫%, ব্যবসা ১০.৮৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৯%, নির্মাণ ১.১%, চাকরি ১৪.৪১%, অন্যান্য ১০.৭৪%। | ||
'' | ''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক পত্রিকা ৪, অর্ধ-সাপ্তাহিক ২, সাপ্তাহিক ১১, অন্যান্য ২৮। দৈনিক: গণমুখ, মুক্ত সংবাদ, আজকের জনতা; সাপ্তাহিক: গাজীপুর বার্তা, গাজীপুর সংবাদ, সকলের কণ্ঠ, ভাওয়াল, অনির্বাণ। | ||
''লোকসংস্কৃতি'' নবান্ন উৎসব, বৈশাখী মেলা, পিঠা উৎসব, জামাই ষষ্ঠী, ঘুড়ি উৎসব, উপজাতি রাজবংশী লোকনৃত্য, হিন্দুদের কীর্তন উৎসব। এছাড়া বৃষ্টির জন্য, ধান কাটার সময়, নৌকা চালানো, বিয়ে বা অন্যান্য লোকজ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এই জেলায় শীতকালে নাট্য উৎসব হয়। | |||
[মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ] | ''বিনোদন কেন্দ্র বা দর্শনীয় স্থান'' লাখপুর ডাকবাংলো (মোঘল আমলে নির্মিত), রমানাথ কর্মকারের জমিদার বাড়ি, ধাধার চর (২০০ বছর পুরোনো), নাগরী সেন্ট নিকোলাস ও পানজোরার সাধু আন্তনির গির্জা, কৃপাময়ী মন্দির, কাশিমপুর জমিদার বাড়ী, ভরান রাজবাড়ী। নন্দন পার্ক, আনসার একাডেমী, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, হোতাপাড়া শ্যুটিং অঞ্চল, খতিববাড়ি শু্যটিং এলাকা, নীলের পাড়া খামার বাড়ি, অনন্তধারা পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র, পুষ্পধাম বিনোদন ও শু্যটিং স্থান, নুহাশ চলচ্চিত্র পল্লী, স্বাধীনতার প্রথম ভাষ্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী। [মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ] | ||
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গাজীপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; গাজীপুর জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Gazipur District]] | [[en:Gazipur District]] |
০৭:০০, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
গাজীপুর জেলা (ঢাকা বিভাগ) আয়তন: ১৭৪১.৫৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৫৩´ থেকে ২৪°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০৯´ থেকে ৯২°৩৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ময়মনসিংহ এবং কিশোরগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা, পূর্বে নরসিংদী জেলা, পশ্চিমে ঢাকা ও টাঙ্গাইল জেলা।
জনসংখ্যা ২০৩১৮৯১; পুরুষ ১০৬৭৭২২, মহিলা ৯৬৪১৬৯। মুসলিম ১৮৭২৯৪৩, হিন্দু ১৩৭৬৭৮, বৌদ্ধ ২০১২৪, খ্রিস্টান ২৩৫ এবং অন্যান্য ৯১১। এ উপজেলায় রাজবংশী (কোচ), গারো, সাওতাল, মান্দী, ভাংগর, নুনিয়া প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী: পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বংশী, বালু, বানার।
প্রশাসন জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে।
জেলা | |||||||||
আয়তন (বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
১৭৪১.৫৩ | ৫ | ৪ | ৪৫ | ৭৬৮ | ১১৬২ | ৯২৯৭৭০ | ১১০২১২১ | ১২৩১ | ৫৬.৪ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | |||||||||
উপজেলা নাম | আয়তন (বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
কাপাসিয়া | ৩৫৬.৯৮ | - | ১১ | ১৬৬ | ২৩০ | ৩২১৪৫৪ | ৯০০ | ৫৬.৪ | |
কালিয়াকৈর | ৩১৪.১৪ | ১ | ৯ | ১৮১ | ২৮৭ | ২৬৭০০৩ | ৮৫০ | ৪৮.৪ | |
কালীগঞ্জ | ১৫৮.৭৯ | ১ | ৮ | ১৫১ | ১৯৮ | ২৩৯৫২৭ | ১৫০৮ | ৫৪.৯ | |
গাজীপুর সদর | ৪৪৬.৩৮ | ২ | ৮ | ১৮৩ | ২৬১ | ৮৬৬৫৪০ | ১৯৪১ | ৬২.৬ | |
শ্রীপুর | ৪৬৫.২৪ | - | ৯ | ৮১ | ১৮৬ | ৩৩৭৩৬৭ | ৭২৫ | ৪৭.৭ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ পাল রাজাদের রাজধানী ঢোলসমুদ্র, টোক দুর্গ (ষষ্ঠ শতাব্দী), কর্ণপুর দুর্গ ও জোড়া দীঘি (১০৪৫), চৌরা দীঘি ও মাযার, মীর জুমলার টঙ্গী পুল, ভাওয়াল রাজবাড়ী, বক্তারপুর ঈশা খাঁর সমাধি, শ্রীপুরে রাজা শিশুপালের ও চিনাশখানিয়ায় চন্ডাল রাজাদের রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ, কাপাসিয়ার একডালা দূর্গ (আনুমানিক ৬০০ খ্রিঃ), দরদরিয়া দূর্গ (১২০০ খ্রিঃ), রাণীগঞ্জ ও বর্মী নীলকুঠি।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ পাকসেনারা টঙ্গী বিসিক শিল্প এলাকায়, ৭ এপ্রিল জয়দেবপুরে, ১৭ এপ্রিল আরিচাপুরে এবং ১৪ মে বাড়িয়া, ইছরকান্দি, টঙ্গী শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, ১ ডিসেম্বর খলাপাড়া ন্যাশনাল জুট মিলে, সাতখামাইরে, ১৭ জুন শ্রীপুর কলেজ ক্যাম্পাসে গণহত্যা চালায় এবং কাপাসিয়া বাজারে অগ্নিসংযোগ করে। ৪ মার্চ উপজেলা সদরের টংগীতে প্রতিরোধ সংগ্রামে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯ মার্চ জয়দেবপুর ও চান্দনা চৌরাস্তায় পাকবাহিনীর গুলিতে ৪ জন শহীদ হন। ১৮ নভেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার সোমবাজার খালের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা ওয়াপদা পাওয়ার হাউজ আর্মি ক্যাম্প, থানা ও আড়িখোলা রেলস্টেশন ক্যাম্প দখল করে। ১৪ ডিসেম্বর পূবাইলে ও নলছাটায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা এবং মিত্র বাহিনীর আনুমানিক ২ জন সদস্য নিহত হয়। ৯ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা কালিয়াকৈর পাকসেনাদের ঘাঁটি আক্রমণ করে ৩৪ জন রাজাকার ও ১২ জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ২৮ অক্টোবর উপজেলার কাচিঘাটা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধে প্রায় ৫২ জন পাকসেনা নিহত হয়। ৩০ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা ফুলবাড়িয়া এলাকায় ৭জন পাকসেনাকে হত্যা করে। ৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনা বহনকারী ৩ টি ট্রাক ধ্বংস করে এবং ২৭ জনকে হত্যা করে। কালিয়াকৈর লতিফপুর সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সংঘটিত যুদ্ধের পরে পাকবাহিনী শ্রীফলতলী গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। ১৩ ডিসেম্বর বংশী সেতুর কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের সংঘটিত যুদ্ধে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন জয়দেবপুর রাজবাড়ীর পূর্ব পাশের পুকুর, সাতখামাইর, টংগী শহীদ স্মৃতি স্কুল প্রাঙ্গণ, গাছার বধ্যভূমি, জয়দেবপুর চৌরাস্তার মোড়ে স্থাপিত ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’। রাজবাড়ীতে জয়দেবপুর মুক্তিযুদ্ধ স্মারক ভাস্কর্য, তরগাঁয় শহীদ সাজ্জাদের কবর।
শিক্ষার হার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৪%; পুরুষ ৬০.৫%, মহিলা ৫১.৯%। বিশ্ববিদ্যালয় ৫, কলেজ ৪৫, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭৬, কমিউনিটি স্কুল ৫২, এনজিও স্কুল ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩৩, মাদ্রাসা ১৮১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৯), রাণী বিলাসমণি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৫), তারাগঞ্জ এইচ.এন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), সেন্ট নিকোলাস উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), কাওরাইদ কালী নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯), ভৃঙ্গরাজ তালিবাবাদ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৮), ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় (১৯৬৫), শ্রীপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (১৯৬৮), ইসলামী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৯), ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮০), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯২), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩), বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৭.৪৬%, অকৃষি শ্রমিক ২.৬৫%, ব্যবসা ১০.৮৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৭৯%, নির্মাণ ১.১%, চাকরি ১৪.৪১%, অন্যান্য ১০.৭৪%।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক পত্রিকা ৪, অর্ধ-সাপ্তাহিক ২, সাপ্তাহিক ১১, অন্যান্য ২৮। দৈনিক: গণমুখ, মুক্ত সংবাদ, আজকের জনতা; সাপ্তাহিক: গাজীপুর বার্তা, গাজীপুর সংবাদ, সকলের কণ্ঠ, ভাওয়াল, অনির্বাণ।
লোকসংস্কৃতি নবান্ন উৎসব, বৈশাখী মেলা, পিঠা উৎসব, জামাই ষষ্ঠী, ঘুড়ি উৎসব, উপজাতি রাজবংশী লোকনৃত্য, হিন্দুদের কীর্তন উৎসব। এছাড়া বৃষ্টির জন্য, ধান কাটার সময়, নৌকা চালানো, বিয়ে বা অন্যান্য লোকজ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। এই জেলায় শীতকালে নাট্য উৎসব হয়।
বিনোদন কেন্দ্র বা দর্শনীয় স্থান লাখপুর ডাকবাংলো (মোঘল আমলে নির্মিত), রমানাথ কর্মকারের জমিদার বাড়ি, ধাধার চর (২০০ বছর পুরোনো), নাগরী সেন্ট নিকোলাস ও পানজোরার সাধু আন্তনির গির্জা, কৃপাময়ী মন্দির, কাশিমপুর জমিদার বাড়ী, ভরান রাজবাড়ী। নন্দন পার্ক, আনসার একাডেমী, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, হোতাপাড়া শ্যুটিং অঞ্চল, খতিববাড়ি শু্যটিং এলাকা, নীলের পাড়া খামার বাড়ি, অনন্তধারা পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র, পুষ্পধাম বিনোদন ও শু্যটিং স্থান, নুহাশ চলচ্চিত্র পল্লী, স্বাধীনতার প্রথম ভাষ্কর্য জাগ্রত চৌরঙ্গী। [মো. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ]
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গাজীপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; গাজীপুর জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।