সিফিলিস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৮ নং লাইন: | ৮ নং লাইন: | ||
সিফিলিস শুরু থেকে তৃতীয় পর্যায়ে (tertiary syphilis) পৌঁছতে প্রায় ৩-১৫ বছর, কখনও আরও বেশি সময় লেগে যায়। এ সময় নরম রাবারের মতো গাম্মা (gumma) নামে পরিচিত টিউমার দেখা দেয়। চোখ, যকৃৎ, ফুসফুস, পাকস্থলী, যৌনাঙ্গ, এমনকি শরীরের যেকোন অংশে এগুলি হতে পারে। তৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিস ব্যথাহীন হতে পারে এবং তখন টিউমার ছাড়া অন্য কোন লক্ষণ চোখে পড়ে না। আবার কখনও ক্ষত ও তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ক্ষতগুলি সাধারণত তালু, নাকের পর্দা ও গলায় হয়ে থাকে। এ রোগ শরীরে বিভিন্ন কোষকলা ও প্রত্যঙ্গ, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র, হূৎপিন্ডের প্রাচীর ও কপাটিকা আক্রমণ করে। আক্রান্ত রোগী মারাত্মক মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায় ভোগে যাহা General Paralysis of Insane (GPI) নামে অভিহিত। | সিফিলিস শুরু থেকে তৃতীয় পর্যায়ে (tertiary syphilis) পৌঁছতে প্রায় ৩-১৫ বছর, কখনও আরও বেশি সময় লেগে যায়। এ সময় নরম রাবারের মতো গাম্মা (gumma) নামে পরিচিত টিউমার দেখা দেয়। চোখ, যকৃৎ, ফুসফুস, পাকস্থলী, যৌনাঙ্গ, এমনকি শরীরের যেকোন অংশে এগুলি হতে পারে। তৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিস ব্যথাহীন হতে পারে এবং তখন টিউমার ছাড়া অন্য কোন লক্ষণ চোখে পড়ে না। আবার কখনও ক্ষত ও তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ক্ষতগুলি সাধারণত তালু, নাকের পর্দা ও গলায় হয়ে থাকে। এ রোগ শরীরে বিভিন্ন কোষকলা ও প্রত্যঙ্গ, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র, হূৎপিন্ডের প্রাচীর ও কপাটিকা আক্রমণ করে। আক্রান্ত রোগী মারাত্মক মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায় ভোগে যাহা General Paralysis of Insane (GPI) নামে অভিহিত। | ||
মায়ের সিফিলিস থাকলে গর্ভস্থ সন্তান সহজেই সিফিলিসে আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি এত মারাত্মক যে তাতে শিশু মৃত, বিকলাঙ্গ, এমনকি অন্ধ হয়েও জন্মাতে পারে। এ ধরনের শিশুকে জন্মের সময় স্বাভাবিক দেখালেও তাদের কম বৃদ্ধি, কানে না-শোনা, পা বাঁকা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এক সময় বাংলাদেশে সিফিলিস রোগীর সংখ্যা অত্যধিক ছিল। পেনিসিলিনের ব্যাপক ব্যবহারের কল্যাণে সিলিফিসের হার কমেছে। রোগের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের চিকিৎসায় আ্যন্টিবায়োটিকস ব্যবহূত হয়ে থাকে। রোগীর উচিত ডাক্তারের কাছে যৌনসঙ্গীর পরিচয় দেওয়া এবং তারও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। [মো. | মায়ের সিফিলিস থাকলে গর্ভস্থ সন্তান সহজেই সিফিলিসে আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি এত মারাত্মক যে তাতে শিশু মৃত, বিকলাঙ্গ, এমনকি অন্ধ হয়েও জন্মাতে পারে। এ ধরনের শিশুকে জন্মের সময় স্বাভাবিক দেখালেও তাদের কম বৃদ্ধি, কানে না-শোনা, পা বাঁকা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এক সময় বাংলাদেশে সিফিলিস রোগীর সংখ্যা অত্যধিক ছিল। পেনিসিলিনের ব্যাপক ব্যবহারের কল্যাণে সিলিফিসের হার কমেছে। রোগের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের চিকিৎসায় আ্যন্টিবায়োটিকস ব্যবহূত হয়ে থাকে। রোগীর উচিত ডাক্তারের কাছে যৌনসঙ্গীর পরিচয় দেওয়া এবং তারও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। [মো. শহীদুল্লহ] | ||
[[en:Syphilis]] | [[en:Syphilis]] |
০৬:১৪, ২২ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
সিফিলিস Treponema pallidum নামক সর্পিলাকার জীবাণু সংক্রমণঘটিত মারাত্মক যৌনরোগ। অরক্ষিত যৌনমিলনের মাধ্যমেই রোগটি ছড়ায়। সংক্রমিত গর্ভবতী মা থেকে গর্ভস্থ শিশুও সিফিলিসে আক্রান্ত হতে পারে।
সিফিলিসের তিনটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তরে (primary syphilis) আক্রান্তদের সঙ্গে যৌনসঙ্গমের ১০-৯০ দিনের মধ্যে যৌনাঙ্গে একটি ছোট, লাল পুঁজসহ ফোসকা বা খোলা ক্ষত দেখা দেয়। আক্রান্ত রোগীর ক্ষতের সংস্পর্শে শরীরের যেকোন অংশেই ক্ষত হতে পারে, তবে সাধারণত যৌনাঙ্গেই ক্ষত দেখা দেয়। এটি ব্যথাহীন ও রক্তহীন হয়। এতে চাপ দিলে রস বের হয় এবং তা ব্যাকটেরিয়ায় পরিপূর্ণ থাকে। একে শ্যাংকার বা উপদংশক্ষত বলা হয়। শ্যাংকার সাধারণত চোখে পড়ে না এবং রোগী অজান্তেই অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে। এটি শুকাতে ১০-৪০ দিন সময় লাগে এবং প্রাথমিক স্তরে প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত সামান্য বিধায় সিফিলিসের আক্রমণ বলে বোঝাই যায় না।
প্রাথমিক সিফিলিস শুরু হবার দুই মাস পর দ্বিতীয় পর্যায়ের (secondary syphilis) লক্ষণ দেখা দেয়। ইতোমধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। জীবাণু সংক্রমণের উলেখযোগ্য লক্ষণ, গা ম্যাজ ম্যাজ করা, মাথা ধরা, ক্ষুধামন্দা, বমিভাব, অল্প অল্প জ্বর, চুল পড়ে যাওয়া এবং অস্থি ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা দেখা দেওয়া। রোগীর ত্বকে এ সময় হালকা লালচে দাগ দেখা দেয়, যা সাধারণত চুলকায় না, মুখে বা গলার ঝিলিতে সাদা ঘা এবং শরীরের ভেজা অংশগুলিতে ফুসকুরি ওঠে। এ পর্যায়ে রোগ খুবই সংক্রামক অবস্থায় থাকে এবং চুম্বনের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এ লক্ষণগুলি সাধারণত তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস, এমনকি দুই বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
সিফিলিস শুরু থেকে তৃতীয় পর্যায়ে (tertiary syphilis) পৌঁছতে প্রায় ৩-১৫ বছর, কখনও আরও বেশি সময় লেগে যায়। এ সময় নরম রাবারের মতো গাম্মা (gumma) নামে পরিচিত টিউমার দেখা দেয়। চোখ, যকৃৎ, ফুসফুস, পাকস্থলী, যৌনাঙ্গ, এমনকি শরীরের যেকোন অংশে এগুলি হতে পারে। তৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিস ব্যথাহীন হতে পারে এবং তখন টিউমার ছাড়া অন্য কোন লক্ষণ চোখে পড়ে না। আবার কখনও ক্ষত ও তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ক্ষতগুলি সাধারণত তালু, নাকের পর্দা ও গলায় হয়ে থাকে। এ রোগ শরীরে বিভিন্ন কোষকলা ও প্রত্যঙ্গ, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র, হূৎপিন্ডের প্রাচীর ও কপাটিকা আক্রমণ করে। আক্রান্ত রোগী মারাত্মক মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতায় ভোগে যাহা General Paralysis of Insane (GPI) নামে অভিহিত।
মায়ের সিফিলিস থাকলে গর্ভস্থ সন্তান সহজেই সিফিলিসে আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি এত মারাত্মক যে তাতে শিশু মৃত, বিকলাঙ্গ, এমনকি অন্ধ হয়েও জন্মাতে পারে। এ ধরনের শিশুকে জন্মের সময় স্বাভাবিক দেখালেও তাদের কম বৃদ্ধি, কানে না-শোনা, পা বাঁকা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। এক সময় বাংলাদেশে সিফিলিস রোগীর সংখ্যা অত্যধিক ছিল। পেনিসিলিনের ব্যাপক ব্যবহারের কল্যাণে সিলিফিসের হার কমেছে। রোগের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের চিকিৎসায় আ্যন্টিবায়োটিকস ব্যবহূত হয়ে থাকে। রোগীর উচিত ডাক্তারের কাছে যৌনসঙ্গীর পরিচয় দেওয়া এবং তারও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। [মো. শহীদুল্লহ]