হেবার, রেজিনাল্ড বিশপ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''হেবার, রেজিনাল্ড বিশপ''' (১৭৮৩-১৮২৬)  বাংলায় আগত একজন ভ্রমণকারী হিসেবে উনিশ শতকের প্রথম সিকিতে বাংলার আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে বিশপ হেবারের বিবরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেভারেন্ড রেজিনাল্ড হেবার এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মেরী এলানসনের জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন বিশপ হেবার। ১৭৮৩ সালের ২১ এপ্রিল তিনি ইংল্যান্ডের চেশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। হেবার অক্সফোর্ডে লেখাপড়া করেন এবং কবিতা ও গদ্যের জন্য পুরস্কৃত হন। ১৮০৭ সালে তিনি চার্চে যোগ দেন। ১৮১৫ সালে অক্সফোর্ডের বাম্পটন লেকচারশিপ দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। ১৮২৩ সালে তিনি কলকাতার (পুরো ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার) লর্ড বিশপের পদে মনোনয়ন লাভ করেন।
'''হেবার, রেজিনাল্ড বিশপ''' (১৭৮৩-১৮২৬)  বাংলায় আগত একজন ভ্রমণকারী হিসেবে উনিশ শতকের প্রথম সিকিতে বাংলার আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে বিশপ হেবারের বিবরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেভারেন্ড রেজিনাল্ড হেবার এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মেরী এলানসনের জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন বিশপ হেবার। ১৭৮৩ সালের ২১ এপ্রিল তিনি ইংল্যান্ডের চেশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। হেবার অক্সফোর্ডে লেখাপড়া করেন এবং কবিতা ও গদ্যের জন্য পুরস্কৃত হন। ১৮০৭ সালে তিনি চার্চে যোগ দেন। ১৮১৫ সালে অক্সফোর্ডের বাম্পটন লেকচারশিপ দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। ১৮২৩ সালে তিনি কলকাতার (পুরো ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার) লর্ড বিশপের পদে মনোনয়ন লাভ করেন।


[[Image:HeberReginald.jpg|thumb|300px|রেজিনাল্ড বিশপ হেবার]]
বিশপ হেবার তাঁর ভ্রমণ কাহিনীর জন্য বিখ্যাত। তিনি ভারতবর্ষে শুধু ধর্মপ্রচার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন না, ভারতবর্ষের বৈচিত্র্য তাঁকে আকর্ষণ করেছিলো। ১৮২৪ থেকে ১৮২৬ পর্যন্ত তিনি তাঁর অধীনস্থ গির্জাসমূহ পরিদর্শন করেছেন এবং এ কারণে কলকাতা থেকে দাক্ষিণাত্য পর্যন্ত তাঁকে ভ্রমণ করতে হয়েছে এবং তিনি তা লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১৮২৭ সালে ভ্রমণ বৃত্তান্তটি  Narrative of a journey through the upper Provinces of India from Calcutta to Bombay, 1824-1825 (with notes upon Ceylon); An Account of a Journey to Madras and the Southern Provinces, 1826 and Letters written in India  দুখন্ডে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। প্রথম খন্ডে ঢাকা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ভ্রমণের উলে­খ আছে। এ অংশটুকুতে আমরা বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাই। বইটির উলে­খযোগ্য অংশে রয়েছে হেবারের স্কেচ।
বিশপ হেবার তাঁর ভ্রমণ কাহিনীর জন্য বিখ্যাত। তিনি ভারতবর্ষে শুধু ধর্মপ্রচার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন না, ভারতবর্ষের বৈচিত্র্য তাঁকে আকর্ষণ করেছিলো। ১৮২৪ থেকে ১৮২৬ পর্যন্ত তিনি তাঁর অধীনস্থ গির্জাসমূহ পরিদর্শন করেছেন এবং এ কারণে কলকাতা থেকে দাক্ষিণাত্য পর্যন্ত তাঁকে ভ্রমণ করতে হয়েছে এবং তিনি তা লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১৮২৭ সালে ভ্রমণ বৃত্তান্তটি  Narrative of a journey through the upper Provinces of India from Calcutta to Bombay, 1824-1825 (with notes upon Ceylon); An Account of a Journey to Madras and the Southern Provinces, 1826 and Letters written in India  দুখন্ডে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। প্রথম খন্ডে ঢাকা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ভ্রমণের উলে­খ আছে। এ অংশটুকুতে আমরা বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাই। বইটির উলে­খযোগ্য অংশে রয়েছে হেবারের স্কেচ।
[[Image:HeberReginald.jpg|thumb|400px|রেজিনাল্ড বিশপ হেবার]]


বিশপ হেবারের এই ভ্রমণকালে প্রায় প্রতিদিন তাঁর অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করায় আমরা সে সময়কার ভারতবর্ষের একটা চিত্র পাই। কোন কোন ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাদামাটা এক চিত্র, যেখানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারার আলেক্ষ্য রয়েছে।
বিশপ হেবারের এই ভ্রমণকালে প্রায় প্রতিদিন তাঁর অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করায় আমরা সে সময়কার ভারতবর্ষের একটা চিত্র পাই। কোন কোন ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাদামাটা এক চিত্র, যেখানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারার আলেক্ষ্য রয়েছে।

০৯:২২, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

হেবার, রেজিনাল্ড বিশপ (১৭৮৩-১৮২৬)  বাংলায় আগত একজন ভ্রমণকারী হিসেবে উনিশ শতকের প্রথম সিকিতে বাংলার আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে বিশপ হেবারের বিবরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রেভারেন্ড রেজিনাল্ড হেবার এবং তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মেরী এলানসনের জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন বিশপ হেবার। ১৭৮৩ সালের ২১ এপ্রিল তিনি ইংল্যান্ডের চেশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। হেবার অক্সফোর্ডে লেখাপড়া করেন এবং কবিতা ও গদ্যের জন্য পুরস্কৃত হন। ১৮০৭ সালে তিনি চার্চে যোগ দেন। ১৮১৫ সালে অক্সফোর্ডের বাম্পটন লেকচারশিপ দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। ১৮২৩ সালে তিনি কলকাতার (পুরো ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার) লর্ড বিশপের পদে মনোনয়ন লাভ করেন।

রেজিনাল্ড বিশপ হেবার

বিশপ হেবার তাঁর ভ্রমণ কাহিনীর জন্য বিখ্যাত। তিনি ভারতবর্ষে শুধু ধর্মপ্রচার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন না, ভারতবর্ষের বৈচিত্র্য তাঁকে আকর্ষণ করেছিলো। ১৮২৪ থেকে ১৮২৬ পর্যন্ত তিনি তাঁর অধীনস্থ গির্জাসমূহ পরিদর্শন করেছেন এবং এ কারণে কলকাতা থেকে দাক্ষিণাত্য পর্যন্ত তাঁকে ভ্রমণ করতে হয়েছে এবং তিনি তা লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১৮২৭ সালে ভ্রমণ বৃত্তান্তটি  Narrative of a journey through the upper Provinces of India from Calcutta to Bombay, 1824-1825 (with notes upon Ceylon); An Account of a Journey to Madras and the Southern Provinces, 1826 and Letters written in India  দুখন্ডে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয়। প্রথম খন্ডে ঢাকা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ভ্রমণের উলে­খ আছে। এ অংশটুকুতে আমরা বাংলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাই। বইটির উলে­খযোগ্য অংশে রয়েছে হেবারের স্কেচ।

বিশপ হেবারের এই ভ্রমণকালে প্রায় প্রতিদিন তাঁর অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করায় আমরা সে সময়কার ভারতবর্ষের একটা চিত্র পাই। কোন কোন ক্ষেত্রে অত্যন্ত সাদামাটা এক চিত্র, যেখানে মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারার আলেক্ষ্য রয়েছে।

হেবার ১৮২৪ সালে তাঁর ভ্রমণ শুরু করেন। কলকাতা থেকে প্রথম আসেন ঢাকায়। তৎকালীন ঢাকার একটি চমৎকার বর্ণনা আছে তাঁর গ্রন্থে। তিনি ঢাকার নায়েব নাজিম নওয়াব  শামসুদ্দৌলার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এই সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন ভ্রমণ কাহিনীতে। ঢাকার ধনাঢ্য ও জেলার সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত মীর আশরাফ আলীর সঙ্গেও তিনি দেখা করেছিলেন। এছাড়া বিস্তারিত বিবরণ আছে ফরিদপুর ও চট্টগ্রাম সম্পর্কে।

১৮২৬ সালের ৩ এপ্রিল ত্রিচিনপল­ীতে ভ্রমণের সময় মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

কলকাতায় ‘বিশপস কলেজ’ প্রতিষ্ঠা ছিল হেবারের আরেকটি কীর্তি। ভ্রমণ কাহিনী ছাড়াও তাঁর উলে­খযোগ্য গ্রন্থসমূহ হচ্ছে: কবিতা Palestine (1809), Europe (1809), Poems (1812), Hymns (1827); গদ্য The Personality and Office of the Christian Comforter asserted and explained (Bampton Lectures for 1815), The Omnipotence of God (1821), A Life of Bishop Jeremy Taylor (2 Vols., 1824)।  [মুনতাসীর মামুন]