হক, সানাউল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
২ নং লাইন: | ২ নং লাইন: | ||
'''হক, সানাউল''' (১৯২৪-১৯৯৩) কবি, অনুবাদক, সংস্কৃতিকর্মী, সংগঠক, শিক্ষাবিদ। জন্ম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার চাউরা গ্রামে, ১৯২৪ সালের ২৩ মে। সানাউল হকের প্রকৃত নাম আল মামুন সানাউল হক। মাতা সৈয়দা হোসাইনী বেগম, পিতা জহুরুল হক। | '''হক, সানাউল''' (১৯২৪-১৯৯৩) কবি, অনুবাদক, সংস্কৃতিকর্মী, সংগঠক, শিক্ষাবিদ। জন্ম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার চাউরা গ্রামে, ১৯২৪ সালের ২৩ মে। সানাউল হকের প্রকৃত নাম আল মামুন সানাউল হক। মাতা সৈয়দা হোসাইনী বেগম, পিতা জহুরুল হক। | ||
[[Image:HaqueSanaul.jpg|thumb|400px|সানাউল হক]] | |||
সানাউল হক ব্রাহ্মণবাড়ীয়া অন্নদা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯৩৯), ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই.এ (১৯৪১) এবং ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ অনার্স (অর্থনীতি) ও ১৯৪৫ সালে এম.এ পাস করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ সালে আইনবিদ্যায় বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। | সানাউল হক ব্রাহ্মণবাড়ীয়া অন্নদা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯৩৯), ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই.এ (১৯৪১) এবং ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ অনার্স (অর্থনীতি) ও ১৯৪৫ সালে এম.এ পাস করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ সালে আইনবিদ্যায় বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। | ||
১৯৪৬ সালের ২৯ নভেম্বর সানাউল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ১৯৪৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। পরে তিনি একজন আমলা হিসেবে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সানাউল হকের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় পারিবারিক আবহে। তাঁর মামা মোতাহের হোসেন চৌধুরী (১৯০৩-১৯৫৬) ছিলেন কবি ও লেখক। তাঁর সান্নিধ্য ও উৎসাহে সানাউল হক সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত হন। মোতাহের হোসেন চৌধুরীর চিন্তাভাবনা সানাউল হকের সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত করে। এর প্রতিফলন লক্ষ করা যায় সানাউল হকের কবিতায়, ভ্রমণবৃত্তান্তে, অনুবাদে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। | ১৯৪৬ সালের ২৯ নভেম্বর সানাউল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ১৯৪৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। পরে তিনি একজন আমলা হিসেবে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সানাউল হকের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় পারিবারিক আবহে। তাঁর মামা মোতাহের হোসেন চৌধুরী (১৯০৩-১৯৫৬) ছিলেন কবি ও লেখক। তাঁর সান্নিধ্য ও উৎসাহে সানাউল হক সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত হন। মোতাহের হোসেন চৌধুরীর চিন্তাভাবনা সানাউল হকের সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত করে। এর প্রতিফলন লক্ষ করা যায় সানাউল হকের কবিতায়, ভ্রমণবৃত্তান্তে, অনুবাদে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে। | ||
চলিশের দশকের একজন খ্যাতিমান কবি হিসেবে সানাউল হক পরিচিতি লাভ করেন। কবিতার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য—শব্দ-ব্যবহার, ছন্দ-বিন্যাস এবং উপমা-অলঙ্কার নির্মাণ ছাড়াও তাঁর কবিতায় প্রেমানুভূতি ও মানবতাবোধ ধ্বণিত হয়েছে। নদী ও মানুষের কবিতা (১৯৫৬), সম্ভবা অনন্য (১৯৬২), সূর্য অন্যতর (১৯৬৩), বিচূর্ণ আর্শিতে (১৯৬৮), একটি ইচ্ছা সহস্র পালে (১৯৭৩), কাল সমকাল (১৯৭৫) প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে সানাউল হক মানবজীবন ও জগতের ছবি অাঁকার চেষ্টা করেছেন, সমকালের কবিমহলে এবং পাঠকদের কাছে তা সমাদৃত হয়। বিশেষভাবে তাঁর স্বদেশপ্রেমের কবিতাগুলি পাঠককে আকৃষ্ট করে। | চলিশের দশকের একজন খ্যাতিমান কবি হিসেবে সানাউল হক পরিচিতি লাভ করেন। কবিতার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য—শব্দ-ব্যবহার, ছন্দ-বিন্যাস এবং উপমা-অলঙ্কার নির্মাণ ছাড়াও তাঁর কবিতায় প্রেমানুভূতি ও মানবতাবোধ ধ্বণিত হয়েছে। নদী ও মানুষের কবিতা (১৯৫৬), সম্ভবা অনন্য (১৯৬২), সূর্য অন্যতর (১৯৬৩), বিচূর্ণ আর্শিতে (১৯৬৮), একটি ইচ্ছা সহস্র পালে (১৯৭৩), কাল সমকাল (১৯৭৫) প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে সানাউল হক মানবজীবন ও জগতের ছবি অাঁকার চেষ্টা করেছেন, সমকালের কবিমহলে এবং পাঠকদের কাছে তা সমাদৃত হয়। বিশেষভাবে তাঁর স্বদেশপ্রেমের কবিতাগুলি পাঠককে আকৃষ্ট করে। | ||
১৪ নং লাইন: | ১৩ নং লাইন: | ||
সাহিত্যে অবদানের জন্য সানাউল হক বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫) লেখক সঙ্ঘ পুরস্কার (১৯৬৫), একুশে পদক (১৯৮৩), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৫) লাভ করেন। | সাহিত্যে অবদানের জন্য সানাউল হক বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫) লেখক সঙ্ঘ পুরস্কার (১৯৬৫), একুশে পদক (১৯৮৩), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৫) লাভ করেন। | ||
তাঁর মৃত্যু ঢাকায়, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩। [মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম] | তাঁর মৃত্যু ঢাকায়, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩। [মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম] | ||
[[en:Huq, Sanaul]] | [[en:Huq, Sanaul]] |
০৮:৫৭, ২৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
হক, সানাউল (১৯২৪-১৯৯৩) কবি, অনুবাদক, সংস্কৃতিকর্মী, সংগঠক, শিক্ষাবিদ। জন্ম ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার চাউরা গ্রামে, ১৯২৪ সালের ২৩ মে। সানাউল হকের প্রকৃত নাম আল মামুন সানাউল হক। মাতা সৈয়দা হোসাইনী বেগম, পিতা জহুরুল হক।
সানাউল হক ব্রাহ্মণবাড়ীয়া অন্নদা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯৩৯), ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আই.এ (১৯৪১) এবং ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ অনার্স (অর্থনীতি) ও ১৯৪৫ সালে এম.এ পাস করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ সালে আইনবিদ্যায় বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৪৬ সালের ২৯ নভেম্বর সানাউল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ১৯৪৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। পরে তিনি একজন আমলা হিসেবে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সানাউল হকের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় পারিবারিক আবহে। তাঁর মামা মোতাহের হোসেন চৌধুরী (১৯০৩-১৯৫৬) ছিলেন কবি ও লেখক। তাঁর সান্নিধ্য ও উৎসাহে সানাউল হক সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত হন। মোতাহের হোসেন চৌধুরীর চিন্তাভাবনা সানাউল হকের সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত করে। এর প্রতিফলন লক্ষ করা যায় সানাউল হকের কবিতায়, ভ্রমণবৃত্তান্তে, অনুবাদে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে।
চলিশের দশকের একজন খ্যাতিমান কবি হিসেবে সানাউল হক পরিচিতি লাভ করেন। কবিতার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য—শব্দ-ব্যবহার, ছন্দ-বিন্যাস এবং উপমা-অলঙ্কার নির্মাণ ছাড়াও তাঁর কবিতায় প্রেমানুভূতি ও মানবতাবোধ ধ্বণিত হয়েছে। নদী ও মানুষের কবিতা (১৯৫৬), সম্ভবা অনন্য (১৯৬২), সূর্য অন্যতর (১৯৬৩), বিচূর্ণ আর্শিতে (১৯৬৮), একটি ইচ্ছা সহস্র পালে (১৯৭৩), কাল সমকাল (১৯৭৫) প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে সানাউল হক মানবজীবন ও জগতের ছবি অাঁকার চেষ্টা করেছেন, সমকালের কবিমহলে এবং পাঠকদের কাছে তা সমাদৃত হয়। বিশেষভাবে তাঁর স্বদেশপ্রেমের কবিতাগুলি পাঠককে আকৃষ্ট করে।
তাঁর কবিতায় তাঁর ব্যক্তিত্বকে প্রত্যক্ষ করা যায়—যেখানে তিনি সমস্যা ও সম্ভাবনায় কখনও আশাহত, কখনও আনন্দিত। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে পদ্মিনী শঙ্খিনী (১৯৭৬), প্রবাসে যখন (১৯৮১), বিরাশির কবিতা (১৯৮২), উত্তীর্ণ পঞ্চাশ (১৯৮৪ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর বন্দর থেকে বন্দরে (১৯৬৪) নামক অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণ-কাহিনী বেশ খ্যাতি লাভ করেছে।
সাহিত্যে অবদানের জন্য সানাউল হক বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫) লেখক সঙ্ঘ পুরস্কার (১৯৬৫), একুশে পদক (১৯৮৩), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৫) লাভ করেন।
তাঁর মৃত্যু ঢাকায়, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩। [মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম]