ল্যান্সডাউন, লর্ড: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''ল্যান্সডাউন, লর্ড''' (১৮৮৮-১৮৯৪) ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয়। তিনি ১৮৪৫ সালের ১৪ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ইতিপূর্বে তিনি কানাডার গভর্নর জেনারেল ও ইংল্যান্ডের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের গভর্নর জেনারেল পদ লাভের পূর্বে তিনি রক্ষণশীল দলের ডেপুটি লিডার ছিলেন। | '''ল্যান্সডাউন, লর্ড''' (১৮৮৮-১৮৯৪) ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয়। তিনি ১৮৪৫ সালের ১৪ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ইতিপূর্বে তিনি কানাডার গভর্নর জেনারেল ও ইংল্যান্ডের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের গভর্নর জেনারেল পদ লাভের পূর্বে তিনি রক্ষণশীল দলের ডেপুটি লিডার ছিলেন। | ||
[[Image:LansdowneLord.jpg|thumb|right|400px|লর্ড ল্যান্সডাউন]] | |||
শান্তি, প্রগতি এবং কিছু উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ভারতে ল্যান্সডাউনের কার্যকাল পরিচিত। মণিপুর রাজ্যের প্রধান সেনাপতি ঐ রাজ্য পরিদর্শনে আসা আসামের চিফ কমিশনারসহ কয়েকজন ইংরেজকে হত্যা করলে তাঁকে মণিপুরে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অভ্যুত্থান দমন করা হয় এবং প্রধান সেনাপতিকে বন্দি করে ফাঁসি দেওয়া হয়। | শান্তি, প্রগতি এবং কিছু উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ভারতে ল্যান্সডাউনের কার্যকাল পরিচিত। মণিপুর রাজ্যের প্রধান সেনাপতি ঐ রাজ্য পরিদর্শনে আসা আসামের চিফ কমিশনারসহ কয়েকজন ইংরেজকে হত্যা করলে তাঁকে মণিপুরে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অভ্যুত্থান দমন করা হয় এবং প্রধান সেনাপতিকে বন্দি করে ফাঁসি দেওয়া হয়। | ||
তাঁর সময়ে রেলপথ ও সেচব্যবস্থা সম্প্রসারিত হয়েছিল। ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়া অ্যাক্ট পাস ছিল তাঁর সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর ফলে সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইন পরিষদ (Legislative Councils) নতুনভাবে গঠিত হয়েছিল। নতুন সদস্যদেরকে অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা এবং এগুলির ব্যাখ্যা করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। ইতঃপূর্বে সরকার সদস্যদের মনোনীত করত। কিন্তু এই আইন পাস হওয়ার পর পৌরসভা কমিটিসমূহ, জেলাবোর্ডসমূহ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে সদস্যরা নির্বাচিত হতেন। পরিষদের কার্যাদি বেশি প্রতিনিধিত্বমূলক করার উদ্দেশ্যে এ ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছিল। তাঁর সময়ে সোনার তুলনায় রূপার দাম কমে যায়। এর ফলে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ এমন একটি দেশের কাছে ভারত ঋণী ছিল যার অর্থবিনিময় নির্ধারিত হতো সোনার মাধ্যমে। এই সমস্যার মোকাবিলা করতে ল্যান্সডাউন আয়কর ও লবণকর বৃদ্ধি করেন এবং বিনিময়ের হার টাকা প্রতি ১ শিলিং ৪ পেন্স নির্ধারণ করেন। | তাঁর সময়ে রেলপথ ও সেচব্যবস্থা সম্প্রসারিত হয়েছিল। ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়া অ্যাক্ট পাস ছিল তাঁর সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর ফলে সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইন পরিষদ (Legislative Councils) নতুনভাবে গঠিত হয়েছিল। নতুন সদস্যদেরকে অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা এবং এগুলির ব্যাখ্যা করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। ইতঃপূর্বে সরকার সদস্যদের মনোনীত করত। কিন্তু এই আইন পাস হওয়ার পর পৌরসভা কমিটিসমূহ, জেলাবোর্ডসমূহ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে সদস্যরা নির্বাচিত হতেন। পরিষদের কার্যাদি বেশি প্রতিনিধিত্বমূলক করার উদ্দেশ্যে এ ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছিল। তাঁর সময়ে সোনার তুলনায় রূপার দাম কমে যায়। এর ফলে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ এমন একটি দেশের কাছে ভারত ঋণী ছিল যার অর্থবিনিময় নির্ধারিত হতো সোনার মাধ্যমে। এই সমস্যার মোকাবিলা করতে ল্যান্সডাউন আয়কর ও লবণকর বৃদ্ধি করেন এবং বিনিময়ের হার টাকা প্রতি ১ শিলিং ৪ পেন্স নির্ধারণ করেন। | ||
তিনি ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অগ্রসরনীতি (Forward Policy) অনুসরণ করেন। চীন ব্রিটিশদের বার্মা বিজয় স্বীকার করে নেয়, ১৮৮৮ সালে সিকিমরাজ্য ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তিববতের সঙ্গে এর সীমানা চিহ্নিত করা হয়। কাবুলে একটি মিশন ভারত-আফগান সীমান্ত চিহ্নিতকরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মরটিমার ডুরান্ড ব্রিটিশদূত হিসেবে আফগানিস্তানে যান এবং সেখানকার আমীরের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। আফগান আমীর ভারত-আফগান সীমান্ত নির্ধারণকারী বিখ্যাত ডুরান্ড লাইন স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন। | তিনি ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অগ্রসরনীতি (Forward Policy) অনুসরণ করেন। চীন ব্রিটিশদের বার্মা বিজয় স্বীকার করে নেয়, ১৮৮৮ সালে সিকিমরাজ্য ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তিববতের সঙ্গে এর সীমানা চিহ্নিত করা হয়। কাবুলে একটি মিশন ভারত-আফগান সীমান্ত চিহ্নিতকরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মরটিমার ডুরান্ড ব্রিটিশদূত হিসেবে আফগানিস্তানে যান এবং সেখানকার আমীরের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। আফগান আমীর ভারত-আফগান সীমান্ত নির্ধারণকারী বিখ্যাত ডুরান্ড লাইন স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন। | ||
১৮৯৪ সালে ভারত হতে অবসর গ্রহণের পর ইংল্যান্ডের প্রতিরক্ষা সচিব নিযুক্ত হন এবং ১৮৯৫ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯২৭ সালে ল্যান্সডাউনের মৃত্যু হয়। [কে.এম মোহসীন] | ১৮৯৪ সালে ভারত হতে অবসর গ্রহণের পর ইংল্যান্ডের প্রতিরক্ষা সচিব নিযুক্ত হন এবং ১৮৯৫ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯২৭ সালে ল্যান্সডাউনের মৃত্যু হয়। [কে.এম মোহসীন] | ||
[[en:Lansdowne, Lord]] | [[en:Lansdowne, Lord]] |
০৪:২৯, ১২ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
ল্যান্সডাউন, লর্ড (১৮৮৮-১৮৯৪) ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয়। তিনি ১৮৪৫ সালের ১৪ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ইতিপূর্বে তিনি কানাডার গভর্নর জেনারেল ও ইংল্যান্ডের পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের গভর্নর জেনারেল পদ লাভের পূর্বে তিনি রক্ষণশীল দলের ডেপুটি লিডার ছিলেন।
শান্তি, প্রগতি এবং কিছু উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ভারতে ল্যান্সডাউনের কার্যকাল পরিচিত। মণিপুর রাজ্যের প্রধান সেনাপতি ঐ রাজ্য পরিদর্শনে আসা আসামের চিফ কমিশনারসহ কয়েকজন ইংরেজকে হত্যা করলে তাঁকে মণিপুরে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অভ্যুত্থান দমন করা হয় এবং প্রধান সেনাপতিকে বন্দি করে ফাঁসি দেওয়া হয়।
তাঁর সময়ে রেলপথ ও সেচব্যবস্থা সম্প্রসারিত হয়েছিল। ১৮৭২ সালের ইন্ডিয়া অ্যাক্ট পাস ছিল তাঁর সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর ফলে সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইন পরিষদ (Legislative Councils) নতুনভাবে গঠিত হয়েছিল। নতুন সদস্যদেরকে অর্থনৈতিক বিষয়ে আলোচনা এবং এগুলির ব্যাখ্যা করার অধিকার দেওয়া হয়েছিল। ইতঃপূর্বে সরকার সদস্যদের মনোনীত করত। কিন্তু এই আইন পাস হওয়ার পর পৌরসভা কমিটিসমূহ, জেলাবোর্ডসমূহ, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার মাধ্যমে সদস্যরা নির্বাচিত হতেন। পরিষদের কার্যাদি বেশি প্রতিনিধিত্বমূলক করার উদ্দেশ্যে এ ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছিল। তাঁর সময়ে সোনার তুলনায় রূপার দাম কমে যায়। এর ফলে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ এমন একটি দেশের কাছে ভারত ঋণী ছিল যার অর্থবিনিময় নির্ধারিত হতো সোনার মাধ্যমে। এই সমস্যার মোকাবিলা করতে ল্যান্সডাউন আয়কর ও লবণকর বৃদ্ধি করেন এবং বিনিময়ের হার টাকা প্রতি ১ শিলিং ৪ পেন্স নির্ধারণ করেন।
তিনি ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অগ্রসরনীতি (Forward Policy) অনুসরণ করেন। চীন ব্রিটিশদের বার্মা বিজয় স্বীকার করে নেয়, ১৮৮৮ সালে সিকিমরাজ্য ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং তিববতের সঙ্গে এর সীমানা চিহ্নিত করা হয়। কাবুলে একটি মিশন ভারত-আফগান সীমান্ত চিহ্নিতকরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মরটিমার ডুরান্ড ব্রিটিশদূত হিসেবে আফগানিস্তানে যান এবং সেখানকার আমীরের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। আফগান আমীর ভারত-আফগান সীমান্ত নির্ধারণকারী বিখ্যাত ডুরান্ড লাইন স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন।
১৮৯৪ সালে ভারত হতে অবসর গ্রহণের পর ইংল্যান্ডের প্রতিরক্ষা সচিব নিযুক্ত হন এবং ১৮৯৫ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯২৭ সালে ল্যান্সডাউনের মৃত্যু হয়। [কে.এম মোহসীন]