কাফকো: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৪ নং লাইন: ৪ নং লাইন:
কাফকো প্রকল্পের ধারণার গোড়াপত্তন হয় ১৯৭০ দশকের শেষভাগে। সে সময়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স কর্পোরেশন’ (আই.এফ.সি) বাংলাদেশে একটি রপ্তানিমুখী নাইট্রোজেন রাসায়নিক স্থাপনা গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা কার্যকরভাবে বিবেচনা করতে শুরু করে। এ ধরনের চিন্তাভাবনার মূলে ছিল দেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জন।
কাফকো প্রকল্পের ধারণার গোড়াপত্তন হয় ১৯৭০ দশকের শেষভাগে। সে সময়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স কর্পোরেশন’ (আই.এফ.সি) বাংলাদেশে একটি রপ্তানিমুখী নাইট্রোজেন রাসায়নিক স্থাপনা গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা কার্যকরভাবে বিবেচনা করতে শুরু করে। এ ধরনের চিন্তাভাবনার মূলে ছিল দেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জন।


 
[[Image:KAFCO.jpg|thumb|400px|right|কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি]]
[[Image:KAFCO.jpg|thumb|400px|right|কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি
]]
 


বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অ্যামোনিয়া প্রযুক্তির লাইসেন্স প্রদানকারী ও যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান Haldor Topsoe A/S (HTAS) এবং সুইডেনের Swedyards Development Corporation (SDC)-এর সঙ্গে আলোচনা হয়। এস.ডি.সি সুইডেনের রুগ্ন জাহাজনির্মাণ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে বার্জ মাউন্টেড অ্যামোনিয়া ও মিথানল কারখানা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিল।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অ্যামোনিয়া প্রযুক্তির লাইসেন্স প্রদানকারী ও যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান Haldor Topsoe A/S (HTAS) এবং সুইডেনের Swedyards Development Corporation (SDC)-এর সঙ্গে আলোচনা হয়। এস.ডি.সি সুইডেনের রুগ্ন জাহাজনির্মাণ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে বার্জ মাউন্টেড অ্যামোনিয়া ও মিথানল কারখানা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিল।
১৭ নং লাইন: ১৪ নং লাইন:
অ্যামোনিয়া উৎপাদনের জন্য কারখানাটিতে দৈনিক ১,৫০০ টন উৎপাদনক্ষম কিন্তু স্বল্প শক্তি ব্যায় হয় এমন টপোজ (Topose) প্রযুক্তির অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট ব্যবহূত হয়। প্ল্যান্টটির নিজস্ব ২০,০০০ টন মজুদ সুবিধা রয়েছে এবং নিজস্ব জেটি থেকে রপ্তানির জন্য প্রতিঘন্টায় ৫০০ টন শুকনা অ্যামোনিয়া সরবরাহ করতে সক্ষম। এ জেটিতে সর্বোচ্চ ২০,০০০ ডি.ডব্লিউ.টি মানের হিমায়িত অ্যামোনিয়া কেরিয়ার পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
অ্যামোনিয়া উৎপাদনের জন্য কারখানাটিতে দৈনিক ১,৫০০ টন উৎপাদনক্ষম কিন্তু স্বল্প শক্তি ব্যায় হয় এমন টপোজ (Topose) প্রযুক্তির অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট ব্যবহূত হয়। প্ল্যান্টটির নিজস্ব ২০,০০০ টন মজুদ সুবিধা রয়েছে এবং নিজস্ব জেটি থেকে রপ্তানির জন্য প্রতিঘন্টায় ৫০০ টন শুকনা অ্যামোনিয়া সরবরাহ করতে সক্ষম। এ জেটিতে সর্বোচ্চ ২০,০০০ ডি.ডব্লিউ.টি মানের হিমায়িত অ্যামোনিয়া কেরিয়ার পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।


কাফকোর ইউরিয়া প্ল্যান্ট ৮০,০০০ টন মজুত ভান্ডারে সজ্জিত। এতে রয়েছে ব্যাগ তৈরির সরঞ্জাম ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাগে ইউরিয়া ভরতি করার সুবিধা। কাফকোর নিজস্ব ইউরিয়া জেটিতে ব্যাগ ভরতি ও খুচরা ইউরিয়া পরিচালন সুবিধা রয়েছে যা ৩০,০০০ ডি.ডব্লিউ.টি মানের জলযান নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।
কাফকোর ইউরিয়া প্ল্যান্ট ৮০,০০০ টন মজুত ভান্ডারে সজ্জিত। এতে রয়েছে ব্যাগ তৈরির সরঞ্জাম ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাগে ইউরিয়া ভরতি করার সুবিধা। কাফকোর নিজস্ব ইউরিয়া জেটিতে ব্যাগ ভরতি ও খুচরা ইউরিয়া পরিচালন সুবিধা রয়েছে যা ৩০,০০০ ডি.ডব্লিউ.টি মানের জলযান নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।   [সিফাতুল কাদের চৌধুরী]
 
[সিফাতুল কাদের চৌধুরী]


[[en:Karnafuli Fertiliser Company]]
[[en:Karnafuli Fertiliser Company]]

০৫:৫৩, ১০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

কাফকো (KAFCO) (কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড)  অ্যামোনিয়া/ইউরিয়া সার প্রস্ত্ততের রপ্তানিমুখী  কারখানা যা বাংলাদেশ তথা এ অঞ্চলে এ ধরনের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে আরও ৬টি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অ্যামোনিয়া/ইউরিয়া সার উৎপাদন প্রতিষ্ঠান রয়েছে যা অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা পূরণ করে। কাফকো হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ বহুজাতিক যৌথউদ্যোগ প্রকল্প।

কাফকো প্রকল্পের ধারণার গোড়াপত্তন হয় ১৯৭০ দশকের শেষভাগে। সে সময়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স কর্পোরেশন’ (আই.এফ.সি) বাংলাদেশে একটি রপ্তানিমুখী নাইট্রোজেন রাসায়নিক স্থাপনা গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা কার্যকরভাবে বিবেচনা করতে শুরু করে। এ ধরনের চিন্তাভাবনার মূলে ছিল দেশের প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ সুবিধা অর্জন।

কর্ণফুলি ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি

বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক অ্যামোনিয়া প্রযুক্তির লাইসেন্স প্রদানকারী ও যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান Haldor Topsoe A/S (HTAS) এবং সুইডেনের Swedyards Development Corporation (SDC)-এর সঙ্গে আলোচনা হয়। এস.ডি.সি সুইডেনের রুগ্ন জাহাজনির্মাণ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে বার্জ মাউন্টেড অ্যামোনিয়া ও মিথানল কারখানা প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী ছিল।

১৯৮১ সালের জুলাই মাসে কর্ণফুলি সার কারখানা বাংলাদেশে নিবন্ধিত হয় এবং একই বছর ডিসেম্বর মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ সরকার, এস.ডি.সি ও এইচ.টি.এ.এস-এর মধ্যে একটি উদ্যোক্তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যাতে আই.এফ.সি এ প্রকল্পে বড় ধরনের অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর্যায়ে বার্জ মাউন্টেড প্ল্যান্টের ধারণাটি পরিত্যক্ত হয় এবং এস.ডি.সি-এর অংশের দায়দায়িত্ব এইচ.টি.এ.এস গ্রহণ করে। জাপান উদ্যোগটির প্রতি আগ্রহ প্রদর্শন না করা পর্যন্ত প্রকল্পটির জন্য অর্থের নতুন যোগানদাতা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হচ্ছিল। কিন্তু জাপান এগিয়ে আসার পর প্রকল্পটি গতি ফিরে পায় এবং বিভিন্ন সরকার সাহায্য সমর্থন প্রদর্শন শুরু করে। ফলে প্রকল্পটিতে মূল বিনিয়োগকারীর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বি.সি.আই.সি) ছাড়াও আন্তর্জাতিক নাম করা বহুজাতিক কোম্পানি যেমন জাপানের ওভারসীজ ইকনমিক কর্পোরেশন, মারুবেনী কর্পোরেশন এবং কিয়োদা কর্পোরেশন; ডেনমার্কের হ্যাল্ডর টপসো এ/এস এবং ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন ফর ডেভেলাপিং কান্ট্রিজ; হল্যান্ডের স্ট্যামিকার্বন বিভি এবং কমনওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন প্রকল্পটিতে পুঁজি বিনিয়োগ করে। মূল বিনিয়োগকারীরা পরে কাফকোর অংশীদারে পরিণত হয় এবং সংস্থার উন্নয়ন, অর্থায়ন, নকশাপ্রণয়ন, সরবরাহ, নির্মাণ, উৎপাদিত সামগ্রীর বাজারজাতকরণ এবং কারিগরি ও ব্যবহারিক সেবা প্রদানে অংশগ্রহণ শুরু করে।

চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলায় মোট ২২.২৮ হেক্টর জমির উপর নির্মিত কাফকো একটি পূর্ণ সমন্বিত কমপ্লেক্স। এর কর্মকর্তা-কর্মচারীর অধিকাংশই স্থাপনাটির ২ কিলোমিটার দূরে ৬.৪৮ হেক্টর জমির উপর নির্মিত আবাসিক কলোনিতে বসবাস করে। ১৯৯০ সালের ৩০শে নবেম্বর প্রকল্পটির চুক্তি কার্যকরভাবে স্বাক্ষরিত হয় এবং ১৯৯৪ সালের ১৬ই নবেম্বর এর যন্ত্রপাতি বসানোর কাজ শেষ হয়। এর কিছুদিন পর, অর্থাৎ ১৯৯৪ সালের ১৬ই ডিসেম্বর থেকে অ্যামোনিয়া সার এবং ২৭শে ডিসেম্বর থেকে দানাদার ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয়।

অ্যামোনিয়া উৎপাদনের জন্য কারখানাটিতে দৈনিক ১,৫০০ টন উৎপাদনক্ষম কিন্তু স্বল্প শক্তি ব্যায় হয় এমন টপোজ (Topose) প্রযুক্তির অ্যামোনিয়া প্ল্যান্ট ব্যবহূত হয়। প্ল্যান্টটির নিজস্ব ২০,০০০ টন মজুদ সুবিধা রয়েছে এবং নিজস্ব জেটি থেকে রপ্তানির জন্য প্রতিঘন্টায় ৫০০ টন শুকনা অ্যামোনিয়া সরবরাহ করতে সক্ষম। এ জেটিতে সর্বোচ্চ ২০,০০০ ডি.ডব্লিউ.টি মানের হিমায়িত অ্যামোনিয়া কেরিয়ার পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

কাফকোর ইউরিয়া প্ল্যান্ট ৮০,০০০ টন মজুত ভান্ডারে সজ্জিত। এতে রয়েছে ব্যাগ তৈরির সরঞ্জাম ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাগে ইউরিয়া ভরতি করার সুবিধা। কাফকোর নিজস্ব ইউরিয়া জেটিতে ব্যাগ ভরতি ও খুচরা ইউরিয়া পরিচালন সুবিধা রয়েছে যা ৩০,০০০ ডি.ডব্লিউ.টি মানের জলযান নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। [সিফাতুল কাদের চৌধুরী]