মোর্তজা, মোহাম্মদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান) অ (Added Ennglish article link) |
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
[[Category:বাংলাপিডিয়া]] | [[Category:বাংলাপিডিয়া]] | ||
'''মোর্তজা, মোহাম্মদ '''(১৯৩১-১৯৭১) চিকিৎসক ও লেখক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। জন্ম ১৯৩১ সালের ১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগণা জেলায়। পিতা মাওলানা আবদুল মান্নান আল-আযহারী এবং মাতা সায়রা বেগম। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর তাঁর পিতা সপরিবারে খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার আড়ংঘাটায় এসে বসতি করেন। মোহাম্মদ মোর্তজা ১৯৪৬ সালে কলকাতার বালিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৪৮ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই.এসসি পাস করেন। তিনি প্রথম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। মোহাম্মদ মোর্তজা ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। | '''মোর্তজা, মোহাম্মদ''' (১৯৩১-১৯৭১) চিকিৎসক ও লেখক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। জন্ম ১৯৩১ সালের ১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগণা জেলায়। পিতা মাওলানা আবদুল মান্নান আল-আযহারী এবং মাতা সায়রা বেগম। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর তাঁর পিতা সপরিবারে খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার আড়ংঘাটায় এসে বসতি করেন। মোহাম্মদ মোর্তজা ১৯৪৬ সালে কলকাতার বালিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৪৮ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই.এসসি পাস করেন। তিনি প্রথম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। মোহাম্মদ মোর্তজা ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। | ||
মোহাম্মদ মোর্তজা বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বদরুদ্দিন উমর সম্পাদিত গণশক্তি পত্রিকা প্রকাশে সহায়তা করেন এবং এতে তিনি ‘দেশে দেশে মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামে নিয়মিত লিখতেন। | [[Image:MortazaMohammad.jpg|thumb|right|400px|মোহাম্মদ মোর্তজা]] | ||
মোহাম্মদ মোর্তজা বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বদরুদ্দিন উমর সম্পাদিত গণশক্তি পত্রিকা প্রকাশে সহায়তা করেন এবং এতে তিনি ‘দেশে দেশে মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামে নিয়মিত লিখতেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: জনসংখ্যা ও সম্পদ, চিকিৎসা পরিভাষা কোষ, পাক-ভারত যুদ্ধের তাৎপর্য, নয়া গণতন্ত্র, প্রেম ও বিবাহের সম্পর্ক, চরিত্রহীনার অধিকার। তাঁর কয়েকটি অনুবাদ গ্রন্থ হচ্ছে: চিকিৎসা বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস, ঐতিহাসিক বস্ত্তবাদ, শান্তি না শক্তি, হুনানের কৃষক আন্দোলন, জনযুদ্ধের বিজয় দীর্ঘজীবী হোক। মোহাম্মদ মোর্তজা তাঁর জনসংখ্যা ও সম্পদ গ্রন্থের জন্য ১৯৬৪ সালে ন্যাশনাল ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। | |||
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের ঔষধপত্রসহ চিকিৎসাসেবা এবং আর্থিক সাহায্য প্রদান করতেন। | বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের ঔষধপত্রসহ চিকিৎসাসেবা এবং আর্থিক সাহায্য প্রদান করতেন। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ মোর্তজাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার ১৪/এ ফুলার রোডের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি মিরপুরের বধ্যভূমিতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। | ||
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ মোর্তজাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার ১৪/এ ফুলার রোডের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি মিরপুরের বধ্যভূমিতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়। | |||
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ ১৯৯১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মোহাম্মদ মোর্তজার নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে। [বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ] | গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ ১৯৯১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মোহাম্মদ মোর্তজার নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে। [বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ] |
০৭:০৫, ৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
মোর্তজা, মোহাম্মদ (১৯৩১-১৯৭১) চিকিৎসক ও লেখক, শহীদ বুদ্ধিজীবী। জন্ম ১৯৩১ সালের ১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগণা জেলায়। পিতা মাওলানা আবদুল মান্নান আল-আযহারী এবং মাতা সায়রা বেগম। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর তাঁর পিতা সপরিবারে খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার আড়ংঘাটায় এসে বসতি করেন। মোহাম্মদ মোর্তজা ১৯৪৬ সালে কলকাতার বালিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৪৮ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই.এসসি পাস করেন। তিনি প্রথম কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। মোহাম্মদ মোর্তজা ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
মোহাম্মদ মোর্তজা বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বদরুদ্দিন উমর সম্পাদিত গণশক্তি পত্রিকা প্রকাশে সহায়তা করেন এবং এতে তিনি ‘দেশে দেশে মুক্তিযুদ্ধ’ শিরোনামে নিয়মিত লিখতেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: জনসংখ্যা ও সম্পদ, চিকিৎসা পরিভাষা কোষ, পাক-ভারত যুদ্ধের তাৎপর্য, নয়া গণতন্ত্র, প্রেম ও বিবাহের সম্পর্ক, চরিত্রহীনার অধিকার। তাঁর কয়েকটি অনুবাদ গ্রন্থ হচ্ছে: চিকিৎসা বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস, ঐতিহাসিক বস্ত্তবাদ, শান্তি না শক্তি, হুনানের কৃষক আন্দোলন, জনযুদ্ধের বিজয় দীর্ঘজীবী হোক। মোহাম্মদ মোর্তজা তাঁর জনসংখ্যা ও সম্পদ গ্রন্থের জন্য ১৯৬৪ সালে ন্যাশনাল ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের ঔষধপত্রসহ চিকিৎসাসেবা এবং আর্থিক সাহায্য প্রদান করতেন। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আল-বদর বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ মোর্তজাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার ১৪/এ ফুলার রোডের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি মিরপুরের বধ্যভূমিতে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাকবিভাগ ১৯৯১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মোহাম্মদ মোর্তজার নামে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে। [বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ]