হস্তান্তরযোগ্য দলিল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
৪ নং লাইন: | ৪ নং লাইন: | ||
ব্রিটিশ শাসক কর্তৃক ১৮৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন জারির মাধ্যমে হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহকে পরিচিতি এবং একইসঙ্গে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। উল্লিখিত আইনানুযায়ী অঙ্গীকারপত্র, [[বিনিময় বিল|বিনিময় বিল]] এবং চেক হস্তান্তরযোগ্য দলিল। হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহের বৈশিষ্ট্য সমরূপ হলেও এগুলির মধ্যে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। একটি হস্তান্তরযোগ্য দলিল অবশ্যই তার প্রস্ত্ততকারী কর্তৃক লিখিত ও স্বাক্ষরিত হতে হবে। দলিলে বর্ণিত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিঃশর্তভাবে তার বাহককে অথবা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বা তার আদিষ্ট কোন ব্যক্তিকে চাহিবামাত্র অথবা নির্দিষ্ট তারিখে কিংবা ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন তারিখে পরিশোধের জন্য প্রস্ত্ততকারী অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকে। বাহককে পরিশোধ্য হলে সকল হস্তান্তরযোগ্য দলিল শুধু অর্পণ দ্বারা হস্তান্তরযোগ্য এবং আদেশ দ্বারা পরিশোধ্য হলে পৃষ্ঠাঙ্কন ও অর্পণ দ্বারা হস্তান্তর করা যায়। নগদায়ন করার সময় অনুসরণীয় ভিন্ন ভিন্ন নিয়মাচারের ফলেও বিভিন্ন হস্তান্তরযোগ্য দলিলের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিছু হস্তান্তরযোগ্য দলিলে সীলমোহর করতে হয় এবং কিছু কিছু দলিলে সীলমোহর প্রয়োজন হয় না। হস্তান্তরযোগ্য দলিল হলেও চেকের মতো অঙ্গীকার চিঠাসমূহ রেখাঙ্কিত করা যায় না। আবার কিছু কিছু হস্তান্তরযোগ্য দলিলে স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় এবং কিছু দলিলে তা দরকার হয় না। | ব্রিটিশ শাসক কর্তৃক ১৮৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন জারির মাধ্যমে হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহকে পরিচিতি এবং একইসঙ্গে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। উল্লিখিত আইনানুযায়ী অঙ্গীকারপত্র, [[বিনিময় বিল|বিনিময় বিল]] এবং চেক হস্তান্তরযোগ্য দলিল। হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহের বৈশিষ্ট্য সমরূপ হলেও এগুলির মধ্যে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। একটি হস্তান্তরযোগ্য দলিল অবশ্যই তার প্রস্ত্ততকারী কর্তৃক লিখিত ও স্বাক্ষরিত হতে হবে। দলিলে বর্ণিত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিঃশর্তভাবে তার বাহককে অথবা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বা তার আদিষ্ট কোন ব্যক্তিকে চাহিবামাত্র অথবা নির্দিষ্ট তারিখে কিংবা ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন তারিখে পরিশোধের জন্য প্রস্ত্ততকারী অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকে। বাহককে পরিশোধ্য হলে সকল হস্তান্তরযোগ্য দলিল শুধু অর্পণ দ্বারা হস্তান্তরযোগ্য এবং আদেশ দ্বারা পরিশোধ্য হলে পৃষ্ঠাঙ্কন ও অর্পণ দ্বারা হস্তান্তর করা যায়। নগদায়ন করার সময় অনুসরণীয় ভিন্ন ভিন্ন নিয়মাচারের ফলেও বিভিন্ন হস্তান্তরযোগ্য দলিলের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিছু হস্তান্তরযোগ্য দলিলে সীলমোহর করতে হয় এবং কিছু কিছু দলিলে সীলমোহর প্রয়োজন হয় না। হস্তান্তরযোগ্য দলিল হলেও চেকের মতো অঙ্গীকার চিঠাসমূহ রেখাঙ্কিত করা যায় না। আবার কিছু কিছু হস্তান্তরযোগ্য দলিলে স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় এবং কিছু দলিলে তা দরকার হয় না। | ||
বাংলাদেশে সচরাচর ব্যবহার্য হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহের মধ্যে চেক একটি সাধারণ এবং জনপ্রিয় দলিল যা ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহককে তার আমানত হিসাবসমূহের বিপরীতে ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসারত আমানত গ্রহণকারী ব্যাংকগুলির সকল শাখা তাদের আমানতকারীদের চলতি ও সঞ্চয়ী আমানত হিসাবের বিপরীতে চেক ইস্যু করতে পারে। তবে স্থায়ী বা মেয়াদি আমানতসমূহের বিপরীতে কোন চেক ইস্যু করা হয় না। দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হওয়ায় লেনদেনের নিষ্পত্তি ও অন্যান্য পরিশোধসমূহের জন্য চেকের ব্যবহার প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিনিময় বিল এবং অঙ্গীকার চিঠার ব্যবহার এখনও সীমিত। সরকার অঙ্গীকার চিঠা ইস্যু করে এবং ব্যাংকগুলি তা ক্রয় ও ধারণ করে। ধারক ব্যাংকগুলি এ সকল হস্তান্তরযোগ্য দলিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বাট্টা করতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশে দুই প্রকারের বিনিময় বিল ব্যবহূত হয়- বৈদেশিক বিল এবং অভ্যন্তরীণ বিল। তবে আমাদের দেশে এসব বিলের ব্যবহার পর্যাপ্ত নয়। শিল্পায়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ফলে বর্তমানে এগুলির ব্যবহার পূর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত এসব হস্তান্তরযোগ্য দলিল বা বিনিময় বিল প্রাপক বা ধারকগণ ব্যাংকের নিকট বাট্টার বিনিময়ে নগদে বিক্রয় করে দেয়। ব্যাংকগুলি বিলের অভিহিত মূল্য থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন/বাট্টা, আদায় খরচ এবং সুদ বাদ দিয়ে বিলের মূল্য প্রাপককে প্রদান করে। | বাংলাদেশে সচরাচর ব্যবহার্য হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহের মধ্যে চেক একটি সাধারণ এবং জনপ্রিয় দলিল যা ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহককে তার আমানত হিসাবসমূহের বিপরীতে ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসারত আমানত গ্রহণকারী ব্যাংকগুলির সকল শাখা তাদের আমানতকারীদের চলতি ও সঞ্চয়ী আমানত হিসাবের বিপরীতে চেক ইস্যু করতে পারে। তবে স্থায়ী বা মেয়াদি আমানতসমূহের বিপরীতে কোন চেক ইস্যু করা হয় না। দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হওয়ায় লেনদেনের নিষ্পত্তি ও অন্যান্য পরিশোধসমূহের জন্য চেকের ব্যবহার প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিনিময় বিল এবং অঙ্গীকার চিঠার ব্যবহার এখনও সীমিত। সরকার অঙ্গীকার চিঠা ইস্যু করে এবং ব্যাংকগুলি তা ক্রয় ও ধারণ করে। ধারক ব্যাংকগুলি এ সকল হস্তান্তরযোগ্য দলিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বাট্টা করতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশে দুই প্রকারের বিনিময় বিল ব্যবহূত হয়- বৈদেশিক বিল এবং অভ্যন্তরীণ বিল। তবে আমাদের দেশে এসব বিলের ব্যবহার পর্যাপ্ত নয়। শিল্পায়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ফলে বর্তমানে এগুলির ব্যবহার পূর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত এসব হস্তান্তরযোগ্য দলিল বা বিনিময় বিল প্রাপক বা ধারকগণ ব্যাংকের নিকট বাট্টার বিনিময়ে নগদে বিক্রয় করে দেয়। ব্যাংকগুলি বিলের অভিহিত মূল্য থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন/বাট্টা, আদায় খরচ এবং সুদ বাদ দিয়ে বিলের মূল্য প্রাপককে প্রদান করে। [সৈয়দ আহমেদ খান এবং এ সামাদ সরকার] | ||
[সৈয়দ আহমেদ খান এবং এ সামাদ সরকার] | |||
[[en:Negotiable Instrument]] | [[en:Negotiable Instrument]] |
০৫:০৭, ২৯ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ
হস্তান্তরযোগ্য দলিল এক ধরনের আর্থিক হাতিয়ার বা ঋণপত্র যা আইনানুগভাবে একজনের নিকট থেকে অন্যজনের নিকট হস্তান্তর করা যায় এবং ধারক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ওই দলিলে লিখিত সম্পত্তিও সরল বিশ্বাসে দলিলগ্রহীতার অধিকারে চলে যায়। শুধু হস্তান্তর দ্বারা এ সকল দলিল যেহেতু বিক্রয়, পরিশোধ কিংবা সেগুলির মালিকানা স্থানান্তর করা যায় তাই দলিল আদেশ দ্বারা অথবা পৃষ্ঠাঙ্কনের মাধ্যমে বাহক দ্বারা এগুলি পরিশোধ্য।
ব্রিটিশ শাসক কর্তৃক ১৮৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন জারির মাধ্যমে হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহকে পরিচিতি এবং একইসঙ্গে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। উল্লিখিত আইনানুযায়ী অঙ্গীকারপত্র, বিনিময় বিল এবং চেক হস্তান্তরযোগ্য দলিল। হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহের বৈশিষ্ট্য সমরূপ হলেও এগুলির মধ্যে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। একটি হস্তান্তরযোগ্য দলিল অবশ্যই তার প্রস্ত্ততকারী কর্তৃক লিখিত ও স্বাক্ষরিত হতে হবে। দলিলে বর্ণিত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নিঃশর্তভাবে তার বাহককে অথবা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বা তার আদিষ্ট কোন ব্যক্তিকে চাহিবামাত্র অথবা নির্দিষ্ট তারিখে কিংবা ভবিষ্যতে নির্ধারিত কোন তারিখে পরিশোধের জন্য প্রস্ত্ততকারী অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকে। বাহককে পরিশোধ্য হলে সকল হস্তান্তরযোগ্য দলিল শুধু অর্পণ দ্বারা হস্তান্তরযোগ্য এবং আদেশ দ্বারা পরিশোধ্য হলে পৃষ্ঠাঙ্কন ও অর্পণ দ্বারা হস্তান্তর করা যায়। নগদায়ন করার সময় অনুসরণীয় ভিন্ন ভিন্ন নিয়মাচারের ফলেও বিভিন্ন হস্তান্তরযোগ্য দলিলের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিছু হস্তান্তরযোগ্য দলিলে সীলমোহর করতে হয় এবং কিছু কিছু দলিলে সীলমোহর প্রয়োজন হয় না। হস্তান্তরযোগ্য দলিল হলেও চেকের মতো অঙ্গীকার চিঠাসমূহ রেখাঙ্কিত করা যায় না। আবার কিছু কিছু হস্তান্তরযোগ্য দলিলে স্বীকৃতির প্রয়োজন হয় এবং কিছু দলিলে তা দরকার হয় না।
বাংলাদেশে সচরাচর ব্যবহার্য হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহের মধ্যে চেক একটি সাধারণ এবং জনপ্রিয় দলিল যা ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহককে তার আমানত হিসাবসমূহের বিপরীতে ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসারত আমানত গ্রহণকারী ব্যাংকগুলির সকল শাখা তাদের আমানতকারীদের চলতি ও সঞ্চয়ী আমানত হিসাবের বিপরীতে চেক ইস্যু করতে পারে। তবে স্থায়ী বা মেয়াদি আমানতসমূহের বিপরীতে কোন চেক ইস্যু করা হয় না। দেশে ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হওয়ায় লেনদেনের নিষ্পত্তি ও অন্যান্য পরিশোধসমূহের জন্য চেকের ব্যবহার প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিনিময় বিল এবং অঙ্গীকার চিঠার ব্যবহার এখনও সীমিত। সরকার অঙ্গীকার চিঠা ইস্যু করে এবং ব্যাংকগুলি তা ক্রয় ও ধারণ করে। ধারক ব্যাংকগুলি এ সকল হস্তান্তরযোগ্য দলিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বাট্টা করতে পারে। সাধারণত বাংলাদেশে দুই প্রকারের বিনিময় বিল ব্যবহূত হয়- বৈদেশিক বিল এবং অভ্যন্তরীণ বিল। তবে আমাদের দেশে এসব বিলের ব্যবহার পর্যাপ্ত নয়। শিল্পায়ন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণের ফলে বর্তমানে এগুলির ব্যবহার পূর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত এসব হস্তান্তরযোগ্য দলিল বা বিনিময় বিল প্রাপক বা ধারকগণ ব্যাংকের নিকট বাট্টার বিনিময়ে নগদে বিক্রয় করে দেয়। ব্যাংকগুলি বিলের অভিহিত মূল্য থেকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন/বাট্টা, আদায় খরচ এবং সুদ বাদ দিয়ে বিলের মূল্য প্রাপককে প্রদান করে। [সৈয়দ আহমেদ খান এবং এ সামাদ সরকার]