মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(Added Ennglish article link)
 
সম্পাদনা সারাংশ নেই
 
২ নং লাইন: ২ নং লাইন:
'''মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ'''  চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান সরকারী মোহসীন কলেজের (পূর্বতন চট্টগ্রাম মাদ্রাসা) বিপরীত দিকে পাহাড়ের উপর একটি মসজিদসহ মোল্লা মিসকিনের সমাধি অবস্থিত। মুগল শহরকেন্দ্র চকবাজার থেকে স্থানটি বেশি দূরে নয়। স্থানীয় লোকজন মসজিদ ও সমাধি কমপ্লেক্সকে মোল্লা সুফির ‘তাকিয়া’ও বলে থাকে। ব্রিটিশ শাসনামলে তাকিয়ার চারপাশে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল।
'''মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ'''  চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান সরকারী মোহসীন কলেজের (পূর্বতন চট্টগ্রাম মাদ্রাসা) বিপরীত দিকে পাহাড়ের উপর একটি মসজিদসহ মোল্লা মিসকিনের সমাধি অবস্থিত। মুগল শহরকেন্দ্র চকবাজার থেকে স্থানটি বেশি দূরে নয়। স্থানীয় লোকজন মসজিদ ও সমাধি কমপ্লেক্সকে মোল্লা সুফির ‘তাকিয়া’ও বলে থাকে। ব্রিটিশ শাসনামলে তাকিয়ার চারপাশে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল।


[[Image:MiskinShahMullaMosqueTomb.jpg|thumb|right|400px|মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ, চট্টগ্রাম]]
ছোট এবং আয়তাকার ‘তাকিয়া’ মসজিদটি প্রতি সারিতে তিনটি করে মোট ছয়টি গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। প্রতিটি গম্বুজ একটি করে অষ্টকোণাকার ড্রামের উপর ন্যস্ত। মসজিদের চারকোণে ছত্রী দ্বারা আচ্ছাদিত চারটি সংযুক্ত বুরুজ নির্মিত হয়েছে। মসজিদের দেয়ালগুলি পলেস্তরায় আবৃত এবং ভারি আবরণে চুনকাম করা। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১০.৩৬ মিটার, প্রস্থ ৭.৭৭ মিটার এবং উচ্চতা প্রায় ২.৯০ মিটার।
ছোট এবং আয়তাকার ‘তাকিয়া’ মসজিদটি প্রতি সারিতে তিনটি করে মোট ছয়টি গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। প্রতিটি গম্বুজ একটি করে অষ্টকোণাকার ড্রামের উপর ন্যস্ত। মসজিদের চারকোণে ছত্রী দ্বারা আচ্ছাদিত চারটি সংযুক্ত বুরুজ নির্মিত হয়েছে। মসজিদের দেয়ালগুলি পলেস্তরায় আবৃত এবং ভারি আবরণে চুনকাম করা। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১০.৩৬ মিটার, প্রস্থ ৭.৭৭ মিটার এবং উচ্চতা প্রায় ২.৯০ মিটার।


৭ নং লাইন: ৮ নং লাইন:


উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে মোট দুটি জানালা ছিল, যা বারান্দা তৈরির সময় দরজায় রূপান্তর করা হয়েছে। তিনটি মিহরাবের  মধ্যে মাঝেরটি বড়। মিহরাব তিনটি পূর্বদিকের  প্রবেশপথগুলির সমান্তরালে স্থাপন করা হয়েছে। দুটি পাকা স্তম্ভ প্রার্থনা কক্ষটিকে দুটি ‘আইল’ ও তিনটি ‘বে’তে বিভক্ত করেছে। প্রতিটি স্তম্ভের চারদিকে ছোট জোড়াস্তম্ভ সংযুক্ত হয়েছে এবং এর কাঁধ থেকে পেন্ডেন্টিভ তৈরি হয়েছে। মাঝের দুটি স্তম্ভ এবং ছয়টি দেয়ালস্তম্ভ থেকে সাতটি খিলান উৎসারিত হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের ও বাইরের দেয়ালে অনেকগুলি কুলুঙ্গি স্থাপন করা হয়েছে।
উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে মোট দুটি জানালা ছিল, যা বারান্দা তৈরির সময় দরজায় রূপান্তর করা হয়েছে। তিনটি মিহরাবের  মধ্যে মাঝেরটি বড়। মিহরাব তিনটি পূর্বদিকের  প্রবেশপথগুলির সমান্তরালে স্থাপন করা হয়েছে। দুটি পাকা স্তম্ভ প্রার্থনা কক্ষটিকে দুটি ‘আইল’ ও তিনটি ‘বে’তে বিভক্ত করেছে। প্রতিটি স্তম্ভের চারদিকে ছোট জোড়াস্তম্ভ সংযুক্ত হয়েছে এবং এর কাঁধ থেকে পেন্ডেন্টিভ তৈরি হয়েছে। মাঝের দুটি স্তম্ভ এবং ছয়টি দেয়ালস্তম্ভ থেকে সাতটি খিলান উৎসারিত হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের ও বাইরের দেয়ালে অনেকগুলি কুলুঙ্গি স্থাপন করা হয়েছে।
[[Image:MiskinShahMullaMosqueTomb.jpg|thumb|right|মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ, চট্টগ্রাম]]


মসজিদের নিকটবর্তী দক্ষিণ দিকে মোল্লা মিসকিনের সমাধি অবস্থিত। একটি দেয়াল ঘেরা অঙ্গনে দুটি কবর রয়েছে। সমাধিকক্ষটি বেশি বড় নয় এবং পূর্বদিকের কবরটি পশ্চিমদিকের করব থেকে একটু বড়। দক্ষিণ দেয়ালের একটি নিচু প্রবেশদ্বার দিয়ে যে কেউ সমাধি অঙ্গনে প্রবেশ করতে পারে। পূর্ব দেয়ালের মাঝখানে একটি পুরানো প্রবেশপথের কিছু অবশিষ্টাংশ লক্ষ্য করা যায়, এটিকে বর্তমানে একটি কুলুঙ্গিতে পরিণত করা হয়েছে।
মসজিদের নিকটবর্তী দক্ষিণ দিকে মোল্লা মিসকিনের সমাধি অবস্থিত। একটি দেয়াল ঘেরা অঙ্গনে দুটি কবর রয়েছে। সমাধিকক্ষটি বেশি বড় নয় এবং পূর্বদিকের কবরটি পশ্চিমদিকের করব থেকে একটু বড়। দক্ষিণ দেয়ালের একটি নিচু প্রবেশদ্বার দিয়ে যে কেউ সমাধি অঙ্গনে প্রবেশ করতে পারে। পূর্ব দেয়ালের মাঝখানে একটি পুরানো প্রবেশপথের কিছু অবশিষ্টাংশ লক্ষ্য করা যায়, এটিকে বর্তমানে একটি কুলুঙ্গিতে পরিণত করা হয়েছে।

০৬:৩০, ৪ মার্চ ২০১৫ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ  চট্টগ্রাম শহরের বর্তমান সরকারী মোহসীন কলেজের (পূর্বতন চট্টগ্রাম মাদ্রাসা) বিপরীত দিকে পাহাড়ের উপর একটি মসজিদসহ মোল্লা মিসকিনের সমাধি অবস্থিত। মুগল শহরকেন্দ্র চকবাজার থেকে স্থানটি বেশি দূরে নয়। স্থানীয় লোকজন মসজিদ ও সমাধি কমপ্লেক্সকে মোল্লা সুফির ‘তাকিয়া’ও বলে থাকে। ব্রিটিশ শাসনামলে তাকিয়ার চারপাশে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল।

মিসকিন শাহ মোল্লা মসজিদ ও সমাধিসৌধ, চট্টগ্রাম

ছোট এবং আয়তাকার ‘তাকিয়া’ মসজিদটি প্রতি সারিতে তিনটি করে মোট ছয়টি গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। প্রতিটি গম্বুজ একটি করে অষ্টকোণাকার ড্রামের উপর ন্যস্ত। মসজিদের চারকোণে ছত্রী দ্বারা আচ্ছাদিত চারটি সংযুক্ত বুরুজ নির্মিত হয়েছে। মসজিদের দেয়ালগুলি পলেস্তরায় আবৃত এবং ভারি আবরণে চুনকাম করা। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১০.৩৬ মিটার, প্রস্থ ৭.৭৭ মিটার এবং উচ্চতা প্রায় ২.৯০ মিটার।

পূর্ব দেয়ালের তিনটি প্রবেশপথ দিয়ে নামায কক্ষে প্রবেশ করা যায়। মাঝের প্রবেশদ্বারটি পাশেরগুলি থেকে বড় এবং উভয় পাশে সরু কলাম সংযোগে তৈরি একটি অভিক্ষেপ দ্বারা বৈচিত্র্যময়। মিহরাবের পেছনে কোন অভিক্ষেপ নেই, তবে দুটি সরু সংযুক্ত স্তম্ভ দ্বারা মিহরাবটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে মোট দুটি জানালা ছিল, যা বারান্দা তৈরির সময় দরজায় রূপান্তর করা হয়েছে। তিনটি মিহরাবের  মধ্যে মাঝেরটি বড়। মিহরাব তিনটি পূর্বদিকের  প্রবেশপথগুলির সমান্তরালে স্থাপন করা হয়েছে। দুটি পাকা স্তম্ভ প্রার্থনা কক্ষটিকে দুটি ‘আইল’ ও তিনটি ‘বে’তে বিভক্ত করেছে। প্রতিটি স্তম্ভের চারদিকে ছোট জোড়াস্তম্ভ সংযুক্ত হয়েছে এবং এর কাঁধ থেকে পেন্ডেন্টিভ তৈরি হয়েছে। মাঝের দুটি স্তম্ভ এবং ছয়টি দেয়ালস্তম্ভ থেকে সাতটি খিলান উৎসারিত হয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরের ও বাইরের দেয়ালে অনেকগুলি কুলুঙ্গি স্থাপন করা হয়েছে।

মসজিদের নিকটবর্তী দক্ষিণ দিকে মোল্লা মিসকিনের সমাধি অবস্থিত। একটি দেয়াল ঘেরা অঙ্গনে দুটি কবর রয়েছে। সমাধিকক্ষটি বেশি বড় নয় এবং পূর্বদিকের কবরটি পশ্চিমদিকের করব থেকে একটু বড়। দক্ষিণ দেয়ালের একটি নিচু প্রবেশদ্বার দিয়ে যে কেউ সমাধি অঙ্গনে প্রবেশ করতে পারে। পূর্ব দেয়ালের মাঝখানে একটি পুরানো প্রবেশপথের কিছু অবশিষ্টাংশ লক্ষ্য করা যায়, এটিকে বর্তমানে একটি কুলুঙ্গিতে পরিণত করা হয়েছে।

মূল সমাধির কোন ছাদ নেই। দেয়াল ঘেরের চারকোণে চারটি সংযুক্ত বুরুজ এবং চারটি দেয়ালের প্রতিটির মাঝখানে অভিক্ষেপ রয়েছে। দেয়ালে কুলুঙ্গি, খোপ এবং ‘কনজুরা’-র নকশা দেখা যায়।  [শামসুল হোসেন]