নবাবগঞ্জ জেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:Banglapedia]] | [[Category:Banglapedia]] | ||
'''নবাবগঞ্জ জেলা''' (রাজশাহী বিভাগ) আয়তন: ১৭০২.৫৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৫´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০১´ থেকে ৮৮°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা। এ জেলা বরেন্দ্র, দিয়াড়া ও চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত। | '''নবাবগঞ্জ জেলা''' ([[রাজশাহী বিভাগ|রাজশাহী বিভাগ]]) আয়তন: ১৭০২.৫৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৫´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০১´ থেকে ৮৮°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা। এ জেলা বরেন্দ্র, দিয়াড়া ও চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত। | ||
''জনসংখ্যা'' ১৪২৫৩২২; পুরুষ ৭২৫৩৫৪, মহিলা ৬৯৯৯৬৮। মুসলিম ১৩৫৬৫২৪, হিন্দু ৬০৮০৯, বৌদ্ধ ৪৪৯৩, খ্রিস্টান ৯৮ এবং অন্যান্য ৩৩৯৮। এ জেলায় ওরাওঁ, সাঁওতাল, মাহালী, মুরারী, পাহান প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। | ''জনসংখ্যা'' ১৪২৫৩২২; পুরুষ ৭২৫৩৫৪, মহিলা ৬৯৯৯৬৮। মুসলিম ১৩৫৬৫২৪, হিন্দু ৬০৮০৯, বৌদ্ধ ৪৪৯৩, খ্রিস্টান ৯৮ এবং অন্যান্য ৩৩৯৮। এ জেলায় ওরাওঁ, সাঁওতাল, মাহালী, মুরারী, পাহান প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। | ||
১০ নং লাইন: | ১০ নং লাইন: | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| colspan= "10" | জেলা | |||
|- | |- | ||
| rowspan= "2" | আয়তন(বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | উপজেলা || rowspan= "2" | পৌরসভা || rowspan= "2" | ইউনিয়ন || rowspan= "2" | মৌজা || rowspan= "2" | গ্রাম || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%) | | rowspan= "2" | আয়তন(বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | উপজেলা || rowspan= "2" | পৌরসভা || rowspan= "2" | ইউনিয়ন || rowspan= "2" | মৌজা || rowspan= "2" | গ্রাম || colspan= "2" | জনসংখ্যা || rowspan= "2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || rowspan= "2" | শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| শহর || গ্রাম | | শহর || গ্রাম | ||
|- | |- | ||
| ১৭০২.৫৬ || ৫ || ৩ || ৪৫ || ৭৮৫ || ১১২০ || ২৬৯০৮৭ || ১১৫৬২৩৫ || ৮৩৭ || ৩৫.৯ | | ১৭০২.৫৬ || ৫ || ৩ || ৪৫ || ৭৮৫ || ১১২০ || ২৬৯০৮৭ || ১১৫৬২৩৫ || ৮৩৭ || ৩৫.৯ | ||
|} | |} | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | {| class="table table-bordered table-hover" | ||
|- | |- | ||
| জেলার অন্যান্য তথ্য | | colspan= "10" | জেলার অন্যান্য তথ্য | ||
|- | |- | ||
| উপজেলা নাম || আয়তন(বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | | উপজেলা নাম || আয়তন (বর্গ কিমি) || পৌরসভা || ইউনিয়ন || মৌজা || গ্রাম || জনসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) | ||
|- | |- | ||
| গোমস্তাপুর || ৩১৮.১৩ || ১ || ৮ || ১৬৬ || ২২৭ || ২৪০১২৩ || ৭৫৫ || ৩৫.৪ | | গোমস্তাপুর || ৩১৮.১৩ || ১ || ৮ || ১৬৬ || ২২৭ || ২৪০১২৩ || ৭৫৫ || ৩৫.৪ | ||
|- | |- | ||
| নবাবগঞ্জ সদর || ৪৫১.৮০ || ১ || ১৪ || ১৭৪ || ২১১ || ৪৫২৬৫০ || ১০০২ || ৩৮.১ | | নবাবগঞ্জ সদর || ৪৫১.৮০ || ১ || ১৪ || ১৭৪ || ২১১ || ৪৫২৬৫০ || ১০০২ || ৩৮.১ | ||
|- | |- | ||
| নাচোল || ২৮৩.৬৮ || - || ৪ || ২০১ || ১৯৭ || ১৩২৩০৮ || ৪৬৬ || ৪০.৩ | | নাচোল || ২৮৩.৬৮ || - || ৪ || ২০১ || ১৯৭ || ১৩২৩০৮ || ৪৬৬ || ৪০.৩ | ||
|- | |- | ||
| ভোলাহাট || ১২৩.৫২ || - || ৪ || ৪৫ || ৯৩ || ৯২১৪৯ || ৭৪৬ || ৩৯.২ | | ভোলাহাট || ১২৩.৫২ || - || ৪ || ৪৫ || ৯৩ || ৯২১৪৯ || ৭৪৬ || ৩৯.২ | ||
|- | |- | ||
| শিবগঞ্জ || ৫২৫.৪৩ || ১ || ১৫ || ১৯৯ || ৩৯২ || ৫০৮০৯২ || ৯৬৭ || ৩২.৫ | | শিবগঞ্জ || ৫২৫.৪৩ || ১ || ১৫ || ১৯৯ || ৩৯২ || ৫০৮০৯২ || ৯৬৭ || ৩২.৫ | ||
|} | |} | ||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিকারপুরে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী শিবগঞ্জ উপজেলার দোরাশিয়া, মোল্লাটোলা, লম্পট ও রাধাকান্তপুর গ্রামের ৪৭ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৬ অক্টোবর ভোলাহাট উপজেলার কাশিয়াবাড়িতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর নবাবগঞ্জে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন [[জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন|মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর]] সদরের রেহাইচর নামক স্থানে শহীদ হন। | [[Image:NawabganjDistrict.jpg|thumb|400px|right]] | ||
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিকারপুরে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী শিবগঞ্জ উপজেলার দোরাশিয়া, মোল্লাটোলা, লম্পট ও রাধাকান্তপুর গ্রামের ৪৭ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৬ অক্টোবর ভোলাহাট উপজেলার কাশিয়াবাড়িতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর নবাবগঞ্জে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন [[জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন|মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর]] সদরের রেহাইচর নামক স্থানে শহীদ হন। | |||
''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ২ (সাঠিয়া বাজার ও জাদুনগর); গণকবর ৩ (জামবাড়ীয়া গ্রাম, বালিয়াদীঘির পশ্চিমপাড় ও গোমস্তাপুর ফকিরপাড়া); স্মৃতিস্তম্ভ ১ (নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ); স্মৃতিসৌধ ২ (বাংলাদেশ রাইফেলস গেট স্মৃতিসৌধ ও নবাবগঞ্জ পৌরসভা স্মৃতিসৌধ); স্মৃতিফলক ২ (ছত্রজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শহীদ স্মৃতিফলক ও শিবগঞ্জ উপজেলা স্মৃতিফলক) এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (১৯৯৩)। | ''মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন'' বধ্যভূমি ২ (সাঠিয়া বাজার ও জাদুনগর); গণকবর ৩ (জামবাড়ীয়া গ্রাম, বালিয়াদীঘির পশ্চিমপাড় ও গোমস্তাপুর ফকিরপাড়া); স্মৃতিস্তম্ভ ১ (নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ); স্মৃতিসৌধ ২ (বাংলাদেশ রাইফেলস গেট স্মৃতিসৌধ ও নবাবগঞ্জ পৌরসভা স্মৃতিসৌধ); স্মৃতিফলক ২ (ছত্রজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শহীদ স্মৃতিফলক ও শিবগঞ্জ উপজেলা স্মৃতিফলক) এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (১৯৯৩)। | ||
শিক্ষার হার | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৫.৯%; পুরুষ ৩৭.৪%, মহিলা ৩৪.৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আদিনা ফজলুল হক কলেজ (১৯৩৮), নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ (১৯৫৫), নবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৬৬), রহনপুর ইউসুফ আলী কলেজ (১৯৬৭), কানসাট সোলেমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), নাচোল ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), ভোলাহাট মোহেবউল্লাহ ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), গোমস্তাপুর সোলেমান মিঞা কলেজ, শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ্ কলেজ, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৫), কানসাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), দাদনচল এইচএম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৭), ভোলাহাট রামেশ্বর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), নয়ানাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৭০), চাঁদলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৯), নাচোল প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবাবগঞ্জ আলিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯৬৪), ছত্রাজিতপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৪), রাধাকান্তপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫০)। | ||
''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৭.১৩%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১৬%, শিল্প ১.৩৫%, ব্যবসা ১৭.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭৬%, নির্মাণ ২.৯০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, চাকরি ৪.৬৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৯% এবং অন্যান্য ৯.১৫%। | ''জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস'' কৃষি ৫৭.১৩%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১৬%, শিল্প ১.৩৫%, ব্যবসা ১৭.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭৬%, নির্মাণ ২.৯০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, চাকরি ৪.৬৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৯% এবং অন্যান্য ৯.১৫%। | ||
''পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী'' চাঁপাই সংবাদ, গৌড় সংবাদ, সীমান্তের কাগজ, মহানন্দা, সাপ্তাহিক গৌড়বাণী, পূর্বরাগ, কাঠখড়, অশনি, মুক্তকণ্ঠ, পাগলা, প্রত্যয় (অবলুপ্ত), ফাল্গুনী (১৯৬০), আলোর পথে (১৯৬২), নবাবগঞ্জ সাময়িকী (১৯৬৪), মহানন্দা (১৯৭৮), দর্পণ (১৯৯৪), প্রতিভা বিকাশ, রহনপুর বার্তা প্রভৃতি। | |||
''লোকসংস্কৃতি'' গম্ভীরা, কবিগান, আলকাপগান, মেয়েলীগীত, ছড়া, উপকথা, ধাঁধাঁ উল্লেখযোগ্য। [মাযহারুল ইসলাম তরু] | ''লোকসংস্কৃতি'' গম্ভীরা, কবিগান, আলকাপগান, মেয়েলীগীত, ছড়া, উপকথা, ধাঁধাঁ উল্লেখযোগ্য। [মাযহারুল ইসলাম তরু] | ||
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ''আরও দেখুন'' সংশ্লিষ্ট উপজেলা। | ||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নবাবগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নবাবগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Nawabganj District]] | [[en:Nawabganj District]] |
০৪:৩৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
নবাবগঞ্জ জেলা (রাজশাহী বিভাগ) আয়তন: ১৭০২.৫৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°২৫´ থেকে ২৪°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০১´ থেকে ৮৮°৩০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পূর্বে রাজশাহী ও নওগাঁ জেলা। এ জেলা বরেন্দ্র, দিয়াড়া ও চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত।
জনসংখ্যা ১৪২৫৩২২; পুরুষ ৭২৫৩৫৪, মহিলা ৬৯৯৯৬৮। মুসলিম ১৩৫৬৫২৪, হিন্দু ৬০৮০৯, বৌদ্ধ ৪৪৯৩, খ্রিস্টান ৯৮ এবং অন্যান্য ৩৩৯৮। এ জেলায় ওরাওঁ, সাঁওতাল, মাহালী, মুরারী, পাহান প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
জলাশয় প্রধান নদী:পদ্মা, মহানন্দা, পাগলা।
প্রশাসন ১৯৪৭ সালের পূর্ব পর্যন্ত নবাবগঞ্জ মালদহ জেলার একটি থানা ছিল। দেশভাগের সময় এটি রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ১৯৪৮ সালে মহকুমায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে শিবগঞ্জ সর্ববৃহৎ (৫২৫.৪৩ বর্গ কিমি) এবং সবচেয়ে ছোট উপজেলা ভোলাহাট (১২৩.৫২ বর্গ কিমি)।
জেলা | |||||||||
আয়তন(বর্গ কিমি) | উপজেলা | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
শহর | গ্রাম | ||||||||
১৭০২.৫৬ | ৫ | ৩ | ৪৫ | ৭৮৫ | ১১২০ | ২৬৯০৮৭ | ১১৫৬২৩৫ | ৮৩৭ | ৩৫.৯ |
জেলার অন্যান্য তথ্য | |||||||||
উপজেলা নাম | আয়তন (বর্গ কিমি) | পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | |
গোমস্তাপুর | ৩১৮.১৩ | ১ | ৮ | ১৬৬ | ২২৭ | ২৪০১২৩ | ৭৫৫ | ৩৫.৪ | |
নবাবগঞ্জ সদর | ৪৫১.৮০ | ১ | ১৪ | ১৭৪ | ২১১ | ৪৫২৬৫০ | ১০০২ | ৩৮.১ | |
নাচোল | ২৮৩.৬৮ | - | ৪ | ২০১ | ১৯৭ | ১৩২৩০৮ | ৪৬৬ | ৪০.৩ | |
ভোলাহাট | ১২৩.৫২ | - | ৪ | ৪৫ | ৯৩ | ৯২১৪৯ | ৭৪৬ | ৩৯.২ | |
শিবগঞ্জ | ৫২৫.৪৩ | ১ | ১৫ | ১৯৯ | ৩৯২ | ৫০৮০৯২ | ৯৬৭ | ৩২.৫ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ৬ অক্টোবর শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিকারপুরে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে প্রায় ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১০ অক্টোবর পাকবাহিনী শিবগঞ্জ উপজেলার দোরাশিয়া, মোল্লাটোলা, লম্পট ও রাধাকান্তপুর গ্রামের ৪৭ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৬ অক্টোবর ভোলাহাট উপজেলার কাশিয়াবাড়িতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ১৪ ডিসেম্বর নবাবগঞ্জে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সদরের রেহাইচর নামক স্থানে শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন বধ্যভূমি ২ (সাঠিয়া বাজার ও জাদুনগর); গণকবর ৩ (জামবাড়ীয়া গ্রাম, বালিয়াদীঘির পশ্চিমপাড় ও গোমস্তাপুর ফকিরপাড়া); স্মৃতিস্তম্ভ ১ (নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ); স্মৃতিসৌধ ২ (বাংলাদেশ রাইফেলস গেট স্মৃতিসৌধ ও নবাবগঞ্জ পৌরসভা স্মৃতিসৌধ); স্মৃতিফলক ২ (ছত্রজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে শহীদ স্মৃতিফলক ও শিবগঞ্জ উপজেলা স্মৃতিফলক) এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (১৯৯৩)।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৫.৯%; পুরুষ ৩৭.৪%, মহিলা ৩৪.৪%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আদিনা ফজলুল হক কলেজ (১৯৩৮), নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ (১৯৫৫), নবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৬৬), রহনপুর ইউসুফ আলী কলেজ (১৯৬৭), কানসাট সোলেমান ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮), নাচোল ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২), ভোলাহাট মোহেবউল্লাহ ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৬), গোমস্তাপুর সোলেমান মিঞা কলেজ, শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ্ কলেজ, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৫), কানসাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), দাদনচল এইচএম উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯), নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৭), ভোলাহাট রামেশ্বর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), নয়ানাভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৭০), চাঁদলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৯), নাচোল প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবাবগঞ্জ আলিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯৬৪), ছত্রাজিতপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৪৪), রাধাকান্তপুর সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫০)।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৭.১৩%, অকৃষি শ্রমিক ৫.১৬%, শিল্প ১.৩৫%, ব্যবসা ১৭.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৭৬%, নির্মাণ ২.৯০%, ধর্মীয় সেবা ০.১৭%, চাকরি ৪.৬৪%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৬৯% এবং অন্যান্য ৯.১৫%।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী চাঁপাই সংবাদ, গৌড় সংবাদ, সীমান্তের কাগজ, মহানন্দা, সাপ্তাহিক গৌড়বাণী, পূর্বরাগ, কাঠখড়, অশনি, মুক্তকণ্ঠ, পাগলা, প্রত্যয় (অবলুপ্ত), ফাল্গুনী (১৯৬০), আলোর পথে (১৯৬২), নবাবগঞ্জ সাময়িকী (১৯৬৪), মহানন্দা (১৯৭৮), দর্পণ (১৯৯৪), প্রতিভা বিকাশ, রহনপুর বার্তা প্রভৃতি।
লোকসংস্কৃতি গম্ভীরা, কবিগান, আলকাপগান, মেয়েলীগীত, ছড়া, উপকথা, ধাঁধাঁ উল্লেখযোগ্য। [মাযহারুল ইসলাম তরু]
আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; নবাবগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; নবাবগঞ্জ জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।