ঢাকা ক্লাব: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(fix: image tag)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[Category:Banglapedia]]
[[Category:Banglapedia]]
'''ঢাকা ক্লাব  '''ঢাকায় অবস্থিত অভিজাত শ্রেণির লোকদের প্রধান সামাজিক সমিতি। শুরুতে এটি ছিল একান্তভাবে শ্বেতাঙ্গ লোকদের বিনোদন ক্লাব। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকাকে নবগঠিত পূর্ববাংলা এবং আসাম প্রদেশের রাজধানী করা হয়। নতুন প্রদেশ শাসনে আগত ইংরেজগণ কলকাতার বেঙ্গল ক্লাবের আদলে ঢাকায় একটি সামাজিক ক্লাবের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১১ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকা ক্লাব প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ক্লাবটি শাহবাগে অবস্থিত এবং এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়, জাতীয় জাদুঘর, রূপসী হোটেল, বারডেম হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান।  
'''ঢাকা ক্লাব''' ঢাকায় অবস্থিত অভিজাত শ্রেণির লোকদের প্রধান সামাজিক সমিতি। শুরুতে এটি ছিল একান্তভাবে শ্বেতাঙ্গ লোকদের বিনোদন ক্লাব। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকাকে নবগঠিত পূর্ববাংলা এবং আসাম প্রদেশের রাজধানী করা হয়। নতুন প্রদেশ শাসনে আগত ইংরেজগণ কলকাতার বেঙ্গল ক্লাবের আদলে ঢাকায় একটি সামাজিক ক্লাবের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১১ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকা ক্লাব প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ক্লাবটি শাহবাগে অবস্থিত এবং এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়, জাতীয় জাদুঘর, রূপসী হোটেল, বারডেম হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান।  


[[Image:DhakaClub.jpg|thumb|400px]]right|ঢাকা ক্লাব ভবন]]
১৯১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ১৮৮২ সালের ভারতীয় কোম্পানি আইনের অধীনে ক্লাবটিকে আইনি মর্যাদা প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠার পরপরই ক্লাবটি বর্ণগতভাবে একটি মিশ্রক্লাবে পরিণত হয়, যদিও ১৯৪৭ পর্যন্ত শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্য বজায় থাকে। ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন লে. কর্নেল ই.এ হল (সিভিল সার্জন, ঢাকা), সি.আর ব্রায়ান, এইচ. জি বেলি (কমান্ড্যান্ট, মিলিটারি পুলিশ ব্যাটেলিয়ান, ঢাকা), জে.ও রেনি (পিডব্লিউডি, ঢাকা) এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর জে.এস উইলসন ও এ.টি হ্যালিডে।  
১৯১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ১৮৮২ সালের ভারতীয় কোম্পানি আইনের অধীনে ক্লাবটিকে আইনি মর্যাদা প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠার পরপরই ক্লাবটি বর্ণগতভাবে একটি মিশ্রক্লাবে পরিণত হয়, যদিও ১৯৪৭ পর্যন্ত শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্য বজায় থাকে। ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন লে. কর্নেল ই.এ হল (সিভিল সার্জন, ঢাকা), সি.আর ব্রায়ান, এইচ. জি বেলি (কমান্ড্যান্ট, মিলিটারি পুলিশ ব্যাটেলিয়ান, ঢাকা), জে.ও রেনি (পিডব্লিউডি, ঢাকা) এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর জে.এস উইলসন ও এ.টি হ্যালিডে।  
<nowiki>#</nowiki> #[[Image:ঢাকা ক্লাব_html_88407781.png]]
[[Image:DhakaClub.jpg|thumb|400px]]
# #ঢাকা ক্লাব ভবন


প্রতিষ্ঠাকালে [[ঢাকা নওয়াব এস্টেট|ঢাকা নবাব এস্টেট]] থেকে ক্লাবের জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছিল। ক্লাবটির সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় বিশ শতকের বিশ ও তিরিশের দশকে, যখন বহু ইউরোপীয়রা পাট ব্যবসায়, বাষ্পীয় পোত চলাচল, রেলওয়ে এবং জমিদারি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজে ঢাকায় আসে। ১৯৪১ সালে বাংলার গভর্নর ৫২৪ বিঘা (১৭৩ একর) পরিমাণ জমি ঢাকা ক্লাবকে বন্দোবস্ত দেন। এ জমির অধিকাংশই একটি ঘোড়দৌড়ের মাঠ ( রমনা রেসকোর্স, বর্তমানে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের অধিকাংশ), গলফ খেলার মাঠ, ক্লাবের কিছু ভবন ও খেলার মাঠের কাজে ব্যবহূত হয়। বর্তমানে ক্লাবটির নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে আছে ৫ একর পরিমাণ জমি। এ জায়গাটুকুতে সভাকক্ষ, সেমিনার কক্ষ, হল ঘর, অতিথি কক্ষ, রান্নাঘর ও খাবার ঘর এবং টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড, তাস, স্কোয়াশ, সাঁতার, লন টেনিস ইত্যাদি খেলার সুবিধাদি প্রদান করা হয়েছে।  
প্রতিষ্ঠাকালে [[ঢাকা নওয়াব এস্টেট|ঢাকা নবাব এস্টেট]] থেকে ক্লাবের জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছিল। ক্লাবটির সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় বিশ শতকের বিশ ও তিরিশের দশকে, যখন বহু ইউরোপীয়রা পাট ব্যবসায়, বাষ্পীয় পোত চলাচল, রেলওয়ে এবং জমিদারি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজে ঢাকায় আসে। ১৯৪১ সালে বাংলার গভর্নর ৫২৪ বিঘা (১৭৩ একর) পরিমাণ জমি ঢাকা ক্লাবকে বন্দোবস্ত দেন। এ জমির অধিকাংশই একটি ঘোড়দৌড়ের মাঠ ( রমনা রেসকোর্স, বর্তমানে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের অধিকাংশ), গলফ খেলার মাঠ, ক্লাবের কিছু ভবন ও খেলার মাঠের কাজে ব্যবহূত হয়। বর্তমানে ক্লাবটির নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে আছে ৫ একর পরিমাণ জমি। এ জায়গাটুকুতে সভাকক্ষ, সেমিনার কক্ষ, হল ঘর, অতিথি কক্ষ, রান্নাঘর ও খাবার ঘর এবং টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড, তাস, স্কোয়াশ, সাঁতার, লন টেনিস ইত্যাদি খেলার সুবিধাদি প্রদান করা হয়েছে।  
১৫ নং লাইন: ১০ নং লাইন:


একজন সভাপতি এবং দশজন সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক ক্লাবটি পরিচালিত হয়। সদস্যদের সাধারণ সভায় এক বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচিত হয়। ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন আজীবন সদস্য, সাধারণ সদস্য, অনরারি সদস্য, বিশেষ সদস্য এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তা। অবশ্য, ভোট দেয়ার অধিকার আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বর্তমানে (২০১১) ক্লাবটির মোট সদস্য সংখ্যা ২৬০০।  [সিরাজুল ইসলাম]
একজন সভাপতি এবং দশজন সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক ক্লাবটি পরিচালিত হয়। সদস্যদের সাধারণ সভায় এক বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচিত হয়। ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন আজীবন সদস্য, সাধারণ সদস্য, অনরারি সদস্য, বিশেষ সদস্য এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তা। অবশ্য, ভোট দেয়ার অধিকার আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বর্তমানে (২০১১) ক্লাবটির মোট সদস্য সংখ্যা ২৬০০।  [সিরাজুল ইসলাম]
<!-- imported from file: ঢাকা ক্লাব.html-->


[[en:Dhaka Club]]
[[en:Dhaka Club]]

০৬:৪৮, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

ঢাকা ক্লাব ঢাকায় অবস্থিত অভিজাত শ্রেণির লোকদের প্রধান সামাজিক সমিতি। শুরুতে এটি ছিল একান্তভাবে শ্বেতাঙ্গ লোকদের বিনোদন ক্লাব। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর ঢাকাকে নবগঠিত পূর্ববাংলা এবং আসাম প্রদেশের রাজধানী করা হয়। নতুন প্রদেশ শাসনে আগত ইংরেজগণ কলকাতার বেঙ্গল ক্লাবের আদলে ঢাকায় একটি সামাজিক ক্লাবের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১১ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকা ক্লাব প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ক্লাবটি শাহবাগে অবস্থিত এবং এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়, জাতীয় জাদুঘর, রূপসী হোটেল, বারডেম হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক এবং সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান।

right|ঢাকা ক্লাব ভবন]]

১৯১১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ১৮৮২ সালের ভারতীয় কোম্পানি আইনের অধীনে ক্লাবটিকে আইনি মর্যাদা প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠার পরপরই ক্লাবটি বর্ণগতভাবে একটি মিশ্রক্লাবে পরিণত হয়, যদিও ১৯৪৭ পর্যন্ত শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্য বজায় থাকে। ক্লাবটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন লে. কর্নেল ই.এ হল (সিভিল সার্জন, ঢাকা), সি.আর ব্রায়ান, এইচ. জি বেলি (কমান্ড্যান্ট, মিলিটারি পুলিশ ব্যাটেলিয়ান, ঢাকা), জে.ও রেনি (পিডব্লিউডি, ঢাকা) এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর জে.এস উইলসন ও এ.টি হ্যালিডে।

প্রতিষ্ঠাকালে ঢাকা নবাব এস্টেট থেকে ক্লাবের জমি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছিল। ক্লাবটির সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় বিশ শতকের বিশ ও তিরিশের দশকে, যখন বহু ইউরোপীয়রা পাট ব্যবসায়, বাষ্পীয় পোত চলাচল, রেলওয়ে এবং জমিদারি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কাজে ঢাকায় আসে। ১৯৪১ সালে বাংলার গভর্নর ৫২৪ বিঘা (১৭৩ একর) পরিমাণ জমি ঢাকা ক্লাবকে বন্দোবস্ত দেন। এ জমির অধিকাংশই একটি ঘোড়দৌড়ের মাঠ ( রমনা রেসকোর্স, বর্তমানে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের অধিকাংশ), গলফ খেলার মাঠ, ক্লাবের কিছু ভবন ও খেলার মাঠের কাজে ব্যবহূত হয়। বর্তমানে ক্লাবটির নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে আছে ৫ একর পরিমাণ জমি। এ জায়গাটুকুতে সভাকক্ষ, সেমিনার কক্ষ, হল ঘর, অতিথি কক্ষ, রান্নাঘর ও খাবার ঘর এবং টেবিল টেনিস, বিলিয়ার্ড, তাস, স্কোয়াশ, সাঁতার, লন টেনিস ইত্যাদি খেলার সুবিধাদি প্রদান করা হয়েছে।

কাল পরিক্রমায় ক্লাবটির সদস্য সংখ্যা, ভৌত সুবিধাদি ও সেবা কার্যক্রম যথেষ্ট সম্প্রসারিত হয়েছে। এটি এখন সকল পেশার অভিজাত ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মিলনস্থলে পরিণত হয়েছে। অতীতে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাঙ্গন খেলাধুলাই ক্লাবটির প্রধান চিত্র ছিল বর্তমানে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকেও যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

একজন সভাপতি এবং দশজন সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক ক্লাবটি পরিচালিত হয়। সদস্যদের সাধারণ সভায় এক বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচিত হয়। ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন আজীবন সদস্য, সাধারণ সদস্য, অনরারি সদস্য, বিশেষ সদস্য এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তা। অবশ্য, ভোট দেয়ার অধিকার আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। বর্তমানে (২০১১) ক্লাবটির মোট সদস্য সংখ্যা ২৬০০।  [সিরাজুল ইসলাম]