হুদা, মির্জা নূরুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''হুদা, মির্জা নূরুল '''(১৯১৯-১৯৯১) শিক্ষাবিদ, কৃষি অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯১৯ সালের ১ আগস্ট টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এক নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অসাধারণ মেধাবী ছাত্র মির্জা নূরুল হুদা ১৯৪০ ও ১৯৪১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে যথাক্রমে বি.এ (অনার্স) ও এম.এ পাস করেন। অনার্স পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে [[কালিনারায়ণ বৃত্তি|কালিনারায়ণ বৃত্তি]] প্রদান করে। তিনি ১৯৪৯ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতিতে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। | '''হুদা, মির্জা নূরুল '''(১৯১৯-১৯৯১) শিক্ষাবিদ, কৃষি অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯১৯ সালের ১ আগস্ট টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এক নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অসাধারণ মেধাবী ছাত্র মির্জা নূরুল হুদা ১৯৪০ ও ১৯৪১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে যথাক্রমে বি.এ (অনার্স) ও এম.এ পাস করেন। অনার্স পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে [[কালিনারায়ণ বৃত্তি|কালিনারায়ণ বৃত্তি]] প্রদান করে। তিনি ১৯৪৯ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতিতে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। | ||
[[Image:HudaMirzaNural.jpg|thumb|400px|মির্জা নূরুল হুদা]] | |||
ড. এম.এন হুদা ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে একজন রিডার হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। শিক্ষকতা পেশায় থাকাকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তদানীন্তন সরকারের ‘কর তদন্ত কমিটি’, ‘ক্রেডিট তদন্ত কশিমন’ এবং কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়ন কমিটিসমূহের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনেরও সদস্য ছিলেন (১৯৬২-১৯৬৫) এবং সে সময় পাকিস্তানি শাসকবৃন্দ কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। ড. হুদা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৬৫-১৯৬৯)। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতালাভের পর তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। | ড. এম.এন হুদা ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে একজন রিডার হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। শিক্ষকতা পেশায় থাকাকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তদানীন্তন সরকারের ‘কর তদন্ত কমিটি’, ‘ক্রেডিট তদন্ত কশিমন’ এবং কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়ন কমিটিসমূহের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনেরও সদস্য ছিলেন (১৯৬২-১৯৬৫) এবং সে সময় পাকিস্তানি শাসকবৃন্দ কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। ড. হুদা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৬৫-১৯৬৯)। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতালাভের পর তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। | ||
১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তান সরকার আবদুল মোনেম খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ঐবছর ২৩ মার্চ তারিখে তাঁর স্থানে ড. এম.এন হুদাকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু তিনি মাত্র একদিন গভর্নর পদে বহাল ছিলেন। ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করলে ড. হুদাকে গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। এরপর তিনি তাঁর শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যান এবং ঐবছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। | ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তান সরকার আবদুল মোনেম খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ঐবছর ২৩ মার্চ তারিখে তাঁর স্থানে ড. এম.এন হুদাকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু তিনি মাত্র একদিন গভর্নর পদে বহাল ছিলেন। ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করলে ড. হুদাকে গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। এরপর তিনি তাঁর শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যান এবং ঐবছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। |
০৯:১২, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
হুদা, মির্জা নূরুল (১৯১৯-১৯৯১) শিক্ষাবিদ, কৃষি অর্থনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯১৯ সালের ১ আগস্ট টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এক নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অসাধারণ মেধাবী ছাত্র মির্জা নূরুল হুদা ১৯৪০ ও ১৯৪১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে যথাক্রমে বি.এ (অনার্স) ও এম.এ পাস করেন। অনার্স পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে কালিনারায়ণ বৃত্তি প্রদান করে। তিনি ১৯৪৯ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতিতে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন।
ড. এম.এন হুদা ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে একজন রিডার হিসেবে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। শিক্ষকতা পেশায় থাকাকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তদানীন্তন সরকারের ‘কর তদন্ত কমিটি’, ‘ক্রেডিট তদন্ত কশিমন’ এবং কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনার খসড়া প্রণয়ন কমিটিসমূহের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনেরও সদস্য ছিলেন (১৯৬২-১৯৬৫) এবং সে সময় পাকিস্তানি শাসকবৃন্দ কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। ড. হুদা পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৬৫-১৯৬৯)। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতালাভের পর তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন।
১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় পাকিস্তান সরকার আবদুল মোনেম খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে ঐবছর ২৩ মার্চ তারিখে তাঁর স্থানে ড. এম.এন হুদাকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু তিনি মাত্র একদিন গভর্নর পদে বহাল ছিলেন। ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করলে ড. হুদাকে গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। এরপর তিনি তাঁর শিক্ষকতা পেশায় ফিরে যান এবং ঐবছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।
ড. এম.এন হুদা ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য নিযুক্ত হন। ওই সময় তিনি কৃষি, বাণিজ্য, অর্থ, শিল্প ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সমূহের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালের ২৪ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাঁকে অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত করেন। ১৯৮১ সালের ২৪ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার তাঁকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন এবং ওই পদে তিনি ১৯৮২ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন।
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। ড. এম.এন হুদা ১৯৯১ সালের ২২ ডিসেম্বর ৭২ বছর বয়সে ঢাকায় তাঁর মুত্যু হয়। [মুহম্মদ আবদুস সালাম]