তান্ত্রিকবাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''তান্ত্রিকবাদ''' একটি ধর্মীয় আন্দোলন। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে ভারতবর্ষে এর উদ্ভব হয় এবং ক্রমশ তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তার লাভ করে। তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম হিসেবে এ মতবাদ এক সময় সমগ্র পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। | '''তান্ত্রিকবাদ''' একটি ধর্মীয় আন্দোলন। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে ভারতবর্ষে এর উদ্ভব হয় এবং ক্রমশ তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তার লাভ করে। তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম হিসেবে এ মতবাদ এক সময় সমগ্র পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। | ||
[[তন্ত্র|তন্ত্র]] বলতে একজাতীয় পবিত্র গ্রন্থ এবং তান্ত্রিক বলতে এ মতের অনুসারীদের বোঝায়, যারা বেদবিরোধী। তান্ত্রিক মতবাদের সূত্রপাত মনে করা হয় এশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশ ও আসামে কিংবা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের সোয়াত উপত্যকায়। সবচেয়ে প্রাচীন তন্ত্রগ্রন্থ হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাভৈরোচনা সূত্র | [[তন্ত্র|তন্ত্র]] বলতে একজাতীয় পবিত্র গ্রন্থ এবং তান্ত্রিক বলতে এ মতের অনুসারীদের বোঝায়, যারা বেদবিরোধী। তান্ত্রিক মতবাদের সূত্রপাত মনে করা হয় এশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশ ও আসামে কিংবা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের সোয়াত উপত্যকায়। সবচেয়ে প্রাচীন তন্ত্রগ্রন্থ হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাভৈরোচনা সূত্র (Mahabhairocana Sutra, ৬০০ খ্রি.)। বেদে যেসব মত ও পথের কথা বলা হয়েছে সে সবেরই একটি বর্ধিত রূপ হচ্ছে তান্ত্রিকবাদ। তবে হয়ত এতে স্থানীয় বা বিদেশি অন্য ধর্মের প্রভাব যুক্ত হয়েছে। | ||
তান্ত্রিকবাদের এ আন্দোলন বর্তমান বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে পাল শাসন আমলে (৮ম-১২শ শতক)। এ সময় তান্ত্রিক বৌদ্ধ মতবাদের অনেক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রচিত হয়। তান্ত্রিক মতবাদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পার্থিব জীবন ও মোক্ষের দ্বৈততা বর্জন। এ কারণে তান্ত্রিকরা বর্ণবাদ এবং বেদের বিধি-নিষেধ ও ব্রাহ্মণ্য গোড়ামিকে স্বীকার করে না। এ মতবাদের ফলে কোনো কোনো তান্ত্রিক দল নিষিদ্ধ যৌনমিলনে ব্রতী হয় এবং নারী-পুরুষের এ মিলনের প্রতীকে দ্বৈততার অবিদ্যমানতা প্রকাশ পায়। এসব ছাড়া তান্ত্রিকবাদে আছে কিছু আচার-আচরণ, যার একটি শক্তিশালী অঙ্গ হচ্ছে জাদু। আচারগুলি পালন করা হয় মন্ত্রোচ্চারণ, মুদ্রা, মন্ডল ও যজ্ঞের মাধ্যমে। [রবার্ট এ ইয়েলে] | তান্ত্রিকবাদের এ আন্দোলন বর্তমান বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে পাল শাসন আমলে (৮ম-১২শ শতক)। এ সময় তান্ত্রিক বৌদ্ধ মতবাদের অনেক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রচিত হয়। তান্ত্রিক মতবাদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পার্থিব জীবন ও মোক্ষের দ্বৈততা বর্জন। এ কারণে তান্ত্রিকরা বর্ণবাদ এবং বেদের বিধি-নিষেধ ও ব্রাহ্মণ্য গোড়ামিকে স্বীকার করে না। এ মতবাদের ফলে কোনো কোনো তান্ত্রিক দল নিষিদ্ধ যৌনমিলনে ব্রতী হয় এবং নারী-পুরুষের এ মিলনের প্রতীকে দ্বৈততার অবিদ্যমানতা প্রকাশ পায়। এসব ছাড়া তান্ত্রিকবাদে আছে কিছু আচার-আচরণ, যার একটি শক্তিশালী অঙ্গ হচ্ছে জাদু। আচারগুলি পালন করা হয় মন্ত্রোচ্চারণ, মুদ্রা, মন্ডল ও যজ্ঞের মাধ্যমে। [রবার্ট এ ইয়েলে] | ||
[[en:Tantricism]] | [[en:Tantricism]] |
০৯:৪১, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
তান্ত্রিকবাদ একটি ধর্মীয় আন্দোলন। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে ভারতবর্ষে এর উদ্ভব হয় এবং ক্রমশ তা সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তার লাভ করে। তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম হিসেবে এ মতবাদ এক সময় সমগ্র পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
তন্ত্র বলতে একজাতীয় পবিত্র গ্রন্থ এবং তান্ত্রিক বলতে এ মতের অনুসারীদের বোঝায়, যারা বেদবিরোধী। তান্ত্রিক মতবাদের সূত্রপাত মনে করা হয় এশিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশ ও আসামে কিংবা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের সোয়াত উপত্যকায়। সবচেয়ে প্রাচীন তন্ত্রগ্রন্থ হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাভৈরোচনা সূত্র (Mahabhairocana Sutra, ৬০০ খ্রি.)। বেদে যেসব মত ও পথের কথা বলা হয়েছে সে সবেরই একটি বর্ধিত রূপ হচ্ছে তান্ত্রিকবাদ। তবে হয়ত এতে স্থানীয় বা বিদেশি অন্য ধর্মের প্রভাব যুক্ত হয়েছে।
তান্ত্রিকবাদের এ আন্দোলন বর্তমান বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে পাল শাসন আমলে (৮ম-১২শ শতক)। এ সময় তান্ত্রিক বৌদ্ধ মতবাদের অনেক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রচিত হয়। তান্ত্রিক মতবাদের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পার্থিব জীবন ও মোক্ষের দ্বৈততা বর্জন। এ কারণে তান্ত্রিকরা বর্ণবাদ এবং বেদের বিধি-নিষেধ ও ব্রাহ্মণ্য গোড়ামিকে স্বীকার করে না। এ মতবাদের ফলে কোনো কোনো তান্ত্রিক দল নিষিদ্ধ যৌনমিলনে ব্রতী হয় এবং নারী-পুরুষের এ মিলনের প্রতীকে দ্বৈততার অবিদ্যমানতা প্রকাশ পায়। এসব ছাড়া তান্ত্রিকবাদে আছে কিছু আচার-আচরণ, যার একটি শক্তিশালী অঙ্গ হচ্ছে জাদু। আচারগুলি পালন করা হয় মন্ত্রোচ্চারণ, মুদ্রা, মন্ডল ও যজ্ঞের মাধ্যমে। [রবার্ট এ ইয়েলে]