ওয়েজ আর্নার্স স্কিম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''ওয়েজ আর্নার্স স্কিম''' ১৯৭৪ সালে প্রবর্তিত হয়। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অর্জিত আয় সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। এ সময় বৈদেশিক মুদ্রা মজুত থাকার কারণে আমদানিকারকদের অনুকূলে বৈদেশিক মুদ্রার ছাড় হ্রাস পায়, যার ফলে স্কিমটি কার্যকারিতা অর্জন করে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবীদের প্রেরিত অর্থ খোলাবাজার বিনিময় হারের কাছাকাছি হারে বিনিময়ের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতার কারণে আমদানিকারকগণ সরকারি হার অপেক্ষা উচ্চ হারে সেকেন্ডারি মার্কেট হিসেবে গড়ে ওঠা ওয়েজ আর্নার মার্কেট থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করতে থাকে। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। মানবসম্পদ রপ্তানি থেকে অর্জিত আয় হিসেবে পরিগণিত প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী উৎসে পরিণত হয়। | '''ওয়েজ আর্নার্স স্কিম''' ১৯৭৪ সালে প্রবর্তিত হয়। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অর্জিত আয় সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। এ সময় বৈদেশিক মুদ্রা মজুত থাকার কারণে আমদানিকারকদের অনুকূলে বৈদেশিক মুদ্রার ছাড় হ্রাস পায়, যার ফলে স্কিমটি কার্যকারিতা অর্জন করে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবীদের প্রেরিত অর্থ খোলাবাজার বিনিময় হারের কাছাকাছি হারে বিনিময়ের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতার কারণে আমদানিকারকগণ সরকারি হার অপেক্ষা উচ্চ হারে সেকেন্ডারি মার্কেট হিসেবে গড়ে ওঠা ওয়েজ আর্নার মার্কেট থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করতে থাকে। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। মানবসম্পদ রপ্তানি থেকে অর্জিত আয় হিসেবে পরিগণিত প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী উৎসে পরিণত হয়। | ||
৬ নং লাইন: | ৫ নং লাইন: | ||
২০০১-২০১১ অর্থবছরের রেমিটেন্স। | ২০০১-২০১১ অর্থবছরের রেমিটেন্স। | ||
[[Image:WageEarnersSchemeGraph.jpg|thumb|center|600px]] | |||
'' | ''উৎস'' Bangladesh Economic Update: Remittance, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১১, ''উন্নয়ন অন্বেষণ'', ঢাকা, পৃ. ৯। | ||
[সৈয়দ আহমেদ খান] | [সৈয়দ আহমেদ খান] | ||
[[en:Wage Earners’ Scheme]] | [[en:Wage Earners’ Scheme]] |
০৭:২১, ৭ জুলাই ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ওয়েজ আর্নার্স স্কিম ১৯৭৪ সালে প্রবর্তিত হয়। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অর্জিত আয় সরকারি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রেরণে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। এ সময় বৈদেশিক মুদ্রা মজুত থাকার কারণে আমদানিকারকদের অনুকূলে বৈদেশিক মুদ্রার ছাড় হ্রাস পায়, যার ফলে স্কিমটি কার্যকারিতা অর্জন করে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমজীবীদের প্রেরিত অর্থ খোলাবাজার বিনিময় হারের কাছাকাছি হারে বিনিময়ের লক্ষ্যে স্কিমটি চালু করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার স্বল্পতার কারণে আমদানিকারকগণ সরকারি হার অপেক্ষা উচ্চ হারে সেকেন্ডারি মার্কেট হিসেবে গড়ে ওঠা ওয়েজ আর্নার মার্কেট থেকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় করতে থাকে। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। মানবসম্পদ রপ্তানি থেকে অর্জিত আয় হিসেবে পরিগণিত প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ চলতি হিসাবে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী উৎসে পরিণত হয়।
প্রারম্ভিক বছর, ১৯৭৪-৭৫ সালে বিদেশ থেকে প্রবাসীদের প্রেরিত মোট অর্থ ছিল ১১.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ খাতে অর্জিত অর্থের পরিমাণ ১৯৮০-৮১ সালে ৩৭৮.৭৪ মিলিয়ন ডলার এবং ১৯৯০-৯১ সালে ৭৬৪ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। ১৯৯৮-৯৯ বছর শেষে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১.৭ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ শ্রমিক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম প্রধান দেশ। ১৯৭০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে নতুন চাকরির সুবিধা প্রসারিত হওয়ায় প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির ধারা সূচিত হয়। স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে প্রায় ৭.৪ মিলিয়ন বাংলাদেশি কাজের জন্য বিদেশে গিয়েছে। ১৯৭৭-৭৮ সালে প্রবাসী কর্মজীবীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭,০০০ জন এবং তা ১৯৮০-৮১ সালে ৩৮,৪৫৬ জনে বৃদ্ধি পায়। ১৯৯০-৯১ সালে প্রবাসী কর্মজীবীদের সংখ্যা ৯৬,৬৯৭ জনে এবং ১৯৯৮-৯৯ সালে ২,৭০,৪৯০ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০-৮১ সালে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ/জিডিপি অনুপাত ছিল ২.৬৭%, যা ১৯৯০-৯১ এবং ১৯৯৮-৯৯ সালে ছিল যথাক্রমে ৩.২৬% এবং ৪.৬৮%। ওয়েজ আর্নাস স্কিমের অধীনে বাংলাদেশি প্রবাসীরা প্রায় ১৪.০৯% অর্থ প্রেরণ করেন। যা ১৯৯০-৯১ এবং ১৯৯৮-৯৯ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ২১.৭৬% এবং ২১.৩০%। বাংলাদেশি প্রবাসীরা যেসব দেশ থেকে অর্থ প্রেরণ করে সেগুলির তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব। ১৯৮৩-৮৪ সালে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশিরা যে পরিমাণ অর্থ দেশে প্রেরণ করে তাতে সৌদি আরবের অংশ ছিল ৩৬.৩৫% যা ১৯৯৮-৯৯ সালে ৪০.১৫ শতাংশে উন্নীত হয়। ১৯৯৮-৯৯ সালে কুয়েত এ খাতে দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস ছিল এবং সে সময় তার অংশ দাঁড়ায় ১৩.৫০%। ২০১০-১১ অর্থবছরে প্রবাসীরা প্রায় ১১,৬৫০.৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রেরণ করে যা মোট জিডিপি’র ১১.১২%। একই অর্থবছরে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ/জিডিপি অনুপাত ছিল পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় কম। অর্থাৎ ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ/জিডিপি অনুপাত ছিল ১০.৯৫% যেখানে পরবর্তী অর্থবছরে এসে দাঁড়ায় ১০.৫৪%। বাংলাদেশের শ্রমিক অভিবাসন প্রধানত কয়েকটি দেশ নির্ভর। যদিও সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক অভিবাসন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু তা মূলত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, বাহারাইন, কুয়েত, লিবিয়া, ইরাক, সিঙ্গাপুর ও মালয়শিয়া নির্ভর। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা, মধ্য প্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রম বাজার সংকুচিত হওয়ার জন্য শ্রমিক অভিবাসনের হার হ্রাস পেয়েছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে দেশ থেকে সর্বমোট ০.৪৫ মিলিয়ন জনগোষ্ঠী অভিবাসী হয়েছে যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় ৬.০৪% বেশি। অতি সাম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে আরব বসন্ত শুরু হলে সেখানে অভিবাসী বাংলাদেশিদের অর্থ উপার্জন ও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকদের প্রেরণ হুমকির মুখে পড়ে।
২০০১-২০১১ অর্থবছরের রেমিটেন্স।
উৎস Bangladesh Economic Update: Remittance, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১১, উন্নয়ন অন্বেষণ, ঢাকা, পৃ. ৯।
[সৈয়দ আহমেদ খান]