যশোর জিলা স্কুল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''যশোর জিলা স্কুল''' বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন স্কুল। প্রতিষ্ঠা ১৮৩৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ১৮৪৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বার্ষিক তিনশত টাকার অনুদানসহ নলদী পরগনার জমিদার পত্নী রানী কাত্যায়নী, বাবু রামরতন, নীলকমল পাল চৌধুরী, রাজা বরদাকান্ত রায়, [[ঠাকুর, প্রিন্স দ্বারকানাথ|দ্বারকানাথ ঠাকুর]], মৌলভী আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ করিম, প্রাণনাথ চৌধুরী, শুকদাশ রায়, রাধামোহন ঘোষচৌধুরী, কালীকান্ত পোদ্দার প্রমুখের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তায় প্রথমে যশোর মডেল স্কুল গড়ে ওঠে। রানী কাত্যায়নীর কাচারি বাড়িতে ১৩২ জন ছাত্র নিয়ে বিদ্যালয়ের কাজ সর্বপ্রথম শুরু হয়। তখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি ও ভবন কোনোটাই ছিল না। পরবর্তীকালে যশোরের মৌজায় স্কুলের জন্য ৭.৮০ একর জমি পাওয়া যায় এবং সেখানে ভবন নির্মানের পর স্কুলটি এখানে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৭২ সালে যশোর মডেল স্কুল পরিবর্তন করে এর নাম রাখা হয় ‘যশোর জিলা স্কুল’। | '''যশোর জিলা স্কুল''' বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন স্কুল। প্রতিষ্ঠা ১৮৩৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ১৮৪৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বার্ষিক তিনশত টাকার অনুদানসহ নলদী পরগনার জমিদার পত্নী রানী কাত্যায়নী, বাবু রামরতন, নীলকমল পাল চৌধুরী, রাজা বরদাকান্ত রায়, [[ঠাকুর, প্রিন্স দ্বারকানাথ|দ্বারকানাথ ঠাকুর]], মৌলভী আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ করিম, প্রাণনাথ চৌধুরী, শুকদাশ রায়, রাধামোহন ঘোষচৌধুরী, কালীকান্ত পোদ্দার প্রমুখের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তায় প্রথমে যশোর মডেল স্কুল গড়ে ওঠে। রানী কাত্যায়নীর কাচারি বাড়িতে ১৩২ জন ছাত্র নিয়ে বিদ্যালয়ের কাজ সর্বপ্রথম শুরু হয়। তখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি ও ভবন কোনোটাই ছিল না। পরবর্তীকালে যশোরের মৌজায় স্কুলের জন্য ৭.৮০ একর জমি পাওয়া যায় এবং সেখানে ভবন নির্মানের পর স্কুলটি এখানে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৭২ সালে যশোর মডেল স্কুল পরিবর্তন করে এর নাম রাখা হয় ‘যশোর জিলা স্কুল’। | ||
[[Image:JessoreZillaSchool.jpg|right|thumbnail|300px|যশোর জিলা স্কুল]] | |||
যশোর জিলা স্কুলে ১৮৭৪ সালে ফারসি ভাষা চালু করা হয়। ১৯৪৭ সালের পর চালু হয় উর্দু বিভাগ। অবাঙালিরা এ বিভাগে লেখাপড়া করতো। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান সরকার এই স্কুলকে পাইলট প্রজেক্টের আওতায় নিয়ে আসে। সে বছর মানবিক শাখার সঙ্গে বিজ্ঞান শাখাও প্রবর্তিত হয়। ১৯৬৫ সালে বাণিজ্য ও ১৯৭০ সালে চালু হয় শিল্পকলা বিভাগ। | যশোর জিলা স্কুলে ১৮৭৪ সালে ফারসি ভাষা চালু করা হয়। ১৯৪৭ সালের পর চালু হয় উর্দু বিভাগ। অবাঙালিরা এ বিভাগে লেখাপড়া করতো। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান সরকার এই স্কুলকে পাইলট প্রজেক্টের আওতায় নিয়ে আসে। সে বছর মানবিক শাখার সঙ্গে বিজ্ঞান শাখাও প্রবর্তিত হয়। ১৯৬৫ সালে বাণিজ্য ও ১৯৭০ সালে চালু হয় শিল্পকলা বিভাগ। | ||
মি.জে স্মিথ ১৮৩৮ থেকে ১৮৪৮ সাল ও পরবর্তী সময়ে ১৮৫১ থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ভাষাবিদ ড. [[শহীদুল্লাহ, মুহম্মদ|মুহম্মদ শহীদুল্লাহ]], বিশিষ্ট কবি কৃষচন্দ্র মজুমদার ও কথাশিল্পী আনিস সিদ্দিকী এই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। | মি.জে স্মিথ ১৮৩৮ থেকে ১৮৪৮ সাল ও পরবর্তী সময়ে ১৮৫১ থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ভাষাবিদ ড. [[শহীদুল্লাহ, মুহম্মদ|মুহম্মদ শহীদুল্লাহ]], বিশিষ্ট কবি কৃষচন্দ্র মজুমদার ও কথাশিল্পী আনিস সিদ্দিকী এই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, অধ্যাপক [[মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ|মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান]], অধ্যাপক শমসের আলী, কম্যুনিস্ট নেতা আব্দুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি [[রহমান, বিচারপতি লতিফুর|লতিফুর রহমান]], অধ্যক্ষ মোঃ শরীফ হোসেন, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, প্রাক্তন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, সাংসদ রাশেদ খান মেনন, সাংসদ খালেদুর রহমান টিটো, মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসান (অবঃ) এবং হায়দার আকবর খান রনো এ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। | ||
অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, অধ্যাপক [[মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ|মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান]], অধ্যাপক শমসের আলী, কম্যুনিস্ট নেতা আব্দুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি [[রহমান, বিচারপতি লতিফুর|লতিফুর রহমান]], অধ্যক্ষ মোঃ শরীফ হোসেন, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, প্রাক্তন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, সাংসদ রাশেদ খান মেনন, সাংসদ খালেদুর রহমান টিটো, মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসান (অবঃ) এবং হায়দার আকবর খান রনো এ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। | |||
এই স্কুলে ছাত্রদের জন্য রয়েছে কমনরুম, বিজ্ঞানগার, গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাবরেটরি। পড়ালেখা পাশপাশি ছাত্ররা ম্যাগাজিন (জাগরণ) প্রকাশ, কৃষি ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, শিল্পকলা, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান চর্চা, বিএনসিসি, স্কাউটস ও রেড ক্রিসেন্ট কার্যক্রম এবং খেলাধুলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে। ছাত্ররা টিভি বিতর্কসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করে। | এই স্কুলে ছাত্রদের জন্য রয়েছে কমনরুম, বিজ্ঞানগার, গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাবরেটরি। পড়ালেখা পাশপাশি ছাত্ররা ম্যাগাজিন (জাগরণ) প্রকাশ, কৃষি ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, শিল্পকলা, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান চর্চা, বিএনসিসি, স্কাউটস ও রেড ক্রিসেন্ট কার্যক্রম এবং খেলাধুলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে। ছাত্ররা টিভি বিতর্কসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করে। |
০৪:১০, ৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
যশোর জিলা স্কুল বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন স্কুল। প্রতিষ্ঠা ১৮৩৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি। ১৮৪৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বার্ষিক তিনশত টাকার অনুদানসহ নলদী পরগনার জমিদার পত্নী রানী কাত্যায়নী, বাবু রামরতন, নীলকমল পাল চৌধুরী, রাজা বরদাকান্ত রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, মৌলভী আবদুল্লাহ, মোহাম্মদ করিম, প্রাণনাথ চৌধুরী, শুকদাশ রায়, রাধামোহন ঘোষচৌধুরী, কালীকান্ত পোদ্দার প্রমুখের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তায় প্রথমে যশোর মডেল স্কুল গড়ে ওঠে। রানী কাত্যায়নীর কাচারি বাড়িতে ১৩২ জন ছাত্র নিয়ে বিদ্যালয়ের কাজ সর্বপ্রথম শুরু হয়। তখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি ও ভবন কোনোটাই ছিল না। পরবর্তীকালে যশোরের মৌজায় স্কুলের জন্য ৭.৮০ একর জমি পাওয়া যায় এবং সেখানে ভবন নির্মানের পর স্কুলটি এখানে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৭২ সালে যশোর মডেল স্কুল পরিবর্তন করে এর নাম রাখা হয় ‘যশোর জিলা স্কুল’।
যশোর জিলা স্কুলে ১৮৭৪ সালে ফারসি ভাষা চালু করা হয়। ১৯৪৭ সালের পর চালু হয় উর্দু বিভাগ। অবাঙালিরা এ বিভাগে লেখাপড়া করতো। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান সরকার এই স্কুলকে পাইলট প্রজেক্টের আওতায় নিয়ে আসে। সে বছর মানবিক শাখার সঙ্গে বিজ্ঞান শাখাও প্রবর্তিত হয়। ১৯৬৫ সালে বাণিজ্য ও ১৯৭০ সালে চালু হয় শিল্পকলা বিভাগ।
মি.জে স্মিথ ১৮৩৮ থেকে ১৮৪৮ সাল ও পরবর্তী সময়ে ১৮৫১ থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, বিশিষ্ট কবি কৃষচন্দ্র মজুমদার ও কথাশিল্পী আনিস সিদ্দিকী এই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক শমসের আলী, কম্যুনিস্ট নেতা আব্দুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান, অধ্যক্ষ মোঃ শরীফ হোসেন, অধ্যক্ষ আব্দুল হাই, প্রাক্তন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম, সাংসদ রাশেদ খান মেনন, সাংসদ খালেদুর রহমান টিটো, মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসান (অবঃ) এবং হায়দার আকবর খান রনো এ স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র।
এই স্কুলে ছাত্রদের জন্য রয়েছে কমনরুম, বিজ্ঞানগার, গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার ল্যাবরেটরি। পড়ালেখা পাশপাশি ছাত্ররা ম্যাগাজিন (জাগরণ) প্রকাশ, কৃষি ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, শিল্পকলা, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান চর্চা, বিএনসিসি, স্কাউটস ও রেড ক্রিসেন্ট কার্যক্রম এবং খেলাধুলায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে। ছাত্ররা টিভি বিতর্কসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায়ও অংশগ্রহণ করে।
এই স্কুলে দুই শিফটে ছাত্রদের শিক্ষা দেওয়া হয়। প্রভাতি শিফট চলে ৭ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত এবং দিবা শিফট চলে দুপুর ১২.২০ টা বিকাল ৫.৩০ টা পর্যন্ত। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৫০। এর মধ্যে পুরুষ ৪৪ জন, মহিলা ৬ জন। ২০১০ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রসংখ্যা ১৫৫০।
এসএসসি পরীক্ষায় ২০০৭ সালে ৯৮.২৬%, ২০০৮ সালে ৯৮.৪৫% এবং ২০০৯ সালে ৯৬.০২% পাশ করেছে। এই স্কুলের রয়েছে প্রশাসনিক ভবন ১টি, একাডেমিক ভবন ৩টি, শিক্ষক মিলনায়তন ১টি, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব ১টি, গ্রন্থাগার ১টি এবং অডিটোরিয়াম ১টি। [সাখায়েত হোসেন বিশ্বাস]