শেখ জালালুদ্দীন তাবরিজি (রঃ): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''শেখ আলাউল হক | '''শেখ আলাউল হক (রঃ)''' পান্ডুয়ার সুফী-সাধক ও [[শেখ অাঁখি সিরাজউদ্দীন উসমান (রঃ)|শেখ অাঁখি সিরাজউদ্দীন উসমান ]]-এর শিষ্য। তাঁর পিতা উমর বিন আসাদ খালিদি লাহোরের অধিবাসী ছিলেন। তিনি নিজেকে বিখ্যাত আরব সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদের বংশধর বলে দাবি করতেন। বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পর তিনি পান্ডুয়ায় বসতি স্থাপন করেন। এখানে তাঁর পুত্র আলাউল হক জন্মগ্রহণ করেন। উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করায় বালকটি একজন জ্ঞানী পন্ডিতরূপে বেড়ে উঠে। | ||
আধ্যাত্মিক জ্ঞানে (যা শুধু দীক্ষিত ব্যক্তিরাই বুঝতে পারেন) প্রশিক্ষণ লাভ করলেও তিনি তাঁর সম্পদ ও শিক্ষা সম্পর্কে এতই গর্বিত ছিলেন যে, তিনি গঞ্জ-ই নৌবত (সম্পদের প্রভু) উপাধি ধারণ করেন। দিল্লির শেখ নিজামউদ্দীন আউলিয়া (রঃ) তাঁর শিষ্য ও প্রতিনিধি শেখ অাঁখি সিরাজউদ্দীন উসমানকে বাংলায় গিয়ে ইসলাম প্রচার করতে নির্দেশ দেন। শেখ অাঁখি পান্ডুয়ায় পৌঁছলে আলাউল হক তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। | আধ্যাত্মিক জ্ঞানে (যা শুধু দীক্ষিত ব্যক্তিরাই বুঝতে পারেন) প্রশিক্ষণ লাভ করলেও তিনি তাঁর সম্পদ ও শিক্ষা সম্পর্কে এতই গর্বিত ছিলেন যে, তিনি গঞ্জ-ই নৌবত (সম্পদের প্রভু) উপাধি ধারণ করেন। দিল্লির শেখ নিজামউদ্দীন আউলিয়া (রঃ) তাঁর শিষ্য ও প্রতিনিধি শেখ অাঁখি সিরাজউদ্দীন উসমানকে বাংলায় গিয়ে ইসলাম প্রচার করতে নির্দেশ দেন। শেখ অাঁখি পান্ডুয়ায় পৌঁছলে আলাউল হক তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। | ||
৮ নং লাইন: | ৮ নং লাইন: | ||
আলাউল হকের অলৌকিক ক্ষমতা এবং দানশীলতা সম্পর্কে এখনও বহু কাহিনী প্রচলিত আছে। কথিত আছে যে, তিনি তাঁর ছাত্র, ভিক্ষুক, পথিক এবং দুস্থদের খাওয়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেন। তিনি এত অর্থ ব্যয় করতেন যে, সুলতানও তা করতে পারতেন না এবং পরে সুলতান ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে সোনারগাঁওয়ে নির্বাসিত করেন। দুবছর পরে তাঁকে পান্ডুয়ায় তাঁর মূল খানকায় ফিরে আসার অনুমতি প্রদান করা হয়। | আলাউল হকের অলৌকিক ক্ষমতা এবং দানশীলতা সম্পর্কে এখনও বহু কাহিনী প্রচলিত আছে। কথিত আছে যে, তিনি তাঁর ছাত্র, ভিক্ষুক, পথিক এবং দুস্থদের খাওয়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেন। তিনি এত অর্থ ব্যয় করতেন যে, সুলতানও তা করতে পারতেন না এবং পরে সুলতান ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে সোনারগাঁওয়ে নির্বাসিত করেন। দুবছর পরে তাঁকে পান্ডুয়ায় তাঁর মূল খানকায় ফিরে আসার অনুমতি প্রদান করা হয়। | ||
শেখ আলাউল হক ছোটি দরগায় ([[শেখ আলাউল হক (রঃ)| | শেখ আলাউল হক ছোটি দরগায় ([[শেখ আলাউল হক (রঃ)|শেখ আলাউল হক (রঃ)]] এর বড়ি দরগাহ থেকে একে আলাদা করার জন্য এরূপ নামকরণ করা হয়েছে) তাঁর পুত্র শেখ নূর কুতুব আলমের পাশে শায়িত আছেন। বাংলার সুলতানদের অনেক আরবি শিলালিপিতে তাঁর নাম শ্রদ্ধাসহকারে উল্লেখ করা হয়েছে। | ||
তাঁর মৃত্যুর তারিখ সঠিকভাবে জানা যায় না। আখবর-উল-আখিয়ার-এর বর্ণনানুযায়ী তাঁর ৮০০ হিজরি/১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু হয়। অথচ সমাধি ভবনের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের নিকট সংরক্ষিত একটি গ্রন্থানুসারে তিনি ৭৮৬ হিজরি/১৩৮৪ খ্রিস্টাব্দে মারা যান বলে জানা যায়। [আবদুল করিম] | তাঁর মৃত্যুর তারিখ সঠিকভাবে জানা যায় না। আখবর-উল-আখিয়ার-এর বর্ণনানুযায়ী তাঁর ৮০০ হিজরি/১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু হয়। অথচ সমাধি ভবনের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের নিকট সংরক্ষিত একটি গ্রন্থানুসারে তিনি ৭৮৬ হিজরি/১৩৮৪ খ্রিস্টাব্দে মারা যান বলে জানা যায়। [আবদুল করিম] |
১০:০৭, ১৬ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
শেখ আলাউল হক (রঃ) পান্ডুয়ার সুফী-সাধক ও শেখ অাঁখি সিরাজউদ্দীন উসমান -এর শিষ্য। তাঁর পিতা উমর বিন আসাদ খালিদি লাহোরের অধিবাসী ছিলেন। তিনি নিজেকে বিখ্যাত আরব সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদের বংশধর বলে দাবি করতেন। বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার পর তিনি পান্ডুয়ায় বসতি স্থাপন করেন। এখানে তাঁর পুত্র আলাউল হক জন্মগ্রহণ করেন। উপযুক্ত শিক্ষা প্রদান করায় বালকটি একজন জ্ঞানী পন্ডিতরূপে বেড়ে উঠে।
আধ্যাত্মিক জ্ঞানে (যা শুধু দীক্ষিত ব্যক্তিরাই বুঝতে পারেন) প্রশিক্ষণ লাভ করলেও তিনি তাঁর সম্পদ ও শিক্ষা সম্পর্কে এতই গর্বিত ছিলেন যে, তিনি গঞ্জ-ই নৌবত (সম্পদের প্রভু) উপাধি ধারণ করেন। দিল্লির শেখ নিজামউদ্দীন আউলিয়া (রঃ) তাঁর শিষ্য ও প্রতিনিধি শেখ অাঁখি সিরাজউদ্দীন উসমানকে বাংলায় গিয়ে ইসলাম প্রচার করতে নির্দেশ দেন। শেখ অাঁখি পান্ডুয়ায় পৌঁছলে আলাউল হক তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
আলাউল হক তাঁর শিক্ষকের প্রতি এতই অনুগত হয়ে পড়েন যে, তাঁর আত্মীয়স্বজনরা, যাঁদের অনেকেই ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাঁর শিক্ষকের মৃত্যুর পর আলাউল হক নিজে পান্ডুয়াতে একটি খানকাহ প্রতিষ্ঠা করে আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। অনেক ছাত্র তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নেন। তাঁর শিষ্যদের মধ্যে দুজন বিশেষ খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। তাঁরা হলেন তাঁর পুত্র শেখ নূরুদ্দীন নূরুল হক (নূর কুতুব আলম) এবং জৌনপুরের আশরাফ জাহাঙ্গীর সিমনানি।
আলাউল হকের অলৌকিক ক্ষমতা এবং দানশীলতা সম্পর্কে এখনও বহু কাহিনী প্রচলিত আছে। কথিত আছে যে, তিনি তাঁর ছাত্র, ভিক্ষুক, পথিক এবং দুস্থদের খাওয়ানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতেন। তিনি এত অর্থ ব্যয় করতেন যে, সুলতানও তা করতে পারতেন না এবং পরে সুলতান ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে তাঁকে সোনারগাঁওয়ে নির্বাসিত করেন। দুবছর পরে তাঁকে পান্ডুয়ায় তাঁর মূল খানকায় ফিরে আসার অনুমতি প্রদান করা হয়।
শেখ আলাউল হক ছোটি দরগায় (শেখ আলাউল হক (রঃ) এর বড়ি দরগাহ থেকে একে আলাদা করার জন্য এরূপ নামকরণ করা হয়েছে) তাঁর পুত্র শেখ নূর কুতুব আলমের পাশে শায়িত আছেন। বাংলার সুলতানদের অনেক আরবি শিলালিপিতে তাঁর নাম শ্রদ্ধাসহকারে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাঁর মৃত্যুর তারিখ সঠিকভাবে জানা যায় না। আখবর-উল-আখিয়ার-এর বর্ণনানুযায়ী তাঁর ৮০০ হিজরি/১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু হয়। অথচ সমাধি ভবনের রক্ষণাবেক্ষণকারীদের নিকট সংরক্ষিত একটি গ্রন্থানুসারে তিনি ৭৮৬ হিজরি/১৩৮৪ খ্রিস্টাব্দে মারা যান বলে জানা যায়। [আবদুল করিম]