কুমিল্লা জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Robot: Automated text replacement (-\|\s''জনসংখ্যা''\s\|\| +| জনসংখ্যা ||))
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
''জনসংখ্যা'' ৪৫৯৫৫৫৭; পুরুষ ২৩১২৭৩৪, মহিলা ২২৮২৮২৩। মুসলিম ৪৩৪৮২২৭, হিন্দু ২৪১৭৪২, বৌদ্ধ ৪০৪, খ্রিস্টান ৪১৭৭ এবং অন্যান্য ১০০৭।
''জনসংখ্যা'' ৪৫৯৫৫৫৭; পুরুষ ২৩১২৭৩৪, মহিলা ২২৮২৮২৩। মুসলিম ৪৩৪৮২২৭, হিন্দু ২৪১৭৪২, বৌদ্ধ ৪০৪, খ্রিস্টান ৪১৭৭ এবং অন্যান্য ১০০৭।


''জলাশয়'' মেঘনা, গোমতী, ডাকাতিয়া ও ছোট ফেনী নদী এবং কার্জন খাল উল্লেখযোগ্য।''' '''
''জলাশয়'' মেঘনা, গোমতী, ডাকাতিয়া ও ছোট ফেনী নদী এবং কার্জন খাল উল্লেখযোগ্য।


''প্রশাসন'' এ অঞ্চল প্রাচীন সমতটের অধীনে এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। নবম শতাব্দিতে এ জেলা হরিকেলের রাজাদের অধীনে আসে। এ শহরের ৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণে লালমাই ময়নামতিতে দেব বংশ (অষ্টম শতাব্দি) ও চন্দ্র বংশের (দশম ও একাদশ শতাব্দির মাঝামাঝি) রাজত্ব ছিল। এ জেলা ১৭৬৫ সালে প্রথম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীনে আসে। ১৭৯০ সালে ত্রিপুরা জেলা নামে এই জেলা গঠিত হয়। ১৯৬০ সালে কুমিল্লা জেলা নামকরণ হয়। ১৯৮৪ সালে এই জেলার চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।
''প্রশাসন'' এ অঞ্চল প্রাচীন সমতটের অধীনে এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। নবম শতাব্দিতে এ জেলা হরিকেলের রাজাদের অধীনে আসে। এ শহরের ৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণে লালমাই ময়নামতিতে দেব বংশ (অষ্টম শতাব্দি) ও চন্দ্র বংশের (দশম ও একাদশ শতাব্দির মাঝামাঝি) রাজত্ব ছিল। এ জেলা ১৭৬৫ সালে প্রথম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীনে আসে। ১৭৯০ সালে ত্রিপুরা জেলা নামে এই জেলা গঠিত হয়। ১৯৬০ সালে কুমিল্লা জেলা নামকরণ হয়। ১৯৮৪ সালে এই জেলার চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।
১০ নং লাইন: ১০ নং লাইন:
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-
|-
! colspan= "10" | জেলা
| colspan= "10" | জেলা
|-
|-
| rowspan= "2" | আয়তন(বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | উপজেলা  || rowspan= "2" | পৌরসভা  || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
| rowspan= "2" | আয়তন (বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | উপজেলা  || rowspan= "2" | পৌরসভা  || rowspan= "2" | ইউনিয়ন  || rowspan= "2" | মৌজা  || rowspan= "2" | গ্রাম  || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%)
|-
|-
| শহর  || গ্রাম  
| শহর  || গ্রাম  
|-  
|-  
| ৩০৮৫.১৭  || ১৬  || ৫  || ১৮০  || ২৭০৩  || ৩৫৮৬  || ৫৩৫২৮৯  || ৪০৬০২৬৮  || ১৪৯০  || ৪৫.৯৯
| ৩০৮৫.১৭  || ১৬  || ৫  || ১৮০  || ২৭০৩  || ৩৫৮৬  || ৫৩৫২৮৯  || ৪০৬০২৬৮  || ১৪৯০  || ৪৫.৯৯
|}
|}
{| class="table table-bordered table-hover"
{| class="table table-bordered table-hover"
|-  
|-  
| জেলার অন্যান্য তথ্য
| colspan= "10" | জেলার অন্যান্য তথ্য
 
|-  
|-  
| উপজেলার নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
| উপজেলার নাম  || আয়তন(বর্গ কিমি)  || পৌরসভা  || ইউনিয়ন  || মৌজা  || গ্রাম  || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি)  || শিক্ষার হার (%)
|-  
|-  
| আদর্শ সদর  || ১৮৮.৩৯  || ১  || ৭  || ১৮৮  || ১৪৭  || ৫১৭৮৬০  || ২৭৪৯  || ৬৬.০৫
| আদর্শ সদর  || ১৮৮.৩৯  || ১  || ৭  || ১৮৮  || ১৪৭  || ৫১৭৮৬০  || ২৭৪৯  || ৬৬.০৫
|-  
|-  
| চান্দিনা  || ২০১.৯২  || ১  || ১৩  || ১২৬  || ২২২  || ৩০৬০৫৪  || ১৫১৬  || ৪৩.৯৭
| চান্দিনা  || ২০১.৯২  || ১  || ১৩  || ১২৬  || ২২২  || ৩০৬০৫৪  || ১৫১৬  || ৪৩.৯৭
|-  
|-  
| চৌদ্দগ্রাম  || ২৬৮.৪৮  || -  || ১৪  || ৩৯৮  || ৪০২  || ৩৮১৫৪৮  || ১৪২১  || ৫০.৮৭
| চৌদ্দগ্রাম  || ২৬৮.৪৮  || -  || ১৪  || ৩৯৮  || ৪০২  || ৩৮১৫৪৮  || ১৪২১  || ৫০.৮৭
|-  
|-  
| তিতাস  || ১০৬.৩৪  || -  || ৯  || ৭১  || ১১৩  || ১৬৬৪৫৭  || ১৫৬৫  || ৩৪.২২
| তিতাস  || ১০৬.৩৪  || -  || ৯  || ৭১  || ১১৩  || ১৬৬৪৫৭  || ১৫৬৫  || ৩৪.২২
|-  
|-  
| দাউদকান্দি  || ২০৮.৬৬  || ১  || ১৩  || ১৮২  || ২৬৮  || ২৮৩৫৯৫  || ১৩৫৯  || ৪২.৫৯
| দাউদকান্দি  || ২০৮.৬৬  || ১  || ১৩  || ১৮২  || ২৬৮  || ২৮৩৫৯৫  || ১৩৫৯  || ৪২.৫৯
|-  
|-  
| দেবীদ্বার  || ২৩৮.৩৬  || -  || ১৬  || ১৪২  || ২০৯  || ৩৭৮৪০১  || ১৫৮৮  || ৫০.৩৯
| দেবীদ্বার  || ২৩৮.৩৬  || -  || ১৬  || ১৪২  || ২০৯  || ৩৭৮৪০১  || ১৫৮৮  || ৫০.৩৯
|-  
|-  
| বরুড়া  || ২৪১.৬৫  || ১  || ১৪  || ২৩১  || ৩১৩  || ৩৫১০৮৬  || ১৪৫৩  || ৪৪.৯২
| বরুড়া  || ২৪১.৬৫  || ১  || ১৪  || ২৩১  || ৩১৩  || ৩৫১০৮৬  || ১৪৫৩  || ৪৪.৯২
|-  
|-  
| বুড়িচং  || ১৬৩.৭৬  || -  || ৮  || ১৫০  || ১৭২  || ২৫৯২৬৫  || ১৫৮৩  || ৪৯.৭৫
| বুড়িচং  || ১৬৩.৭৬  || -  || ৮  || ১৫০  || ১৭২  || ২৫৯২৬৫  || ১৫৮৩  || ৪৯.৭৫
|-  
|-  
| ব্রাহ্মণপাড়া  || ১২৮.৯০  || -  || ৮  || ৫৩  || ৬৫  || ১৮১৪৭৭  || ১৪০৮  || ৪৭.৩৬
| ব্রাহ্মণপাড়া  || ১২৮.৯০  || -  || ৮  || ৫৩  || ৬৫  || ১৮১৪৭৭  || ১৪০৮  || ৪৭.৩৬
|-  
|-  
| মনোহরগঞ্জ  || ১৬৩.৫৯  || -  || ১১  || ১৪৬  || ১৬০  || ২১০৮১০  || ১২৮৯  || ৪৮.৭৪
| মনোহরগঞ্জ  || ১৬৩.৫৯  || -  || ১১  || ১৪৬  || ১৬০  || ২১০৮১০  || ১২৮৯  || ৪৮.৭৪
|-  
|-  
| মুরাদনগর  || ৩৩৯.০০  || -  || ২২  || ১৫৩  || ৩০১  || ৪৬৮০৮০  || ১৩৮১  || ৩৮.৪৩
| মুরাদনগর  || ৩৩৯.০০  || -  || ২২  || ১৫৩  || ৩০১  || ৪৬৮০৮০  || ১৩৮১  || ৩৮.৪৩
|-  
|-  
| মেঘনা  || ৯৮.৪৭  || -  || ৭  || ৪০  || ১০৪  || ৯৬৯৭০  || ৯৮৪  || ৩৩.৩৪
| মেঘনা  || ৯৮.৪৭  || -  || ৭  || ৪০  || ১০৪  || ৯৬৯৭০  || ৯৮৪  || ৩৩.৩৪
|-  
|-  
| লাকসাম  || ১৫৫.৩৪  || ১  || ৭  || ১৬৭  || ২০৪  || ২৪০১৫৩  || ১৫৪৬  || ৪৭.০৪
| লাকসাম  || ১৫৫.৩৪  || ১  || ৭  || ১৬৭  || ২০৪  || ২৪০১৫৩  || ১৫৪৬  || ৪৭.০৪
|-  
|-  
| লাঙ্গলকোট  || ২৩৬.৪৪  || -  || ১১  || ২১৩  || ২৮৯  || ৩১৯৭৮২  || ১৩৫২  || ৪০.৬১
| লাঙ্গলকোট  || ২৩৬.৪৪  || -  || ১১  || ২১৩  || ২৮৯  || ৩১৯৭৮২  || ১৩৫২  || ৪০.৬১
|-  
|-  
| সদর দক্ষিণ  || ২৪১.৬৬  || -  || ১০  || ৩৬৪  || ৪৫৯  || ৩৫৪২৮৯  || ১৪৬৬  || ৪৫.৯০
| সদর দক্ষিণ  || ২৪১.৬৬  || -  || ১০  || ৩৬৪  || ৪৫৯  || ৩৫৪২৮৯  || ১৪৬৬  || ৪৫.৯০
|-  
|-  
| হোমনা  || ১৪২.৭৯  || -  || ১০  || ৭৯  || ১৫৮  || ১৯১৪৪৯  || ১৩৪১  || ৩৩.১৮
| হোমনা  || ১৪২.৭৯  || -  || ১০  || ৭৯  || ১৫৮  || ১৯১৪৪৯  || ১৩৪১  || ৩৩.১৮
৭৯ নং লাইন: ৬০ নং লাইন:
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইপিআর ক্যাম্পেই ৪ জন পাকিস্তানি ইপিআরকে সাধারণ জনতা পিটিয়ে হত্যা করে। জুনের শেষদিকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছকারমার পুলের নিকট পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক সম্মুখ লড়াইয়ে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। কসবা-ব্রাহ্মণপাড়া সীমান্তের ঘুংঘুর নদীর তীরে হোলাইমুড়ী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অনারারী ক্যাপ্টেন ওহাবের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ১৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। পরবর্তীতে পাকবাহিনী পার্শ্ববর্তী চান্দলা ও ষাইটশালা গ্রামে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে এবং প্রায় শতাধিক গ্রামবাসিকে হত্যা করে গণকবর দেয়। ৩১ মার্চ দেবীদ্বার উপজেলায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পাকবাহিনীর সঙ্গে বাঙালিদের এক সংঘর্ষে প্রায় ৩৩ জন বাঙালি শহীদ হন। ৬ এপ্রিল লাকসাম উপজেলায় আজগরা বাজারে পাকবাহিনীর বোমা হামলায় প্রায় ২০০ জন নিরীহ গ্রামবাসি নিহত হয়। ২৩ মে দাউদকান্দি উপজেলায় স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী রায়পুরা গ্রামের ১১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং পার্শ্ববর্তী জিংলাতলী ও হারপুর গ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী বাজারে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন পাকসেনা ও স্থানীয় রাজাকার নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জুলাই মাসে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাদারীপুর গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে উভয় পক্ষের বেশসংখ্যক সেনা হতাহত হয়। এছাড়া পাকবাহিনী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ৫/৭  জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জুলাইয়ের শেষ দিকে হোমনা উপজেলায় পাকবাহিনী তিতাস নদী পথে লঞ্চযোগে জয়পুর গ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করলে নদীর দুই তীর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সশস্ত্র আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে লঞ্চটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী দ্রুত মাছিমপুরের দিকে চলে যায়। এইযুদ্ধে পাকবাহিনীর অনেকেই হতাহত হয়। জয়পুর ছাড়াও হোমনা উপজেলার চম্পক নগর, ঘাগুটিয়া, নিলখী বাজার, দুলাল বাজার, হোমনা সদর ও পঞ্চবটি প্রভৃতি জায়গায় সংঘটিত পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক লড়াইয়ে প্রায় ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং প্রায় ২৪ জন আহত হন। তাছাড়া পাকবাহিনী বর্তমান হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে বহুসংখ্যক নিরীহ মানুষকে জীবন্ত কবর দেয়। ২ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলায় পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং গ্রামে প্রবেশ করে ৬ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১০ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছার বটতলীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৩ সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জ উপজেলায় হাসনাবাদ বাজারের উত্তরে চৌমুহনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯৭১ সালে মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাজাকার ও পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি সম্মুখ লড়াই হয়। এতে কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা বুড়িচং থানা আক্রমণ করলে পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া বুড়িচং উপজেলায় পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত একাধিক লড়াইয়ে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৮ নভেম্বর চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর জগন্নাথদীঘি-ক্যাম্প দখল করে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের খন্ড লড়াইয়ে উপজেলার প্রায় ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। দেবীদ্বার উপজেলায় পাকবাহিনী ৭ আগস্ট চর কামতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর জাকেরগঞ্জ এলাকায় এবং ১৪ নভেম্বর থানা সদরের নিকট গণহত্যা চালিয়ে প্রায় কয়েক হাজার নিরীহ লোককে হত্যা করে। নাঙ্গলকোট উপজেলার তেজের বাজারে পাকবাহিনী ১১ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে কবর দেয়। তাছাড়া নাঙ্গলকোট উপজেলায় স্থানীয় রাজাকাররা ১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে হত্যা করে হাসানপুর রেলস্টেশনের পাশে পুঁতে রাখে। ১১ ডিসেম্বর চান্দিনা উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে প্রায় ১৪০০ পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। ১২ ডিসেম্বর উক্ত উপজেলার কটতলায় সম্মুখযুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা মারা যায় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া ফাউই নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত লড়াইয়ে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইপিআর ক্যাম্পেই ৪ জন পাকিস্তানি ইপিআরকে সাধারণ জনতা পিটিয়ে হত্যা করে। জুনের শেষদিকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছকারমার পুলের নিকট পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক সম্মুখ লড়াইয়ে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। কসবা-ব্রাহ্মণপাড়া সীমান্তের ঘুংঘুর নদীর তীরে হোলাইমুড়ী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অনারারী ক্যাপ্টেন ওহাবের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ১৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। পরবর্তীতে পাকবাহিনী পার্শ্ববর্তী চান্দলা ও ষাইটশালা গ্রামে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে এবং প্রায় শতাধিক গ্রামবাসিকে হত্যা করে গণকবর দেয়। ৩১ মার্চ দেবীদ্বার উপজেলায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পাকবাহিনীর সঙ্গে বাঙালিদের এক সংঘর্ষে প্রায় ৩৩ জন বাঙালি শহীদ হন। ৬ এপ্রিল লাকসাম উপজেলায় আজগরা বাজারে পাকবাহিনীর বোমা হামলায় প্রায় ২০০ জন নিরীহ গ্রামবাসি নিহত হয়। ২৩ মে দাউদকান্দি উপজেলায় স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী রায়পুরা গ্রামের ১১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং পার্শ্ববর্তী জিংলাতলী ও হারপুর গ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী বাজারে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন পাকসেনা ও স্থানীয় রাজাকার নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জুলাই মাসে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাদারীপুর গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে উভয় পক্ষের বেশসংখ্যক সেনা হতাহত হয়। এছাড়া পাকবাহিনী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ৫/৭  জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জুলাইয়ের শেষ দিকে হোমনা উপজেলায় পাকবাহিনী তিতাস নদী পথে লঞ্চযোগে জয়পুর গ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করলে নদীর দুই তীর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সশস্ত্র আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে লঞ্চটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী দ্রুত মাছিমপুরের দিকে চলে যায়। এইযুদ্ধে পাকবাহিনীর অনেকেই হতাহত হয়। জয়পুর ছাড়াও হোমনা উপজেলার চম্পক নগর, ঘাগুটিয়া, নিলখী বাজার, দুলাল বাজার, হোমনা সদর ও পঞ্চবটি প্রভৃতি জায়গায় সংঘটিত পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক লড়াইয়ে প্রায় ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং প্রায় ২৪ জন আহত হন। তাছাড়া পাকবাহিনী বর্তমান হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে বহুসংখ্যক নিরীহ মানুষকে জীবন্ত কবর দেয়। ২ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলায় পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং গ্রামে প্রবেশ করে ৬ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১০ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছার বটতলীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৩ সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জ উপজেলায় হাসনাবাদ বাজারের উত্তরে চৌমুহনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯৭১ সালে মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাজাকার ও পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি সম্মুখ লড়াই হয়। এতে কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা বুড়িচং থানা আক্রমণ করলে পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া বুড়িচং উপজেলায় পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত একাধিক লড়াইয়ে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৮ নভেম্বর চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর জগন্নাথদীঘি-ক্যাম্প দখল করে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের খন্ড লড়াইয়ে উপজেলার প্রায় ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। দেবীদ্বার উপজেলায় পাকবাহিনী ৭ আগস্ট চর কামতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর জাকেরগঞ্জ এলাকায় এবং ১৪ নভেম্বর থানা সদরের নিকট গণহত্যা চালিয়ে প্রায় কয়েক হাজার নিরীহ লোককে হত্যা করে। নাঙ্গলকোট উপজেলার তেজের বাজারে পাকবাহিনী ১১ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে কবর দেয়। তাছাড়া নাঙ্গলকোট উপজেলায় স্থানীয় রাজাকাররা ১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে হত্যা করে হাসানপুর রেলস্টেশনের পাশে পুঁতে রাখে। ১১ ডিসেম্বর চান্দিনা উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে প্রায় ১৪০০ পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। ১২ ডিসেম্বর উক্ত উপজেলার কটতলায় সম্মুখযুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা মারা যায় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া ফাউই নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত লড়াইয়ে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।


 
[[Image:ComillaDistrict.jpg|thumb|400px|right]]
[[Image:ComillaDistrict.jpg|thumb:|right|কুমিল্লা জেলা]]


''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ৪ (উত্তর চান্দলা ভূঞা বাড়ি ও দক্ষিণ চান্দলা প্রবোধ কুমার দাসের বাড়ি, পুইরা পুল-চান্দিনা উচ্চ বিদ্যালয় হতে পূর্ব দিকে, চান্দিনা হাসপাতালের পশ্চিম-উত্তর কোণে, দাউদকান্দি থানার দক্ষিণে সাহাপাড়া ব্রীজ); গণকবর ১২ (ব্রাহ্মণপাড়ার রেললাইন সংলগ্ন হরিমঙ্গল পুকুর পাড়, চান্দিনার কাশিমপুর শ্মশান ঘাট, মহিচাইল বাড়ই পাড়া ও কংগাই বড়বাড়ি, হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে, বরুড়ার বটতলীর অদূরে নারায়ণপুর, দেবীদ্বার থানা সদর, পশ্চিমগাঁও, লাকসাম বিড়ি ফ্যাক্টরি ও লাকসাম রেলওয়ে জংশন, নাঙ্গলকোটের পরিকোট ও তেজের বাজার, মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ); স্মৃতিস্তম্ভ ৪।
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ৪ (উত্তর চান্দলা ভূঞা বাড়ি ও দক্ষিণ চান্দলা প্রবোধ কুমার দাসের বাড়ি, পুইরা পুল-চান্দিনা উচ্চ বিদ্যালয় হতে পূর্ব দিকে, চান্দিনা হাসপাতালের পশ্চিম-উত্তর কোণে, দাউদকান্দি থানার দক্ষিণে সাহাপাড়া ব্রীজ); গণকবর ১২ (ব্রাহ্মণপাড়ার রেললাইন সংলগ্ন হরিমঙ্গল পুকুর পাড়, চান্দিনার কাশিমপুর শ্মশান ঘাট, মহিচাইল বাড়ই পাড়া ও কংগাই বড়বাড়ি, হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে, বরুড়ার বটতলীর অদূরে নারায়ণপুর, দেবীদ্বার থানা সদর, পশ্চিমগাঁও, লাকসাম বিড়ি ফ্যাক্টরি ও লাকসাম রেলওয়ে জংশন, নাঙ্গলকোটের পরিকোট ও তেজের বাজার, মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ); স্মৃতিস্তম্ভ ৪।
৮৮ নং লাইন: ৬৮ নং লাইন:
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: রূপসী বাংলা (১৯৭২), কুমিল্লা বার্তা, বাংলাদেশ, শিরোনাম। সাপ্তাহিক: আমোদ (১৯৫৫), অভিবাদন (১৯৯৪), লাকসাম বার্তা, নিরীক্ষণ, নতুনপত্র, সমযাত্রা (১৯৬৭), সংবাদ মাসিক মনন, পাঠকবার্তা, ময়নামতি, বরুড়া কণ্ঠ, ক্রাইম রিপোর্ট; পাক্ষিক ব্রাহ্মণপাড়া বুড়িচং। অবলুপ্ত সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র: ত্রিপুরা পত্রিকা (১৮৭৬), ত্রিপুরা (১৯৩২), সাপ্তাহিক হিন্দু (১৯৪১), ত্রিপুরা গাইড (১৯৩৪), নতুন আলো, প্রতিনিধি, ত্রিপুরা হিতৈষী (১৮৮৩), রায়তবন্ধু (১৯২১), নিয়ামত (১৯৪০), সবুজ বাংলা, ত্রিপুরা জ্ঞান প্রকাশনী (১৮৬০), ত্রিপুরা বান্ধব (১৯৪২), কথক (১৯৮৩), রঙধনু, নাজাত, আবহমান, দরদী (১৯৩৮), যোগীসম্মিলনী (১৯১২), কুমিল্লা সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা (১৯৮৫), ময়নামতি (১৯৬৫), পূর্বাশা, শিক্ষক সুহূদ, আলো, চিরকুট (১৯৭৪), রবি (১৯২৪), তরুণ (১৯৩৮), সংস্কৃতি (১৯৪০), জাগৃতি (১৯৫১), আপন পরিচয়।
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' দৈনিক: রূপসী বাংলা (১৯৭২), কুমিল্লা বার্তা, বাংলাদেশ, শিরোনাম। সাপ্তাহিক: আমোদ (১৯৫৫), অভিবাদন (১৯৯৪), লাকসাম বার্তা, নিরীক্ষণ, নতুনপত্র, সমযাত্রা (১৯৬৭), সংবাদ মাসিক মনন, পাঠকবার্তা, ময়নামতি, বরুড়া কণ্ঠ, ক্রাইম রিপোর্ট; পাক্ষিক ব্রাহ্মণপাড়া বুড়িচং। অবলুপ্ত সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র: ত্রিপুরা পত্রিকা (১৮৭৬), ত্রিপুরা (১৯৩২), সাপ্তাহিক হিন্দু (১৯৪১), ত্রিপুরা গাইড (১৯৩৪), নতুন আলো, প্রতিনিধি, ত্রিপুরা হিতৈষী (১৮৮৩), রায়তবন্ধু (১৯২১), নিয়ামত (১৯৪০), সবুজ বাংলা, ত্রিপুরা জ্ঞান প্রকাশনী (১৮৬০), ত্রিপুরা বান্ধব (১৯৪২), কথক (১৯৮৩), রঙধনু, নাজাত, আবহমান, দরদী (১৯৩৮), যোগীসম্মিলনী (১৯১২), কুমিল্লা সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা (১৯৮৫), ময়নামতি (১৯৬৫), পূর্বাশা, শিক্ষক সুহূদ, আলো, চিরকুট (১৯৭৪), রবি (১৯২৪), তরুণ (১৯৩৮), সংস্কৃতি (১৯৪০), জাগৃতি (১৯৫১), আপন পরিচয়।


''লোকসংস্কৃতি'' পুঁথিপাঠ, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারিগান, সারিগান, ডাক, খনার বচন, বারমাসি, প্রবাদপ্রবচন উল্লেখযোগ্য।
''লোকসংস্কৃতি'' পুঁথিপাঠ, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারিগান, সারিগান, ডাক, খনার বচন, বারমাসি, প্রবাদপ্রবচন উল্লেখযোগ্য।


বিশেষ আকর্ষণ  শালবন বিহার, ময়নামতি যাদুঘর, লালমাই পাহাড়, বার্ড, শচীন দেব বর্মনের বসতবাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি (আদর্শ সদর), কেন্টিসিসি এ পার্ক, দেবীদ্বার পৌরপার্ক ও দেবীদ্বার পৌরশিশুপার্ক।
''বিশেষ আকর্ষণ''  শালবন বিহার, ময়নামতি যাদুঘর, লালমাই পাহাড়, বার্ড, শচীন দেব বর্মনের বসতবাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি (আদর্শ সদর), কেন্টিসিসি এ পার্ক, দেবীদ্বার পৌরপার্ক ও দেবীদ্বার পৌরশিশুপার্ক।


''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৪৭.৩১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৪%, শিল্প ১.২৫%, ব্যবসা ১৫.৭৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.০৫%, নির্মাণ ১.৪৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, চাকরি ১১.৮০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৮৩% এবং অন্যান্য ১০.৬১%।  [মামুন সিদ্দিকী]
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৪৭.৩১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৪%, শিল্প ১.২৫%, ব্যবসা ১৫.৭৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.০৫%, নির্মাণ ১.৪৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, চাকরি ১১.৮০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৮৩% এবং অন্যান্য ১০.৬১%।  [মামুন সিদ্দিকী]


আরো দেখুন  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।''' '''
''আরো দেখুন''  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।


'''তথ্য''সূত্র'' '''আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুমিল্লা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; কুমিল্লা জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।
''''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুমিল্লা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; কুমিল্লা জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।


[[en:Comilla District]]
[[en:Comilla District]]

১০:০৯, ২১ আগস্ট ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

কুমিল্লা জেলা (চট্টগ্রাম বিভাগ)  আয়তন: ৩০৮৫.১৭ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০২´ থেকে ২৪°৪৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°৩৯´ থেকে ৯১°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও নারায়ণগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে নোয়াখালী ও ফেনী জেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পশ্চিমে মুন্সিগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলা।

জনসংখ্যা ৪৫৯৫৫৫৭; পুরুষ ২৩১২৭৩৪, মহিলা ২২৮২৮২৩। মুসলিম ৪৩৪৮২২৭, হিন্দু ২৪১৭৪২, বৌদ্ধ ৪০৪, খ্রিস্টান ৪১৭৭ এবং অন্যান্য ১০০৭।

জলাশয় মেঘনা, গোমতী, ডাকাতিয়া ও ছোট ফেনী নদী এবং কার্জন খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন এ অঞ্চল প্রাচীন সমতটের অধীনে এবং ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। নবম শতাব্দিতে এ জেলা হরিকেলের রাজাদের অধীনে আসে। এ শহরের ৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণে লালমাই ময়নামতিতে দেব বংশ (অষ্টম শতাব্দি) ও চন্দ্র বংশের (দশম ও একাদশ শতাব্দির মাঝামাঝি) রাজত্ব ছিল। এ জেলা ১৭৬৫ সালে প্রথম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনাধীনে আসে। ১৭৯০ সালে ত্রিপুরা জেলা নামে এই জেলা গঠিত হয়। ১৯৬০ সালে কুমিল্লা জেলা নামকরণ হয়। ১৯৮৪ সালে এই জেলার চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া মহকুমা জেলায় উন্নীত হয়।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
৩০৮৫.১৭ ১৬ ১৮০ ২৭০৩ ৩৫৮৬ ৫৩৫২৮৯ ৪০৬০২৬৮ ১৪৯০ ৪৫.৯৯
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম আয়তন(বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আদর্শ সদর ১৮৮.৩৯ ১৮৮ ১৪৭ ৫১৭৮৬০ ২৭৪৯ ৬৬.০৫
চান্দিনা ২০১.৯২ ১৩ ১২৬ ২২২ ৩০৬০৫৪ ১৫১৬ ৪৩.৯৭
চৌদ্দগ্রাম ২৬৮.৪৮ - ১৪ ৩৯৮ ৪০২ ৩৮১৫৪৮ ১৪২১ ৫০.৮৭
তিতাস ১০৬.৩৪ - ৭১ ১১৩ ১৬৬৪৫৭ ১৫৬৫ ৩৪.২২
দাউদকান্দি ২০৮.৬৬ ১৩ ১৮২ ২৬৮ ২৮৩৫৯৫ ১৩৫৯ ৪২.৫৯
দেবীদ্বার ২৩৮.৩৬ - ১৬ ১৪২ ২০৯ ৩৭৮৪০১ ১৫৮৮ ৫০.৩৯
বরুড়া ২৪১.৬৫ ১৪ ২৩১ ৩১৩ ৩৫১০৮৬ ১৪৫৩ ৪৪.৯২
বুড়িচং ১৬৩.৭৬ - ১৫০ ১৭২ ২৫৯২৬৫ ১৫৮৩ ৪৯.৭৫
ব্রাহ্মণপাড়া ১২৮.৯০ - ৫৩ ৬৫ ১৮১৪৭৭ ১৪০৮ ৪৭.৩৬
মনোহরগঞ্জ ১৬৩.৫৯ - ১১ ১৪৬ ১৬০ ২১০৮১০ ১২৮৯ ৪৮.৭৪
মুরাদনগর ৩৩৯.০০ - ২২ ১৫৩ ৩০১ ৪৬৮০৮০ ১৩৮১ ৩৮.৪৩
মেঘনা ৯৮.৪৭ - ৪০ ১০৪ ৯৬৯৭০ ৯৮৪ ৩৩.৩৪
লাকসাম ১৫৫.৩৪ ১৬৭ ২০৪ ২৪০১৫৩ ১৫৪৬ ৪৭.০৪
লাঙ্গলকোট ২৩৬.৪৪ - ১১ ২১৩ ২৮৯ ৩১৯৭৮২ ১৩৫২ ৪০.৬১
সদর দক্ষিণ ২৪১.৬৬ - ১০ ৩৬৪ ৪৫৯ ৩৫৪২৮৯ ১৪৬৬ ৪৫.৯০
হোমনা ১৪২.৭৯ - ১০ ৭৯ ১৫৮ ১৯১৪৪৯ ১৩৪১ ৩৩.১৮

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল ইপিআর ক্যাম্পেই ৪ জন পাকিস্তানি ইপিআরকে সাধারণ জনতা পিটিয়ে হত্যা করে। জুনের শেষদিকে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছকারমার পুলের নিকট পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক সম্মুখ লড়াইয়ে ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। কসবা-ব্রাহ্মণপাড়া সীমান্তের ঘুংঘুর নদীর তীরে হোলাইমুড়ী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অনারারী ক্যাপ্টেন ওহাবের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে ১ জন ক্যাপ্টেনসহ ১৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। পরবর্তীতে পাকবাহিনী পার্শ্ববর্তী চান্দলা ও ষাইটশালা গ্রামে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে এবং প্রায় শতাধিক গ্রামবাসিকে হত্যা করে গণকবর দেয়। ৩১ মার্চ দেবীদ্বার উপজেলায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে পাকবাহিনীর সঙ্গে বাঙালিদের এক সংঘর্ষে প্রায় ৩৩ জন বাঙালি শহীদ হন। ৬ এপ্রিল লাকসাম উপজেলায় আজগরা বাজারে পাকবাহিনীর বোমা হামলায় প্রায় ২০০ জন নিরীহ গ্রামবাসি নিহত হয়। ২৩ মে দাউদকান্দি উপজেলায় স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী রায়পুরা গ্রামের ১১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং পার্শ্ববর্তী জিংলাতলী ও হারপুর গ্রামের অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী বাজারে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন পাকসেনা ও স্থানীয় রাজাকার নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। জুলাই মাসে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাদারীপুর গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে উভয় পক্ষের বেশসংখ্যক সেনা হতাহত হয়। এছাড়া পাকবাহিনী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ৫/৭  জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জুলাইয়ের শেষ দিকে হোমনা উপজেলায় পাকবাহিনী তিতাস নদী পথে লঞ্চযোগে জয়পুর গ্রামে প্রবেশের চেষ্টা করলে নদীর দুই তীর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা সশস্ত্র আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণে লঞ্চটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আক্রমণে টিকতে না পেরে পাকবাহিনী দ্রুত মাছিমপুরের দিকে চলে যায়। এইযুদ্ধে পাকবাহিনীর অনেকেই হতাহত হয়। জয়পুর ছাড়াও হোমনা উপজেলার চম্পক নগর, ঘাগুটিয়া, নিলখী বাজার, দুলাল বাজার, হোমনা সদর ও পঞ্চবটি প্রভৃতি জায়গায় সংঘটিত পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একাধিক লড়াইয়ে প্রায় ২৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এবং প্রায় ২৪ জন আহত হন। তাছাড়া পাকবাহিনী বর্তমান হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে বহুসংখ্যক নিরীহ মানুষকে জীবন্ত কবর দেয়। ২ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলায় পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং গ্রামে প্রবেশ করে ৬ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১০ সেপ্টেম্বর বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছার বটতলীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সংঘটিত লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৩ সেপ্টেম্বর মনোহরগঞ্জ উপজেলায় হাসনাবাদ বাজারের উত্তরে চৌমুহনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৯৭১ সালে মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাজাকার ও পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি সম্মুখ লড়াই হয়। এতে কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযোদ্ধারা বুড়িচং থানা আক্রমণ করলে পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া বুড়িচং উপজেলায় পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত একাধিক লড়াইয়ে ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২৮ নভেম্বর চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর জগন্নাথদীঘি-ক্যাম্প দখল করে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের খন্ড লড়াইয়ে উপজেলার প্রায় ২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। দেবীদ্বার উপজেলায় পাকবাহিনী ৭ আগস্ট চর কামতায়, ২৯ সেপ্টেম্বর জাকেরগঞ্জ এলাকায় এবং ১৪ নভেম্বর থানা সদরের নিকট গণহত্যা চালিয়ে প্রায় কয়েক হাজার নিরীহ লোককে হত্যা করে। নাঙ্গলকোট উপজেলার তেজের বাজারে পাকবাহিনী ১১ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে কবর দেয়। তাছাড়া নাঙ্গলকোট উপজেলায় স্থানীয় রাজাকাররা ১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে হত্যা করে হাসানপুর রেলস্টেশনের পাশে পুঁতে রাখে। ১১ ডিসেম্বর চান্দিনা উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধে প্রায় ১৪০০ পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। ১২ ডিসেম্বর উক্ত উপজেলার কটতলায় সম্মুখযুদ্ধে ৭ জন পাকসেনা মারা যায় এবং ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাছাড়া ফাউই নামক স্থানে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘটিত লড়াইয়ে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বধ্যভূমি ৪ (উত্তর চান্দলা ভূঞা বাড়ি ও দক্ষিণ চান্দলা প্রবোধ কুমার দাসের বাড়ি, পুইরা পুল-চান্দিনা উচ্চ বিদ্যালয় হতে পূর্ব দিকে, চান্দিনা হাসপাতালের পশ্চিম-উত্তর কোণে, দাউদকান্দি থানার দক্ষিণে সাহাপাড়া ব্রীজ); গণকবর ১২ (ব্রাহ্মণপাড়ার রেললাইন সংলগ্ন হরিমঙ্গল পুকুর পাড়, চান্দিনার কাশিমপুর শ্মশান ঘাট, মহিচাইল বাড়ই পাড়া ও কংগাই বড়বাড়ি, হোমনা ডিগ্রি কলেজের পাশে, বরুড়ার বটতলীর অদূরে নারায়ণপুর, দেবীদ্বার থানা সদর, পশ্চিমগাঁও, লাকসাম বিড়ি ফ্যাক্টরি ও লাকসাম রেলওয়ে জংশন, নাঙ্গলকোটের পরিকোট ও তেজের বাজার, মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ); স্মৃতিস্তম্ভ ৪।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৫.৯৯%; পুরুষ ৪৯.৩৭%, মহিলা ৪২.৬৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বিশ্ববিদ্যালয় ২, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ৪, চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ১, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ২, আইন কলেজ ১, হোমিওপ্যাথিক কলেজ ১, সমবায় কলেজ ১, সরকারি বাণিজ্য কলেজ ১, কলেজ ৬৭, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ১, প্যারা মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ১, প্রাথমিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১, নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫১৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১৩৩, সার্ভে ইনস্টিটিউট ১, অন্ধ ও বধির স্কুল ১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (১৮৯৯), কুমিল্লা জিলা স্কুল (১৮৩৭), কুমিল্লা হাইস্কুল (১৮৪২), ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৭৩), বাঙ্গরা হাইস্কুল (১৮৮৭), শশীদল ইউনিয়ন হাইস্কুল (১৮৯০), ইলিয়টগঞ্জ আরবি হাইস্কুল (১৯০৮), মাধবপুর শেখলাল হাইস্কুল (১৯১১), রায়পুর কেসি হাইস্কুল (১৯১২), চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), রামচন্দ্রপুর হাইস্কুল (১৯১৮) দেবীদ্বার রেয়াজুদ্দিন হাইস্কুল (১৯১৮), বারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), চান্দিনা কেবি হাইস্কুল (১৯২০), চৌদ্দগ্রাম এইচজে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), বুড়িচং আনন্দ পাইলট হাইস্কুল (১৯২৫), হোমনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: রূপসী বাংলা (১৯৭২), কুমিল্লা বার্তা, বাংলাদেশ, শিরোনাম। সাপ্তাহিক: আমোদ (১৯৫৫), অভিবাদন (১৯৯৪), লাকসাম বার্তা, নিরীক্ষণ, নতুনপত্র, সমযাত্রা (১৯৬৭), সংবাদ মাসিক মনন, পাঠকবার্তা, ময়নামতি, বরুড়া কণ্ঠ, ক্রাইম রিপোর্ট; পাক্ষিক ব্রাহ্মণপাড়া বুড়িচং। অবলুপ্ত সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র: ত্রিপুরা পত্রিকা (১৮৭৬), ত্রিপুরা (১৯৩২), সাপ্তাহিক হিন্দু (১৯৪১), ত্রিপুরা গাইড (১৯৩৪), নতুন আলো, প্রতিনিধি, ত্রিপুরা হিতৈষী (১৮৮৩), রায়তবন্ধু (১৯২১), নিয়ামত (১৯৪০), সবুজ বাংলা, ত্রিপুরা জ্ঞান প্রকাশনী (১৮৬০), ত্রিপুরা বান্ধব (১৯৪২), কথক (১৯৮৩), রঙধনু, নাজাত, আবহমান, দরদী (১৯৩৮), যোগীসম্মিলনী (১৯১২), কুমিল্লা সাহিত্য পরিষদ পত্রিকা (১৯৮৫), ময়নামতি (১৯৬৫), পূর্বাশা, শিক্ষক সুহূদ, আলো, চিরকুট (১৯৭৪), রবি (১৯২৪), তরুণ (১৯৩৮), সংস্কৃতি (১৯৪০), জাগৃতি (১৯৫১), আপন পরিচয়।

লোকসংস্কৃতি পুঁথিপাঠ, পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারিগান, সারিগান, ডাক, খনার বচন, বারমাসি, প্রবাদপ্রবচন উল্লেখযোগ্য।

বিশেষ আকর্ষণ  শালবন বিহার, ময়নামতি যাদুঘর, লালমাই পাহাড়, বার্ড, শচীন দেব বর্মনের বসতবাড়ি, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি (আদর্শ সদর), কেন্টিসিসি এ পার্ক, দেবীদ্বার পৌরপার্ক ও দেবীদ্বার পৌরশিশুপার্ক।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৭.৩১%, অকৃষি শ্রমিক ২.৫৪%, শিল্প ১.২৫%, ব্যবসা ১৫.৭৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৪.০৫%, নির্মাণ ১.৪৮%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৫%, চাকরি ১১.৮০%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ৪.৮৩% এবং অন্যান্য ১০.৬১%।  [মামুন সিদ্দিকী]

আরো দেখুন  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

'তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুমিল্লা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; কুমিল্লা জেলার উপজেলা সমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।