হাতিয়া উপজেলা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Robot: Automated text replacement (-'''''তথ্যসূত্র''''' +'''তথ্যসূত্র''')) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৭ নং লাইন: | ৭ নং লাইন: | ||
''প্রশাসন'' হাতিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। | ''প্রশাসন'' হাতিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। | ||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |||
| colspan="9" | উপজেলা | |||
|- | |||
| rowspan="2" | পৌরসভা || rowspan="2" | ইউনিয়ন || rowspan="2" | মৌজা || rowspan="2" | গ্রাম || rowspan="2" | জনসংখ্যা || colspan="2" | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || colspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |||
| শহর || গ্রাম || শহর || গ্রাম | |||
|- | |||
| - || ১০ || ৫২ || ৬২ || ৩৫৭৬৮ || ৩০৫৪০৮ || ২২৬ || ২৪.৯৯ || ৩৯.৪৬ | |||
|} | |||
| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |||
| colspan="9" | উপজেলা শহর | |||
|- | |||
| আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) || | |||
|- | |||
| - || ৩ || ৩৫৭৬৮ || - || ২৪.৯৯ | |||
{| class="table table-bordered table-hover" | |||
|- | |||
| colspan="9" | ইউনিয়ন | |||
|- | |||
| rowspan="2" | ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড || rowspan="2" | আয়তন (একর) || colspan="2" | লোকসংখ্যা || rowspan="2" | শিক্ষার হার (%) | |||
|- | |||
- | | পুরুষ || মহিলা | ||
|- | |||
| চরঈশ্বর ২৮ || ২৫১৪৫ || ২২১৪৮ || ২০৭৩৫ || ৪৮.৬৯ | |||
|- | |||
| চরকিং ৩৮ || ২৮২৭৬ || ২২৭১০ || ২২১৪৯ || ৪৩.৫২ | |||
|- | |||
| চানন্দী ১৯ || ৫১৫০ || ১৮৯৭ || ১৬৭০ || ২৩.৩৬ | |||
|- | |||
ইউনিয়ন | | জাহাজমারা ৫৭ || ৩৫৩৭৬ || ২৪৪৬০ || ২২৮১৯ || ৩০.২২ | ||
|- | |||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | | তমরুদ্দিন ৯৫ || ১৪৯৫৪ || ১৩৫৬৫ || ১৩৮৯৭ || ৩৭.০৯ | ||
|- | |||
| নলচিরা ৬৬ || ২২২৯৯ || ১৭৮১৬ || ১৬১৯৪ || ৪৭.৪৭ | |||
|- | |||
চরঈশ্বর ২৮ | | বুড়িরচর ৯ || ১৪৮০৮ || ২৮৩৯৯ || ২৭৭৯৬ || ৩৪.৮৪ | ||
|- | |||
চরকিং ৩৮ | | সুখচর ৮৫ || ৯৮৬৯ || ১০৭৩১ || ১০১১০ || ৩৮.৮২ | ||
|- | |||
চানন্দী ১৯ | | সোনাদিয়া ৭৬ || ৩৯৬২ || ১৭৪৬৭ || ১৭২৫৪ || ৩৬.৯৩ | ||
|- | |||
জাহাজমারা ৫৭ | | হরণী ৪৭ || ২১৫৫১ || ১৫৪৪৭ || ১৩৯১২ || ১৩.৬৯ | ||
|} | |||
তমরুদ্দিন ৯৫ | |||
নলচিরা ৬৬ | |||
বুড়িরচর ৯ | |||
সুখচর ৮৫ | |||
সোনাদিয়া ৭৬ | |||
হরণী ৪৭ | |||
''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ''সূত্র'' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। | ||
[[Image:HatiaUpazila.jpg|thumb|right|400px]] | |||
''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ১১ মে পাকবাহিনী হাতিয়া শহর আক্রমণ করে এবং ব্যাপক নির্যাতন, লুণ্ঠন ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। তারা আফাজিয়া বাজারে হামলা করে ৬ জনকে এবং ওছখালি বাজারে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে। | ''মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি'' ১৯৭১ সালের ১১ মে পাকবাহিনী হাতিয়া শহর আক্রমণ করে এবং ব্যাপক নির্যাতন, লুণ্ঠন ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। তারা আফাজিয়া বাজারে হামলা করে ৬ জনকে এবং ওছখালি বাজারে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে। | ||
ধর্মীয় | ''ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান'' মসজিদ ৪১৫, মন্দির ১৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: আফাজিয়া বাজার মসজিদ, তমরুদ্দিন বাজার মসজিদ, ওছখালী বাজার কালীমন্দির। | ||
''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৭.৯৬%; পুরুষ ৪১.২১%, মহিলা ৩৪.৬২%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১৬, মক্তব ৩৬, মাদ্রাসা ১৫৪। উলেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাতিয়া ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ (১৯৭০), হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), তমরুদ্দিন আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২২), হাতিয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১২)। | ''শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান'' গড় হার ৩৭.৯৬%; পুরুষ ৪১.২১%, মহিলা ৩৪.৬২%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১৬, মক্তব ৩৬, মাদ্রাসা ১৫৪। উলেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাতিয়া ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ (১৯৭০), হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), তমরুদ্দিন আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২২), হাতিয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১২)। | ||
৭০ নং লাইন: | ৭৫ নং লাইন: | ||
''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আলু, আখ, ডাল, তৈলবীজ, পান। | ''প্রধান কৃষি ফসল'' ধান, পাট, আলু, আখ, ডাল, তৈলবীজ, পান। | ||
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি সরিষা, আউশ ধান। | ''বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি'' সরিষা, আউশ ধান। | ||
''প্রধান ফল- | ''প্রধান ফল-ফলাদি'' আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, সুপারি, নারিকেল, খেজুর। | ||
''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' হাঁস-মুরগি ১২, হ্যাচারি ১৭। | ''মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার'' হাঁস-মুরগি ১২, হ্যাচারি ১৭। | ||
৮৬ নং লাইন: | ৯১ নং লাইন: | ||
''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৪০, মেলা ২। উছখালী, আফাজিয়া, তমরুদ্দিন, চৌমুহনী, সাগরিয়া, জাহাজমারা, নলচিরা বাজার ও খাসের হাট এবং ওছখালি বাজারের বৈশাখি মেলা উল্লেখযোগ্য। | ''হাটবাজার ও মেলা'' হাটবাজার ৪০, মেলা ২। উছখালী, আফাজিয়া, তমরুদ্দিন, চৌমুহনী, সাগরিয়া, জাহাজমারা, নলচিরা বাজার ও খাসের হাট এবং ওছখালি বাজারের বৈশাখি মেলা উল্লেখযোগ্য। | ||
''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' | ''প্রধান রপ্তানিদ্রব্য'' নারিকেল, সুপারি, পান, মধু। | ||
''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পলিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩.৭৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ''বিদ্যুৎ ব্যবহার'' এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পলিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩.৭৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। | ||
প্রাকৃতিক | ''প্রাকৃতিক সম্পদ'' উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের প্রাকৃতিক গ্যাস। | ||
''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৩১.৭৪%, ট্যাপ ৫২.৯৭%, পুকুর ৯.৪০% এবং অন্যান্য ৫.৮৮%। | ''পানীয়জলের উৎস'' নলকূপ ৩১.৭৪%, ট্যাপ ৫২.৯৭%, পুকুর ৯.৪০% এবং অন্যান্য ৫.৮৮%। | ||
৯৬ নং লাইন: | ১০১ নং লাইন: | ||
''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ১৭.৮০% (গ্রামে ১৮.৮৪% ও শহরে ১০.৮৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন এবং ৬৮.১৯% (গ্রামে ৬৭.৪০% ও শহরে ৭৩.৪৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১৪.০২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ''স্যানিটেশন ব্যবস্থা'' এ উপজেলার ১৭.৮০% (গ্রামে ১৮.৮৪% ও শহরে ১০.৮৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন এবং ৬৮.১৯% (গ্রামে ৬৭.৪০% ও শহরে ৭৩.৪৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১৪.০২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই। | ||
''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, উপস্বাস্থ্য-কেন্দ্র ৬। | ''স্বাস্থ্যকেন্দ্র'' উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, উপস্বাস্থ্য-কেন্দ্র ৬। | ||
''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর এবং ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার উপকূলবর্তী এলাকায় ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং কয়েক লক্ষাধিক লোক মারা যায়। | ''প্রাকৃতিক দুর্যোগ'' ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর এবং ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার উপকূলবর্তী এলাকায় ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং কয়েক লক্ষাধিক লোক মারা যায়। | ||
''এনজিও'' আশা, প্রশিকা, কারিতাস, কেয়ার। | ''এনজিও'' আশা, প্রশিকা, কারিতাস, কেয়ার। [মো. তৌহিদ হোসেন চৌধুরী] | ||
[মো. তৌহিদ হোসেন চৌধুরী] | |||
'''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাতিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | '''তথ্যসূত্র''' আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাতিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭। | ||
[[en:Hatiya Upazila]] | [[en:Hatiya Upazila]] |
০৬:১৮, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
হাতিয়া উপজেলা (নোয়াখালী জেলা) আয়তন: ১৫০৮.২৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°০৭´ থেকে ২২°৩৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৬´ থেকে ৯১°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে সুবর্ণচর ও রামগতি উপজেলা, দক্ষিণ ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে মনপুরা ও তজুদ্দিন উপজেলা।
জনসংখ্যা ৩৪১১৭৬; পুরুষ ১৭৪৬৪০, মহিলা ১৬৬৫৩৬। মুসলিম ৩০৮৪১৬, হিন্দু ৩২৭১৪, বৌদ্ধ ২১ এবং অন্যান্য ২৫।
জলাশয় মেঘনা নদী এবং শাহবাজপুর চ্যানেল ও হাতিয়া চ্যানেল উল্লেখযোগ্য।
প্রশাসন হাতিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
উপজেলা | ||||||||
পৌরসভা | ইউনিয়ন | মৌজা | গ্রাম | জনসংখ্যা | ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) | ||
শহর | গ্রাম | শহর | গ্রাম | |||||
- | ১০ | ৫২ | ৬২ | ৩৫৭৬৮ | ৩০৫৪০৮ | ২২৬ | ২৪.৯৯ | ৩৯.৪৬ |
| class="table table-bordered table-hover" |- | colspan="9" | উপজেলা শহর |- | আয়তন (বর্গ কিমি) || মৌজা || লোকসংখ্যা || ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) || শিক্ষার হার (%) || |- | - || ৩ || ৩৫৭৬৮ || - || ২৪.৯৯
ইউনিয়ন | ||||||||
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড | আয়তন (একর) | লোকসংখ্যা | শিক্ষার হার (%) | |||||
পুরুষ | মহিলা | |||||||
চরঈশ্বর ২৮ | ২৫১৪৫ | ২২১৪৮ | ২০৭৩৫ | ৪৮.৬৯ | ||||
চরকিং ৩৮ | ২৮২৭৬ | ২২৭১০ | ২২১৪৯ | ৪৩.৫২ | ||||
চানন্দী ১৯ | ৫১৫০ | ১৮৯৭ | ১৬৭০ | ২৩.৩৬ | ||||
জাহাজমারা ৫৭ | ৩৫৩৭৬ | ২৪৪৬০ | ২২৮১৯ | ৩০.২২ | ||||
তমরুদ্দিন ৯৫ | ১৪৯৫৪ | ১৩৫৬৫ | ১৩৮৯৭ | ৩৭.০৯ | ||||
নলচিরা ৬৬ | ২২২৯৯ | ১৭৮১৬ | ১৬১৯৪ | ৪৭.৪৭ | ||||
বুড়িরচর ৯ | ১৪৮০৮ | ২৮৩৯৯ | ২৭৭৯৬ | ৩৪.৮৪ | ||||
সুখচর ৮৫ | ৯৮৬৯ | ১০৭৩১ | ১০১১০ | ৩৮.৮২ | ||||
সোনাদিয়া ৭৬ | ৩৯৬২ | ১৭৪৬৭ | ১৭২৫৪ | ৩৬.৯৩ | ||||
হরণী ৪৭ | ২১৫৫১ | ১৫৪৪৭ | ১৩৯১২ | ১৩.৬৯ |
সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালের ১১ মে পাকবাহিনী হাতিয়া শহর আক্রমণ করে এবং ব্যাপক নির্যাতন, লুণ্ঠন ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। তারা আফাজিয়া বাজারে হামলা করে ৬ জনকে এবং ওছখালি বাজারে ২ জনকে গুলি করে হত্যা করে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪১৫, মন্দির ১৪। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: আফাজিয়া বাজার মসজিদ, তমরুদ্দিন বাজার মসজিদ, ওছখালী বাজার কালীমন্দির।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৩৭.৯৬%; পুরুষ ৪১.২১%, মহিলা ৩৪.৬২%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১৬, মক্তব ৩৬, মাদ্রাসা ১৫৪। উলেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: হাতিয়া ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৯), হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ (১৯৭০), হাতিয়া ইউনিয়ন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), তমরুদ্দিন আহমদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯২২), হাতিয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (১৯১২)।
পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: হাতিয়ার কথা; পাক্ষিক: হাতিয়া কণ্ঠ।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ২২, ক্লাব ২৯।
দর্শনীয় স্থান বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নিঝুম দ্বীপ। দ্বীপের দক্ষিণ ও পশ্চিম কোণে বিস্তৃত সমুদ্র সৈকত থেকে সুর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকন করা যায়। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সরকার দ্বীপটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রায় ৪০ হাজার একর এলাকাকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তাছাড়াও দ্বীপটির মাছ, মধু ও শুটকী দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.৩৮%, অকৃষি শ্রমিক ৫.২৭%, শিল্প ০.৪৮%, ব্যবসা ১১.৯৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৩৩%, চাকরি ৪.১৯%, নির্মাণ ১%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭২% এবং অন্যান্য ৯.২৮%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৫.০৩%, ভূমিহীন ৫৪.৯৭%। শহরে ১৪.৬২% এবং গ্রামে ৪৯.৬২% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আলু, আখ, ডাল, তৈলবীজ, পান।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি সরিষা, আউশ ধান।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, সুপারি, নারিকেল, খেজুর।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ১২, হ্যাচারি ১৭।
যোগাযোগ বিশেষত্ব কাঁচারাস্তা ৭৫০ কিমি, আধা-কাঁচারাস্তা ২২০ কিমি, পাকারাস্তা ৩৮০।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, আটাকল, বরফকল, মরিচকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।
কুটিরশিল্প পাটশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, কারুশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ, কাঠের কাজ, পিতলের কাজ।
হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪০, মেলা ২। উছখালী, আফাজিয়া, তমরুদ্দিন, চৌমুহনী, সাগরিয়া, জাহাজমারা, নলচিরা বাজার ও খাসের হাট এবং ওছখালি বাজারের বৈশাখি মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য নারিকেল, সুপারি, পান, মধু।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পলিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩.৭৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদ উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের প্রাকৃতিক গ্যাস।
পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৩১.৭৪%, ট্যাপ ৫২.৯৭%, পুকুর ৯.৪০% এবং অন্যান্য ৫.৮৮%।
স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ১৭.৮০% (গ্রামে ১৮.৮৪% ও শহরে ১০.৮৫%) পরিবার স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন এবং ৬৮.১৯% (গ্রামে ৬৭.৪০% ও শহরে ৭৩.৪৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ১৪.০২% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১০, উপস্বাস্থ্য-কেন্দ্র ৬।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর এবং ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার উপকূলবর্তী এলাকায় ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং কয়েক লক্ষাধিক লোক মারা যায়।
এনজিও আশা, প্রশিকা, কারিতাস, কেয়ার। [মো. তৌহিদ হোসেন চৌধুরী]
তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; হাতিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।