বাশার, এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
[[Image:BasharAirViceMarshalMKhademul.jpg|thumb|right|400px|মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার]] | |||
'''বাশার, এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল''' (১৯৩৫-১৯৭৬) বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান। ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বগুড়ায় তাঁর জন্ম। সাতক্ষীরা প্রাণনাথ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এসসি পাসের পর খাদেমুল বাশার ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফ্লায়িং শাখায় ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। মিলিটারি একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে তাঁকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর নবপ্রতিষ্ঠিত বম্বিং স্কোয়াড্রনে বদলি করা হয়। ১৯৬৯-৭০ সালে তিনি একটি বম্বিং স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক ছিলেন। এ ধরনের পদে তখন তিনিই ছিলেন একমাত্র বাঙালি অফিসার। ১৯৬৯ সালে খাদেমুল বাশার ফ্লাইং প্রফিসিয়েন্সি ব্যাজ লাভ করেন এবং বিমানবাহিনীতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য টি.বি.টি খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি উইং কম্যান্ডার পদে পদোন্নতি পান এবং ঢাকায় একটি র্যাডার স্কোয়াড্রনের অধিনায়কের দায়িত্বে নিয়োজিত হন। | '''বাশার, এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল''' (১৯৩৫-১৯৭৬) বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান। ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বগুড়ায় তাঁর জন্ম। সাতক্ষীরা প্রাণনাথ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এসসি পাসের পর খাদেমুল বাশার ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফ্লায়িং শাখায় ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। মিলিটারি একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে তাঁকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর নবপ্রতিষ্ঠিত বম্বিং স্কোয়াড্রনে বদলি করা হয়। ১৯৬৯-৭০ সালে তিনি একটি বম্বিং স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক ছিলেন। এ ধরনের পদে তখন তিনিই ছিলেন একমাত্র বাঙালি অফিসার। ১৯৬৯ সালে খাদেমুল বাশার ফ্লাইং প্রফিসিয়েন্সি ব্যাজ লাভ করেন এবং বিমানবাহিনীতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য টি.বি.টি খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি উইং কম্যান্ডার পদে পদোন্নতি পান এবং ঢাকায় একটি র্যাডার স্কোয়াড্রনের অধিনায়কের দায়িত্বে নিয়োজিত হন। | ||
খাদেমুল বাশার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় (৬ নং সেক্টর) স্থলবাহিনীর অধিনায়ক নিয়োগ করা হয়। স্বাধীনতার পর তিনি রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি বিমানবাহিনীর চাকুরিতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে খাদেমুল বাশার এয়ার কমোডর পদে পদোন্নতি পান এবং তাঁকে যুদ্ধ পরিচালনা ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিয়োগ করা হয়।১৯৭৬ সালে তিনি বিমানবাহিনীর চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। এয়ার ভাইস মার্শাল পদে পদোন্নতি লাভের (১৯৭৬ সালের ৩ মে) পর তিনি উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে পেট্রোলিয়াম, খাদ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় এবং পর্যটন বিভাগের দায়িত্ব লাভ করেন। | খাদেমুল বাশার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় (৬ নং সেক্টর) স্থলবাহিনীর অধিনায়ক নিয়োগ করা হয়। স্বাধীনতার পর তিনি রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি বিমানবাহিনীর চাকুরিতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে খাদেমুল বাশার এয়ার কমোডর পদে পদোন্নতি পান এবং তাঁকে যুদ্ধ পরিচালনা ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিয়োগ করা হয়।১৯৭৬ সালে তিনি বিমানবাহিনীর চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। এয়ার ভাইস মার্শাল পদে পদোন্নতি লাভের (১৯৭৬ সালের ৩ মে) পর তিনি উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে পেট্রোলিয়াম, খাদ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় এবং পর্যটন বিভাগের দায়িত্ব লাভ করেন। | ||
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গঠনে খাদেমুল বাশারের বিশেষ অবদান ছিল এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে বিমানবাহিনী পুনর্গঠনের ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরোচিত অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন। | ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গঠনে খাদেমুল বাশারের বিশেষ অবদান ছিল এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে বিমানবাহিনী পুনর্গঠনের ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরোচিত অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন। |
০৪:৪৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
বাশার, এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল (১৯৩৫-১৯৭৬) বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান। ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বগুড়ায় তাঁর জন্ম। সাতক্ষীরা প্রাণনাথ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে আই.এসসি পাসের পর খাদেমুল বাশার ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফ্লায়িং শাখায় ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। মিলিটারি একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন। ১৯৬০ সালে তাঁকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর নবপ্রতিষ্ঠিত বম্বিং স্কোয়াড্রনে বদলি করা হয়। ১৯৬৯-৭০ সালে তিনি একটি বম্বিং স্কোয়াড্রনের অধিনায়ক ছিলেন। এ ধরনের পদে তখন তিনিই ছিলেন একমাত্র বাঙালি অফিসার। ১৯৬৯ সালে খাদেমুল বাশার ফ্লাইং প্রফিসিয়েন্সি ব্যাজ লাভ করেন এবং বিমানবাহিনীতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য টি.বি.টি খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি উইং কম্যান্ডার পদে পদোন্নতি পান এবং ঢাকায় একটি র্যাডার স্কোয়াড্রনের অধিনায়কের দায়িত্বে নিয়োজিত হন।
খাদেমুল বাশার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে রংপুর ও দিনাজপুর জেলায় (৬ নং সেক্টর) স্থলবাহিনীর অধিনায়ক নিয়োগ করা হয়। স্বাধীনতার পর তিনি রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার নিযুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি বিমানবাহিনীর চাকুরিতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির অধিনায়ক নিযুক্ত হন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে খাদেমুল বাশার এয়ার কমোডর পদে পদোন্নতি পান এবং তাঁকে যুদ্ধ পরিচালনা ও প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিয়োগ করা হয়।১৯৭৬ সালে তিনি বিমানবাহিনীর চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। এয়ার ভাইস মার্শাল পদে পদোন্নতি লাভের (১৯৭৬ সালের ৩ মে) পর তিনি উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে পেট্রোলিয়াম, খাদ্য, বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় এবং পর্যটন বিভাগের দায়িত্ব লাভ করেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গঠনে খাদেমুল বাশারের বিশেষ অবদান ছিল এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে বিমানবাহিনী পুনর্গঠনের ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরোচিত অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত হন।
১৯৭৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির ফ্লায়িং ইন্সট্রাক্টর্স স্কুলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি নিজে একটি বিমান নিয়ে উড্ডয়নকালে দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তী সময়ে বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির নতুন নামকরণ হয় বাশার ঘাঁটি। [এফ.এম মোস্তাফিজুর রহমান]