দানাশস্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''দানাশস্য '''(Cereal) পুষ্টিকর, শর্করাসমৃদ্ধ খাদ্যের জন্য উৎপন্ন তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। দানাশস্য বলতে প্রধানত ধান, গম, ভুট্টা, যব, জোয়ার ইত্যাদি বোঝায়। দানাশস্যে থাকে প্রায় ৭৫% শ্বেতসার ও প্রায় ১০% প্রোটিন এবং কিছু আনুষঙ্গিক স্নেহ পদার্থ ও অাঁশ। বিশ্বের মোট উৎপন্ন দানাশস্যের পরিমাণ ২০০ কোটি মে টনের বেশি। এগুলির একটা বড় অংশই ধনী দেশগুলিতে পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহূত হয়। | '''দানাশস্য''' (Cereal) পুষ্টিকর, শর্করাসমৃদ্ধ খাদ্যের জন্য উৎপন্ন তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। দানাশস্য বলতে প্রধানত ধান, গম, ভুট্টা, যব, জোয়ার ইত্যাদি বোঝায়। দানাশস্যে থাকে প্রায় ৭৫% শ্বেতসার ও প্রায় ১০% প্রোটিন এবং কিছু আনুষঙ্গিক স্নেহ পদার্থ ও অাঁশ। বিশ্বের মোট উৎপন্ন দানাশস্যের পরিমাণ ২০০ কোটি মে টনের বেশি। এগুলির একটা বড় অংশই ধনী দেশগুলিতে পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহূত হয়। | ||
বাংলাদেশের মাটি ও [[জলবায়ু|জলবায়ু]] কয়েক ধরনের দানাশস্যের উপযোগী। এগুলি মুখ্য ও গৌণ ফসল হিসেবে শ্রেণিভুক্ত। ধান ও গম মুখ্য ফসল এবং ভুট্টা, জোয়ার, যব, বজরা, চীনা ও কাউন গৌণ দানা ফসল। বাংলাদেশে ফসলি জমির প্রায় ৭৫% ধানক্ষেত। আউশ, আমন ও বোরো হিসেবে ধান সারাবছরই ফলে। গমের চাষ রবিশস্য হিসেবে শীতকালে হয়। কাউন ও চীনা ফলে একক বা মিশ্র চাষে। ভুট্টার চাষও হয় একইভাবে। | বাংলাদেশের মাটি ও [[জলবায়ু|জলবায়ু]] কয়েক ধরনের দানাশস্যের উপযোগী। এগুলি মুখ্য ও গৌণ ফসল হিসেবে শ্রেণিভুক্ত। ধান ও গম মুখ্য ফসল এবং ভুট্টা, জোয়ার, যব, বজরা, চীনা ও কাউন গৌণ দানা ফসল। বাংলাদেশে ফসলি জমির প্রায় ৭৫% ধানক্ষেত। আউশ, আমন ও বোরো হিসেবে ধান সারাবছরই ফলে। গমের চাষ রবিশস্য হিসেবে শীতকালে হয়। কাউন ও চীনা ফলে একক বা মিশ্র চাষে। ভুট্টার চাষও হয় একইভাবে। | ||
৭ নং লাইন: | ৭ নং লাইন: | ||
{| class="table table-bordered" | {| class="table table-bordered" | ||
|- | |- | ||
| শস্যের নাম | | শস্যের নাম || জমি (একর) || উৎপন্ন শস্য (মে টন) | ||
|- | |- | ||
| ধান (আউশ, আমন, বোরো) || ২৬,১৮,০০০ || | | ধান (আউশ, আমন, বোরো) || ২৬,১৮,০০০ || ১৮৮,৬১,৯৬০ | ||
|- | |- | ||
| গম || ১১,৮৩,৭২৩ || ৭,৩৫,৪৬২ | | গম || ১১,৮৩,৭২৩ || ৭,৩৫,৪৬২ | ||
|- | |- | ||
| ভুট্টা || ২,৪৩,০০০ || ৫,২২,০০০ | | ভুট্টা || ২,৪৩,০০০ || ৫,২২,০০০ | ||
|- | |- | ||
| জোয়ার || ১,০০০ || ১,০০০ | | জোয়ার || ১,০০০ || ১,০০০ | ||
|- | |- | ||
| যব || ২,০০০ || ১,০০০ | | যব || ২,০০০ || ১,০০০ | ||
২৬ নং লাইন: | ২১ নং লাইন: | ||
| কাউন ও অন্যান্য || ৪৪,০০০ || ১২,০০০ | | কাউন ও অন্যান্য || ৪৪,০০০ || ১২,০০০ | ||
|} | |} | ||
''উৎস'' কৃষি পরিসংখ্যান, ২০০৭। | |||
দানাশস্য, বিশেষত ধান ও অংশত গম বাংলাদেশে শ্বেতসার খাদ্যের প্রধান উৎস। মোট উৎপাদন অবশ্য দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যসংস্থানের জন্য পর্যাপ্ত নয়। তাই খাদ্যঘাটতি মিটাতে প্রতি বছর বাড়তি খাদ্য আমদানি করতে হয়। ১৯৯২-৯৩ সালে ৯,৫৫,০৫৯ মে টন গম ও ২০,৭৩০ মে টন চাল আমদানি করতে হয়েছিল। এখনও প্রচুর পরিমাণ চাল ও গম খাদ্যঘাটতি মিটাতে প্রতি বছর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বন্যা বা খরার জন্য ফসলহানির দরুন প্রায়ই বাংলাদেশে শস্য উৎপাদন হ্রাস পায়। বর্তমানে দানাশস্যের উৎপাদন, বিশেষ করে ধানের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়েছে। [এস.এম হুমায়ুন কবির] | দানাশস্য, বিশেষত ধান ও অংশত গম বাংলাদেশে শ্বেতসার খাদ্যের প্রধান উৎস। মোট উৎপাদন অবশ্য দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যসংস্থানের জন্য পর্যাপ্ত নয়। তাই খাদ্যঘাটতি মিটাতে প্রতি বছর বাড়তি খাদ্য আমদানি করতে হয়। ১৯৯২-৯৩ সালে ৯,৫৫,০৫৯ মে টন গম ও ২০,৭৩০ মে টন চাল আমদানি করতে হয়েছিল। এখনও প্রচুর পরিমাণ চাল ও গম খাদ্যঘাটতি মিটাতে প্রতি বছর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বন্যা বা খরার জন্য ফসলহানির দরুন প্রায়ই বাংলাদেশে শস্য উৎপাদন হ্রাস পায়। বর্তমানে দানাশস্যের উৎপাদন, বিশেষ করে ধানের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়েছে। [এস.এম হুমায়ুন কবির] | ||
''আরও দেখুন'' গম; ধান; | ''আরও দেখুন'' [[গম|গম]]; [[ধান|ধান]]; [[ভুট্টা|ভুট্টা]]। | ||
[[en:Cereal]] | [[en:Cereal]] |
১০:০৩, ১১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
দানাশস্য (Cereal) পুষ্টিকর, শর্করাসমৃদ্ধ খাদ্যের জন্য উৎপন্ন তৃণজাতীয় উদ্ভিদ। দানাশস্য বলতে প্রধানত ধান, গম, ভুট্টা, যব, জোয়ার ইত্যাদি বোঝায়। দানাশস্যে থাকে প্রায় ৭৫% শ্বেতসার ও প্রায় ১০% প্রোটিন এবং কিছু আনুষঙ্গিক স্নেহ পদার্থ ও অাঁশ। বিশ্বের মোট উৎপন্ন দানাশস্যের পরিমাণ ২০০ কোটি মে টনের বেশি। এগুলির একটা বড় অংশই ধনী দেশগুলিতে পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহূত হয়।
বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু কয়েক ধরনের দানাশস্যের উপযোগী। এগুলি মুখ্য ও গৌণ ফসল হিসেবে শ্রেণিভুক্ত। ধান ও গম মুখ্য ফসল এবং ভুট্টা, জোয়ার, যব, বজরা, চীনা ও কাউন গৌণ দানা ফসল। বাংলাদেশে ফসলি জমির প্রায় ৭৫% ধানক্ষেত। আউশ, আমন ও বোরো হিসেবে ধান সারাবছরই ফলে। গমের চাষ রবিশস্য হিসেবে শীতকালে হয়। কাউন ও চীনা ফলে একক বা মিশ্র চাষে। ভুট্টার চাষও হয় একইভাবে।
সারণি বাংলাদেশে ২০০৫-০৬ সালে দানাশস্যের চাষাধীন জমি ও উৎপন্ন ফসলের পরিমাণ
শস্যের নাম | জমি (একর) | উৎপন্ন শস্য (মে টন) |
ধান (আউশ, আমন, বোরো) | ২৬,১৮,০০০ | ১৮৮,৬১,৯৬০ |
গম | ১১,৮৩,৭২৩ | ৭,৩৫,৪৬২ |
ভুট্টা | ২,৪৩,০০০ | ৫,২২,০০০ |
জোয়ার | ১,০০০ | ১,০০০ |
যব | ২,০০০ | ১,০০০ |
কাউন ও অন্যান্য | ৪৪,০০০ | ১২,০০০ |
উৎস কৃষি পরিসংখ্যান, ২০০৭।
দানাশস্য, বিশেষত ধান ও অংশত গম বাংলাদেশে শ্বেতসার খাদ্যের প্রধান উৎস। মোট উৎপাদন অবশ্য দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যসংস্থানের জন্য পর্যাপ্ত নয়। তাই খাদ্যঘাটতি মিটাতে প্রতি বছর বাড়তি খাদ্য আমদানি করতে হয়। ১৯৯২-৯৩ সালে ৯,৫৫,০৫৯ মে টন গম ও ২০,৭৩০ মে টন চাল আমদানি করতে হয়েছিল। এখনও প্রচুর পরিমাণ চাল ও গম খাদ্যঘাটতি মিটাতে প্রতি বছর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বন্যা বা খরার জন্য ফসলহানির দরুন প্রায়ই বাংলাদেশে শস্য উৎপাদন হ্রাস পায়। বর্তমানে দানাশস্যের উৎপাদন, বিশেষ করে ধানের উৎপাদন বহুলাংশে বেড়েছে। [এস.এম হুমায়ুন কবির]